# নানান বরণ মানুষ রে ভাই
ঊনবিংশ পর্ব ( ১৯ তম পর্ব)
বড় গল্প
নাহিদ ফারজানা সোমা
চলে যাচ্ছিলো দিনগুলো মোটামুটি। মৌরী খুব ভালো ভাবে এসএসসি পাশ করলো। শিমুলের ধারের কাছে অবশ্যই নয়। রেখা পোলাও -কোর্মা রান্না করলেন,সাথে মৌরীর পছন্দের সব খাবার। মৌরীর মন খুব খারাপ। তার আশা ছিল আপার মতো ফার্স্ট -সেকেন্ড না হলেও সে প্লেস করবে।তা না,শুধু স্টার মার্কস। তার কান্না দেখে শিমুল তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো।
মৌরী কাঁদতে কাঁদতে বললো,”আপা,তোমার কতো ভাগ্য। ” শিমুল বললো,”তুই বিরাট ভুল কথা বললি। তুই বুদ্ধিমতী মেয়ে।নিজের কথার ভুল নিজেই বের কর্। করে আমাকে বল্।” মৌরী বললো,”ভুল বলেছি আপা। আসলে তোমার রেজাল্ট তোমার পরিশ্রমের ফসল,ভাগ্যের নয়। কিন্তু আপা,আমিওতো কতো খাটলাম! তোমার অতিরিক্ত মেধা, আমাদের আর কোনো ভাইবোনের এতো মেধা নেই। তাহলে ভুল কি বললাম বলো? অতিরিক্ত মেধা আল্লাহ তোমাকে দিয়েছেন, এটা তোমার সৌভাগ্য না?”
“তর্কে যাবো না মৌরী, শুধু এই কথা বলি,আমি চাইনা আমার কোনো ভাইবোনের কপাল আমার মতো হোক। বেশি মেধা ভয়ংকরী। আমার ভাইবোনেরা যেন স্বাভাবিক, সুন্দর জীবন পায়।”
মৌরী কিছুক্ষণ ইতস্তত করে বললো,”আপা,তোমার দুঃখ,কষ্ট, বঞ্চনার অনেক কথা ই আমি জানি।খুব খারাপ হয়েছে তোমার সাথে। কিন্তু আপা,আমরা কি ভাগ্যবান?তোমার এবং আমাদের বাবা এক। তিনি খুবই খারাপ মানুষ। একটু বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে উনার ভয়ংকর চেহারা দেখে আসছি। কথায় কথায় ছেলেমেয়েদের মারধোর, বৌ পিটানো, চাকরদের পিটানো,মুখ খিস্তি। মাতাল যখন হতেন,তখন তো কথাই নেই। মুকুলকে একবার মাতাল হয়ে তুচ্ছ কারণে এমন মারলেন যে মুকুলের নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকলো। আমরা যাঁর পেটে জন্মেছি,তিনিও কম নন্। আমাদের দিকে তাকানোর ফুরসত তাঁর ছিলো না। পার্টি, সাজগোজ, মদ, গালাগালি, অন্য পুরুষের সাথে ঢলাঢলি, স্বামীর সাথে মারপিট, শাশুড়ির সাথে হাতাহাতি, ওফ্ফ! হরিবল কন্ডিশন আপা। আমার দাদী, নানা,নানী,মামা,মামী সবাই অমানুষ। একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখো,তোমার থেকেও আমাদের ভাগ্য কতো খারাপ। তোমাদের একজন অতি লক্ষী মা আছেন, এতো বড় সম্পদ আমাদের নেই। ”
“এক থাপ্পড় লাগাবো। মা তোদের মা না?”
