প্রণয় প্রহেলিকা পর্ব-৩৪

0
641

#প্রণয়_প্রহেলিকা (কপি করা নিষিদ্ধ)
#৩৪তম_পর্ব

ব্রেকের মাঝে একটা ঠান্ডা পানির বোতলে চুমুক দিতেই যাবে অমনি একটা মেয়ে বলে উঠলো,
“অনল স্যারকে নিয়ে মিটিং হচ্ছে। তাকে সাসপেন্ড করা হবে”

মেয়েটির কথাটা বুঝতে সময় নিলো ধারার মস্তিষ্ক। ফ্যালফ্যাল নয়নে তাকিয়ে রইলো সে মেয়েটির দিকে। “সাস্পেন্ড” শব্দটি পেন্ডুলামের মতো ঘুরছে। মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো যেনো হুট করেই অকেজো হয়ে পড়লো। সুউচ্চ বিল্ডিং এর উপর থেকে নিচে ফেলে দিলে যেমন অনুভূতি হয় ধারার অনুভূতিটা ঠিক তেমন। মেয়েটির কথায় ক্লাসে বেশ আলোড়ন তৈরি হলো। সকলে ঘিরে ধরলো তাকে। জানতে চাইলো কারণ কি! মেয়েটি একটু থেমে বললো,
“দাঁড়া, দাঁড়া বলছি। আমি উপরে স্যারের সিগনেচার নিতে গিয়েছিলাম। তখন ই দেখি মিটিং রুমে সবাই জড়ো হয়েছে। ভেতরের অফিস ক্লার্ক হাফিজ ভাইকে শুধালাম কারণ কি! তখন উনি বললো, আমাদের মধ্যে কেউ নাকি হেডের কাছে কমপ্লেইন করেছে। অনল স্যার প্রশ্ন আউট করেছেন। প্রশ্ন আউট করেছে নিজের কোর্সে। এবং শুধু নাই নয়, উনি খাতা দেখার সময় ও পার্শিয়ালিটি করেছেন।”
“কে করেছে কমপ্লেইন?”

মাহি অস্থির কন্ঠে প্রশ্নটি করে উঠে। মেয়েটি অসহায় কন্ঠে বলে,
“সেটা আমি কি করে বলবো। হাফিজ ভাই ও চুপ করে আছেন। সেটার মিটিং হচ্ছে। অনল ভাই কে প্রশ্ন করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটি করা হবে। তবে হাফিজ ভাই বললো, অনল স্যারকে হয়তো সাসপেন্ড করা হবে। আগেও এমন হয়েছিলো।”

সকলের মাঝে একটা গুঞ্জন তৈরি হলো। এর মাঝেই দিগন্ত বলে উঠলো,
“কিন্তু উনি তো প্রশ্ন আউট করেন নি। তাহলে এই ক্লেমটা কে করেছে! আর খাতায় পার্শিয়ালিটির তো প্রশ্ন ই আসছে না। আমাদের সবাই ভালো ভাবেই তো পাশ করেছি উনার সাবজেক্ট এ। তাহলে এই ক্লেইমের তো ভিত্তি নেই”
“ঠিক, এই ক্লেইম টা করেছে কে?”

সকলের মাঝে গুঞ্জন উঠলো। সবাই নিজেরাই বলছে, “আমি তো করি নি, আমি তো করি নি। কে করেছে জানি না!” এর মাঝে ধারা নিস্তব্ধ। সে চুপ করে বসে রয়েছে। অনলের উপর দিয়ে কি ঝড় চলছে কল্পনাও করতে পারছে না। কিন্তু প্রশ্নটি হলো, এতো বড় অপবাদটা দিলো কে? মাহি তার ঘাড়ে হাত রেখে বললো,
“চিন্তা করিস না, এমন অপবাদে অনল ভাই এর কিছু হবে না”

