বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব-৪১

0
1199

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

৪১.
‘মনতাঁরা!’
টিকলির বুক কেঁপে উঠলো। নাম না জানা রোমাঞ্চিত শিহরণের ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেলো শরীর বেয়ে। চোখদুটোর কপাট বন্ধ করতেই সুখস্পর্শ আবেগ মিশ্রিত হলো শরীরের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। আদর টিকলির কপাল থেকে চুল সরিয়ে নিলো। ভিষণ ব্যকুলতার গলায় বলল,

‘আপনার এই কপালটা না আমার ভীষণ প্রিয়!’

টিকলি বন্ধ চোখে বিমূঢ় গলায় বলল, ‘তারপর?’

‘আপনার গালের ওই পক্সের ছোট দুটো গর্ত আমার ভিষণ প্রিয়!’

‘তারপর?’

‘আপনার ওই কপালে দু’পাশ থেকে শুরু হওয়া কোমড় দোলানো দু’গাছি চুলগুলো আমার ভীষণ প্রিয়!’

‘তারপর?’

‘আপনার এই টিকলো নাক আমার ভীষণ প্রিয়। আপনার সবকিছুই আমার ভীষণ প্রিয়। আপনার ওই পিঠের তিল টাও ভিষন প্রিয়! নজরকাঁড়া!’

টিকলি টপাস করে চোখ খুলল। আদরের ঠোঁটের কোণে তখন দূরন্ত মৃদু হাসি। কিছুক্ষণ শূন্যে আহাম্মক এর মতো তাকিয়ে থেকে টিকলি তেজি গলায় বলল,

‘এই আপনি আমার তিল দেখেছেন কখন?’

আদর পা বাড়ালো দরজার দিকে। চলে যেতে যেতে বলল,

‘কালো শাড়ির কালো ব্লাউজের ফাঁকে কালো তিলটার সাথে সাক্ষাৎ হয়েছিলো আমার খুব গোপনে, নির্বিঘ্নে, আপনার অগোচরে।’

,

বাইরে তখনো বৃষ্টি থামেনি। সুইমিংপুল থেকে আর্দ্র আগে উঠলো। টায়রা উঠতে গেলেই পিছলা খেয়ে পরলো। আর্দ্র হাত বাড়িয়ে দিতেই হাত ধরে উঠে এসে হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে দিলো। আর্দ্র হাত ধরে চোখ মুখ কুচকে বলল,

‘কাজের সময় কাজী, কাজ ফুরালে পাজি।’

টায়রা অগ্নিদৃষ্টি সহযোগে তাকিয়ে থাকলো কয়েক মিনিট। গটগট পায়ে হাটা ধরতেই দেখা গেলো খানিকটা দূরেই গেটের পাশে ছাউনির নিচে বৃষ্টিতে জুবুথুবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাওয়াই মিঠাইওয়ালা। টায়রার থমকে যাওয়া দৃষ্টি অনুসরণ করে আর্দ্রও সেদিকে চোখ রাখলো। খানিকটা অবাক ই হলো এখানে হাওয়াই মিঠাইওয়ালা দেখে। কিছু পুরনো স্মৃতি মনে করাতেই বোধহয় আজ অসময়ে এই হাওয়াই মিঠাইওয়ালার উদয়। আর্দ্র ফিচেল হেসে হালকা গলায় বলল,

‘আপনার মনে আছে? আপনার আমার প্রথম দেখা হাওয়াই মিঠাই কিনতে গিয়ে।’

টায়রা মুখ বাঁকিয়ে বলল, ‘ঝগড়া করে।’

আর্দ্র চোখ ঘুরিয়ে বলল, ‘ওই একই কথা।’

টায়রা ঠোঁট বিকৃত করে বলল, ‘ওই দিনটাই আমার জীবনের কাল। আপনার মতো বধো মার্কা মানুষের সাথে সাক্ষাৎ। আর এখন পর্যন্ত সেই সাক্ষাৎ ফেবিকলের মতো চিপকেই আছে।’

আর্দ্র চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে বোকা বোকা গলায় বলল, ‘বধো কি? কিসব আউল ফাউল নাম! আর আমি বধো হলে আপনি বধি।’

টায়রা চোখ পাকিয়ে বলল, ‘আপনার চেহারায় যে একটা হনুমানের ছাপ আছে আপনি কি জানেন?’

