#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
২৩.
স্কুটি নিয়ে বের হয়েছিলো টায়রা। টিয়া রঙের স্কুটিটা অনবরত ঘুরে চলেছিলো ঢাকা শহরের এ গলি ও গলি। একটা এদোঁ সরু গলির মুখে যেতেই অনাকাঙ্ক্ষিত বশত অন্য কোনো এক মোটরসাইকেলের সাথে বেজে গেলো টায়রার স্বাদের স্কুটি। নাও এবার কেল্লাফতে! উলটে পরলো স্কুটিসহ দু পাশের দুজনেই। টায়রা সামনের দিকে না তাকিয়েই তার বাজখাঁই গলায় চিতকার করে উঠলো,
‘এই কোন শালা? চোখে দেখিস না?’
বলতে বলতেই সামনে তাকালো। বাইক নিয়ে পরে যাওয়া ছেলেটাকে দেখে মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলল। আকস্মিক বোবায় ধরলো তাকে। নিদারুণ কিছু অবাকতা, নিস্তব্ধতা, চমকানি দু’জোড়া প্রগাঢ় আঁখি নিয়ে তাকিয়ে থাকলো দুজন দুজনার দিকে।
আর্দ্র এই এতো বড় দামড়া বাইকের নিচে পরে গিয়েও ব্যথা ভুলে গেলো। সম্মুখের এই বিরক্তিকর নারীটির দিকে তাকিয়ে থাকলো নিমিত্তে। ফেলল না একবারো চোখের পাতা। শুধু তাকিয়েই রইল। এর মাঝে বিরবির করে বলল,
‘আমি কি স্বপ্ন দেখছি?’
আর্দ্র বিরবির করা সম্পন্ন করতে পারলো না। তার আগেই অসম্পন্ন গলায় চেঁচিয়ে উঠলো টায়রা,
‘আপনি? তাই তো বলি দিন-দুপুরে অন্ধ মানুষকে রাস্তা-ঘাটে কে বাইক চালাতে দেয়? কতটুকু ব্যথা দিলেন আপনি আমায়।’
চিল্লিয়ে যেনো গলা ছিড়ে ফেলবে টায়রা। আর্দ্র ব্যথায় অনেক কষ্টে বলল,
‘আমি নাহয় অন্ধ কিন্তু আপনার চোখ তো ভালো। স্কুটি চালাতে পারেন না আবার চালাতে এসেছেন কেনো? আমি তো হর্ণ দিচ্ছিলাম। আপনি যে বধির সেটা তো আগে বলেননি।’
‘এই আপনি আবার আমাকে অপমান করছেন?’
আর্দ্র চোখ মুখ খিচে বলল, ‘মিস. ফুটা টায়ার আপনি যদি আমাকে এখান থেকে রক্ষা করেন তবে আমি আপনার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকবো। এই অধমকে সাহায্য করুন দয়া করে।’
টায়রা মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল, ‘অ্যাহ আসছে! আমাকে ফুটা টায়ার বলছেন আবার হেল্প চান কোন মুখে?’