মিটিং রুমে মোট সাত জন শিক্ষকের সামনে বসে রয়েছে অনল। হেড অফ ডিপার্টমেন্ট আব্দুল আনসারী সাহেব চোখের চশমাটা নামিয়ে বললো,
“দেখো অনল, আমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আছে তুমি এই কাজটা করেছো। প্রথমত তুমি কাউকে জানাও নি তোমার ওয়াইফ ওই ক্লাসের স্টুডেন্ট। এটা তুই অথোরটির কাছে গোপন করে গেছো। উপরন্তু তুমি নিজেই বলো যে মেয়েটির গত সেমিষ্টারে এতো বাজে রেজাল্ট করলো। সে এই সেমিষ্টারে কি করে ৩.২৫ পায়। শুধু তাই নয়। তোমার কোর্স ছাড়া কোনো কোর্সে কি সে ভালো করেছে? বি, বি মাইনাস এমন গ্রেড উঠেছে। শুধু তোমার কোর্সেই এ। তাও ক্লাস এসেসমেন্টে সে পেয়েছে ত্রিশে তিন। এই কাজটা তোমার থেকে এক্সপেক্টেড ছিলো না অনল। তোমার কি কিছু বলার আছে?”

আনসারী সাহেবের কথা শেষ হতেই অনল ধীর গলায় বললো,
“স্যার, আমি জানি না আপনার এমন কেনো মনে হচ্ছে! আপনি আমার কোর্সের এভারেজ রেজাল্ট দেখুন। ৪৫ জনে একজনও ফেল করে নি। এদের সবার এসেসমেন্টে নম্বর কম। আপনার কি মনে হয়েছে কেউ খারাপ করেছে? আর ক্যালকুলাস আমি একা নেই নি। শিহাব স্যার ও নিয়েছেন। আমাদের কোর্সের প্রশ্ন ও মডারেট হয়েছে। এরপর ও আপনি আমাকে সন্দেহ করলে আমার কিছুই বলার নেই। আমার ওয়াইফকে ভালো রেজাল্ট করাবো, খাতায় পার্শিয়ালিটি করবো আমি এমন মানুষ নই। আমার নৈতিকতা আছে। যখন এই ভার্সিটির টিচার হয়েছিলাম সেই নৈতিকতা নিয়েই আমি এসেছিলাম। হ্যা, এটা সঠিক যে আমি এডমিনিস্ট্রেশনকে ধারার কথাটা জানাই নি। সেটারও কারণ আছে। আমাদের বিয়েটা হুট করেই হয়ে গেছে। আমার জয়েনিং এর পর। তাই ব্যাপারটি আমি লুকিয়ে গেছি। যদি এজন্য আমাকে শাস্তি দেওয়া হয় আমার আপত্তি নেই। তবে আমি আমার দায়িত্বে কোনো গাফেলতি করি নি। আমি কোনো প্রশ্ন আউট করি নি। খাতাগুলো অফিসে রয়েছে। তদন্ত করে দেখতে পারেন। মডারেটর স্যার যিনি ছিলেন তাকেও জিজ্ঞেস করতে পারেন। শুধু শুধু একটি মেয়ের কথা শুনে আমার উপর এলিগেশন দেওয়াটা কতটা ঠিক আমার জানা নেই”

উপস্থিত সকলে মুখ চাওয়াচাওয়ি করলো। শিহাব ও বললো, সে কোনো পশ্ন আউট করে নি। ডিপার্টমেন্টাল হেড আনসারী সাহেব বললেন,
“তুমি এখন যেতে পারো অনল। আজ তোমার ক্লাস নেবার প্রয়োজন নেই।”
“জ্বী”

