অনুভূতিতে তুমি পর্ব-৩

0
4639

#অনুভূতিতে_তুমি 💖
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৩

সূর্য আকাশে উঁকি দিয়েছে অনেকক্ষণ আগে। ঘরটা পর্দা দিয়ে ঢাকার কারনে আবছা আবছা আলো এসে ঢুকছে রুমে। চারদিক নিরব শান্ত। মালি হয়তো ফুলের গাছে পানি দিচ্ছে। সেই আওয়াজ কানে এসে ভাসছে! রুমটার নিচেই বাগান। ঘুম ভেঙেছে খানিকক্ষণ আগেই কিন্তু চোখ মেলতে চাইছে না। এলার্ম ঘড়ির আওয়াজে চোখ মেলে তাকানোটা এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। দু’চোখ বুঝে শুয়ে আছে। কারো নড়াচড়া’র শব্দ আসছে কানে। বিছানা থেকে কেউ নিচে নামছে। কে? অর্ণব বুঝি! সে ছাড়া কে আর আছে এই রুমে!

পর্দা সরানোর আওয়াজ এলো। আলো এবার সম্পূর্ন ঘরে প্রবেশ করল। চোখের দু পাতা মিন মিন করতে লাগল। অর্ণব আবারো এসে বসল বিছনায়। ছোট ছোট্ট হাত দিয়ে মেহেরিন’র গালে হাত রাখল। চোখ মিনি মিনি করছে তার। নিজের দুই উষ্ণ ছোট ঠোঁট দ্বারা চুমু খেলো মেহেরিন’র মাথায়। বলে উঠল,

“গুড মর্নিং মাম্মি!

মেহেরিন চোখ না মেলেই হালকা হাসল। ঘড়ির এর্লাম বাজতেই চোখ মেলল সে। চোখ মেলে প্রথমেই তার চোখে পড়ল অর্ণবের স্নিগ্ধ হাসি টা! কি মায়াবী হাসি এটা! মেহেরিন’র মুখেও হাসি ফুটল। সে ওঠে অর্ণব এর মাথায় হাত বুলিয়ে কোলে তুলে নিল তাকে। মাথায় একটা চুমু খেয়ে বলল,

“গুড মর্নিং অর্ণ সোনা! তা আজ তো তুমি মাম্মীর আগে ঘুম থেকে উঠে গেল।

অর্ণব মাথা নাড়ল। মেহেরিন অর্ণবের দু গাল আলতো করে ধরে হাসল। দরজায় কেউ কড়া নাড়ল। মেহেরিন’র অনুমতি পেয়ে ঘরে এলো সে।

“মিস মারিয়া!

“ইয়েস ম্যাম!

“অর্ণব কে নিয়ে ফ্রেস করিয়ে দিন আমি আসছি!

“ইয়েস ম্যাম!

মেহেরিন অর্ণবের দিকে তাকিয়ে বলল,
“অর্ণ তুমি মিস মারিয়ার সাথে যাও। মাম্মী আসছি!

বাধ্য ছেলের মতো আবারো মাথা নাড়ল সে। মিস মারিয়া এসে কোলে করে নিচে নামাল তাকে। তার পড়নে সাদা রঙের নাইট ড্রেস টা বেশ মানিয়েছে তাকে। সাদার মাঝে কার্টুনের বেশ কিছু আঁকাআঁকি করা।
অর্ণব যেতেই মেহেরিন বিছানা থেকে নামল। ফ্রেস হয়ে নিচে বাগানে গেল। অর্ণব তার আগে থেকে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। দুজনে একসাথে শরীরচর্চা করল!
.
অর্ণব শাওয়ার নিয়ে এসে বিছানায় বসে পড়ল। মেহেরিন নিজের মাথা মুচছিল তখন। অর্ণব কে দেখতে পেয়ে এগিয়ে গেল তার কাছে। মাথা বেয়ে পানি পড়ছে। হাতে থাকা তোয়ালে দিয়ে অর্ণবের মাথা মুছতে লাগাল। অর্ণব হেসে তাকিয়ে রইল মেহেরিন’র দিকে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল অর্ণবের দিকে। কি সুন্দর এই বাচ্চা ছেলেটা। যে কেউ আপন করে নিতে চাইবে তাকে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ আর সবচেয়ে সুন্দর মানুষ হচ্ছে এই নিষ্পাপ বাচ্চারা। তবুও কিছু লোক কেন এই ছেলেটাকে অবজ্ঞা করবে। ওর মধ্যে কিসের কমতি। কোন কিছুর কমতি নেই। একজন সুস্থ শিশু ও। তবে হ্যাঁ হয়তো সে স্বাভাবিক না তাই বলে অস্বাভাবিকও না। প্রকৃতিতে সবকিছু্ই নিয়মের মাঝে চলে। ব্যতিক্রম এখানে থাকবে তা কি করে হয়। তবে ব্যতিক্রম যে প্রকৃতি নিতে পারে না। কিন্তু ও তো ব্যতিক্রম না। শুধু মিশতে পারে না সবার সাথে। আর পাঁচ টা বাচ্চার মতো ওর মানসিক ক্ষমতা তাদের মতো নয়।

