#১৬_পৃষ্ঠায়
পর্ব ৪ #উচিত_শিক্ষা
লেখিকা – Zaira insaan
এনোনের মুখ শক্তপোক্ত হয়ে যায় পকেট থেকে হাত সরিয়ে নিনির কাছে এগিয়ে আসতে আসতে বলল,, সাহস তো তোমার অনেক বেশি দেখি, দাঁড়াও কি করি তোমার সাথে দেখ।” নিনি চমকে উঠে তাকে এগিয়ে আসতে দেখে বুঝতে পারলো সে অতিরিক্তই বলে ফেলেছে। নিনি পিছাতে পিছাতে ঘাবড়ে বলল,, কাছে আসবেন না একদম, আ..আর আপনি কি করে তলায় ফেলবেন আ..মি আপনাকে ভয় পায়না।” এনোন তাড়াতাড়ি কাছে আসতে আসতে বলল,, তাই তো দেখি তোতলাচ্ছো।” বলে হুট করেই নিনি কে কোলে তুলে নেয়। নিনি পুরো ভেবাছেকা খেয়ে যায় কাঁধ ধাক্কাতে ধাক্কাতে বলল,, নিচে নামান।” এনোন শুনলো না সোজা বাথরুমে ঢুকে পড়লো নিনি এখনো পা ছড়াছড়ি ও তার কাঁধ ধাক্কাতে লাগলো। এনোন তাকে বাথটাবের কাছে নিয়ে আসলো বাথটাব আগের থেকেই সাবানের পানিতে ভরা নিনি ভয়ে কিছু বলার আগেই এনোন তাকে ধপ করে বাথটাবে ফেলে দেয়। নিনির মুখ হা হয়ে যায় রেগে চোটে বলে,, একি করলেন?” এনোন তেছড়া মতো বলল,, ময়লা কে পরিস্কার করলাম।”
নিনি রেগে কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে,, তিনবার গোসল করতে হচ্ছে আমার।” এনোন আর তোয়াক্কা করল না হাত ধুয়ে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে যায়। নিনির এ মুহূর্তে অনেক কান্না পাচ্ছে কিন্তু সে কাঁদবে না কাঁদতে গেলে তার চোখের পানি শুকিয়ে যায়। নিনি আবারো গোসল করে বাথরুম থেকে বের হলো। এনোন ততক্ষণে শুয়ে পড়লো নিনি এনোনের কাছে এসে দাঁড়ায় ঝুঁকে তাকে ভালোভাবে দেখতে লাগল। চুলের পানি গলায় পড়তেই এনোন ফট করে চোখ খুলে নিনির ভয়ে আত্না কেঁপে উঠে দূরে সরে দাঁড়াতে গিয়ে দেয়ালের সাথে জোরে মাথায় বাড়ি খায়। ব্যাথায় আওয়াজ করে মাথার পেছনে হাত দিয়ে ঘষতে লাগলো। এনোন ভ্রু কুঁচকে বলে,, কাছে এসে কি করতে চাইছিলা?” ওমন প্রশ্নে নিনি বোকা বনে বসে বলে,, কি করবো আর।” এ কথাটি উল্টো বুঝে বসে এনোন, সে দাঁড়িয়ে কাছে এসে ঝুঁকে বলে,, ঘুমন্ত অবস্থায় সুযোগ নিতে চাচ্ছো?” নিনি এতক্ষণ চোখ বুজে মাথা ঘষছিল চোখ খুলে তাকে হঠাৎ কাছাকাছি দেখতে পেয়ে ভয়ে দূরে সরতে গিয়ে আবারো বাড়ি খেয়ে বসে সে। নিনি ব্যাথায় আহহ্ করে উঠে এনোন তেছড়া মতো বলল,, ভাঙো, আমার রুমের দেয়াল ভেঙে ফেলো তোমার মাথা দিয়ে, Nonsense!!” নিনি অবাক হয়ে তাকায়, মাথা দিয়ে সে দেয়াল কেন ভাঙ্গতে যাবে?
