#সুপ্ত_প্রেমাসুখ
#ইলোরা_জাহান_ঊর্মি
#পর্বঃ৩২
ঘড়িতে আটটা চব্বিশ বাজে। পড়ার টেবিলে পাশাপাশি বসে আছে ডালিয়া আর ইলোরা। ইলোরা বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়ে চলেছে আর ডালিয়া গালে হাত দিয়ে চিন্তিত মুখে বসে আছে। ইলোরা বই বন্ধ করে তীক্ষ্ণ চোখে ডালিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,“কে মরছে তোর? এমন মূর্তির মতো বসে আছিস কেন?”
ডালিয়া চিন্তিত কন্ঠে বলল,“কী করব বল? তুই যা শুনাইলি আজকে। আমার মাথার মধ্যে ওই কথাই ঘুরপাক খাচ্ছে।”
“এসব যেন কেউ না জানে।”
“কতদিন আড়াল করে রাখবি?”
“ওর মাস্টার্স শেষ না হওয়া পর্যন্ত। বিজনেসের দায়িত্ব না নেয়া পর্যন্ত আঙ্কেল বিয়েতে রাজি হবেন না। উনি খুব কঠিন মানুষ।”
“তার আগে যদি কোনোভাবে সবাই জেনে যায়?”
ইলোরা চিন্তিত কন্ঠে বলল,“জানি না কী আছে কপালে।”
ডালিয়া বলল,“এমনও তো হতে পারে সম্পর্কটা কেউ মেনে নিল না। তখন কী করবি?”
ইলোরার চোখ দুটো ছলছল করে উঠল। এই অনিশ্চয়তার উপরই তো সম্পর্কটা বেঁচে আছে। এমন চিন্তা তারও হয় প্রতিনিয়ত। সে ধরা গলায় বলল,“ও আমার হাসবেন্ড ডালিয়া। ছাড়ব কীভাবে?”
ডালিয়া মলিন হেসে বলল,“তোরা দুজনই নিজের ফ্যামিলিকে খুব ভালোবাসিস। কেউই ফ্যামিলির বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করিস না। তাই ফ্যামিলি তোদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে তখন তোরা কেউই কিছু করতে পারবি না বোন।”
ইলোরার চোখ ফেটে জল গড়িয়ে পড়ল। হঠাৎ করেই হারানোর ভয় মনের মধ্যে জেঁকে বসল। ঐ মানুষটাকে সে কিছুতেই ছাড়তে পারবে না। সে চেয়ার ছেড়ে উঠে বেলকনিতে চলে গেল। বুকের ভেতর প্রচন্ড দহন হচ্ছে। ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে। সে কীভাবে ছাড়বে ঐ মানুষটাকে? আরও এক মাস আগে ছাড়ার কথা বললে সে হয়তো এতটা কষ্ট পেত না। কিন্তু এখন ঐ মানুষটা তার জীবনের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে পড়েছে। মুখে না বললেও মানুষটার পাগলামিই বলে দেয় তার ভালোবাসা কতটা প্রখর। তার সাথে প্রতিদিন কথা বলাটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। কন্ঠস্বর শুনলে মনে প্রশান্তি মেলে। ভার্সিটিতে একবার তাকে দেখার জন্য মন কেমন আঁকুপাঁকু করে। সে নিজেও বোঝে মানুষটাকে সে নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছে। তাকে ছাড়লে সে কিছুতেই ভালো থাকতে পারবে না। ইলোরা দুহাতে মুখ চেপে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। ডালিয়া ভেতর থেকে ইলোরার কান্নার শব্দ শুনতে পেলেও এগিয়ে গেল না। এই কান্না থামানোর মতো কোনো সান্ত্বনার ভাষা তার জানা নেই। থাকলে অবশ্যই এগিয়ে যেত। টেবিলের উপর ইলোরার ফোনটা স্বশব্দে বেজে উঠল। ডালিয়া ফোনের দিকে না তাকিয়ে গলা উঁচু করে ডেকে বলল,“ইলো,তোর ফোন বাজছে।”
ইলোরা জানে কে ফোন করেছে। দ্রুত চোখ মুছে সে রুমে ঢুকে টেবিলের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে আবার বেলকনিতে চলে গেল। ইলোরার ভেজা লাল চোখের দিকে তাকিয়ে ডালিয়া ছোটো একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ইলোরা নিজের গলা পরিষ্কার করে ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলল। ওপাশ থেকে এরেন বলল,“কী করছিলেন বেগম সাহেবা?”