তাই বলেই কি সে অন্যরকম! না, তা না চিকিৎসা চলছে ওর। ডাক্তার বলেছে ও স্বাভাবিক হবে। না হোক এতে কোন সমস্যা নেই। তাকে নিয়ে জীবন পার দেবার ক্ষমতা আছে তার! তবে সব পথের একটা বিকল্প পথ থাকে কিন্তু সবাই সে বিকল্প পথ বেছে নেয় না। কেউ কেউ সেই রাস্তায় বদলে ফেলে। কিন্তু বদলে ফেললেই বুঝি সব সমস্যার সমাধান হয়।

হাতের স্পর্শে ধ্যান ভাঙল মেহেরিন’র ! অর্ণব তার হাত ধরে তাকিয়ে আছে তার দিকে। মেহেরিন অর্ণবের মাথার চুল এলোমেলো করে দিয়ে বলে,

“যাও তৈরি হয়ে নাও, অফিসে যেতে হবে আমাদের!

অর্ণব কিছু না বলে হেঁটে বাইরে চলে গেল। এই ছেলেটা বেশি কথা বলে না। দরকার ছাড়া তো মুখ’ই খুলবে না। শুধু একটা ডাক’ই জানে মাম্মী। কিন্তু কিভাবে বুঝাবে এই মাম্মী ডাকে কতোটা ভালো লাগে তার। মনে হয় তার জীবনটা শুধু ওর জন্য’ই। তার জন্য’ই বরং জীবন উৎসর্গ করে দিবে সে!
.
গত এক ঘন্টা যাবত মেহেরিন’র কেবিনের বাইরে বসে আছে নির্ঝর! মেহেরিন বলেছিল ১১ টায় আসতে কিন্তু সে এসেছে ১১.১৫ তে। ১৫ মিনিট দেরি করার কারনে ১ ঘন্টা বসে থাকা তার কাছে একটু বেশিই মনে হচ্ছে। দেরি হবার কথা ছিল না। নির্ঝর অন্য দিনের তুলনায় আজ খুব জলদি উঠেছিল ঘুম থেকে। ভেবেছিল তাড়াতাড়ি এসে মেহেরিন কে দেখিয়ে দেবে টাইমসেন্স তার ভালো। কি তার আর হলো না। কথায় বলে সত্য কখনো ঢাকা পড়ে না। কেন জানি এই কথাই নির্ঝরের মাথায় ঘুরছে। সে আজ পর্যন্ত কখনো টাইমলি পৌঁছাতে পারেনি। এমনকি ভার্সিটিতে পরিক্ষা দেবার দিনও ২০ মিনিট লেট ছিল সে। যার পিছনে কোন যুক্তি’ই কাজে দিবে না। সে ধরেই নেয় তার ভাগ্য’টাই এমন। কিন্তু আজ ভেবেছিল ভাগ্য তার সাধ দিবে কিন্তু না সে কথা রাখল না।

সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠার কারনে মম আর ড্যাডের রিয়েকশন দেখেই সে অবাক! তাদের এমন রিয়েকশন নির্ঝর আশা করলেও ভেবেছিল আজ মেহেরিন’র সাথে দেখা করতে যাবে এই শুনে কিছু বলবে না। কিন্তু না এটার জন্য রিয়েকশন আরো বেশি।