আর্দ্র পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আর আপনার চেহারায় যে একটা বলদ বলদ ব্যাপার আছে তা কি আপনি জানেন?’

‘আর আপনার চেহারায় খাসির সাইনবোর্ড টানানো আছে।’

‘আপনার চেহারায় গাধার পোস্টার লাগানো আছে।’

‘আপনি…আপনি..একটা অসহ্য।’

‘আর আপনি বোধহয় আমার জন্য খুব সহ্য?’

,

রাত তখন একটা। আকাশ পরিষ্কার। বাঁকা একটা চাঁদ তাতে বিদ্যমান। আদর তড়িঘড়ি করে টিকলির রুমে এলো। ব্যস্ত কণ্ঠে বলল,

‘কি হয়েছে? এভাবে আর্জেন্ট ফোন করে ডেকে আনলেন?’

‘আমার ভালো লাগছে না ডাক্তার। আমি বাড়ি ফিরতে চাই।’

আদর বিস্মিত হলো, ‘আমাদের তো আরেকদিন থাকার কথা টিকলি।’

‘আপনি বুঝতে পারছেন না। আমার মন টানছে না। প্লিজ কথা না বাড়িয়ে চলুন।’

‘এখন?’

‘হুম।’

,

টায়রাকে কোনোমতে টেনে হিচড়ে ঘুম থেকে তোলা হয়েছে। আদর গাড়ি নিয়ে গম্ভীর মুখে দাঁড়িয়ে ছিলো। টিকলিকে দেখতেই ড্রাইভিং সিটে উঠে বসলো। টায়রা ঢুলু ঢুলু পায়ে পেছনের সিটে বসেই মাথা এলিয়ে দিলো। আর্দ্র আড়চোখে একবার দেখে নিয়ে টিকলির উদ্দেশ্যে বলল,

‘কি হলো? এভাবে চলে যাচ্ছি কেনো আমরা? কোনো সমস্যা হয়েছে টিকলি?’

টিকলি মাথা নাড়িয়ে না করলো। আদরের দিকে এক ঝলক তাকিয়ে নিচু স্বরে বলল,

‘মনটা কু ডাকছে ভাইয়া। মনে হচ্ছে কিছু একটা খারাপ হবে। আমার এ দিকটা প্রচন্ড খারাপ। মন যা বলে তাই হয়।’

গাড়িতে কেউ আর কোনো কথা বলল না। আদর ড্রাইভিং এ গভীর মনোনিবেশ করতেই টিকলি আস্তে করে বলল,

‘রাগ করছেন?’

আদর তড়িৎ বেগে টিকলির দিকে তাকিয়ে ফিচেল গলায় বলে উঠল, ‘রাগ করার মতো কিছু হয়েছে বলে কি আপনার মনে হয়? যদি মনে হয় তবে আমি রাগ করেছি।’

এর পরিপেক্ষিতে টিকলি আর কথা খুঁজে পেলো না। চুপ হয়ে খুব সন্তর্পণে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানালায় মাথা রেখে কালো আবরণে ঢাকা সুপ্ত রাত জাগা পরিবেশ দেখে গেলো। টায়রা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। এই মেয়ে প্রচুর ঘুমোতে পারে বলেই আর্দ্রর ধারণা। তা নাহলে এই অতর্কিত সিচুয়েশনে কেউ এভাবে নাক ডেকে ঘুমোয়? ভাবার কালেই ঝাঁকি খেয়ে টায়রার মাথাটা গড়িয়ে পড়লো আর্দ্রের কাধে। আর্দ্র নাক ছিটকিয়ে ঝটকানা দিয়ে উঠাতে গেলেই আদর খেকিয়ে উঠলো,

‘ঘুমাচ্ছে দেখতে পারতাছস না? ঘুমন্ত মানুষের সাথেও এরম করতে হবো? কাধে মাথা রাখছে কি কাধে ফোসকা পইড়ে গেছে?’