বলেই উঠে দাঁড়ালো অনল। তার ভ্রু কুঞ্চিত হয়ে আছে। মুখ কঠিন। তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো সে। মাঝে মাঝে সততার প্রমাণ দেওয়া এতোটা কঠিন কেনো! সে আন্দাজ করেছিলো এমন কিছু একটা হতে পারে। সে ভেবেছিলো কমপ্লেইন টা দিগন্ত করবে। কারণ এই প্রশ্নের সন্দেহটা তার মনেই জেগেছিলো। কিন্তু সে কমপ্লেইন করে নি। করেছে মাধবী নামের একটি মেয়ে। ব্যাপারটা জানতেই বেশ অবাক হয়েছিলো অনল। তবে অনল ও কাঁচা মানুষ নয়। সেও যথেষ্ট প্রমাণ নিজ পক্ষে রেখেছে, কিন্তু স্যারেরা সেটা বিশ্বাস না করলে তার করার কিছুই নেই। মিটিং রুম থেকে বের হতেই ধারার দর্শন পেলো অনল। মেয়েটি থমথমে মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তার চোখ টলমল করছে। অনলকে দেখেই সে এগিয়ে এলো। চিন্তিত কন্ঠে বললো,
“তোমাকে ওরা সাসপেন্ড করে দিয়েছে?”
“এতো সোজা? মাত্র তদন্ত কমিটি করা হচ্ছে। তারপর আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ পেতে হবে। তারপর আমাকে সাসপেন্ড করবে।”

স্মিত হেসে কথাটা বললো অনল। ধারা অধৈর্য্য হয়ে বললো,
“কিন্তু করবে টা কেনো? তুমি তো অন্যায় করো নি”
“তাদের ধারণা আমি তোকে প্রশ্ন দিয়েছি। তুই সেই প্রশ্ন সবাইকে দিয়েছিস। আবার তোর বেলায় খাতা দেখাতেও আমি পার্শিয়ালিটি করেছি। মাবধী নামের একটি মেয়ে নাকি কমপ্লেইন করেছে। আমিও বলেছি প্রমাণ করুক। তারপর না হয় বাকিটা দেখা যাবে। চিন্তা করিস না, আমার কিছু হবে না। বড় জোড় চাকরি যাবে। করলাম না শিক্ষকতা। বেকার বরে আপত্তি নেই তো তোর?”

ধারা অবাক নয়নে মানুষটির দিকে চেয়ে আছে। এতো বড় বিপদেও সে এতো শান্ত কি করে! না চাইতেও অপরাধবোধ হলো ধারার। কোথাও না কোথাও তার ও দোষ ছিলো। তার বন্ধুর জন্যই আজ ব্যাপারটা এতোদূর গড়িয়েছে। সেদিন যদি দিগন্ত এবং তার মাঝে ঝামেলা না হতো তাহলে সেই সুযোগটা মাবধী নিতে পারতো না। সেদিন করিডোরে মাবধীও ছিলো। মাবধী ধারার উপর শোধ তুলতেই এই কমপ্লেইন করেছে। কিন্তু এই ঝামেলাগুলোর ফলস্বরূপ অনলকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। কথাটা ভাবতেই হৃদয়ের অন্তস্থলে চিনচিনে ব্যাথা অনুভূত হলো। ধারার লম্বাটে মুখখানা দেখেই অনলের হাসি চওড়া হল। মেয়েটির মুখে নিজের জন্য দুঃচিন্তা এবং ভীতি দেখে এক অসামান্য শান্তি অনুভূত হলো অনলের। ধারার হাতটা নিজের মুঠোবন্দি করে বললো,
“আজ আমার ক্লাস নেই, ঘুরতে যাবি?”
“তোমার চিন্তা হচ্ছে না?”
“চিন্তা করলে যদি কিছু লাভ হতো, চিন্তা করতাম। কিন্তু আফসোস লাভ নেই। তুই ও চিন্তা করিস না। আমার কিচ্ছু হবে না। হ্যা, এখন ভেবে দেখতে পারিস বেকার স্বামীর সাথে থাকবি কি না! না থাকতে চাইলে”
“আর একবার যদি এই কথাটা তুলেছো তো দেখবে আমি করি। বাসায় যেয়ে লংকাকান্ড বাঁধাবো বলে দিচ্ছি। একেই চিন্তা হচ্ছে উপরে বারবার এক কথা!”