গত এক ঘন্টা শুধু ফোন টিপেই ব্যয় করেছে সে। অনেক মেয়ের মেসেজ আসছে অনেক কিন্তু কথা বলতে ইচ্ছে করছে না কারো সঙ্গে। ভারী রাগ চলছে তার মাথায় মেহেরিন’র জন্য! কয়েকবার ফোন দিয়েছে কিন্তু মেহেরিন ফোন তুলে নি।
অবশেষে নির্ঝর উঠে দাঁড়াল। রিসেপশনে থাকা মেয়েটা বার বার ঘুরে দেখছিল তাকে। মেয়েটা দেখতে অবশ্য খারাপ না। একজন রিসেপশনিস্ট যেমন হওয়া দরকার ঠিক তেমন। গোছানো পরিপাটি!

নির্ঝর তার কাছে আসতেই মেয়েটা বলে উঠল,
“জ্বি স্যার, কিছু বলবেন!

“হুম বলবো তো কিন্তু কিভাবে বলবো সেটাই বুঝতে পারছি না।

“মানে!

“মানে এই রুপবতী রমনীর কোন গুন আগে বলবো সেটাই ভাবছি।

নির্ঝরের পটানোর টেকনিক কাজে দিয়েছে। মেয়েটা লজ্জা পেয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে। যদিও মেয়েটা কে পটানোর কোন ইচ্ছে ছিল না তবুও নিজের কাজ হাসিলের জন্য এমনটা করছে সে। টানা দু মিনিট মেয়েটার প্রশংসা’র পর মেয়েটা হেসে দিল। তার হাসি দেখে নির্ঝরের ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটল। পটানো শেষ এবার কাজ হাসিল করবে। নির্ঝর বলে উঠলে,

“তো মিস.. ( মেয়েটার নাম’ই তো মনে পড়ছে না। আরে মনে পড়বে কিভাবে নাম তো জিজ্ঞেস করাই হয় নি.. )
নির্ঝর একগাল হেসে বলে রমনী!

পিছন থেকে কেউ বলে উঠে,
“মিস নিশা!

মেয়েটা লাফিয়ে উঠে মেহেরিন’র আওয়াজে। নির্ঝর ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখে মেহেরিন দাঁড়িয়ে আছে। তার আশেপাশে মানুষজন হলো চারজন। দুটি ছেলে আর দুটি মেয়ে। তাদের হাতে ফাইল। এর মাঝে মেহেরিন! নির্ঝর চোখ ছোট ছোট করে তাকে দেখছে। মেহেরিন কে আজ ভারী অন্য রকম লাগছে। সাদা শার্টের ওপর কালো রঙের স্যুট টা বেশ মানিয়েছে তাকে। হরিনী চোখ দুটো বেশ স্থির! হালকা বাতাসে তার চুল গুলো উড়ছে। তবে যেখানে উড়ছে যেখানে’ই আটকে আছে। এলোমেলো ইচ্ছে না!

নির্ঝর এবার সোজা হয়ে দাঁড়াল।মেহেরিন তার কাছেই আসছে। নির্ঝর মনে মনে বলতে লাগল,

“এতোক্ষনে এলো এই মেয়েটা। একবার আসুক এখানে কথা বলতে তখন বুঝাব। নির্ঝর কে এতোক্ষণ ওয়েট করানো!

কিন্তু মেহেরিন তার দিকে না এসে রাস্তা পাল্টে দিল। চলে গেল অন্য দিকে। নির্ঝর চরম অবাক। তবে এক ঝলক দৃষ্টি ফেলে গেল রিসেপশনে থাকা মেয়েটার উপর। মেহেরিন’র নজরে যেন বেশ ভয় পেলো সে!
মেহেরিন’র সাথে থাকা দুটো ছেলের মাঝে একজন দৌড়ে এলো নির্ঝরের কাছে।

“ম্যাম আপনাকে আরো কিছুক্ষণ ওয়েট করতে বলেছে!

“কি আরো অপেক্ষা!

“জ্বি! ম্যাম একটা মিটিং এটেন্ড করতে যাচ্ছে। সেখান থেকে এসে কথা বলবে।

“মিটিং শেষ করতে কতোক্ষণ লাগবে।

“ঘন্টা দুয়েক!

