#শেষ_থেকে_শুরু
কলমে : লাবণ্য ইয়াসমিন
#বোনাস_পর্ব
চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে আছে আবির। জীবনের প্রতি বিরক্ত ধরে গেছে। প্রাণের থেকেও অধিক প্রিয় বাবার মৃত্যু সেই সঙ্গে হৈমন্তীর গায়েব হয়ে যাওয়া আবিরকে একেবারে নিঃশেষ করে দিচ্ছে। পরের জন্য কুপ খুঁড়তে গিয়ে নিজেই সেই কুপে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা । কখনও ভাবেনি বাবা ওকে ছেড়ে চলে যাবে। হৈমন্তীর উপরে আবির দুর্বল। একটু খানি না অনেকটাই দুর্বল যেটা প্রকাশ করতে পারেনি। চারদিক থেকে হারিয়ে ফেলল। মেয়েটা ওকে কখনও ক্ষমা করবে না আবির এটা ভালো করেই জানে। কিন্তু ওতো মেয়েটার ক্ষতি করত না। শুধু ফাইলগুলো নিয়ে নিতো। এলোমেলো ভেবে চলেছে আবির। সামনে বসে আছে জাবেদ। জাবেদের চোখেমুখে বিস্ময়। আবির নীরবতা ভেঙে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
> আমার সঙ্গেই কেনো এমন হলো বলতে পারো জাবেদ? আমি বিশ্বাসঘাতকতা করেছি কিন্তু কেনো করেছি এটাতো কেউ ভাববে না। তুমি বলো বাবার ছায়া ছাড়া আমি কি এখানে এসে পৌঁছাতে পারতাম? এই আবির এহসান কোনো বস্তিতে নয়তো রাস্তার ছেলে হয়ে ঘুরতো। নিজের বাবা মা তো জন্ম দিয়েই পৃথিবী ছেড়েছে। আমাকে যে লালন পালন করেছে তার উপরে আমার কৃতজ্ঞতা থাকা উচিৎ ছিল না?
জাবেদ মাথা নিচু করে উত্তর দিলো,
> ম্যাডাম আপনাকে ভূল বুঝেছে আপনি কষ্ট পাবেন না। উনাকে আমি খুজেঁ বের করবো। উনি বুঝবেন আপনার কষ্ট।
আবির তাচ্ছিল্যের করে বলল,
> লাগবে তাকে। সে ভালো থাক। তুমি আর ওকে খুজোঁ না। আমার কোনো ডকুমেন্ট লাগছে না। যার জন্য এতোকিছু করলাম সেইতো আর বেঁচে নেই। তাছাড়া আমি চাইনি ওটা কোনো বিদেশির হাতে পড়ুক। ওই ফরমুলাটা বাবা সংগ্রহ করেছিল উনার বন্ধুর থেকে। আমাকে আনতে বলেছিল আমি ভূলে রেস্টুরেন্টে ফেলে চলে এসেছিলাম। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ঘুরাঘুরি করতে তখন পছন্দ করতাম। এসব ফাইল টাইলে আমার মন ছিল না। তারপর যখন ওটা হারিয়ে গেলো তখন বাবাকে কেমন উন্মাদ হয়ে যেতে দেখলাম। উনি আমাকে থাপ্পড় দিয়ে বললেন, তোমাকে মানুষ করছি এই তাঁর প্রতিদান দিলে। তুমি বড্ড বেইমান। পর কখনও আপন হয়না। জাবেদ কথাটা আমাকে কতটা যন্ত্রণা দিয়েছিল তোমাকে বোঝাতে পারবো না। সেদিন থেকেই ভেবেছিলাম বাবার সব কথা শুনবো। যা বলবেন তাই। তখন থেকে মেয়েটার পিছু নিয়েছি। আচ্ছা জাবেদ তোমার মনে হয়না একজন পুরুষ মানুষ সব সময় একটা মেয়ের পেছনে লাড্ডুর মতো ঘুরছে। শুধু নিজের স্বার্থের জন্যই আর কোনো উদ্দেশ্যে নেই?। শুনেছি প্রথম দেখাতেই প্রেম হয়ে যায় সেখানে আমি ওকে অসংখ্যবার দেখেছি তোমার মনে হয়না আমার দুর্বল হওয়াটা স্বাভাবিক কিছু?।