‘প্লিজ টায়রা আমি ব্যথা পাচ্ছি। তুলুন আমাকে।’
আর্দ্র গলা বেশ সিরিয়াস শোনা গেলো। টায়রার মায়া হলো। এগিয়ে এলো আর্দ্রর দিকে। তখন শেষ বিকালের মাথায় আকাশে দুটো লাল দাগ রঙিন হয়ে উঠেছিলো। প্রকৃতি ছেয়ে গেছিলো বৃষ্টি হওয়ার আগ মুহুর্তের এক অনাবিল সুখে। চারিপাশে বাতাস সাথে ছিলো প্রকৃতির বৃষ্টি রং। হালকা নীলচে কালো মেঘের রঙে পরিবেশ হয়ে উঠেছিলো সুনীল। দূর আকাশে মেঘের ভেলায় দেখা গেলো রংধনুর সাত রং। খেলে গেলো এক তরুণের অসহায়ত্ব সুর আরেক তরুণীর মায়া মাখানো হৃদয়।
টায়রা তেমন ব্যথা পায়নি। স্কুটির সামনের ফাঁকা অংশ দিয়ে পরে গিয়েছিলো। সে কোনোরকমে উঠে দাঁড়িয়ে স্কুটিটাকে টেনে তুলল। আর্দ্রর দিকে যেতেই দেখলো আর্দ্রর এক পা বাইকের নিচে পরেছে। মনটা ছলাৎ করে ভয়ে ছেয়ে গেলো। আর্দ্রর দিকে ঝুকলো। সাথে সাথে যেনো ব্যথা ট্যথা সব ভুলে হাওয়ায় উড়ানো টায়রার কোমড় অবধি চুলের গন্ধে মুখ ভাসালো আর্দ্র। নিজের এই কান্ডে চমকায়িত হলেও মনকে দমন করতে পারলো না কোনোমতেই। টায়রার এতোদিকে খেয়াল নেই। সে আর্দ্রর উপর দিয়ে হাত বাড়িয়ে বাইকের হ্যান্ডেল ধরে গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে উঠানোর চেষ্টা করলো। একটু উঠাতেই ভেতর থেকে পা বের করলো আর্দ্র। উঠে দাড়াতেই খেয়াল করলো ডান পা অবশ হয়ে গেছে। পা নাড়ানো যাচ্ছে না। এদিকে টায়রা এতো ভারী বাইকটাকে সামলাতেও পারছে না। দাঁতে দাঁত খিচে আর্দ্র উঠে দাঁড়িয়ে বাইক সোজা করে রাখলো।
টায়রা হাফ ছেড়ে বাঁচলো যেনো। ভয় কেটে গেলো। তবুও খোটা দিতে ছাড়লো না।
‘দেখেছেন? আমি কত দয়ালু নারী? আপনি আমাকে কত কটু কথা শোনান কত অপমান করেন তবুও বিপদের সময় এই টায়ার থুক্কু টায়রাকেই কাজে লাগলো। এখন আপনার উচিত আমাকে একটা বড় করে থ্যাংকস দেওয়া। রীতিমতো ধন্যবাদের বন্যা বইয়ে দেওয়া। কত্তো বড় হেল্প করলাম আপনার….।’
টায়রা ভীষণরকম এক্সপ্রেশন দিলো। আর্দ্রর দিক থেকে কোনো রেসপন্স না পেয়ে সে ভ্রু কুচকে তাকালো। আর্দ্র মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখতেই চোখ থেমে গেলো। মাথা ঝিমঝিম করে উঠলো। বাতাস ভারী লাগলো৷ চারিপাশ স্তব্ধ হলো। হাওয়ার সাথে মিলে গেলো সব৷ টায়রার চোখ দুটো জলে উপচে পরলো৷ ঘোলা দেখা গেলো চারপাশ৷ অস্ফুটস্বরে শুধু বলল,
‘আল্লাহ! রক্ত!’
টায়রার কথা শুনে আর্দ্র নিজেও নিজের পায়ের দিকে তাকালো। তাকাতেই অবাক হলো। এর জন্যই তবে পা নাড়াতে এতো কষ্ট হচ্ছিলো। পায়ের হাটুর বেশ খানিকটা নিচের জায়গাটুকু থেকে লাল মাংস উঠে সাদা অংশ দেখা যাচ্ছে। টায়রা আরেকবার দেখার আগেই চোখ খিচে বন্ধ করলো। আর্দ্র বলল,
‘লে হালুয়া! কাটলো, ছিড়লো আমার, আপনি এরম করেন ক্যা?’
থরথর করে কাঁপা ঠোঁট নিয়ে টায়রা জবাব দিলো, ‘হেমোফোবিয়া। ‘
‘আপনার ব্লাড ফোবি আছে?’ আর্দ্র আতংকিত গলায় বলল। টায়রা মাথা ঝাকালো।
এই মুহুর্তে অসহায় কণ্ঠে অদ্ভুত এক কথা বলল আর্দ্র,
‘তবে কি এখন আপনি অজ্ঞান হয়ে যাবেন?’