“কিহহ, না আমার পক্ষে আর ওয়েট করা সম্ভব না। ম্যাম কোথায়?

“ম্যাম লিফট..

বলার আগেই নির্ঝর দৌড় দিল। তার পিছন পিছন সে ছেলেও। নির্ঝর লিফটের কাছে এসে দেখে মেহেরিন লিফটে অলরেডি ঢুকে পড়েছে। লিফটের দরজা বন্ধ হচ্ছে। কিন্তু তার আগেই নির্ঝর হাত দিয়ে লিফটের দরজা বন্ধ হওয়া থেকে আটকালো। মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে তার দিকে। তার এসিস্ট্যান্টরা অবাক চোখে দেখছে নির্ঝর কে। পিছনে ছেলেটা দৌড়ে এসে বলল,

“সরি ম্যাম আমি বলেছিলাম স্যার কে আরেকটু অপেক্ষা করতে কিন্তু স্যার…

এর আগেই নির্ঝর সামনে থাকা সবাইকে উদ্দেশ্য করে নিজের হাতের রিং দেখিয়ে বলে,
“নিজের পরিচয় কি এখনো দেওয়া লাগবে আমার!

একে একে সবাই বের হয়ে গেল লিফট থেকে। নির্ঝর লিফটের ভেতর ঢুকল। দরজা বন্ধ হলো লিফটের! মেহেরিন দাঁড়িয়ে আছে তার মুখোমুখি। নির্ঝরের থেকে চোখ সরিয়ে লিফটের বাটন চেপে ধরার আগেই নির্ঝর হাত ধরল তার। বলে উঠল,

“১৫ মিনিট! শুধু ১৫ মিনিট লেট হবার কারনে তুমি আমাকে ১ ঘন্টা বসিয়ে রাখলে। শুধু তাই না বলছো আরো দু ঘন্টা বসে থাকতে!

নির্ঝর হুট করেই হাত ধরাটা মোটেও ভালো লাগে নি মেহেরিন’র। সে তৎক্ষণাৎ হাত ছাড়িয়ে নিল। নির্ঝর ও হাত ছেড়ে দিল। খানিকটা অপরাধ বোধ মনে হলো। না বলে কারো হাত ধরাটা যে ভালো কাজ নয় এটা সে জানে। মেহেরিন বলে উঠল,

“আপনার টাইমসেন্স দেখতে চেয়েছিলাম আমি। এলেন তো এলেন তাও ১৫ মিনিট লেট, যেখানে আমি বলে দিয়েছিলাম ঠিক ১১ টায় এসে দেখা করবেন।

“দেখো একটা বাংলাদেশ, আমেরিকা না যে ফট করে বলবে আর এসে পড়বো। বাংলাদেশের রাস্তায় কি পরিমান যানজট হয় তা নিশ্চয়ই তোমাকে বলতে হবে না।

“পরের বার একটু ভিন্ন কিছু এক্সকিউজ দিয়েন ভালো লাগবে।

“সত্যি বলছি আমি!

“থামুন, এভাবে এখানে আসার মানে কি আর এভাবে আমার স্টাফ এর সাথে কথা বলার’ই বা মানে কি?

নির্ঝর মনে মনে,
“কি কথা এই মেয়ের, রিসেপশনে থাকা মেয়েটাকে কি বলেছি তা সব শুনে ফেলেছে নাকি। কিন্তু তা কিভাবে হয় সে তো অনেক দূরে ছিল।

মেহেরিন বলে উঠে,
“আমি মোটেও রিসেপশনে থাকা মেয়েটার কথা বলছি না। এখানে যা করলেন সেটার কথা বলছি।

নির্ঝর হেলান দিয়ে,
“ওহ তাই বলো। কিন্তু আমি ভুল কি বলেছি। আমি তোমার ফিয়ান্সে, তোমার সাথে আলাদা ভাবে কথা বলার সুযোগ ঠিক’ই পেতে পারি। তাই নয় কি?

মেহেরিন কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল কিন্তু কথা বাড়ল না। লিফটের বোতাম চেপে বলল,
“এখান থেকে বের হয়ে কথা বলছি!

