ধর্ষিতা বউ পর্ব-১৮

0
904

#ধর্ষিতা_বউ
#রাবেয়া_সুলতানা

#১৮

আয়ান প্রাপ্তির দিকে তাকিয়ে দেখে, বুজা যাচ্ছে মেয়েটা অনেক লজ্জা পেয়েছে।আসলে আপনি কিছু মনে করবেন না।আপনি শাড়ী চেঞ্জ করেছেন বলে ভাবী এই কথা বলেছে।

প্রাপ্তি কিছু না বলেই খাটে একপাশে গিয়ে বসলো।
আয়ান-আপনি খাননি কেনো? চলেন এখন খাবেন।
প্রাপ্তি কোনো কথা বলছে না দেখে আয়ান বললো, কি হলো খাবেন না? আর হে আমি কিন্তু এতো আপনি আপনি করতে পারবোনা। আমি তুমি করেই বলবো।
প্রাপ্তিকে চুপ থাকতে দেখেই আয়ান বললো হুম বুজেছি চুপ থাকা মানে সম্মতির লক্ষণ।
তাহলে এইবার খেয়ে নাও।খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো। সারাদিন তোমার উপর অনেক ধকল গেছে।

প্রাপ্তি আয়ানের কথা যতো শুনছে ততো অবাক হচ্ছে।আয়ান বার বার তার ধারণা গুলো ভুল প্রমাণ করছে।এই ছেলেকি সবার থেকে আলাদা নাকি? ছেলেদের প্রতি আমার যা ধারণা এই দেখছি পুরোই উল্টো।
মনে ভিতর তাচ্ছিল্য হাঁসি দিয়ে নাকি আমায় দেখাছে?সে সবার থেকে আলাদা।

আয়ান খাবারের প্লেট প্রাপ্তির সামনে ধরতেই প্রাপ্তি চমকে উঠে প্লেটের দিকে তাকালো।এই দেখছি মহা মুশকিল পড়া গেলো।না খাইয়ে দেখছি ছাড়বেনা।পেটেও তো অনেক ক্ষুধা সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি। এর ছেয়ে বরং খেয়েই নি।প্রাপ্তি খাবার প্লেট টা হাতে নিয়েই আয়ানের দিকে একবার তাকিয়ে খেতে শুরু করলো।আয়ান প্রাপ্তির খাওয়া দেখে নিজের খাওয়া বন্ধ করে মুখে হাত দিয়ে মুছকি মুছকি হাঁসছে।
প্রাপ্তি খাওয়া শেষ করে আয়ানের দিকে নজর পড়তেই (মনে মনে) এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছে। মার্বেলের মতো চোখ নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে মেয়ে মানুষ এই জন্মই দেখে নাই।

