বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব-৩৪

0
1288

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

৩৪.
উড়ন্ত চুলগুলোকে হাত খোপায় বন্দী করতে করতে নিভা প্রশ্ন করলো,

‘আপনি এ বাসায় কতদিন থেকে আছেন?’

‘এইতো বেশ কিছু মাস।’

‘চারজন থাকেন তাই না? আমি শুনেছিলাম দুজন বিবাহিত। আরেকজন কি আপনার সমবয়সী?’

রাহুল হেসে জবাব দিলো, ‘আমার বন্ধু। নাম নয়ন।’

‘ওহ। আচ্ছা আপনার নিজের বাসা কোথায়?’

রাহুলের চোখে মুখে আকাশের মতোই তখন ঘন কালো মেঘ নেমে এলো। হাসি হাসি মুখ বালুচরে বিলীন হয়ে চোখে মুখে ফুটলো চাপা আর্তনাদ। রাহুল জোরপূর্বক হাসলো শুধু আর কোনো কথা বলল না। নিভা প্রশ্নটা ব্যক্তিগত ভেবে এড়িয়ে গেলেও কৌতুহল লুকাতে না পেরে আবারো প্রশ্ন করলো,

‘নিজের ফুফির বাসা রেখে আপনি ভাড়া থাকেন কেনো?’

রাহুল স্মিত হেসে উত্তর দিলো, ‘তেমন কোনো কারণ নেই। ওই… কারোর ঘাড়ে চেপে বসে থাকতে ইচ্ছে করেনা। নিজের পায়ে দাড়াতে চাই নিজের পরিশ্রমে।’

নিভা মৃদু হাসলো। এলোমেলো চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দিতেই খেয়াল করলো তার ভীষণ রকম অস্বস্থি হচ্ছে। এরপর আর কোনো কথা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সাথে এও খেয়াল করলো এতোক্ষণ পর্যন্ত সে নিজেই শুধু বকবক করে গেছে। প্রশ্ন করেছে। আর রাহুল শুধু উত্তর দিয়েছে। এর বাইরে কোনো প্রশ্ন করেনি। নিভার চিন্তা ভাবনায় ভাটা দিয়ে তখনি রাহুল বলে উঠলো,

‘আপনি খুব মিশুক কিন্তু আমি একটু ইন্ট্রোভার্ট। লাজুক নই তবে মানুষের সাথে মিশতে একটু সময় লাগে। অপরিচিতদের সাথে একটু কম কথা বলা হয়। আসলে আমার পরিচিত দুনিয়া খুবই সীমিত। সেখানে বলা চলে, এখন আপনিও আমার সেই সীমিত দুনিয়ায় একজন। অল্প হলেও তো পরিচিত।’

পকেটে হাত রেখে ঠোঁটের কোণায় সৌজন্যমূলক হাসি ঝুলিয়ে বলছিলো রাহুল। নিভার মন খারাপ ভাব গুলো কেটে যেতে লাগলো আস্তেধীরে। সে একবার টিকলি আর টায়রার কথা বলতে চাইলো। মনে হলো, টিকলি আর টায়রাকে দেখিয়ে এ মুহুর্তে লোকটাকে দারুন এক সারপ্রাইজ দেওয়া যাক। কিন্তু পরমুহূর্তেই মত পালটানো হলো। মন বলল, নাহ… এখন যদি টিকলি টায়রার সাথে রাহুলকে দেখা করায় তাহলে তো রাহুল বিভিন্ন প্রশ্ন করবে, কেনো এসেছে? কতক্ষন হলো এসেছে? কি করছে এখানে? কার সাথে এসেছে? যদিও নিভার খালার বাসায় এসেছে বলে কাটিয়ে দেওয়া যাবে তবুও টিকলিরা তো বাসায় বলে এসেছে পিকনিকে যাচ্ছে। এখন রাহুল যদি আবার টিকলির বাসায় ফোন করে বলে দেয়। তখন তো আরেক কেলেঙ্কারি। সব ভেবেচিন্তে নিভা আর কিছু বলল না। মানবিকতার খাতিরে সেও হাসি ফিরিয়ে দিলো। রাহুল পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে হাসিমুখে মাথা ঝাকিয়ে বলল,