“হ্যাঁ সেটা তুমি বলতেই পারো কোন অসুবিধা নেই!

মেহেরিন ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে রইল। নির্ঝর তাকিয়ে আছে স্নিগ্ধ চোখে। হুট করেই নির্ঝর হাত বাড়াল মেহেরিন’র দিকে। মেহেরিন নির্ঝরের হাতের দিকে তাকিয়ে বলল,
“কি?

“কিছু না তোমার চুলে কিছু একটা আছে?

“আপনার এই সব ফ্লার্ট আমার সাথে চলবে না তাই করার চেষ্টা ও করবেন না। চারদিক আয়না লাগানো আমি নিজেই দেখতে পারছি কোথায় কি আছে?

নির্ঝর হাত সরিয়ে নিয়ে মাথা নাড়ল। আসলেই এই মেয়েটা ভারী অদ্ভুত! আর অন্যরকম ও বটে। তবে এই মেয়েটার কাছে আসলেই এক অজানা অনুভূতি আকড়ে ধরে তাকে কিন্তু কি সেই অনুভূতি সেটা বুঝতে পারছে না নির্ঝর। নির্ঝর কেমন নেশালো চোখে তাকিয়ে আছে মেহেরিন’র দিকে। এটাকে ঠিক নেশা না মোহ বললে ভালো লাগবে। যতোক্ষন এই মেয়েটাকে দেখে ততোক্ষণ’ই তার উপর থাকা রাগ গুলো যেন অদৃশ্য হয়ে যায়।

মেহেরিন চোখ ছোট ছোট করে দেখছে নির্ঝর কে। তার এমন চাহনি তার মোটেও সহ্য হচ্ছে না। মুখ ঘুরিয়ে বলে উঠে,

“এমন ভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?

নির্ঝরের হুশ ফিরল। একটু নড়েচড়ে উঠলো সে। নিজেকে একটু সামলে বলে উঠে,

“তোমাকে দেখছিলাম না।

“তাহলে চোখ দুটো কেন আমার দিকে ছিল?

“না মানে আমি তোমাকে দেখছিলাম ঠিক’ই তবে তুমি যা ভাবছো তা না। আমি একটা কথা ভাবছিলাম তোমাকে নিয়ে।

“কি কথা?

“এটাই যে তুমি আমাকে এখানে কেন ডেকেছো!

“সেটা একটু পরেই জানতে পারবেন।

“তা না হয় জানতে পারবো কিন্তু আমাকে কেন বিয়ে করতে চাইছো এটা এখনো জানা হয়ে উঠে নি।

“এটা জানতেই ডেকেছি। ধৈর্য্য ধরুন জানবেন!

নির্ঝর কিছুটা মেহেরিন’র দিকে ঝুঁকে বলে,
“কি নিয়ে কথা বলবে বলো তো। তোমার ভাব ভঙ্গি কিন্তু আমার বেল ভালো ডেকছে না।

মেহেরিন নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে রইল। তারা দুজন একটু কাছেই ছিল। তখন’ই দরজা খুলে খেল। মেহেরিন সামনে তাকিয়ে দেখল তার স্টাফ রা সামনে দাঁড়িয়ে তাকে দেখছে। এদিকে নির্ঝরের চোখ ও তার দিকেই মেহেরিন নির্ঝরের পাশ দিয়ে হেঁটে বেরিয়ে আসল। নির্ঝরও আসলো তার পিছন পিছন!

মেহেরিন’র ঠিক সামনে বসে আছে নির্ঝর! সে তার চেয়ার দুলিয়ে যাচ্ছে। মেহেরিন তার এক স্টাফ থেকে একটা ফাইল নিয়ে তাদের বাইরে যেতে বলল। ফাইল থেকে কাগজ বের করে নির্ঝর কে উদ্দেশ্য করে বলল,

“সাইন করুন?

“কিসের পেপার!

“পেপার পড়েই সাইন করতে হয় এটা কি জানেন না!

নির্ঝর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পেপার হাতে নিল। পেপার পড়তে পড়তে তার কপাল কুঁচকে গেল। পেপার রেখে মেহেরিন’র দিকে তাকিয়ে বলল,

“এইসব কি?

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here