ইচ্ছের উল্টোপিঠ পর্ব-৩৭

0
1792

#ইচ্ছের_উল্টোপিঠ
#পর্ব_৩৭
#আভা_ইসলাম_রাত্রি
নিচের নোট পড়বেন প্লিজ।

দড়ি ছেড়ে দেওয়া হলো। ছুটে গেলো শেষ সম্বলও। ধীরে ধীরে বিশ তলা থেকে ক্রমশ নিচে নামতে লাগলো সাজ্জাদ। গলা ফেতে চিৎকার করে উঠলো সে,, ” ও আল্লাহ! ” জীবনের প্রথম সাজ্জাদের মুখে রবের নাম। অদ্ভুদ তাইনা? এক মুহূর্তের মধ্যে ছিটকে পড়লো সাজ্জাদের দেহ মাটিতে। সঙ্গেসঙ্গে থেতলে গেলো মাথাটা। নিজের রক্তে নিজেই গড়াগড়ি খেলো। একস্থানে মগজ, আরেকস্থানে নিথর দেহ পড়ে আছে। সাজ্জাদ হোসেনের মুখ হা করা। চোখের পাতা কিছুটা সময় ঝাপটালো। তারপরই স্থির! থমকে গেলো জীবন ঘড়ি। বন্ধ হয়ে গেলো পাপের খাতা। বেশ কিছুসময় পর দুটো নেড়ি কুকুর এসে ঘুরঘুর করতে লাগলো সাজ্জাদের মরদেহের আশপাশে। হয়তো এই মরদেহই হবে ওদের আজকের খাবার।

ঐশী ছাদের উপর থেকে একঝলক তাকালো নিচে। সাজ্জাদের মরদেহ দেখে নিজেই কেপে উঠলো। চোখের পাতা জোরপূর্বক বন্ধ করে অন্যদিকে ফিরে তাকালো। অনল ঐশীর অবস্থা দেখে ঐশীর পাশে এসে দাঁড়ালো। আলতো গলায় বললো,

— ” সব ঠিক আছে ঐশী। শান্ত হও। ”

ঐশী আস্তে আস্তে চোখ খুললো। চোখের পাতা মৃদুমন্দ কাপছে। ঐশীর কান্না পেলো। বুকভরা কান্না উপচে পড়লো। চোখের কোনায় সেই জল জমতেই অনল আঙ্গুল দিয়ে জলটুকু মুছে নিয়ে বললো,

— ” পাপীদের জন্যে চোখের জল ফেলাও পাপ, ঐশী। ”

ঐশীর ঠোঁটের হাসি ফুটলো। অতঃপর চোখ গেলো সামনে দাড়িয়ে থাকা জেনির দিকে। জেনির চোখে মুখে অবাকের ছায়া। ঐশী পা ছুঁটিয়ে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো জেনিকে। জেনির কাধে মাথা রেখে উচ্ছাস নিয়ে বললো,

— ” থ্যাংক ইউ সো মাচ, জেনি। আজ তুমি না থাকলে এসব সম্ভব হতো না। থ্যাংক ইউ। ”

জেনি ঐশীর পিঠে হাত রেখে শান্তনা দিলো। বললো,

— ” ইউ আর ওয়েলকাম। এবার আমার টাকা… আহ্”

জেনি যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠলো। ঐশী ইনজেকশন জেনির ঘাড়ে পুষ করে দিলো সম্পূর্ণটা। জেনির দেহ ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে লাগলো। ঐশী জেনির থেকে সরে এলো। জেনি ঘাড়ে হাত রেখে মাটিতে হাঁটু ভেঙে বসে গেলো। ঐশীর দিকে তাকিয়ে কোনক্রমে বললো,

— ” তু.তুমি তু.তুমি আমায় মা.মারলে ক.কেনো? ”

— ” কারণ যে মেয়ে টাকার জন্যে নিজের এতবছরের বিশ্বস্ত লোককে শত্রুর হাতে তুলে দিতে পারে, সেই মেয়ে পুনরায় টাকার জন্যে আমাদের কোনো ক্ষতি করবে না, তার কি গ্যারান্টি? ”

— ” আ.আমি ? ”

— ” হ্যাঁ তুমি। এই ঐশী কখনো কোনো খুনের চিন্হ রাখে না। এবারও রাখে নি। ”

জেনি ক্রমশ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। চোখের কোণা থেকে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো। শব্দ হলো ” টপ টপ।”জেনির চোখের পাতা বন্ধ হয়ে গেলো আপনা আপনি। সেই সাথে নিভে এলো জীবন প্রদীপ। মরণ বড়ই বহুরূপী! একেক জনের মরণ ধরন একেক রকম। একেক জনের মরদেহের রূপ হরেক রকম। মরন বড়ই অদ্ভুত!