আর্দ্র ভাইয়ের দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে বিরবির করে বলল, ‘একজনের রাগ আরেকজনের উপর ঢালতাছে।’

ঘড়ির কাটা ঘুরছে নিজ গতিতে। কেটে যাচ্ছে সময়।কেটে যাচ্ছে মিনিটের পর মিনিট। টায়রার মাথা ঝুঁকে ঝুঁকে নেমে এসেছে আর্দ্রের বুকের দিকটায়। আর্দ্র টায়রার মাথাটা বুক থেকে উঠিয়ে আবার কাধে রাখলো। অজান্তেই অজ্ঞাত চোখদুটো ঘিরে ধরলো টায়রার মুখোঞ্চল। স্থির দৃষ্টিতে দেখতে দেখতেই কম্পিত হয়ে উঠলো হৃদয়। রাস্তার দু’পাশের গজারি গাছগুলো ছাড়িতে যেতে যেতেই মন বলল,
“রেখে গেলাম কতক স্মৃতি,
আবার কবে ফিরে আসা হবে না জানি।”

টিকলি জানালায় মাথা ঠেস দিয়ে ছিলো। বাইরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়া শুরু হলো। আদর হাত বাড়িয়ে টিকলির মাথা জানালা থেকে উঠিয়ে জানালার কাচ লাগিয়ে দিলো। টিকলি অসহায় চোখে আদরের দিকে তাকাতেই আদর স্নেহভরা গলায় বলল,

‘ঘুম পাচ্ছে?’

টিকলি উত্তর দিলোনা। কেমন করে যেনো মাথা ঝাঁকালো। যার অর্থ হ্যাঁও না নাও না। আদর টিকলির মাথাটা নিজের কাধে রাখলো সযত্নে। এইতো… দ্বিতীয়বার কাছে আসা। ভালোবাসার মানুষটার সংস্পর্শ পাওয়া। খুব কাছে থেকে গায়ের গন্ধ নেওয়া। নিঃশ্বাসের শব্দ গোনা। প্রথমবার কাছে আসাটাও ছিলো এই বদ্ধ গাড়িতে। অভিমানী টিকলির কান্নাময় পাগলামিতে অতিষ্ঠ হয়ে আদর তার মাথাটা আলগোছে রেখেছিলো বুকের কিনারায়। সুন্দর সুন্দর দিনগুলো কেনো সবসময় সুন্দর থাকে না? কেনো হারিয়ে যায় অতীতের পাতায়? বর্তমানের বেড়াজালে?ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তায়? আদর খুব আড়ালে টিকলির চুলের ভাঁজে আলতো করে ঠোঁট ছুইয়ে দিলো। বুঝলো না কেউ। জানলো না টিকলি। শুধু জানলো আদরের দগ্ধ হৃদয়। টিকলির চোখের পাতা বন্ধ। আদর গাড়ি চালাতে চালাতেই গাইলো দু লাইন,

‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা,
তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা।’

আর্দ্র তখন অবধি তাকিয়ে ছিলো শ্যামল মুখশ্রীর টায়রার দিকে। শ্যামলা মানুষগুলো একটু বেশি মনকাড়া হয়। এদের একবার নজরে বন্দী করলে বোধহয় সহজে মুক্ত করা যায় না। আদরের গান শুনে আর্দ্রের দৈবাৎ আবার মনে হলো লাইনটা, ‘তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা।’

টিকলি ঘুমিয়ে পড়েছে। ইশশ…কি মোক্ষম সময় ছিলো আদরের কণ্ঠে গান শোনার। কিন্তু শুনতে পেলো না। ভাগ্যটাই বুঝি খারাপ! টিকলি ঘুমিয়ে পড়েছে নিশ্চিত হয়ে আদর মুচকি হাসলো। গলা ছেড়ে ধরলো গানের পরের লাইনগুলো।

,

গাড়ি থেমেছে ঠিক সেই স্থানে যে স্থান থেকে শুরু হয়েছিলো যাত্রা। আর্দ্র ব্যাগ বের করছিলো গাড়ির ব্যাক সাইড থেকে। টায়রা পাশে দাঁড়িয়ে হাই তুলতেই ধমকে আর্দ্র বলল,

‘আরে আর কত ঘুমাবেন? এই ঠেলাগাড়ি মার্কা শরীর নিয়ে একটু হলেও তো হেল্প করতে পারেন নাকি? মনে মায়া দয়া নাই?’