টায়রা কথা উত্তর না দিয়ে দাঁতে দাঁত পিষলো। ঝুলানো ব্যাগটা থেকে পানির বোতল বের করে পানি খেয়ে স্কুটিতে উঠে বসলো। আর্দ্র এগিয়ে এসে বলল,
‘আমাকে একটু…’
আর্দ্রের কথা সম্পন্ন হওয়ার আগেই টায়রা জিজ্ঞেস করলো, ‘এখানে থেকে আপনার বাড়ি কাছে নাকি হসপিটাল? ‘
না বুঝেই উত্তর দিলো আর্দ্র, ‘বাড়ি।’
‘তবে কাউকে ফোন করে বলুন আপনার বাইক টা এসে নিয়ে যেতে আর আমার স্কুটিতে উঠে বসুন। এবং ডান পা টা একটু আমার চোখের আড়ালে রাখবেন। বলা যায় না আবার রক্ত দেখলে আপনাকে নিয়ে এক্সিডেন্ট করে মরে টরে যেতে পারি। আর রাস্তা চিনিয়ে দিবেন।’
নাক ছিটকিয়ে আর্দ্র বলল, ‘মেয়েদের পেছনে বসে যাবো?’
টিকলি চোখ পাকিয়ে আর্দ্রর দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরালো। চোখ বন্ধ করে রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে দাঁত কিড়িমিড়ি করে বলল,
‘আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আমার কি ঠেকা? নেহাৎ হাত পায়ের গোস্ত-মাংস ছুলে বসে আছেন তাই মানবতার খাতিরে নিয়ে যেতে চাইছি। তারউপর আবার এতো বড় বড় কথা বলেন? আমার মাথা ঘুরাচ্ছে। উঠে বসুন বলছি তাড়াতাড়ি।’
টায়রার ধমকে আর্দ্র উঠে বসতে চেয়েও বলল, ‘হায়! আল্লাহ! আপনার মাথা ঘুরাচ্ছে? আপনার সাথে যাওয়া তো রিস্ক। এখন তো পা ছুলে বসে আছি। একটু পর উপরে যাওয়ার টিকিট কনফার্ম হয়ে যাবে।’
‘কিচ্ছু হবেনা। উঠে বসুন। নাহলে আমি চলে গেলাম।’
‘এই না। পরে আমি যাবো কিভাবে? ব্যথা সহ্য করা যাচ্ছে না। কি যন্ত্রনার জীবন!’
আর্দ্র উঠে বসলো টায়রার পেছনে। পকেট থেকে ফোন বের করে বাড়ির ড্রাইভারকে বলল বাইকটা এসে নিয়ে যেতে। আদর এখন নিশ্চয়ই বিজি। তবুও আর্দ্র আদরকে ফোন লাগালো। কিন্তু অপরপাশে ফোন ধরা হলো না। অবচেতন মনেই অন্য হাত টায়রার কোমড়ে রেখে আর্দ্র আবারো ফোন দিলো আদরের পারসোনাল নাম্বারে।
শরীর কেঁপে উঠল বৈদ্যুতিক তারের সাথে শক লাগার মতোন। ঠকঠক করে কেঁপে গেলো কিছুক্ষন অবলীলায়। মেদহীন টায়রার কোমড়টাতে আর্দ্রর হৃদপুষ্ট হাতের পাঁচ আঙ্গুল ঘুরে বেড়ালো নির্বিশেষে। টায়রা কথা হারিয়ে ফেলল। শুধু লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে দেখলো কাউকে ফোন দেওয়ায় ব্যস্ত আর্দ্রকে। হঠাৎ মনে হলো, বেহালা বাজছে। টায়রার চোখ বন্ধ হয়ে এলো। বেহালার সুরে মনের করিডোরে দুটো পাখি কিচিরমিচির করে তাদের অস্তিত্ব জানান দিলো। আর্দ্রের হাত কি জানান দিলো কে জানে? শুধু দেখা গেলো, কিছু মুহুর্ত পর আর্দ্র যখন ঠোঁট উল্টে বলল,
‘ভাইয়া তো ফোন ধরলো না।’
টায়রা তখন হুশে ফিরলো। ঝটকানা দিয়ে আর্দ্রের হাত সরিয়ে দিলো। আর্দ্র বুঝে উঠার সাথে সাথে বিস্মিত চমকপ্রদ নিজের এই কাণ্ডে হতবাক হয়ে গেলো। মস্তিষ্ক ফাঁপা নালির মতোন শূন্য হয়ে পরে রইল। নিউরন গুলো কাজ করা বন্ধ করে দিলো। রক্ত চলাচল থেমে এলো। কি হয়েছে তার? একটু আগে চুলের গন্ধ এখন আবার কোমড়ে হাত? মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেলো নাকি?