ইলোরা গলাটা স্বাভাবিক করে উত্তর দিলো,“পড়ছিলাম। আপনি?”
এরেন হতাশ গলায় বলল,“আবার আপনি?”
“সরি,ভুল হয়ে যায়। আর বলব না।”
তারপর আর এরেনের কোনো সাড়াশব্দ নেই। ইলোরা বুঝতে পারল না কী হয়েছে। মিনিট খানেক পর সে আবার হ্যালো বলতেই এরেন গম্ভীর গলায় বলল,“কী হয়েছে তোমার?”
ইলোরা হাসার চেষ্টা করে বলল,“কই? কিছু হয়নি তো।”
“আমার তো মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েছে।”
“বলছি তো কিছু হয়নি। তোমার ভুল মনে হচ্ছে।”
“বলেছি না আমার থেকে কিছু লুকানোর চেষ্টা করবে না? তোমার থমথমে কন্ঠই বলে দিচ্ছে কিছু একটা নিশ্চয়ই হয়েছে।”
ইলোরার গাল বেয়ে আবার জল গড়িয়ে পড়ল। সে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করল। কান্নার শব্দ শুনলেই এরেন রেগে যাবে। ওপাশে আবার কিছুক্ষণ নীরবতার পর এরেন গম্ভীর আদুরে গলায় ডাকল,“ইলোনি,কী হয়েছে বলবে না আমায়?”
ইলোরা আর পারল না নিজেকে সামলাতে। দেয়াল ঘেঁষে নিচে বসে বাঁ হাতে মুখ চেপে ধরে আবার কেঁদে ফেলল। ফোনের ওপাশে এরেনের বুকটা ধক করে উঠল। ইলোরার কান্না থামাথামির নাম নিচ্ছে না। অস্থির হয়ে উঠল তার মন। তবু সে নিজেকে সামলে শান্ত স্বরে বলল,“কান্না থামাও ইলোনি। মিথি আর আন্টি তোমার কাকার বাসা থেকে ফিরেছে?”
ইলোরা ফুঁপিয়ে উঠে ছোটো শব্দ করল,“উঁহু।”
“আঙ্কেল?”
“শরীর ভালো না তাই ঘুমাচ্ছে।”
“আচ্ছা। কান্না থামাও। আমি কিছুক্ষণ পর কল করছি। ওকে?”
ইলোরা কোনো উত্তর দিলো না। এরেন ফোন কেটে দিলো। ইলোরা ফোনটা পাশে রেখে চোখ মুছলো। মুছতে না মুছতেই আবার জল গড়িয়ে পড়ল। তখনই ডালিয়া এসে তার পাশ ঘেঁষে বসে পড়ল। ইলোরা সেদিকে তাকাল না। ডালিয়াও সামনের দিকে দৃষ্টি রেখেই বলল,“ভাইয়াকে খুব ভালোবাসিস তাই না?”
ইলোরা জবাব দিলো না। ডালিয়া হঠাৎ বলে উঠল,“তাহসিন এখনও ওর মনের কথা আমাকে জানায়নি। হয়তো জানাবে। একটু একটু করে আমিও ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছি। আচ্ছা? কখনও কোনো পরিস্থিতিতে যদি আমরা আলাদা হয়ে যাই তাহলে এতটাই কষ্ট হবে তাই না?”