“অবশ্য ই আমাদের মা। আর পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি মা’কেই। কিন্তু কঠিন বাস্তব এটাই যে,আমরা উনার পেটে জন্মাই নি। আইনগত ভাবে মায়ের উপরে আমাদের, আমাদের উপরে মায়ের কোনো অধিকার নেই। এটা আমার জন্য কতোটা কষ্টের বিষয়, ভাবতে পারো আপা? যাঁর পেটে আমাদের জন্ম, তাঁকে কিছুতেই আমি মা ভাবতে পারি না। অথচ উনি আমার জন্মদাত্রী। এখন বোঝো,কতোটা ভাগ্য খারাপ আমাদের। তুমি শুধু শুধু কষ্ট পাও আপা। আমাদের চেয়ে তোমার অবস্থান অনেক ভালো।”
শিমুল বোনকে জাপটে ধরে। মৌরী কাঁদতে কাঁদতে বলে,”আর বড় ভাইয়া তোমার একার ভাই না, আমাদের ও ভাই। ওকে নিয়ে তোমার যেমন চিন্তা, আমারও তেমনই চিন্তা। আর আপা, আজকে তোমাকে একটা কথা বলি।কখনো কাউকে বলিনি। মা’কেও না।”
“কি?”
মৌরী মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে থাকে। চিবুক ঠেকেছে বুকে।
“কি?বলবি তো?”
“হাসান মামা, হাসান মামা না….”
“কথা বলবি সোজা সাপটা।মাথা উঁচু করে। তো তো করা আমার একদম পছন্দের না। কি করেছে হাসান মামা?”
“হাসান মামা যখনই আসেন, আমার বুকে চাপ দেন,শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেন। আমাকে বলেছেন, কাউকে যদি বলি, আমাদেরকে একা ফেলে মা, পলাশ ভাই আর তোমাকে নিয়ে গ্রামে চলে যাবেন। সবাই নাকি আমাকে নষ্টা মেয়ে বলবে। ভয়ে আর লজ্জায় কাউকে বলতে পারি নি আপা।”
মৌরী হুহু করে কাঁদতে থাকে। বুকের ভেতর থেকে আসা কান্না।
দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল ঝপ করে মৌরীর পাশে বসে পড়ে। সত্যিই তার মাথা ঘুরছে, বমি পাচ্ছে। একবার মনে হলো,মৌরী বানিয়ে বলছে না তো? যেই বাবা-মায়ের মেয়ে। পরক্ষণেই মনে হলো, না,মৌরীর অভিযোগ শতভাগ ঠিক। একটা বাচ্চা মেয়ে যে এমন লালসার শিকার হয়,তা শিমুলের থেকে ভালো কে জানে?
কিন্তু হাসান মামা! তাদের সকল বিপদে -আপদে বটগাছের মতো বিশাল হয়ে ছায়া দেওয়া হাসান মামা? তার মায়ের নীরব কিন্তু প্রবল অনুরাগী হাসান মামা যে কিনা মা’কে না পেয়ে আর বিয়েই করলো না? কি করে সম্ভব? এমন ঘোরতর পাপী হলে চেহারায় তো একটু ছাপ থাকবে। শিমুল আর কিছু ভাবতে পারে না। মৌরী মিথ্যা বলছে নাকি হাসান মামা লম্পট? কি ভাবে বের করবে শিমুল?
সে ধমক দিয়ে মৌরীকে বললো,”এমনই যদি হয়,তাহলে হাসান মামা আসলে তুই মায়ের পায়ে পায়ে থাকতিস না কেন?অন্য সবার মধ্যে বসে থাকতিস না কেন?”