আর্দ্র আচ্ছন্ন দৃষ্টিতে তাকালো টায়রার ওই মেদহীন কোমড়ের বাঁকে। কিছুক্ষণ তাকিয়েই রইল। গলা খাকারি দিয়ে টায়রা বলল,
‘নজর হেফাজতে রাখুন। গুলি করে চোখের খুলি উড়ায় দেওয়ার আগেই ভালো পথে ফিরে আসুন।’
আর্দ্র তৎক্ষণাৎ চোখ সরালো। অপমানে লজ্জায় কানকাটা হয়ে বলল,
‘কি হইছে?’
বিস্ময় নিয়ে মুখ ঘুরালো টায়রা। এরপর আবার সামনে ঘুরে থমথমে মুখে বলল, ‘একদম এডভান্টেজ নিবেন না আর ইনোসেন্ট সাজার চেষ্টা করবেন না। আমার গায়ে যাতে আপনার টাচ না লাগে। সরে বসুন।’
,
বাড়ির মাথায় আসতেই দেখা গেলো তিনতলার বাড়ির সামনে খয়েরী রঙের গেট৷ একপাশে নেইম-প্লেটে লিখা ‘খান ভিলা’। গেট ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে বিল্ডিং এর গা বেয়ে জেগে উঠেছে বাগানবিলাস। এক পাশে আট কি দশটার মতোন শিমূল তুলোর গাছ। গেটে দারোয়ান দাঁড়ানো। দারোয়ান এগিয়ে এসে ব্যস্ত গলায় বললেন,
‘ছোট সাহেব কি হইছে? প্যান্ট ছিড়লো কেমনে? আল্লাহ! আবার দেহি পাও ছিলছে।’
আর্দ্র রহমত চাচার কাধে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
‘আমাকে ধরে একটু ভেতরে নিয়ে যাও চাচা।’
ভেতরে পা বাড়াতেই আবার উল্টো ঘুরলো আর্দ্র। খুড়িয়ে খুড়িয়ে টায়রার দিকে এগিয়ে এসে বলল,
‘ভেতরে আসুন।’
মুখ বাকিয়ে টায়রার জবাব, ‘নো থ্যাংকস।’
চোখের পলকেই স্কুটি নিয়ে উড়াল দিলো উড়নচণ্ডী টায়রা। আর্দ্র তাকিয়ে রইল রাস্তার আকেঁবাঁকে ততক্ষণ, যতক্ষণ দেখা যায় এই বিরক্ত মেয়েটাকে।
_________________________________
দুইদিন হয়েগেছে টিকলি এখনো প্রেসক্রিপশন টা খুলে দেখেনি। এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে প্রচুর আবার ভয়ও হচ্ছে। মামাজান সেদিন বিকালেই চলে গিয়েছেন। বাবা আর রাহুল ভাই প্রেসক্রিপশনটা অনেকবার দেখতে চাইলে টিকলি কথা কাটিয়েছে এমনভাবে,
‘তেমন কোনো প্রেসক্রিপশন না।’
রাহুলের উত্তর তখন, ‘প্রেসক্রিপশন আবার কেমন হয়?’