টায়রা আবার হাই তুললো। নিজের ব্যাগটা হাতে নিয়ে দু কদম এগিয়ে গিয়েও পেছন ফিরে আসলো। আস্তে করে বলল, ‘শুনুন।’

টায়রার হঠাৎ এতো সুন্দর ডাকে আর্দ্র স্তব্ধ হয়ে গেলো।বোকা বোকা চোখে তাকিয়ে থাকতেই টায়রা ঠোঁট টিপে হেসে বলল, ‘বধো মানে বোকা এজ লাইক এজ রামছাগল।’

আর্দ্র চোখ গরম করে তেজিয়ান দৃষ্টিতে তাকালো৷ আঙ্গুল তুলে শাসানোর ভঙ্গিতে বলল, ‘এক মাঘে শীত যায় না ফুটা টায়ার।’

টায়রা বাতাসে চুল উড়ানোর ভঙ্গিতে পা বাড়ালো সামনের দিকে। টিকলি ব্যাগ হাতে এগিয়ে যাচ্ছিলো। আদর গাড়িতে ঠেস দিয়ে টিকলির যাওয়ার পানেই চোখ রেখেছিলো। একটু কি অশ্রুসিক্ত ছিলো চোখদুটো? জ্বলজ্বল করছিলো কি চোখের ভেতরের মধ্যিখানের মনিদুটো? কয়েক কদম যেতেই টিকলি পেছন ফিরে তাকালো। আলতো করে মাথা দুলাতেই আচম্বিতে চশমার আড়ালে পড়ে গেলো কয়েক ফোঁটা নীর। শীতল অম্বু। গালে ছেপে গেলো বারির দাগ। টিকলি ব্যাগ মাটিতে ফেলে এক দৌড়ে আদরের কাছে গেলো। আদরের গভীর সন্নিপাতিক হতেই আদর রুদ্ধ গলায় খুব আস্তে করে বলল,

‘একবার জড়িয়ে ধরবেন?’

টিকল যেনো এই কথাটির ই অপেক্ষায় ছিলো। পা উঁচু করে জড়িয়ে ধরলো আদরের গলা। তৃতীয় বার এতোটা কাছে আসা কিন্তু প্রথমবার এতোটা নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করা। জড়িয়ে ধরা। নিজের করে রাখার আকুলতা।

‘আমাদের কি আবার দেখা হবে ডাক্তার? এভাবে? কিছু সুন্দর মুহুর্ত একসাথে কাটানো হবে? ইশশ..ডাক্তার আপনি মস্ত বড় ভুল করে ফেলেছেন। সময় গুলো মুঠোবন্দী করে রাখেন নি। রাখলে আমার আর যেতে হতো না।’

আদর হালকা গলায় হাসলো৷ গম্ভীর, কঠোর, স্বল্পভাষী ভারিক্কি মনের আদরেরও চোখের পাপড়ি ভিজে উঠলো। সত্যি কি দেখা হবে? নাকি সামনে ওত পেতে আছে অন্যরকম ভয়ানক কিছু? টিকলিকে আরেকটু শক্ত করে ধরে আদর কাঁপা কাঁপা গলায় বাচ্চামো করে বলল,

‘আই এম সরি। আদর খুব খুব সরি। অতীতে যা খারাপ হয়েছে তার জন্য সরি। ভবিষ্যতে যা খারাপ হবে তার জন্যেও সরি।’