ইলোরা এবার ধরা গলায় জবাব দিলো,“তাহসিন কখনও তোকে ছাড়বে না ডালিয়া। এতদিনে এটুকু অন্তত বুঝতে পেরেছি।”
ডালিয়া আর কোনো কথা বলল না। দুজনই চুপচাপ বসে দুজনের মনের মানুষকে ভাবতে লাগল। এভাবে অনেকটা সময় কেটে গেল। অথচ কারোর মুখেই কথা নেই। ইলোরা চোখ বন্ধ করে এরেনকে অনুভব করার চেষ্টা করল। খুব ইচ্ছে করছে মানুষটাকে একবার আঁকড়ে ধরতে। তার বুকে মাথা রেখে সব ভয়কে জয় করতে। টানা বিশ মিনিট পর আবার এরেনের ফোন এল। ইলোরা পাশ থেকে ফোন উঠিয়ে রিসিভ করে কানে ধরতেই এরেন বলে উঠল,“গেটের কাছে আসো।”
ইলোরা অবাক হয়ে বলল,“মানে? এখন গেটের কাছে যাব কেন? এক মিনিট,এখন এটা বলো না যে তুমি বাড়িতে চলে এসেছ।”
“বলব কী? এটাই করেছি।”
“পাগল হয়েছ তুমি? ভাইয়া এখন এলে কী হবে?”
“ও আড্ডায় আছে। বাড়ি ফিরতে আরও এক দেড় ঘন্টা লাগবে। তাড়াতাড়ি আসো।”
“আমার ভয় লাগছে। তুমি……।”
ডালিয়া পাশ থেকে সবটাই বুঝতে পারল। সে ইলোরার এক হাতে মৃদু চাপ দিয়ে বলল,“যা। এই রাতবেলা ভাইয়া ছুটে এসেছে তোর জন্য। ফিরিয়ে দিস না।”
ইলোরা অসহায় মুখে ডালিয়ার দিকে তাকিয়ে তারপর আবার বলল,“আসছি।”
ইলোরা ফোনটা ডালিয়ার হাতে দিয়ে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে বাবার রুমে উঁকি দিলো। বাবা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। ইলোরা ধীর পায়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল। গেটের কাছাকাছি পৌঁছেই দেখল অদূরেই এরেন দাঁড়িয়ে আছে। গায়ে একটা শাল জড়ানো। এরেন তাকে দেখে কয়েক পা এগিয়ে এল। তারপর ইলোরার এক হাত ধরে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে মুখোমুখি দাঁড়াল। ইলোরা অন্যদিকে তাকিয়ে রইল। কেঁদেকেটে তার চেহারার যা অবস্থা হয়েছে। না জানি এরেন এখন কত বকা দিবে! এরেন শান্ত দৃষ্টিতে ইলোরার দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বলল,“তোমার জামাই মরছে যে কান্না করে চোখ মুখ ফুলিয়ে বসে আছো?”
ইলোরা কথাটা এড়িয়ে নিচু স্বরে বলল,“এই রাত বেলায় কেন এসেছো?”
“বউ কেঁদেকেটে বালিশ ভেজাবে আর আমি শান্তিতে ঘুমাব? কাঁদলে কি শান্তি পাও?”
“কিছুটা হলেও তো পাই।”
এরেন নিজের বুকে ইশারা করে বলল,“তাহলে এই বুক আছে কাকে শান্তি দেয়ার জন্য?”
ইলোরা ছলছল চোখে এরেনের মুখের দিকে তাকাল। মানুষটা তাকে আবার কাঁদিয়ে ছাড়বে। এরেনের মুখটা কেমন যেন বিষন্ন লাগছে। এরেন বড়ো একটা শ্বাস নিয়ে দু’পা এগিয়ে এসে ইলোরার মুখটা নিজের হাতে নিয়ে ধীর গলায় বলল,“কী এমন হলো যে আমার ইলোনি এভাবে কান্নাকাটি করল?”