“মায়ের কাছে থাকলে কিছুক্ষণ পরেই মামা বলতেন,বড়রা কথা বলছি,যাও মা, নিজের ঘরে যাও। একদিন যাইনি, তখন মা বললেন, মামা তোকে ঘরে যেতে বলছেন,যা মা। বড়দের কথা শুনতে হয়। আবার সবার মধ্যে বসে থাকলে মামা এসে ডাক দেন,” মৌরী, তোর অংকের অবস্থা কি?অংক বই খাতা নিয়ে এই ঘরে আয়। সাথে একদিন মুকুলকে নিয়ে গিয়েছেলাম, মুকুলকে বললেন,তোর অংক বইও নিয়ে আয়। তারপর মুকুলকে দুই চ্যাপ্টার অংক দিয়ে অন্য ঘরে পাঠিয়ে দিলেন,আর আমাকে বললেন,এমন চালাকি ভবিষ্যতে কোরো না। লজ্জায়,ভয়ে কাউকে বলি নি আপা। এই যে আজ তোমাকে বললাম,তুমিও মনে মনে ভাবছো আমি মিথ্যা বলছি।”
পরদিন সকালে হৈ হৈ করে হাসান মামা এলেন। সাথে যথারীতি মিষ্টির বাক্স, রাজ্যের ফল, শাক সব্জি। “মৌরী আম্মা কোথায়?আমাদের ব্রিলিয়ান্ট গার্ল কোথায়?” শিমুল মৌরীর চোখে রাজ্যের ভয় দেখতে পেলো। কিন্তু মৌরীর আশেপাশে গেলো না।
“কি হে শিমুল রানী,আজ ভার্সিটি নেই? ”
“আছে মামা, যাবো কিছুক্ষণ পরে। কাল একটা পরীক্ষা আছে।আজ হলে থাকবো।”
রেখা বললেন,”সে কি! আগে বলিস নি তো।”
“এইতো বললাম মা।”
বাচ্চারা হাসান মামাকে পেয়ে আনন্দ -উল্লাস করছে। বোনাস হলো মিষ্টি, নানারকম মজার খাবার। মামা এসেছেন দেখে মা আবার পোলাও রান্না করছেন। শিমুল নিজের ঘরে রইলো। খুব সতর্ক হয়ে।
দুপুরে খাওয়ার পরে শিমুল মা আর হাসান মামার কাছ থেকে বিদায় নিলো।সবাই এখন যার যার ঘরে বিশ্রাম নিবে। মিনিট পনেরো পরে বিড়াল পায়ে আবার ফিরে এলো শিমুল। দরজায় আলতো টোকা দিলো। দরজা খুললো মতির মা। শিমুল স্বাভাবিক ভঙ্গিতে নিজের ঘরের দিকে গেলো,মতির মা গেল নিজের কাজে। শিমুল প্রথমে মায়ের ঘরে উঁকি দিল। মা কোরান শরীফ পড়ছেন। তারপরে উঁকি দিলো ভাইবোনদের ঘরগুলোতে। যে যার মতো আছে। শুধু মৌরী নেই। মৌরী-মিথুন যে ঘরে থাকে, সেখানে মিথুন একা ঘুমাচ্ছে। দোতলার অন্য ঘরগুলোতেও ঢু মারলো শিমুল। কেউ নেই। শিমুল আস্তে করে নিজের ঘরের ভেজানো দরজা খুললো। হঠাৎ করে চোখে কিছু পড়লো না, নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে শিমুল দেখলো হাসান মামা পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে, তার সামনে মোড়ায় বসে মৌরী কি যেন করছে। শিমুল তীক্ষ্ণ গলায় বললো,”কি হচ্ছে এখানে?” হাসান চমকে ফিরে তাকালো।তার প্যান্টের চেইন খোলা। পুরুষাঙ্গ বের হয়ে আছে। মৌরীর দুই গাল চোখের পানিতে ভেসে যাচ্ছে। সে ছুটে এসে মৌরীকে জাপটে ধরলো শক্ত করে,তারপর হড়হড় করে বমি করে ফেললো। শিমুল গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ডাকলো,”মা,মা,মুকুল।” হাসান দ্রুত বেশবাস ঠিক করে বের হতে যাচ্ছিলো, শিমুল তার হাত ধরে ফেললো। শিমুলের তীক্ষ্ণ চিৎকারে পড়িমরি করে ছুটে এলেন রেখা। হুড়মুড়িয়ে ছুটে এলো মুকুল,মুমু,মিথুন। হুইল চেয়ারে পলাশ। পাখিও উপস্থিত।