এনোন আর তোয়াক্কা না করে শুয়ে পড়ে নিনি আবারো এসে তেজি গলায় বলে,, আপনি কেমন পুরুষ এক মেয়েকে দাঁড় করিয়ে রেখে পুরো বিছানা দখল করে ঘুমাচ্ছেন।” এনোন কিছু বলল না চোখ বুজে রইল নিনি এক কথা আবারো বলল এনোন এবার বিরক্ত হয়ে বলে,, আমার বিছানা যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে ঘুমাবো তোমার কি? গিয়ে বারান্দায় ঘুমাও নাহয় বাথরুমে বাথটাব আছে।” বলে পুনরায় চোখ বুজে ফেলল। নিনি রেগে লাল হয়ে যায় কি আর করার সে গিয়ে বারান্দা চেয়ারে বসে মাথা হেলিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
___________________
সকালে এনোন বারান্দায় আসতেই নিনি কে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পাই সে, অজান্তেই ভ্রু কুঁচকে ফেলে হঠাৎ তার চোখ যায় সে এগিয়ে এসে ওড়না ঠিক করে দেয় তারপর সে রুমে চলে আসে।
কারোর চিল্লাচিল্লি তে নিনির ঘুম ভেঙে যায় আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নেয়। চিল্লাচিল্লির আওয়াজ স্পষ্ট হতেই সে দাঁড়িয়ে বারান্দার রেলিং এ হাত রেখে নিচে তাকাই নিচে ঝগড়া লেগেছে রিক্সাচালক ও দোকানির দের মধ্যে। নিনি বিরক্ত মার্কা চেহারা করে রুমে চলে আসে ঘড়ির দিকে চোখ পড়তেই চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় তার, সাড়ে নয়টা বেজে এখন। নিনি দ্রুত বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। নিচে নামতেই অর্সা তার দিকে রক্তু চোখে তাকায় সাথে সাথে নিনি ঘাবড়ে যায় সিনানের দিকে তাকাতেই দেখে সিনান ওর দিকে মুচকি মুচকি হাসছে। নিনি আশেপাশে তাকায় কোথাও এনোন নেই হয়ত অফিস চলে গিয়েছে। নিনি সবার সাথে বসে নাস্তা করতেই অর্সা বলেন,, গ্ৰাম থেকে মিলিফু আসবে।” সাথে সাথে জোরে জোরে কেঁশে উঠে সিনান সর্ণালি চেহারায় চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। সিনান পানি খেয়ে বলে,, মিলিফু আন্টি কেন আসছে আবার?” অর্সা বলল,, নিনির সাথে দেখা করতে।” সিনান কপালে হাত দিল সর্ণালি উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে,, কখন আসবে?” অর্সা বলল,, আজকেই, বাসে উঠে পড়ছে।” সর্ণালি চোখে মুখে ঘাবড়ানোর ছাপ। নিনি এদের অবস্থা দেখে কিছু বুঝলো না, মিলিফু কে?
নিনি সিনানের দিকে তাকালো সিনান এমনি এমনি পাউরুটি চিবুচ্ছে সেও টেনশনে আছে। কিন্তু কিসের টেনশন?
নিনি নাস্তা শেষ করে রান্নাঘরে গেল সিনান তাড়াতাড়ি এসে বলে,, সাবধানে থেকো!” হুট করে এ কথাটি বলতেই চমকে উঠে নিনি। ভ্রুদ্বয় কুঁচকে বলল,, মিলিফু টা কে?” সিনান বলল,, গ্ৰামের জল্লাদ মহিলা সবাই তাকে কড়া চেয়ে অধিক কড়া ভাবে ভয় পায়।” নিনি একটু চিন্তা করে বলল,, মানে?” সিনান আবারো বলল,, পুরো দজ্জাল মহিলা, সবকিছু তার থেকে পারফেক্ট লাগতে হয় নাহলে হুট করে অভিশাপ দিয়ে দেয়, আমাকে পর্যন্ত দিছে জানো এস এস সি তে আমার গ্ৰেট পয়েন্ট কম আসছিল এ মহিলাটি এটার জানার পর ১০ গাইটের লেকচার সহ বলছিল আমাকে নাকি কেউ পছন্দ করবে না।” বলে মাথা নিচু করে ফেলে সিনান আবারো বলল,, এ কথাটি কিন্তু সত্য হয়, আমার বয়ফ্রেন্ড আমার সাথে ব্রেকআপ করে ফেলে ভার্সিটি তে আমার একটাও ফ্রেন্ড নাই, শয়তান কুটনি বুড়ি।” বলে দাঁত কিড়মিড় করতে লাগল সে। নিনি ভয়ে বিভিন্ন চিন্তায় ডুব দেয় অনেক খারাপ কিছু আসতে লাগল মনে।
সংসার এখনো ভালোভাবে শুরুও হয়নি যদি এই জল্লাদ মহিলাটির কারণে তার সংসার ভেঙ্গে যায়? তাহলে কম বয়সেই বিধবার ট্যাগ নিয়ে ঘুরতে হবে। এসব ভাবতেই শির খাড়া হয়ে যায় তার কেঁপে উঠে সে। সর্ণালি রান্নাঘরে এসে নিনি কে বলে,, তোমার আজ রান্না করতে হবে না, তুমি গিয়ে পরিপাটি হয়ে থাকো।” বলেই চলে যায় সর্ণালি। নিনির এখন চিন্তার ভর ধরেছে না জানি কি হয় তার এই মহিলাটির সাথে।
(চলবে…)
[ পর্ব কেমন লাগল জানাবেন। ]