আমার বয়সটা ছিল ভালোলাগার ভালোবাসার। মেয়েটার দুঃখ কষ্ট দেখে মনে হতো এক নিমিষেই ওর সব কষ্টগুলো উড়িয়ে দেই কিন্তু হতোই না। আমার নিয়তিই খারাপ। ছেড়ে দাও জাবেদ। আমার ভিসার ব্যবস্থা করো। আমেরিকা না অন্য কোথাও যেতে চাই। একা থাকতে চাই। এটাই আমার শাস্তি। আমার ছায়া অনেক ভয়ংকর।
জাবেদ অবাক হচ্ছে আবিরের কথাবার্তা শুনে। ছেলেটা আগে থেকেই ইমোশনাল ছিল বড় স্যারের জন্য শক্ত হয়ে কাজকর্ম করেছে। লোকটার অবর্তমানে আবার আগের মতো হয়ে গেছে। বড় ম্যাডাম হয়তো জানতো এমন কিছুই হবে তাই কৌশলে স্যারকে সরিয়ে দিলেন। পৃথিবীর সবাই কি স্বার্থপর? যে যাকে পারছে টপকিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। ফারজানা হক স্বামীর অবর্তমানে সব কিছুর মালকিন। কিন্তু আবিরের কি? ওর তো কিছুই নেই। না আছে বাবা মা না আছে বাবা মায়ের সম্পত্তি। ফারজানা হক চাইলেই ওকে বাড়ি থেকে তাঁড়িয়ে দিতে পারে। ও তো একদম একা। একজন মানুষের এর চাইতে ভালো শাস্তি আর কি হতে পারে। আবির মলিন হেসে বলল,
> জাবেদ ওসব ফাইল বা ডকুমেন্টের বিষয়ে কাউকে বলো না। তাহলে হৈমীর ক্ষতি হবে। সবাই জানে ওটা আমার কাছেই আছে। যদি ফাঁস হয়ে যায় তখন ঝামেলা আছে। আমি আর কারো ক্ষতি করতে চাইনা। তুমি আজকের মধ্যেই আমার যাওয়ার ব্যবস্থা শুরু করো। কার জন্য থাকবো। আমি তো এতিম।
> স্যার এসব বলবেন না। আপনি কেমন সেটা আমি জানি। আপনার যাওয়ার ব্যবস্থা আমি খুব তাড়াতাড়ি করে ফেলবো। আপনি চিন্তা করবেন না।
> আম্মুকে দেখেশুনে রেখো। সে যা করেছে ক্ষমা হয়না তবুও সে আমার মা। তার স্বামীকে সে খুন করেছে আমি কি বলবো। তাঁর স্বামীর উপরে আমার কোন অধিকার নেই। তুমি কেস টা বন্ধ করে দিতে বলে দিও।
> স্বী স্যার।
আবির কথাটা শেষ করে পূর্বের মতো চোখ বন্ধ করলো। কারো ক্ষতি চাইলে নিজেরও ক্ষতি হয় কথাটা আজ বিশ্বাস হচ্ছে। জাবেদ চুপচাপ ফাইল হাতে বেরিয়ে গেলো। অফিসে কাজকর্ম চলছে তবে আবিরের সেদিকে খেয়াল নেই। বুকের মধ্যে হাতুড়ি পিটাচ্ছে। মনে হচ্ছে সুইসাইড করে নিতে। ভাবলো সুইসাইড করলে কি সব দুঃখ চলে যাবে? আবির একবার ভাবলো সুইসাইড করবে। বিদেশে গিয়েও কি শান্তি আসবে? আসবে না তখন আরেকট যন্ত্রণা ওকে খাবলে ধরবে। মৃত্যুতেই মিলবে মুক্তি। হৃদয়ের সঙ্গে বিলীন হবে হৃদয়ের যত চাওয়া পাওয়া। লাইট দুটো বারবার বিড়বিড় করলো হঠাৎ কারো পায়ের শব্দে ওর ধ্যান ভাঙলো। ঝট করে চোখ খুঁলে দেখলো রোহান হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। আবির ভ্রু কুচকে বলল,
> তুই?