রেখা বজ্রাহত হয়ে বসে আছেন। একেবারে বাক্যহারা। পৃথিবীতে একটি তরুণ তাকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবেসেছিল, শরীর নয়,তাঁর মনকে। রেখার জন্য সে বিয়ে করলো না,এজন্য রেখার কষ্ট ছিল খুব, তিনি মনেপ্রাণে চাইতেন লোকটি সংসারী হোক,সুখে থাকুক, কিন্তু মনের অনেক গভীরে একটু আনন্দ বোধ ও কি কাজ করতো না?পৃথিবীতে একজনতো তাঁকে মূল্যায়ন করেছে। আর সেই লোকটি কিনা তাঁর ই মেয়েকে দিনের পর দিন এতো নির্যাতন করেছে,যখন মৌরী একটা ছোট্ট কুঁড়ি ছিল, তখন থেকে?আর তিনি এমন মা যে কোন কিছুই বুঝতে পারেন নি, রক্ষা করাতো দূরের কথা।
শিমুল ভাবছে অন্য কথা। পৃথিবীতে আর কাউকে বিশ্বাস করা যায় না। হাসান মামার কি মায়ের সাথেও অবৈধ সম্পর্ক আছে? মানসিক
না,অন্য সম্পর্ক। সেই গ্রামে থাকার সময় থেকেই? মামীরা যা বলতো,সেগুলো কি আসলে সত্যি? সেক্ষেত্রে মা ওমর খানকে তালাক দিয়ে হাসান মামাকে বিয়ে করে নিলো না কেন? মা অবৈধ সম্পর্ককে কখনোই সাপোর্ট করবে না,শিমুল এখনো এরকমই মনে করছে কিন্তু তার চিন্তাটা ভুলও তো হতে পারে। পৃথিবীতে বিশ্বাস বলে কিছু আছে কি?
হাসান মাথা নিচু করে বের হয়ে গেলো, কেউ আটকালো না, রাগারাগি করলো না,চিৎকার করলো না।শুধু অবুঝ পলাশ তার প্রিয় মানুষটার হাত ধরে আটকাতে চাইলো, দুর্বোধ্য কিছু বললো। হাসান পলাশকে এক মুহূর্তের জন্য জড়িয়ে ধরলো, তারপরে দ্রুত চলে গেলো।
পরদিন হাসানের আত্মহত্যার সংবাদ নিয়ে এলো হাসানের বিশ্বস্ত সহচর আরমান। সাথে খামবন্ধ একটা চিঠি।
“সুপ্রিয় রেখা,
তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে বড় কষ্ট হচ্ছে। আর কখনো তোমার ঐ নিষ্পাপ, সরল,সুন্দর মুখখানা দেখবো না,এটা ভাবলে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমি জঘন্য অপরাধ করেছি। সারাজীবন তোমাকে ভালোবেসেছি অন্ধের মতো, কিন্তু আঙ্গুল ছোঁয়ারও অধিকার পাই নি। জৈবিক তাড়না আমাকে রাক্ষস বানিয়ে ফেলেছিলো। কতোটা ভয়ংকর দানব আমি, চাহিদাকে কিছুটা হলেও মেটানোর জন্য নিজের প্রিয়ার মেয়েকেই বেছে নিয়েছিলাম।এ কেবলই শারীরিক চাহিদা। প্রশ্ন করতে পারো,কাউকে বিয়ে করলাম না কেন?আসলে আমার কাছে তোমার স্হান শুধু ই তোমার জন্য। কখনোই অন্য কারো জন্য নয়। মনে হয়,বেশির ভাগ মানুষের অনেকগুলো সত্বা থাকে। আমার দানবীয় সত্বাকে আমি দমন করতে পারিনি। আট বছরের মৌরীকে রিকশায় একবার কোলে বসিয়ে বেড়াতে নিয়ে গিয়েছিলাম, পাশে ছিলো শিমুল। সেদিন থেকেই মৌরীর প্রতি আমার দুর্নিবার দৈহিক আকর্ষণ। নিজের উপরে ঘৃণা ও লজ্জায় আর কিছু লিখতে পারছি না। পলাশ-শিমুলকে ভালো ভাবে মানুষ করো। মানুষ করো তোমার অন্য সন্তানদেরও। মৌরীর তীব্র মানসিক আঘাত তুমি আর শিমুল ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কোরো। ক্ষমা চাইবো না রেখা,কারণ আমি যা করেছি তার ক্ষমা নেই। শুধু একটা জিনিস জানিয়ে বিদায় নিই,আমি তোমাকে খুব বেশি ভালোবাসি।