অতঃপর দেহ দুটোকে সামলে গাড়ি করে বাসায় চলে এলো ঐশী। তাদের গাড়ি বিল্ডিংয়ের সীমানা পেরুতেই একজন কালো শার্ট পরা লোক কাকে ফোন দিয়ে বললো,

— ” ভাই মেয়েটাকে পেয়ে গেছি। ”
___________________________
আয়নার মুখোমুখি পিঠ দিয়ে বসে আছে ঐশী। হাত ঘুরিয়ে ঘাড়ে সেভলন লাগানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ঘাড়ের পিছনে হাত একেবারেই নাগাল পাচ্ছে না। ঐশীর চোখে মুখে বিরক্তিতে কুচকে এলো। কিন্তু হাল ছাড়ে নি। চেষ্টা করেই যাচ্ছে।

— ” আমি হেল্প করি? ”

জুভানের কথা শুনে ঐশী চটপট ওড়না গায়ে দিয়ে পিছন ফিরলো। জুভান কালো ট্রাউজার আর সাদা টিশার্ট গায়ে জড়িয়ে দাড়িয়ে আছে। ঐশী মিনমিনিয়ে বললো,

— ” না না। লাগবে না। আমি করে নিবো। ”

জুভান ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে ঐশীর পাশে চেয়ার টেনে বসে পড়লো। ঐশীর চোখে দুচোখ রেখে বললো,

— ” তাহ্, এতক্ষণ কি করছিলে? ”

— ” সামান্য চোট। একটু চেষ্টা করলেই পারবো। ”

— ” তুলো দাও। আমি করে দিচ্ছি। ”

এতক্ষন পারেনি তাই জুভান চলে গেলে যে পারবে তার কি নিশ্চয়তা? ঐশী কাপা হাতে জুভানের দিকে তুলো এগিয়ে দিলো। জুভান তুলো নিয়ে ঐশীর পিছনে এসে দাঁড়ালো। ঐশী ঘাড়ের কাছের চুলগুলো সব একসাথে করে সামনে এনে রাখলো। ঘাড়ের একজায়গায় কয়েকটা আঁচড় লেগেছে। দেখে মনে হচ্ছে মেয়েলি নখের আঁচড়। জুভান এই জখম দেখেই রেগে উঠলো। তুলোতে স্যভলন নিয়ে আলতো করে জখম হওয়া জায়গায় ছুয়ালো। ঐশীর জায়গাটা জ্বলে উঠলো। চোখ খিচে বন্ধ করলো ও। জুভান ধীরে ধীরে জায়গায় তুলো ছুয়াচ্ছে আর ফু দিচ্ছে।
কয়েক মুহৃতের জন্যে ঐশী ব্যাথা, জ্বলাপোড়া সব ভুলে গেলো। জুভানের উষ্ণ নিঃশ্বাস ঘাড়ে পড়তেই শিহরণ খেলে গেল শরীরের প্রতিটা শিরায় শিরায়। ঐশী খিচে রাখা চোখ স্বাভাবিক হলো। আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো চোখের প্রতিটা পাপড়ি। জুভানের দেওয়া প্রতিটা ফু তে ঐশীর চোখের পাতা কেপে কেপে উঠছে। বুকের ভিতরে কালবৈশাখী তুফান চলছে। ঐশী সইতে না পেরে একহাতে নিজের জামা খামচে ধরলো। জুভান ঐশীর কাপাকাপি দেখে মুচকি হাসলো। পুনরায় কাজে মন দিলো ও। খুব যত্ন নিয়ে ঐশীর ঘাড়ের স্যাভলন লাগাচ্ছে জুভান।

— ” শেষ। ”

তুলো ডাস্টবিনে রেখে জুভান ঐশীর পাশে এসে দাঁড়ালো। ঐশী মাথা নত করে রেখেছে। গালে লাল আভা। লজ্জার রং তো লাল। তাহলে কি ঐশী লজ্জা পাচ্ছে? জুভান ঐশীকে আরো লজ্জা দিতে বললো,