রোহান এগিয়ে এসে বলল,
> তোর পরিণতি দেখতে আসলাম। যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর। তোর অবস্থাও তেমন। না হৈমন্তীকে পেলি না নিজের বাবাকে বাঁচাতে পারলি। আর না পারলি সেই মহামূল্যবান ডকুমেন্ট।
আবির বিস্মিত হয়ে জিঞ্জাসা করলো,
> তুই এসব কিভাবে জানলি,তোকে কে বলেছে? কে বলছে তোকে?
আবিরের অস্থিরতা দেখে রোহান তাচ্ছিল্যেরের হাসি দিয়ে বলল,
> অনেক কিছুই জানি। যাইহোক যেটা তুই পারিসনি আমি সেটাই করে দেখিয়ে দিব। আন্টি আমাকে ডেকেছেন তোঁর কাছে আসার ইচ্ছে আমার ছিল না। তুই যা করেছিস আমার সঙ্গে, জীবনে ভুলবো না।
আবির বিস্মিত হয়ে তাঁকিয়ে আছে। রোহানের সঙ্গে ওর মায়ের কি কথাবার্তা থাকতে পারে? তাছাড়া ফারজানা হক অফিসে তেমন আসেনা। হঠাৎ এখানে কি জন্য আসবে। আবিরের ধ্যান ভাঙলো রোহানের কথা শুনে। রোহান ফোন রিসিভ করে কথা বলতে বলতে চলে গেলো। ছেলেটা মেহুলের নাম ধরে কথা বলছিল। আবির ভ্রু কুচকে থাকলো। এদের উদ্দেশ্য বুঝতে পারছে না। কি করতে চাইছে এরা? নিজের উপরে বিরক্ত হচ্ছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে কতটা অসহায় হয়ে উঠেছে। ফারজানা হক স্বামীর মৃত্যুর পরে সব কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে কিন্তু কেনো? আবির মায়ের উপরে ভরসা করতে পারছে না। শুধু ওর জন্যই কেনো উনি নিজের স্বামীকে খুন করতে চাইবে? মানুষ এতোটা ভালো হয়? কতকি জানার আছে।
__________________
রহমান সাহেবের সাহায্যে একটা বেসরকারি কলেজের শিক্ষিকা হিসেবে জয়েন করেছে হৈমন্তী। আজকে তাঁর প্রথমদিন ছিল। মেয়েটাকে সঙ্গে আনা হয়নি। দুটো ক্লাস নিতে হবে। পরপর দুটো ক্লাস নিলেই ঝামেলা শেষ। বাংলা পড়াতে হবে। এখানে শিক্ষকের দরকার ছিল সৌভাগ্যবশত হৈমন্তীকে সিলেক্ট করা হলো। হৈমন্তী এতেই খুশী তবে এর বাইরেও কিছু করবে। মেয়েটাকে মানুষের মতো মানুষ করতে হলে টাকা পয়সার দরকার হবে। নিজের একাউন্টে যে টাকা আছে ওটা তুলতে পারবে না। পেছনে বিপদ হানা দিয়ে আছে। এই সুত্র ধরে ঠিক হাজির হবে। দরকার নেই সেসব হৈমন্তী রোজগার করতে জানে। প্রথমদিন থাকাই সকলের সঙ্গে পরিচিত হতে বেশ সময় লাগলো। রহমান সাহেব ওর সঙ্গে এসেছে। হৈমন্তী নেকাব পড়ে আছে। ও চাইছে না কারো সামনে আসতে। আধুনিক যুগ কোন ছাত্রের টিকটক বা লাইভের ঝামেলায় ফেসে গিয়ে ভাইরাল