‘সাইনোসাইটিস এর সমস্যা। ওতো আহামরি কোনো ওষুধ দেয়নি।’
‘আমার তো এবার সন্দেহ হচ্ছে। দেখি প্রেসক্রিপশন টা কোথায় রেখেছিস? আহামরি ওষুধ দিয়েছে কিনা দেয়নি দেখি।’
টিকলির ব্যাগ টেনে নিয়ে তন্নতন্ন করে খুঁজেও প্রেসক্রিপশন পেলো না রাহুল। টিকলি তুতলিয়ে বলল, ‘বোধ হয় হারিয়ে ফেলেছি।’
রাহুল হতাশ নিঃশ্বাস ফেলে চলে গেলো। যাওয়ার আগে বলে গেলো, ‘তুই তো এমন ছিলি না টিকলি।’
রাহুলের কথাটা কেনো যেনো মিনিট খানিকের মতো টিকলির মাথায় বসে রাজত্ব করতে লাগলো। আসলেই তো, টিকলি তোএমন ছিলো না। রাহুল সারা ব্যাগ তন্নতন্ন করে খুঁজেছে প্রেসক্রিপশনটা অথচ কাগজটা ছিলো টিকলির হাতের মুঠোয় দুমড়ে মুচড়ে ভাঁজ করা।
নিজের গোপন ডয়ার থেকে প্রেসক্রিপশনটা নিয়ে বারান্দায় এলো টিকলি। টায়রা বসার ঘরে টিভি দেখছিলো। ঘরে শুধু একা টিকলি। কাগজটা চোখের সামনে মেলে ধরতেই দেখা গেলো ওষুধের নাম লিখা, দিনে কতবার খাবে তা লিখা। একদম উপরে আদরের অফিসিয়াল নাম এবং নাম্বার। সারা পৃষ্ঠা জুড়ে আর অন্যকিছু পাওয়া গেলোনা। কাগজটা উল্টাতেই অপরপাশের নিচে গুটিগুটি অক্ষর গুলো চোখে ধরা দিলো। টিকলি মুগ্ধ মন বলল,
‘বাহ! ডাক্তারদের লেখা এতো সুন্দর! ইম্প্রেসিভ।’
চোখে চশমাটা ঠিকমতো এঁটে দিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়তে শুরু করলো টিকলি,
“শূন্য জীবনে ভাসে এক আকাশের সাত রং। ছয় ঋতুতে আসছে বারো মাস আর এক ফাল্গুন। হঠাৎ জীবন পথ খুঁজে তিন গলির মুখে, পাঁচ রাস্তার মোড়ে। সারা মাসে অক্লান্ত পরিশ্রমে ফুরোয় দিন শুধুমাত্র তোমার কফি মগে।”
লেখাগুলো পড়ে ভ্রু কুচকালো টিকলি। মানে কি এই লেখাগুলোর? এই লেখা দিয়ে কি করবে সে? লেখার মাঝে কি আদরের কোনো অনুভূতি ব্যক্ত করলো নাকি? টিকলি আরো দু তিনবার পড়লো। তবুও বুঝে আসলো না। বিরক্তিতে মুখ তেতো হয়ে রইলো। ধ্যাত, ভেবেছিলাম হয়তো নাম্বার টাম্বার দিয়েছে, যে তাড়াতাড়ি লিখলো। বিরক্ত মনে দাঁড়িয়ে থাকার কিছুক্ষণ পর টিকলি আরো একবার চোখ বুলালো। চিঠিটা মেলে ধরে আনমনে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই হঠাৎ চিল্লিয়ে উঠলো, ‘ইয়েস ইয়েস। পেয়েছি পেয়েছি।’ বলেই ঘরে ছুট লাগালো নতুন কাগজের উদ্দেশ্যে। কলমের নিপ কিছুক্ষন বিরামহীন চলল সাদা কাগজের জমিনজুড়ে।
চলবে❤️