হাসান।
বিঃদ্রঃ তোমার বাড়ির চাবি আরমানের কাছে দিয়ে গেলাম। ও সপ্তাহে দুই দিন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তোমার বাড়ি-ঘর-বাগান সব পরিস্কার করার ব্যবস্থা করবে।
আরমান কাঁদছে।ওকে গত রাতে হাসান এই খামটা দিয়ে বলেছে, আগামীকাল যদি কেয়ামতও হয়,তাও যেন রেখার কাছে সে চিঠিটা দিয়ে আসে। ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছিল হাসান। সুইসাইড নোট লিখে রেখে গেছে,”আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। বাঁচার কোনো মানে খুঁজে পাচ্ছি না।তাই স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে বরণ করলাম”।
হাসান মরে যেয়েও এই বাড়িতে বেঁচে রইলো কারোর ঘৃণা মেশানো ভালোবাসায়, কারোর শুধুই ঘৃণায় ও আতংকে, কারোর মধ্য রাতের চোখের জলে।
কিন্তু হাসানের জন্য সময় থমকে দাঁড়ালো না। সে তরতর করে তার আপন গতিতেই ছুটে চললো।
শিমুলের অনার্স শেষ হয়ে গেছে। রেকর্ড মার্কস পেয়ে পাশ করেছে সে। বিসিএস এর জন্য খুব পড়ছে। তার ইচ্ছা অ্যাডমিন বা ফরেন ক্যাডারে ঢোকা। পলাশকে নিয়ে সবার ভারি দুশ্চিন্তা। শরীর অনেক ভারি।বিশ বছর বয়স। লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটতে হয়। কোথাও বসতে কষ্ট হয়। একা একা কোথাও বসতে গেলে সে টলমল করতে থাকে।কমোডে তাকে বসিয়ে দিতে হয় পায়জামাটা একটু নিচে নামিয়ে দিয়ে। রেখা,শিমুল, মুকুল,মিতুল এরাই
সাধারণত কাজটা করে। মৌরী -মিথুনও বড় ভাইয়াকে সাহায্য করতে চায়, কিন্তু এই কাজটা রেখা-শিমুল ওদের করতে কঠিন ভাবে নিষেধ করে দিয়েছিলেন। মা-মেয়ে দুজনেই পলাশকে নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় ভুগেন। তারা যখন থাকবেন না,তখন কি হবে পলাশের?কে দেখবে?সব ছেলেমেয়েদের সুন্দর মানসিকতা নিয়ে রেখার মনে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু সবারই লেখাপড়া আছে, কাজকর্ম আছে,ভবিষ্যতে চাকরি বাকরি করবে,সংসার হবে, ইচ্ছা থাকলেও পলাশকে কতোটুকু দেখে রাখতে পারবে ভাই বোনেরা?
এমন কোনো ভালো হোম যদি থাকতো, তাহলে পলাশের জন্য বুকিং দিয়ে রাখতেন রেখা,যেন তাঁর মৃত্যুর পরে সেখানে পলাশ থাকতে পারে।সেখানে ভাইবোনেরা মাঝেমধ্যে যাবে, ভাইয়ের খোঁজ খবর নিবে। বিভিন্ন জনকে দিয়ে অনেক খোঁজ খবর করেছিলেন রেখা এমন একটি হোমের।পান নি।
শিমুলের এম.এ চলছে। এই সময়ে খালাস পেলেন ওমর এবং রিয়া। সাজার মেয়াদ শেষ। ফর্মালিটিজ শেষে দু’জনে বের হলেন কয়েদখানা থেকে। কেউ দাঁড়িয়ে নেই তাঁদের জন্য।