বেশ ক্ষিপ্ত কন্ঠে কথাটা বললো ধারা। অনল নিঃশব্দে হাসলো। তারপর বললো,
“ব্যাগ নিয়ে আয়। একটা সুন্দর জায়গায় নিয়ে যাবো তোকে”
“কোথায়?”
“যেয়েই দেখতে পাবি”

ধারা আর কথা বাড়ালো না। ব্যাগ নিয়ে আসলো ক্লাস থেকে। অনল বাইকে স্টার্ট দিলো। পিচঢালা পথ চিরে এগিয়ে গেলো গন্তব্যে।

শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়। বিনা নোটিসে বৃষ্টির ঝোক যেনো আরোও বেড়ে গেছে। ইট পাথরের শহর পেরিয়ে নিরিবিলি এলাকা। চিকন রাস্তা, দু পাশে মাঠ তাতে হাটুজল পানি। অনলের বাইক চলছে। ধারা অবাক নয়নে তাকিয়ে দেখছে। রোদের তেজ কমে এসেছে। দক্ষিণ আকাশের কোনে কালো মেঘ জমেছে৷ মেঘের গর্জন কানে আসছে। এখনই শ্রাবণের বর্ষণ হবে, ভিজে যাবে উত্তপ্ত পৃথিবী। বাইক মোড় ঘুরলো। একটা বিশাল মাঠের মাঝে দেওয়াল ঘেরা একটা জায়গায় বাইক থামালো অনল। ধারা অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলো জায়গাটির দিকে। একটি লোহার কেঁচিগেট৷ অনল গেটটিতে আওয়াজ করতেই। একজন ছুটে গেট খুললো। অনল স্মিত স্বরে বললো,
“কেমন আছেন চাচা?”
“এই তো আল্লায় যেমন রাখছে। তুমি কেমন আছো?”
“জ্বী আলহামদুলিল্লাহ, কাজ কতদূর?”
“আজকে কামে আসে নাই কেউ। তুমি ভেতরে আসো, নিজেই দেইখে নিও”

অনল হেসে বললো,
“বউ মা নিয়ে আসছি। যার বাড়ি সেই দেখুক”

অনলের কথাটা শুনতেই অবাক হলো ধারা। তার বিস্মিত দৃষ্টি উপেক্ষা করে বললো,
“চাচার সাথে ভেতরে যা। আমি বাইক রেখে আসছি”

ধারাও তার কথা শুনলো। সে ভেতরে গেলো। ভেতরে যেতেই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। একটি অর্ধ নির্মিত বাড়ি। মাত্র ছাদ ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। রড, বালি, সিমেন্টের স্তুপ নিচে জড়ো হয়ে আছে। বাড়িটি এক তালার কাঠামো আপাতত দেওয়া। ইটের সিড়ি উঠে গেছে। এখনো রুম করা হয় নি। বৃদ্ধ মানুষটি বললো,
“এই বছরে কাম শেষ হয়ে যাবে। আসলে স্যার তো আসার সময় পায় না। আমি ই ওদের দিয়ে করাই। মিস্ত্রীরা কাম চোর, কাছে না থাকলে কাম করে না”

ধারা উত্তর দিলো না। সে শুধু অবাক নয়নে তাকিয়ে রইলো ইটের কাঠামোর দিকে। এর মাঝেই অনল এলো। বলিষ্ট হাতের ফাঁকে ধারার হাতটি পুরে বললো,
“ভেতরে না গেলে বুঝবি কিছু?”

বলেই ধারাকে নিয়ে গেলো বাড়িটিতে। সাবধানে উঠালো সে। পিলার গুলো এখনো ঢালাই দেওয়া হয় নি। শুধু কাঠামো করা। অনল ধারাকে ঘুরয়ে ঘুরিয়ে সব দেখালো। শেষমেশ একটা স্থানে এনে বললো,
“এটা আমাদের রুম হবে। তোর যেমন ইচ্ছে তেমন করে সাজিয়ে নিস”
“এসব কবে করলে?”