— “বাই দ্যা ওয়ে, তুমি কি লজ্জা পাচ্ছ ঐশী? গাল টমেটোর মত লাল হয়ে আছে কেনো? ”

ঐশী অবাক হয়ে গালে হাত দিলো। সত্যিই তার গাল লাল হয়ে আছে? টমেটোর মত? ঐশী তাড়াহুড়ো করে আয়না দিকে তাকালো। কই? গাল তো স্বাভাবিকই আছে। ঐশী রাগী চোখে জুভানের দিকে তাকাতে জুভান শব্দ করে হেসে বলে,

— ” আই ওয়াজ জোকিং। ডোন্ট বি সিরিয়াস। ”

ঐশী মুখ ফুলিয়ে তাকালো জুভানের দিকে। ভারী অসভ্য তো ছেলেটা! তাকে লজ্জা দেওয়ার একটাও সুযোগ ছাড়ে না।

___________________________
আজ দুপুরে একটা মিউজিক ভিডিওর কাজে একজন মডেল জুভানের বাসায় এসেছে। সোফায় তিয়াসা আর জুভান পাশাপাশি বসে আছে। জুভান ভ্রু কুচকে স্ক্রিপ্টের পৃষ্ঠা উল্টেপাল্টে দেখছে। আর এদিকে তিয়াসা গালে হাত দিয়ে জুভানের দিকে তাকিয়ে আছে। মাত্র শাওয়ার নেওয়ায় জুভানের চোখে মুখে অদ্ভুত শীতলতা। শরীর থেকে কড়া সুগন্ধ তিয়াসার নাকে ভেসে আসছে। ভিজে চুলগুলো কপালের উপর লেপ্টে পড়তেই তিয়াসা হাত বাড়িয়ে জুভানের চুল সোজা করে দিলো। সঙ্গেসঙ্গে জুভান মাথা পিছিয়ে নিলো। রাগ দেখিয়ে বললো,

— ” কি করছো তুমি? ”

তিয়াসা জুভানের বহু আকড়ে ধরলো। জুভান রাগে তাড়াহুড়ো করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে তিয়াসার দিকে তাকালো। দাত চেপে বললো,

— ” আর ইউ ম্যাড? কি করছো এসব? ”

তিয়াসা সোফায় হেলান দিয়ে বসলো। জুভানের দিকে আবেদনময়ী ভঙ্গিতে তাকিয়ে বললো,

— ” কাম অন জুভান। এত ন্যাকা সাজছো কেনো? এর আগেও আমি তুমি একবার ইন্টিমেট হয়েছি। সো চিল। ”

জুভানের রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে গেলো। ধাম করে সোফা থেকে উঠে দাঁড়ালো সে। তিয়াসার দিকে স্ক্রিপ্ট ছুঁড়ে ফেলে বললো,

— ” আগের কথা ভুলে যাও। এখন আমি বিবাহিত। আর আমি আমার স্ত্রীকে প্রচন্ড ভালোবাসি। যতটা ভালোবাসলে শরীরের বাজে চাহিদা বির্সজন দেওয়া যায় আমি তাকে ঠিক ততটাই ভালোবাসি। হয়তো তার থেকেও বেশি। তাকে আজন্ম না ছুয়েও আমি তার মুখ দেখে কাটিয়ে দিতে পারবো। আই থিঙ্ক তোমার এখন চলে যাওয়া উচিত। আমরা এই প্রজেক্ট নিয়ে অন্য কোনদিন কাজ করবো। ওকে? ”

তিয়াসা কোল থেকে স্ক্রিপ্ট তার পাশে রাখল। সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে জুভানের গলা জড়িয়ে ধরতেই জুভান এক ঝটকা দিয়ে তিয়াসার হাত নামিয়ে দিলো। তিয়াসা ঠোঁট বাঁকিয়ে বললো,

— ” জুভান আমি সেদিন রাতকে ভুলতে পারছি না। আমার আবার তোমাকে চাই। গভীর করে। ”

জুভান রাগে হিতাহিত জ্ঞান ভুলে গেলো। তিয়াসার হাত ধরে সদর দরজার বাইরে ছুঁড়ে ফেললো। বললো,