‘এখন আমার ঘুমানোর সময়। এই সময় না ঘুমালে প্রচন্ড মাথা ব্যথা করে বাকিদিন। সরি আপনাকে সময় দিতে পারলাম না। অন্য একদিন জবরদস্ত আড্ডা চলবে।’

,

ঘরে ঢুকতেই নিভা দেখতে পেলো এক পাশের সোফায় বসে আছে টিকলি টায়রা অপরপাশে বসে আছে আদর আর্দ্র। আর্দ্র আর টায়রার মাঝে কিছুক্ষণ আগেই এক দফা তুমুল ঝগড়ার ইতি ঘটেছে। এখন দুজন গাল ফুলিয়ে দু সাইডে বসে আছে। নিভা গিয়ে আর্দ্রর পাশে বসতে না বসতেই টায়রা পিশাচিনীর মতো খেঁক করে বলে উঠলো,

‘ওই, ওইপাশে বসছোস কেন? এইপাশে আয়। আমরা এইপাশে চোখে দেখোস না?’

নিভা উঠতে নিলেই আর্দ্র হাত চেপে ধরে বলল,

‘নাহ তুই এপাশেই বসবি। আমার সাথে।’

টায়রা ভেঙিয়ে বলল, ‘মেয়ে দেখলেই ময়না ছলাৎ ছলাৎ করে! ও আমার বেস্টফ্রেন্ড। আমার পাশে বসবে ও।’

‘এক্সকিউজ মি। আপনার বেস্টফ্রেন্ডের আগে ও আমার বোন।’

‘তো? বোন তো কি হইছে? বোন বলেই চিপকায় বসতে হবে?’

‘কেনো আপনার জ্বলে?’ আর্দ্র ভ্রু নাচিয়ে এমন এক ভাবভঙ্গি নিয়ে বলল যে টায়রা ফুসে উঠে টিকলির উপর চেঁচালো এবার,

‘এই তুই উঠবি? তোর শ্বশুড় বাড়ি ঘুরা শেষ হয়নাই?’

টিকলি গরম চোখে তাকিয়ে বলল, ‘আমি আবার কি করলাম?’

‘উঠোস না কেন? বাসায় যাবি না?’

‘আপনি যাবেন যান। আমার ভাবীকে নিয়ে টানাটানি করেন কেনো?’ আর্দ্র সোফা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে আবার বলল, ‘ভাবী চলে গেলে বেচারা আমার ভাইটা একা হয়ে যাবে না?’

আদর চোখ পাকিয়ে বলল, ‘আমি বিয়ে করলাম কবে?’

আদরের কথা কেউ তেমন পাত্তা দিলো না। টায়রা আর্দ্রকে তখনের মতো ভেঙিয়ে বলল,

‘এক্সকিউজ মি। আপনার ভাবীর আগে ও আমার বোন। তাও মায়ের পেটের।’

নিভা গালে হাত দিয়ে ঝগড়া দেখতে দেখতে টিকলিকে বলল,

‘হোয়াট আ ঝগড়া! ফিলিংস লাইক সিনেমা হলে বসে ঝগড়া শো দেখছি। আমি মুগ্ধ, আপ্লুত, মোহিত!’

কপাল কুচকিয়ে টিকলি বিরক্ত কণ্ঠ ঠেলে বলে উঠলো,

‘বাদ দে, এরা সবসময় এমন করে। এতোক্ষণ ছাদে কি করছিলি?’

নিভা যেনো একটা কথার মতো কথা পেলো। খুব উৎসাহ নিয়ে সোফার উপর দু পা তুলে বসে বলল,

‘এই তোর একটা মামাতো ভাই আছে না?’

অবহেলার গলায় টিকলি বলল, ‘ছিলো একটা।’

‘রাহুল নাম না?’

‘হ্যাঁ।’

‘তুই জানিস সে কোথায় থাকে?’