আয়ান হালকা একটু কেশে এইযে, মিসেস আয়ান, তুমি আমার সাথে কথা না বলে এইভাবেই থাকবে?
প্রাপ্তি কোনো কথার আনসার না দিয়ে বার বার খাটের দিকে তাকাচ্চিলো,
প্রাপ্তির তাকানো দেখে আয়ান বুজতে পেরে, তুমি কি ভেবেছো তোমার সাথে শুইলে আমি আমার অধিকার ফলাবো তোমার উপর? (তাচ্ছিল্য একটা হাঁসি দিয়ে) কখনোই না।আয়ানের মন যদি চায় তোমাকে ছুঁয়েও দেখবে না তাহলে সে সত্যিই তোমাকে ছুঁয়ে দেখবেনা।তুমি নিচিন্তায় ঘুমাতে পারো।
প্রাপ্তি সত্যি সত্যি একপাশ হয়ে শুয়ে পড়লো।
আয়ান উঠে হাতটা ধুয়ে এসে খাটের আরেক পাশে ফোন নিয়ে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লো।ফোন নিয়ে বন্ধুদের এসএমএস এর আনসার দিতে দিতেই রাতের অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলো।হঠাৎ প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই হালকা মৃদু আলোতে প্রাপ্তিকে পুরো অপ্সরী মতো লাগছে।ঘুমন্ত মানুষকে এতো সুন্দর দেখায় আয়ান তা আজ প্রথম প্রাপ্তিকে দেখে বুজলো।নিষ্পাপ শিশুদের মতো কি সুন্দর করে ঘুমাছে।হয়তো প্রাপ্তি আমায় বিশ্বাস করেছে না হলে এতো নিচিন্তে একটা মেয়ে কখনোই ঘুমাতো না।বিশ্বাস কথাটা মনে আসতে আয়ানের মনে শান্তির রেখা ফুটে উঠলো।ফোনটা পাশে রেখে ঠিক করে শুয়ে প্রাপ্তির দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।আয়ানের এইভেবে ভালোলাগছে যাকে সে প্রথম দেখায় ভালোবেসে ছিলো তাকেই সে তার জীবনের সাথী হিসেবে পেয়েছে।থাকুক না প্রাপ্তির হাজারটা সমস্যা। সব সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে সে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে পড়লো তার মনে নেই।
প্রাপ্তি ফজরের আজানের শব্দ শুনেই উঠে ফজরের নামাজ আদায় করে নিলো। জায়নামাজ টা উঠিয়ে রাখতে গিয়ে আয়ানের দিকে চোখ পড়তেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে প্রাপ্তি।একটা ছেলেকে ঘুমালে এতো মায়া লাগে সে কখনো দেখেনি।প্রাপ্তির আয়ানের থেকে চোখ ফিরাইতে ইচ্ছে করছেনা।আচ্ছা এই মানুষটা কি আমায় সত্যি ভালোবেসে বিয়ে করেছে নাকি সবার সামনে মহৎ সাজার চেষ্টা করছে? দেখতে তো এতোটা খারাপ বুজা যায় না।অবশ্য দেখা না দেখায় কি যায় আসে।আয়ান এই পাশ থেকে ওপাশ ফিরতেই প্রাপ্তি তাড়াতাড়ি এসে নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লো। একটু পর দরজা নক করা শব্দ পেয়ে উঠে বসে ভাবছে এতো সকাল বেলা কে আসলো আবার।ভাবী নয়তো? ও আল্লা এইবার এসে আবার কি বলে তুমিই ভালো জানো। প্রাপ্তি খাট থেকে নেমে গিয়ে আস্তে করে দরজাটা খুলে দিয়ে দেখে আয়ানের মা।প্রাপ্তি সুস্থির নিশ্বাস পেলে মুছকি হাঁসি দিয়ে মনে মনে ভাবছে আল্লা এইযাত্রায় বেঁচে গেলাম।

আয়েশা বেগম প্রাপ্তির হাঁসি দেখে নিজেও হেঁসে তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না এখন ঘুম থেকে উঠেছো?

প্রাপ্তি -জ্বী মা! উঠে ফজরের নামাজ আদায় করলাম।
কথাটা শুনে আয়েশা বেগম প্রাপ্তিকে জড়িয়ে ধরে লক্ষ্মী মেয়ে, আমি জানতাম আমার আয়ান কখনো কোনো ভুল করতে পারেনা।আমার আয়ান তার যোগ্য বউকেই ঘরে এনেছে।
যাইহোক কাজের কথাটা বলি, আমি এইখানে এসেছি আয়ানের ছোটো কাকা কাকী এসেছে।ওরা তো আমেরিকায় থাকে তাই আসতে দেরী হয়ে গেলো। আয়ান উঠতে অনেক দেরী আছে মহারাজের ১০.০০টা ছাড়া ঘুম ভাঙবে না।চলো তোমাকে ওদের সাথে পরিচয় করিয়েদি। প্রাপ্তি পা বাড়াতে যাবে তখনি আয়ান! আয়ান! বলে একটা মেয়ে রুমে ঢুকলো। প্রাপ্তিকে কিছু না বলেই আয়ানের কাছে চলে গেলো, এমন ভাব করছে মনে হচ্ছে প্রাপ্তিকে সে দেখেইনি।কি সব ছেলেদের মতো পোশাক পরে আছে।যাকে এককথায় মডার্ন মেয়ে বলে।

আয়েশা বেগম -(প্রাপ্তি মেয়েটার দিকে বিরক্তিকর ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে) ওহ্ প্রাপ্তি ওর কথা তোমাকে বলায় হয়নি।ও হচ্ছে আয়ানের ছোটো কাকার একমাত্র মেয়ে,আমেরিকা থাকে।নাম অধরা,আয়ানের খুব ভালো বন্ধু।

অধরা -আয়ান!! তুমাকে আমি এইভাবে ডাকার পরেও তুমি ঘুমাবা?

আয়ান ঘুম ঘুম চোখে অধরা দিকে তাকাতে চমকে উঠে তড়িঘড়ি করে দাঁড়িয়ে অধরা তুমি!কখন এলে?

আয়ান দাঁড়াতেই অধরা আয়ানকে জড়িয়ে ধরে তোমাকে অনেক মিস করছি আমি।
আয়ানের খেয়ালি নেই তারা ছাড়াও এই রুমে কেউ আছে আয়ানে প্রাপ্তির দিকে চোখ পড়তেই,,,,,

চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here