অনল বাকা হেসে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ধারাকে। তার কাঁধে থুতনি ঠেকিয়ে বললো,
“বহুদিন আগে। তোর সাথে বিয়ের পর ই তোকে কিছু দেবার ইচ্ছে ছিলো৷ শহরের মাঝে আমার ভালো লাগে নি। প্লাবণ এই জায়গার খোঁজ দেয়। আমিও সস্তা পেয়ে জমিটা কিনলাম। তারপর এই আসতে আসতে বাড়ির নকশা করলাম। চেয়েছিলাম যখন বাড়িটা শেষ হবে তখন তোকে সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বহুবছর পার হবে বাড়ি শেষ হতে”

অনল দীর্ঘশ্বাস ফেললো। তারপর ধীর কন্ঠে বললো,
“আমরা যখন বুড়ো হয়ে যাবো, বাচ্চাকাচ্চারা বড় হয়ে যাবে, তাদের বিয়েশাদী হয়ে যাবে তখন আমরা বুড়াবুড়ি এখানে এসে থাকবো। নিরিবিলি, নির্মল পরিবেশ। যেখানে কোনো কোলাহল নেই, কোনো ঝঞ্জাট নেই। শুধু আমি আর তুই। আর আমাদের প্রণয়। আমি তো বাহির নাম ও ঠিক করেছি, “প্রণয় প্রহেলিকা”। আমাদের প্রণয় প্রহেলিকার সাক্ষী এই বাড়ি। তোর পছন্দ হয়েছে?”

ধারা নিশ্চুপ। শুধু একটু পর পর ডুকরে উঠার শব্দ আসছে। অনল অনুভব করলো তার বউ টি কাঁদছে। অনল তাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে মুখখানা আদলে করে বললো,
“পছন্দ হয় নি”

ধারা উত্তর দিলো না। শুধু অনলকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। সে কাঁদছে। তার নোনাজলের ঢেউ অনলের শার্ট ভিজিয়ে দিলো খানিকটা। কিন্তু ধারা এখনো কাঁদছে। অনল ধারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
“কাঁদছিস কেনো?”
“তুমি আমাকে এতোটা ভালোবেসো না। আমার নিজেকে অসহায় লাগে। বারবার মনে হয় এতোটা সুখের আমি যোগ্য নই। এই সুখের বিনিময়ে তোমাকে দেবার কিছুই নেই আমার। আমি যে কাঙ্গাল। আমি কোথায় রাখবো বলো তোমার এই প্রণয়গুলো?”

অস্পষ্ট স্বরে কোনোমতে কথাটা বললো ধারা। সে বারবার ডুকরে উঠছে। অনলের হাসি প্রসারিত হলো। হাতের বেষ্টনী শক্ত করলো। নিবিড় ভাবে ধরে রাখলো ধারাকে। ধীর কন্ঠে শুধু বললো,
“পা’গ’লী”

*********
সারাটা রাত নির্ঘুম কাটলো ধারার। দু চোখ এক করতে পারলো না সে। অনল যদিও তাকে নিজের বুকে আগলে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে বলেছে, কিন্তু সেটি হলো না। অনলের ঘুমন্ত মুখখানা নিষ্পলক চোখে দেখলো এবং একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিলো সে।

পরদিন যখন অনলের ঘুম ভাঙ্গলো তখন পাশে ধারাকে পেলো না সে। ভেবেছিলো মেয়েটি বাথরুমে আছে। কিন্তু সেখানেও তাকে পাওয়া গেলো না। মাকে শুধাতেই সে বললো,
“ধারা তো না খেয়েই ভার্সিটি চলে গেছে”

অনলের মনে খটকা লাগলো। সে যতটুকু জানে ধারার ক্লাস আজ সাড়ে দশটায়। সুতরাং এতো সকালে যাবার কোনো মানেই নেই। অনল দেরি করলো না। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে চলে গেলো ভার্সিটি। ক্লাসের সামনে যেতেই মাহির সাথে দেখা হলো তার। ধারার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে উত্তর দিলো,
“অনল ভাই, আমি তো ওকে আসার পর দেখি নি।”
“তোমাদের কি আজ আগে আগে আসার কথা?”
“না তো”

তখন ই সেখানে দিগন্ত উপস্থিত হলো। অনলকে দেখতেই সে বললো,
“ধারা, হেড স্যারের রুমে”…………

চলবে

মুশফিকা রহমান মৈথি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here