‘এই মিরপুরেই একটা ব্যাচেলর বাসায় থাকে শুনেছিলাম। কিন্তু কোথায় থাকে সেটা জানি না।’

নিভা সোফায় হেলান দিয়ে হেহে করে হেসে বলল, ‘এ বাসার উপর তলায়।’

টিকলি নড়েচড়ে বসলো। ভ্রু কুচকে বলল, ‘মানে?’

‘মানে তোমার একমাত্র মামাতো ভাইটা এ বাসার তিনতলায় ভাড়া থাকে। ব্যাচেলর।’

বিশাল বড় এক হা করে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে থাকতে থাকতে টিকলির মনে হলো সে ডুবে যাচ্ছে অকূল পাথারে। নির্জন দ্বীপে সে হারিয়ে গেছে। একা একদম একা টিকলি খুঁজে পাচ্ছে না কোনো দিশা। শুধু মনে হচ্ছে, ‘হায় আল্লাহ! এ মেয়ে বলে কি! রাহুল ভাইয়া এ বাসায় ভাড়া থাকে মানে? এবার? এবার কি হবে?’

‘ভাইয়া কি আমাকে দেখেছে?’

নিভা হাত নাড়িয়ে মাছি তাড়াবার ন্যায় উত্তর দিলো, ‘আরে নাহ।’

‘তুই কিছু বলছিস?’

‘আরে নাহ। বলতে চাইছিলাম পরে ভাবলাম, অন্তত একটা বাঁশ থেকে তো বান্ধবীকে রক্ষা করি। তাহলে এতো জনমে তোদের সাথে মিলে যে পাপগুলো করছি দয়া করে হলেও আল্লাহ একটা পাপ অন্তত মাফ করলেও করতে পারে।’

‘ফাইজলামি করস এই মুহুর্তে আইসে? আমার চিন্তা লাগতাছে। ভাই আমরা এই বাসা থেকে বের হবো কেমনে?’

‘কেন বাইরে কি বাঘ দাঁড়ায় আছে অর শিয়াল, কুত্তা, গরু, হাতি, মহিষ এনিথিং?’ নিভা ভ্রু কুচকে বলল। টিকলি নিভার বাহুতে পরপর দুটো থাপ্পড় দিয়ে বলল,

‘রাহুল ভাইয়া যদি দেখে ফেলে সেটার কথা বলেছি।’

‘আরে দেখবে না। প্যারা নিস না। ইউ নো লাইফ ইজ প্যারাহীন। তোর ভাই এখন ঘুমাবে। এ সময় না ঘুমালে নাকি বাকিদিন তোর ভাইয়ের মাথা ব্যথা করে। হুহ…ঢং…।’

নিভা মুখ ভেঙিয়ে বিদ্রুপ করে কথাগুলো বলতেই টিকলি আবার নিভার হাতে থাপ্পড় দিয়ে বলল,

‘আমার ভাইকে নিয়ে কিচ্ছু বলবি না। আমার ভাই অনেক ভালো। ওর মতো ভালো মানুষ আর একটাও হয় না।’

টিকলির কথার মাঝপথেই আদর তড়িঘড়ি করে ওর সামনে এলো। টিকলি ভালোভাবে তাকাতেই দেখলো ফর্মাল পোশাকে আদর দাঁড়িয়ে আছে। সোফা ছেড়ে উঠে দাড়ালো টিকলি। মুহুর্তেই বিষন্নতার বৃষ্টি নেমে গেলো মুখে। আদর প্রচন্ড মন খারাপ নিয়ে মুখ ভাড় করে কিছু বলতে চাইলেই টিকলি ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে নরম গলায় বলল,

‘কি কাজ পরে গেছে?’

আদর কোনো কথা বলল না। টিকলি চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ চুপ থেকে ঢোক গিলল। অনেক বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলল,

‘সাবধানে যাবেন। আমরাও চলে যাচ্ছি।’

আদর থমথমে মুখে বলল, ‘আর কিছুক্ষণ থেকে যান। আমার খুব আর্জেন্ট কাজ পরে গেছে তা নাহলে আমি যেতাম না।’

টিকলির চোখ তৎক্ষণাৎ টলমল করে উঠলো। ভাঙা গলায় বলল, ‘থেকে কি করবো ডাক্তার?’