এরেন এতটা কাছে এই প্রথম এল। এই স্পর্শটাও ইলোরার কাছে প্রথম। রনিদের বাড়িতে সে জ্ঞান হারানোর পর এরেন তাকে কোলে তুলেছিল। কিন্তু তখন সে অনুভব করতে পারেনি। তারপর তার জ্ঞান ফেরার পর একবার হাত ধরেছিল। কিন্তু তখন তার চোখেমুখে দুশ্চিন্তা ছিল। আর আজ এই স্পর্শে ভালোবাসা স্পষ্ট। ইলোরা চোখ বন্ধ করে ভালোবাসার স্পর্শ অনুভব করল। এরেন আদুরে গলায় বলল,“বলো কী হয়েছে?”
ইলোরা যেন একটা ঘোরের মধ্যে চলে গেল। সে হঠাৎ এরেনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার বুকে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে উঠল। এরেন স্তব্ধ হয়ে গেল। কী এমন হলো যে এই লাজুক মেয়েটা এভাবে তার বুকে আশ্রয় খুঁজতে এল। এরেন এক হাত ইলোরার পিঠে ঠেকিয়ে আরেকহাতে আলতো করে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,“এভাবে বুকে আছড়ে পড়ে কাঁদলে যদি আমার হার্ট অ্যাটাক হয় তার দায় কে নেবে শুনি?”
ইলোরা এরেনের শালটা খামচে ধরল। কিছুক্ষণ পর কিছুটা শান্ত হয়ে নাক টেনে বলল,“যদি আমাদের কারোর ফ্যামিলি সম্পর্কটা মেনে না নেয় তাহলে কি তুমি আমাকে ছেড়ে দেবে?”
এরেন এতক্ষণে বুঝতে পারল প্রেয়সীর কান্নার কারণ। সে দুহাতে ইলোরার মুখটা বুক থেকে তুলে চোখে চোখ রেখে বলল,“তুমি আমার প্রেমিকা নও যে ইচ্ছে হলেই ছেড়ে দেবো। তুমি আমার স্ত্রী ইলোনি। তোমাকে ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। তুমি চাইলেও আমি তোমাকে ছাড়ব না। স্ত্রী ভালোবাসার জন্য,ছেড়ে দেয়ার জন্য না।”
“পরিস্থিতি কি তা মানবে?”
“ছাড়ার হলে আজ প্রায় পাঁচ মাস পরেও আমরা স্বামী-স্ত্রী থাকতাম না। অনেক আগেই ছেড়ে দিতাম। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমি তোমার সাথে কাটাতে চাই ইলোনি। এতদিনেও তুমি সেটা বুঝতে পারলে না?”
ইলোরা মাথা নিচু করে ফেলল। এরেন ইলোরার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,“আর এক ফোঁটা পানিও যেন না গড়ায় চোখ থেকে। চোখের পানি অনেক মূল্যবান। সামান্য ভয়ে তা ব্যয় করো না। এতটা আবেগী হওয়া ঠিক না ইলোনি। নিজেকে সামলাতে শেখো। এতটুকুতে ভেঙে পড়লে কঠিন পরিস্থিতি সামালাবে কীভাবে?”
ইলোরা চুপচাপ এরেনের বুক বরাবর তাকিয়ে রইল। এরেন হঠাৎ ইলোরার কানের কাছে মুখ এনে ধীর গলায় বলল,“কেউ যে আবেগের বশে আমার এতটা কাছে চলে এসেছে তা কি তার খেয়াল আছে? এখন যদি আমিও আবেগের বশে আদর করে দেই তাহলে আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই।”
ইলোরা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। সত্যিই আবেগের বশে সে যে এরেনের এতটা কাছে চলে এসেছে খেয়ালই ছিল না। সে দ্রুত এরেনকে ছেড়ে সরে যেতে চাইলেই এরেন দুহাতে তার কোমড় ধরে আরও কাছে টেনে নিল। ইলোরা লজ্জায় চোখ খিঁচে বন্ধ করে রাখল। তার লাজুক মুখের দিকে তাকিয়ে এরেন মুচকি হাসল। মৃদু কন্ঠে বলল,“চোখ খোলো।”
ইলোরা ডানে বায়ে মাথা দোলালো। এরেন ফিসফিস করে বলল,“তোমার ঠোঁট…….……।”
কথাটা শেষ না হতেই ইলোরা ফট করে চোখ খুলে চোখ বড়ো বড়ো করে তাকাল। তাকিয়ে দেখল এরেন ঠোঁট টিপে দুষ্টু হাসছে। ইলোরার লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করল। সে লাজুক হেসে মাথা নিচু করে বিড়বিড় করে বলল,“অসভ্য।”
এরেন বলল,“তুমি যে ইচ্ছে করে আমাকে জাপটে ধরলে তখন? তুমিও তো দেখছি অসভ্য হয়ে গেছো।”
ইলোরা এরেনের থেকে সরার চেষ্টা করে বলল,“ছাড়ো। কেউ দেখে ফেললে?”