______________________________

দিনের অগ্রভাগের রূর্যকিরণে চারিপাশ পরিষ্কার। রাতে বৃষ্টি হয়েছে অথচ এখন ভ্যাপসা গরম। গরমে ভিজে উঠেছে ঘাড় গলার কিছু অংশ। খোলা চুল লেপ্টে আছে গলার সাথে৷ শায়লা আক্তার মেয়ে পালানোর শোকে চোখ মুছতে মুছতে কোনো কারণে মেয়েদের ঘরে আসছিলেন। ঘরে পা রাখতেই তিনি বিস্ময়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। মুখের বুলি হারিয়ে ফেললেন অজ্ঞাত ভাবে। তাকে যেনো বোবায় ধরলো। হাজার চেষ্টা করেও কথা ফোটাতে পারলেন না মুখে। তিনি খানিকটা অচেতন পায়ে হেটে মেয়েদের বিছানার সামনে গেলেন। নিজের গায়ে হালকা চিমটি কাটতেই দেখলেন বিছানায় সত্যি তার দুই মেয়ে ঘুমিয়ে আছে। তিনি চমকে উঠলেন। রাতের আধারে পালিয়ে গেলো। আবার পরের রাতের আধারেই ফিরে এলো? শায়লা আক্তার সকল ভাবনার সুতো ছিড়ে টায়রার গায়ে ধাক্কা দিলেন। টায়রা চোখ মুখ কুচকে বিরক্তি নিয়ে উঠে বলল,

‘কি হয়েছে মা?’

‘তোরা কে?’

টায়রা চোখ খুলে মাকে দেখে আবার চোখ বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পরলো। ঘুমিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘তোমার মেয়ে।’

শায়লা আক্তার তৎক্ষনাৎ চিতকার দিলেন। গলা ফাটানো চিৎকারে বলে উঠলেন, ‘তোরা কীভাবে এলি?’

শায়লা আক্তারের চিৎকারে টিকলি জেগে উঠলো। টায়রা যথাসম্ভব বিরক্তিকর মুখে উত্তর দিলো, ‘আমরা আবার কখন কোথায় গিয়েছিলাম? আমরা তো এখানেই ছিলাম।’

শায়লা আক্তার অগ্নি সহযোগী চোখে তাকিয়ে টায়রার গায়ে থাপ্পড় মেরে বললেন, ‘উঠ। উঠ বলছি। মজা হচ্ছে আমার সাথে?’

মায়ের অত্যাচারে টায়রা উঠে বসলো। ঠোঁট উলটে বলল,

‘সত্যি বলছি মা। আমরা কোথাও যাইনি। আমরা তো কালকে বাথরুমে লুকিয়ে ছিলাম। তোমাদের সাথে চোর পুলিশ খেলছিলাম। দেখলাম তুমি আর বাবা ধরতে পারো কিনা। কিন্তু আপসোস তোমরা ধরতে পারলে না। তাই রাতের বেলা বাথরুম থেকে চুপিচুপি বেরিয়ে এলাম। তারপর ঘুমিয়ে পড়লাম।’

শায়লা আক্তারের চিৎকারে দরজায় এসে দাড়িয়েছেন জামিলুর রেজা। মেয়েদের দেখে রীতিমতো তার চোখ কপালে। টায়রার মুখে আপসোসের দুঃখী ছায়া। শায়লা আক্তার টায়রার মাথায় থাপ্পড় মারলেন। রাগী গলায় বললেন,

‘আরেকবার আমার সাথে ফাইযলামি করলে বাসা থেকে বের করে দিবো।’

‘বিয়ে দিয়ে তারপর বের করো। এখন বের করলে আমি কোথায় যাবো বলো? আমি তো তোমার মেয়ে একটু তো মায়া দয়া করো।’

শায়লা আক্তার চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘টায়রা, তোর গালে আমি ঠাস করে চর মারবো। ধৈর্য্যের বাধ ভেঙে দিছস। বেয়াদব। ঠিকমতো বল কখন এলি তোরা? কীভাবে এলি?’

টায়রার দাঁত কেলিয়ে আবারো দায়সারা জবাব,

‘যেভাবে গিয়েছিলাম সেভাবেই ফিরে এসেছি।’

চলবে❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here