তখনি আর্দ্র হুশিয়ারি দিয়ে বলল, ‘আমরা কেউ নই? ভাইয়াই সব? ভাইয়া চলে যাচ্ছে বলেই চলে যেতে হবে? তোমরা পরে যাবে। দরকার পরলে আমি তোমাদের বাসায় দিয়ে আসবো।’

টিকলি জোরপূর্বক মুচকি হাসলো। উপরের দিকে তাকিয়ে চশমার আড়ালে কাজল কালো চোখদুটোর নিচে আঙ্গুল দিয়ে চেপে মুছে নিলো। আদর এক পলক তাকালো টিকলির দিকে। টিকলিও তাকালো। চোখে চোখ মিল হলো। কিছু না বলা ব্যথা অনুভব হলো। কিছু অসহায় কথা বলা হলো। আদর চলে গেলো। টিকলি ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে থাকতেই টায়রা বলল,

‘বাব্বাহ! জামাইয়ের জন্য কতো দরদ! জীবনে আমার জন্য কাদছোস এমনে?’

টিকলি উত্তর দিলো না। বিষন্ন মনে সোফায় বসতেই সিড়ির সামনে থেকে আদরের কন্ঠস্বর ভেসে এলো। ভিড়ানো দরজাটা খুলে আদর টিকলিকে ডাকলো। স্তব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ বসে থেকে টিকলি ছুট লাগালো। সিড়ির সামনে আসতেই আদর দরজা চাপিয়ে দিয়ে বলল,

‘এতো জোরে কেউ দৌড় দেয়? এক্ষুনি তো পড়ে যেতেন?’

‘আপনি এখনো যাননি?’

‘এইতো চলে যাবো।’

টিকলি আশায় ছিলো হয়তো আদর যাবে না। মাথা নিচু করে ছোট করে সে বলল,

‘ওহ।’

আদর টিকলির চুলগুলো কানের একপাশে গুঁজে দিয়ে বলল, ‘আর কিছুক্ষণ থেকে যান।’

টিকলির চোখ দুটো আবার ছলছল করে উঠলো। ঠোঁট চেপে বলল, ‘যার জন্য থাকবো সে তো চলে যাচ্ছে, ডাক্তার। তবে থাকবো কার জন্য?’

আদর টিকলির গালে এক হাত রাখলো। এরপর খুব নিঃসহায় গলায় বলল, ‘আমি তো থেকে যেতে পারছি না, টিকলি।’

আদরের স্পর্শ পেতেই অবাধ্য জলেরা গাল বেয়ে আদরের হাতের উপর দিয়ে গড়িয়ে গেলো। ব্যস্ত হাতে আদর টিকলির চোখ মুছে দিয়ে বলল, ‘আহা! কাদছেন কেনো? আপনি এমন করলে আমি যাবো কীভাবে?’

‘আপনি বলেছিলেন আজ সারাদিন আমার সাথে থাকবেন। আর এখন মাত্র বিকেল সাড়ে চারটা বাজে।’

টিকলির কথায় আদর হেসে দিলো। এরপর খুব তৃপ্তি নিয়ে বলল, ‘কি বাচ্চামো! এই বাচ্চাটাকে কবে যে বউ করে আমার রাজ্যে নিয়ে আসবো!’

আদর হেসে টিকলির গাল টিপে দিলো। এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে থেকে টিকলির মনে হলো, এই বাক্যের মতো এতো সুন্দর কথা আর হতে পারেনা। এতো সুন্দর অনুভূতি এতো সুন্দর মুহুর্ত আর হতে পারেনা কিন্তু সব তো হারিয়ে যাবে। ইশশ…সময়কে ধরে রাখার মতো কোনো মেশিন কেনো নেই টিকলির কাছে? তবে কিছু সময়কে কক্ষনো যেতে দিতো না। আটকে রাখতো সুখময় সময়গুলোকে আর নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিতো দুঃখগুলোকে। তখনি আদর বলল,