— ” তুমি পাগল হয়ে গেছো। আমরা গানের ব্যাপারে পরে কথা বলছি। প্রোডিউসারের সাথে দেখা করে আমি এই প্রজেক্ট ক্যান্সেল করে দিচ্ছি। সো ডোন্ট ডিস্ট্রাব মি। ”

জুভান তিয়াসার সামনে দরজা আটকে দিলো।

_______________________
বৃষ্টি দিচ্ছে ঝুমঝুম। ঐশী ছাদে দাঁড়িয়ে ভিজছে। বৃষ্টির ফোঁটা ঐশীর গা বেয়ে মাটিতে গড়িয়ে পড়ছে। ঐশীর পায়ের নূপুর ঝনঝন শব্দ তুলছে। ঐশী চোখের অশ্রু সেই পানির আড়ালে ধুয়ে মুছে যাচ্ছে। আজ যখন তিয়াসার সামনে জুভান তার ভালোবাসার কথা স্বীকার করেছে তখন ঐশী শুধু স্তব্দ হয়ে গিয়েছিল। বিশ্বাস হচ্ছে না এখনো। ” ভালোবাসে। ” হ্যাঁ। জুভান তাকে ভালোবাসে। এর চেয়ে মধুর বাক্য আর কি হতে পারে। এর চেয়ে মিষ্টি অনুভূতি আর কি হতে পারে। জুভান মেয়ে নেশা ছেড়ে দিয়েছে সেটা ঐশী ওদের বিয়ে হওয়ার অনেক আগে থেকেই জানে। শাহাদাত চাচা বলেছেন। ঐশী সেদিন অনেক খুশি হয়েছিল। বিয়ের সময় জুভানকে বাজিয়ে দেখতে ডিলে রাজি হয়েছিল। বিয়ের পর এতটা দিনও জুভান কখনো ঐশীর দিকে বাজে দৃষ্টি দেয়নি। সবসময় ঐশীকে বুঝার চেষ্টা করেছে। ঐশীর সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রেখেছে। ঐশী অপেক্ষা করছিল জুভানের মুখে ভালোবাসি কথাটা শোনার। কিন্তু আজ! আজ সেই খুশির সীমা সকল পূর্নতাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পূর্বের সমস্ত সুখকে , সমস্ত খুশিকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। চার অক্ষরের শব্দে এত সুখ লুকিয়ে থাকে! ঐশী ভেবে পেল না।

— ” ঐশী? তুমি এখানে কি করছো? ঠাণ্ডা লাগবে। রুমে চলো। ”

ঐশী ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকালো। জুভান চোখ সরু করে ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে। বৃষ্টির জন্যে চোখ সম্পূর্ণ খুলে রাখা তার জন্যে দায় হয়ে পড়ছে। ঐশী জুভানকে দেখেও অগ্রাহ্য করলো। দুহাত দুদিকে ছাড়িয়ে আবারও বৃষ্টিতে মত্ত হয়ে গেলো। জুভান এবার রেগে গেলো। ঐশীর সামনে দাড়িয়ে ঐশীর হাত ধরে বললো,

— ” শুনতে পারছো না আমি কি বলছি। ঠাণ্ডা লেগে যাবে। রুমে চলো। ”

ঐশী চোখ পিটপিট করে জুভানের দিকে তাকালো। আচমকাই এক ভয়ঙ্কর কাজ করে বসলো ঐশী। জুভানের গলা দুহাতে জড়িয়ে ধরলো। জুভান হতভম্ব হয়ে ঐশীর হাতের দিকে তাকালো। ঐশী সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে পায়ের আঙ্গুলে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে জুভানের কপাল বরাবর এলো। আচমকাই জুভানের কপালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ালো। অনেক সময় নিয়ে ঠোঁট বসালো জুভানের স্নিগ্ধ ললাটে। জুভানের চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। চোখ যেন কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম। ঐশী সরে এলো। জুভান তাড়াহুড়ো করে ঐশীকে নিজের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু ঐশী ছেড়ে দিলো না। ধরেছে কি ছেড়ে দেবার জন্যে। উহু! কখনোই না। ঐশীর জুভানের ঠোঁটের দিকে তাকালো। বৃষ্টির পানি জুভানের ঠোঁটে বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। এতক্ষণ জুভান স্বাভাবিক থাকার ভান করলেও ঐশীর একটা স্পর্শ তার ভিতরের সমস্ত অনুভূতিকে জাগিয়ে তুললো। একধ্যানে তাকালো সে ঐশীর দিকে। কোনটা উচিত কোনটা অনুচিত সব ভুলে গেলো। ঐশীর ঐশীর ঠোটের দিকে ধীরে ধীরে নিজের ঠোট এগিয়ে আনলো। দুনো অধর যখন ছুই ছুই ঠিক তখন জুভান মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকালো। ঐশী অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল জুভানের দিকে। জুভান বুক ভরে কতগুলো নিঃশ্বাস টেনে নিয়ে বললো,