হয়ে যাবে বুঝতেই পারবে না। সাবধানের মার নেই। মোটামুটি নিজের একটা শক্তপক্ত পরিচয় তৈরী করতে হবে। আর পালিয়ে বেড়ালে চলবে না। জীবন সুখের যদি সেটাকে উপভোগ করা যায়। হৈমন্তী মেয়েকে নিয়ে সুখে থাকবে। সেখানে কারো কালো ছায়া হানা দিতে পারবে না। না আবির না ফরহাদ কেউ না। হৈমন্তী অফিসের মধ্যে বসে ছিল পাশের ছিটে একটা ম্যাডাম বসে আছে। মেয়েটার কথায় হৈমন্তীর ধ্যান ভাঙলো।
> জানেন আপা আমিও আপনার মতোই স্লিম ছিলাম কিন্তু ভাগ্য গুণে একটা প্রেম করলাম। বয়ফ্রেন্ড ভালোবেসে সকাল বিকল চারবেল শুধু বলতো অনু তুমি না খেলে আমি কষ্ট পাবো। তুমি অনেক অনেক খাবে। আমিও কি বোকা। খেয়ে খেয়ে মুটিয়ে গেলাম কিন্তু শেষপর্যন্ত উনি পাশে থাকলো না। বিয়ে করে নিলো। আমার ও বিয়ে হলো। মাঝখান থেকে আমি এখন মোটা।
হৈমন্তী ভদ্রমহিলার কথা শুনে মলিন হাসলো। অনুকা ম্যাম বিস্মিত হয়ে বলল,
> আপনি একটু চুপচাপ টাইপের তাইনা? আমি প্রচুর কথা বলি। আপনাকে হাসানোর জন্য কথাগুলো বললাম। সেই কখন দেকে দেখি মনমরা হয়ে চুপচাপ বসে আছেন।
হৈমন্তী ছোট করে উত্তর দিলো,
> আমার মেয়েটা বাড়িতে আছে কি করছে খুব চিন্তা হচ্ছে।
> চিন্তা করবেন না। এরপর থেকে নিয়ে আসবেন।
> না না বাড়িতেই ভালো আছে। ভীষণ দুষ্টু।
মেয়েটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলল। হৈমন্তী ছুটির ঘন্টা পেয়ে মেয়েটার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে আসলো। রহমান সাহেব ওকে নিয়ে বাড়িতে ফিরলেন। এখন থেকে হৈমন্তী একা একাই যাওয়া আসা করবে। শুরুটা না হয় এভাবেই হলো।
__________________
মন খারাপ করে বসে আছে অরিন। মায়ের সঙ্গে প্রথমবার ঝামেলা হয়েছে। ছোট একটা বিষয় নিয়ে ভয়ানক তর্কাতর্কি হয়েছে। আরাফাতকে অফিসে যেতে মানা করা হয়েছে। উনি নাকি আজ থেকে অফিসে বসবে কি একটা ঝামেলা। আরাফাত তো ইচ্ছা করে অফিসে যেতো না। ওকে বাধ্য করা হয়েছিল। আবির আর ওর আব্বুর সিদ্ধান্ত ছিল সেখানে মা কেনো মানা করছে ওর জানা নেই। এখন আরাফাতকে কিভাবে মানা করবে? লোকটা যদি খারাপ কিছু মনে করে? অরিন সেসব নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করছে। আরাফাত বাথরুম থেকে বেরিয়ে অরিনকে কিছু ভাবতে দেখে বলল,
> আবারও কি হারপিকের চিন্তা মাথায় ঘুরছে? মুখটা পাতিলের মতো করে রেখেছো কেনো?