‘আপনি কি বলতে পারবেন টিকলি? আমার এই আটাশবছর জীবনে কেনো আপনার পা পরলো? আঠারো বছর বয়সে কেনো আপনার পদার্পণ হলো না, আমার বুকে? কিংবা তারও আগে! কতগুলো বছর আপনি হীনা কেটে গেছে ভাবলেই মন বলে, চল আদর। মিশনে নামি। জীবনের আগের অধ্যায়গুলোকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এসে তোর টিকলির নাম গুলোকে আঠা মেরে বসিয়ে দি। এমন আঠা! যে আঠা জীবনে কেউ লাগায়নি তুই হীনা!’

তখনি যেনো নিরন্তর প্রবল প্রণয়ে ছেয়ে উঠলো টিকলির অন্তঃস্থলে থাকা অন্তঃকরণ। অবিরত ভালোবাসার বুলি বলে ক্রমেই অপস্রিয়মাণ হয়ে যেতে লাগলো আদর। এক পা এক পা করে সিড়ি দিয়ে নেমে চলে গেলো সাথে টিকলিকে দিয়ে গেলো এক আকাশ ভালোবাসা। এক সমুদ্র প্রেম। এক পাহাড় উত্তাল অশান্ত মনের বাণী।

______________________________

টিকলিরা যখন খান বাড়ি থেকে বের হলো তখন বাজে সাড়ে পাঁচটা। নিভাও এসেছে ওদের সাথে। টায়রা টিকলি জোর করেই নিয়ে এসেছে। আজ রাতটা টিকলিদের বাসায়ই কাটানোর বায়না। আর্দ্র আসতে চেয়েছিলো কিন্তু টায়রার বেড়াজালে পড়ে টিকলি বারন করেছে। গেট দিয়ে বের হতেই দেখা গেলো ওই সময় ওই গেট দিয়ে আরেকটি যুবক ভেতরে ডুকলো। ছেলেটা এমন ভাবে তাকালো যে কার দিকে তাকালো ঠিক ঠাওর করা গেলো না। টিকলি টায়রা নিভা একে অপরের দিকে তাকাতেই টায়রা চোখ কুচকে বলল,

‘এই লোক কার দিকে তাকালো?’

টায়রার মাথায় চাপড় দিয়ে টিকলি বলে, ‘যার দিকে তাকাক। তোর তাতে কি?’

‘আরে বুঝস না মাম্মা। আমার দিকে তাকালে তো কিছু একটা হিল্লে হয়ে যেতো। তুমি তো বইন প্রেম ট্রেম কইরে বিন্দাস লাইফ পার করতাছো। আমার তো আর একা একা সিংগেল লাইফ ভালো লাগে না। বোনের কষ্ট তো বুঝবা না!’

‘চুপ থাক, বেয়াদব।’ বলেই নিভা রিক্সা ডাকতে গেলো।

,

‘মামা, আজকে যা দেখছি না!’

রাহুল ভ্রু কুচকে বলল, ‘কি দেখছস?’

নয়ন এক লাফ দিয়ে রাহুলের কাছে আসলো। মুখোমুখি বসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভাবে ফিসফিস করে বলল,

‘আজকে দেখি কি জানোছ? আমাদের বাসা থেকে তিনটা মেয়ে বাইর হয়ে গেলো। তিনটাই যা সুন্দর না রে! ডানপাশের টা তো একবারে আমার দিল কাইরে নিছে।’

রাহুল বিরক্ত হয়ে নয়নের কাছ থেকে সরে গিয়ে বলল,

‘তোর এই রোগ কবে যাবো বলতো? মেয়ে দেখলেই ছুক ছুক স্বভাব। যারেই দেখোস তার উপরেই তুমি ফিদা। ঠাস ঠুস করে ক্রাস খাও।’

‘তুমি যদি দেখতা তাইলে তুমিও তোমার দিলের যতো পেয়ার আছে সব ঢাইলে দিতা।’

‘হ। তোর মতো তো সবাই প্রতিবন্ধী। অটিজম শিশু।’

চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here