এরেন শক্ত করে আঁকড়ে ধরে বলল,“তুমি যখন আমার কাছে এসেছ তখন এটা মাথায় আসেনি?”
ইলোরা অসহায় মুখে বলল,“আমার তো খেয়াল ছিল না।”
এরেনও ইলোরার মতো করে বলল,“আমারও খেয়াল নেই।”
“লজ্জা নেই তোমার?”
“খুব আছে। কিন্তু আমার লজ্জাবতী বউ যখন ইচ্ছে করে কাছে এসেছে তখন একটু নির্লজ্জ হতে দোষ কী? আমারই তো বউ। তাছাড়া প্রথম কাছে আসাটা এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে?”
ইলোরা গাল ফুলিয়ে অন্যদিকে তাকাল। এরেন মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার লজ্জাবতীকে দেখতে ব্যস্ত হলো। কিছুক্ষণ পর ইলোরা এরেনের হাতে চিমটি কেটে বলল,“আব্বু জেগে আমাকে না দেখতে পেলে সর্বনাশ হবে।”
এরেন কিছু একটা ভেবে ইলোরাকে ছেড়ে দিয়ে বলল,“আচ্ছা যাও।”
ইলোরা একবার এরেনের দিকে তাকিয়ে পেছন ঘুরে এক’পা বাড়াতেই এরেন তার একহাত ধরে হেঁচকা টানে আবার কাছে টেনে নিল। ইলোরা থতমত খেয়ে গেল। এরেন ইলোরার কপালে ছোট্ট একটা চুমু খেল। আবেশে ইলোরা চোখ বন্ধ করে ফেলল। এরেন তাকে ছেড়ে দিয়ে দু’পা পিছিয়ে মুচকি হেসে বলল,“এবার যাও।”
ইলোরা লজ্জায় আর এরেনের দিকে তাকাল না। এক ছুটে বাড়ির ভেতরে চলে গেল। এরেন ইলোরার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। ইলোরা দৌড়ে রুমে ঢুকে ঠাস করে দরজা বন্ধ করে হাঁপাতে লাগল। লজ্জায় তার মুখ লাল বর্ণ ধারণ করেছে। মানুষটা কান্না থামাতে এসে এভাবে লজ্জায় ফেলে দেবে কে জানত? চোখ বন্ধ করে ইলোরা এরেনের স্পর্শটা অনুভব করে লাজুক হাসল। তারপর চোখ খুলে সামনে তাকাতেই দেখল ডালিয়া বিছানায় বসে ভ্রুকুটি করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। ইলোরা নিজেকে সামলে অপ্রস্তুত হাসল। ডালিয়াও ইলোরার মতো হেসে বলল,“আজকাল কান্নার পর মানুষ লজ্জায় লাল হয় জানতাম না তো। দুলাভাই কী এমন জাদু করল?”
ইলোরা ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়িয়ে বলল,“তাহসিনকে জিজ্ঞেস করিস জামাইরা কী জাদু করে।”
ডালিয়া আহাম্মকের মতো তাকিয়ে থেকে বিড়বিড় করে বলল,“বিয়ে করে বেশি পেকে গেছে মেয়েটা।”
চলবে……………….🌸