অরিন চমকে উঠে করুণ চোখে তাঁকিয়ে বলল,
> আজেবাজে চিন্তা আমি করিনা। আপনি কি কোথাও যাচ্ছেন?
আরাফাত কাধ থেকে টাওয়েল নামিয়ে চুলগুলোর নাড়তে নাড়াতে বিছানায় গিয়ে বসলো। অরিন উত্তরের আশায় মুখ উচু করে বসে আছে। আরাফাত ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,
> ভাইয়ার সঙ্গে যাচ্ছি। তোমার ভাইয়াকে বলে দাও আজ থেকে সেখানে আমি যাচ্ছি না। শশুর বাড়ির গোলামী খাটার চাইতে নিজে কিছু করা ভালো।
অরিন যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচলো। লোকটা যে ওকে কি বাঁচানো বাঁচিয়ে দিলো আল্লাহ ভালো জানে। খুশীটা ও নিজের মধ্যে ধরে রাখতে না পেরে দাঁত বের করে হেসে বলল,
> এই জন্যই আপনাকে আমার এতটা ভালোলাগে। আপনি সেই কিউট। আপনাকে দেখলেই আমার প্রেম প্রেম পাই। আপনি….
আরাফাত অরিনের কথা বাড়তে দিলো না। মেয়েটার দিনদিন লজ্জা শরম কমে যাচ্ছে। কি ঠোঁট কাটা স্বভাব হয়েছে। আরাফাত ধমক দিয়ে বলল,
> থামবে? যাও চা নিয়ে এসো। আজ থেকে প্রতিদিন আমার জন্য একটা করে পদ রান্না করবে। রাতে এসে খাবো।
অরিন ওর কথায় বেজায় খুশী হলো। বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকতে ভালো লাগে না। যদি একটা রান্না করা যায় সময় ভালো যাবে। লোকটার কতো বুদ্ধি। অরিনের এই খুশীতে আরও দুটো কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছে কিন্তু লোকটা এবার ধমক দিবে। অরিন তবুও খুশী হয়ে উত্তেজিত হয়ে বলল,
> দারুণ একটা কাজ দিলেন। এই খুশীতে আপনাকে জড়িয়ে ধরতে…
> চা খাবো।
অরিন চা খাবো কথাটা শুনে থেমে গেলো। মনে মনে ভাবলো লোকটা খাবিশ টাইপের। প্রেমের প ও বুঝে না। ছেলে মানুষ তো? সন্দেহ হচ্ছে কথাটা ভেবেই অরিন জিব কামড়ে ধরে মনে মনে বলল,
” ছিঃ ছিঃ আল্লাহ পাপ দিও না কি সব ভাবছি”
অরিন হন্তদন্ত হয়ে বেরিয়ে গেলো। আরাফাত বিছানায় সোজা হয়ে শুয়ে পড়লো। অরিনের ফোনালাপের সবটাই ওর শোনা হয়ে গেছে। মেয়েটার পরিবারের সবগুলো মানুষকে ওর সন্দেহ হয়। শশুরের মৃত্যুর জন্য কাকে দোষী করবে ভাবনাতে আসে না। আবির যেভাবে লোকটার সেবাযত্ন করেছে ওর দ্বারা এসব করা সম্ভব না। অরিন বাবা ভক্ত মেয়ে। ওকেও সন্দেহ করা যায় না। শাশুড়িকে ওর একটু কেমন কেমন লাগে। সব কিছুতেই অতিরিক্ত মাথা ঘামায়। অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ। এদের ঝামেলায় পড়ে ওদের ভাই বোনের জীবনটা কেমন মলিন হয়ে গেছে। ওদের থেকে দূরে থাকাই মঙ্গল। যা ইচ্ছা করুক ওদের কি। হৈমন্তী ভালো আছে। এটাইতো অনেক। মেয়েটা নিজের মতো করে বাঁচুক।
চলবে
ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।