— ” ঐশী, এটা ঠিক হচ্ছে না। আমরা ভুল করছি। ”

জুভানের মেয়ের নেশার জন্যেই তো ঐশী জুভানকে ঘৃনা করতো। কিন্তু এখন তো এসব কিছুই নেই। তাই ঘৃণার চাদর এখন আলগা করার সময় এসেছে। আর ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে, তবে? বাধা কেনো? এসব ভেবে ঐশী রেগে জুভানের কলার টেনে ধরলো। জুভান টাল সামলাতে না পেরে ঐশীর দিকে ঝুঁকে এলে ঐশী থমথমে গলায় বললো,

— ” কেনো? ভুল কেনো? আমরা কি অবিবাহিত? কোনো নিষিদ্ধ কাজ তো আমরা করছি না। তবে? ”

জুভান ঐশীর থেকে কলার ছাড়ালো। ঐশীকে বুঝানোর ভঙ্গি করে বললো,

— ” বুঝার চেষ্টা করো ঐশী। বিষয়টা বিবাহিত আর অবিবাহিতের নয়। আমি চাইনা তুমি এই বিষয় নিয়ে কখনো পস্তাও। ”

ঐশী মুখ ভরে শ্বাস নিলো। জুভান এখনো আগেরকার রুমডেট নিয়ে অপরাধবোধে ভুগছে। আর ঐশী এটা খুব ভালো করে বুঝতে পেরেছে ও নিজে না এগুলে জুভান কখনোই নিজ থেকে এগুবে না। ঐশী আচমকাই লজ্জা শরম সব জলাঞ্জলি দিয়ে নিজের দুনো পায়ের আঙ্গুল ভর করে দাড়ালো। দুহাতে জুভানের পিছনের চুল আঁকড়ে ধরে হঠাৎ জুভানের ঠোটে ঠোট মেলালো।
জুভান কেপে উঠলো। ঐশীকে বাধা দিতে চাইলেও সে পারলো না। আচমকাই তার মনে হলো তার শরীরের সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। জুভান নিজেকে সামলাতে না পেরে ঐশীর কোমর দুহাতে ধরে ওকে উচুঁ করলো। ঐশীর পিঠ আগলে নিয়ে ঐশীর ঠোঁটের ভাজে নিজের ঠোট রাখলো। শুষে নিতে লাগলো প্রিয়তমার সমস্ত সুধা। ঐশী জুভানের এই ভয়ংকর স্পর্শে হারিয়ে যেতে লাগলো অজানায়। সুখের সাগরে সাঁতার কাটতেই চোখের কার্নিশ গেসে গড়ালো এক ফোঁটা জল। ইশ! কি সুখ টাই না দিচ্ছে জুভান ওকে।

#চলবে

ইহা আমার লেখা সবচেয়ে বড় পর্ব। ১৭০০+ শব্দ।

আজকের পর্বে রোমাঞ্চ ঢেলে ঢেলে দেওয়া।এই পর্ব লিখার সময় কতবার যে লাইন কেটেছি গড নোজ।
আজকে সবার কাছে একটাই অনুরোধ। যার কাছেই এই পোস্ট পৌঁছাবে সবাই প্লিজ রিয়েক্ট করবেন। আর বেশি বেশি কমেন্ট করবেন। কিছু লেখার না পেলে স্টিকার কমেন্ট করবেন। পারলে একটা অক্ষর হলেও কমেন্ট করবেন। পেজের রিচ প্রচুর কমে গেছে।সব ঠিক করতে গেলে অনেক কমেন্ট দরকার। এই পোস্টে যদি এক হাজার কমেন্ট না আসে তবে পরবর্তী পর্ব অনেক দেরিতে দেওয়া হবে। আর পরবর্তী পর্ব কিন্তু অনেক স্পেশাল+ ঝটকার।

আগের পর্ব
https://www.facebook.com/105343271510242/posts/205003884877513/?app=fbl

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here