শরতের বৃষ্টি পর্ব-২৫

0
2233

#শরতের_বৃষ্টি
#লেখনীতে_তাশরিফা_খান
পর্ব–২৫

ভবিষ্যতে কোনো অশুভ বা বিপদের আশঙ্কা অথবা বেদনার অনুভূতির আগাম চিন্তা করে মানসিক যে অস্বস্তির সৃষ্টি হয় তা হলো ভয় বা ভীতি। ভয়ের কারণে মানুষ যেকোনও উদ্যোগে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। অর্থাৎ শরীরের বাহ্যিক কিংবা অভ্যন্তরীণ পরিবেশে অনাগত বিপদ-বিপত্তির মোকাবেলায় শরীরের নিজস্ব শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক যে প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া, তাকেই ভয় বলে। তাহলে এককথায় দাঁড়াচ্ছে যে, ভয় মনের অবচেতন স্তরের একটি নির্দিষ্ট বিশেষ মানসিক অবস্থা। ভয় নামক এ অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত নয়, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। মানুষ তো বটেই, সমগ্র সৃষ্টিজগতের সব প্রাণির অন্তরেই ভয় নামক এ অনুভূতি রয়েছে। ভয় নামক এ অনুভূতির সাথে শিশুকাল থেকেই আমাদের পরিচিতি ঘটে। একটি শিশুর বয়স যখন প্রায় ৬-৭ মাস, তখন থেকেই সে ভয় পাওয়ার অভিব্যক্তি দেখায়। স্বাভাবিকভাবে বিকাশমান একটি শিশু এ সময় তার মা কিংবা আপনজনকে তার চোখের আড়ালে যেতে দিতে চায় না, তাদের দেখতে না পেলে কান্না-কাটি করে ও বিরক্তিভাব প্রকাশ করে এবং মা বা তার ঘনিষ্ঠজনকে খুঁজতে থাকে। ভয় অনুভূতির সাথে এভাবেই আমাদের প্রথম পরিচয় ঘটে। কোনো অজানা পরিস্থিতিতে কিংবা যখন আমাদের নিরাপত্তাবোধ হুমকির মুখে- এ ধরনের কোনো বিষয় যখন আমাদের চিন্তায় আসে; তখন আমাদের শারীরিক এবং মানসিক কিছু পরিবর্তন ঘটে। বিবর্তনের ধারায় মানুষের শরীরবৃত্তীয় এবং মানসিক এ পরিবর্তনগুলোর একটি নির্দিষ্ট ধারা তৈরি হয়ে আছে। এ পরিবর্তনসমূহের মাধ্যমেই মানুষ পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক হয় এবং নিজের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারে। সাজ্জাদ পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন কৌশল ভাবছে। কোনটা এপ্লাই করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা। অনেক ভেবে চিন্তে কিছু না করার ভাব করে পকেটে হাত দিয়ে বাসার ভিতরে দিকে যেতে যেতে বললো।

“সবাই এভাবে জেগে আছো কেনো? কোনো সমস্যা হয়েছে? আমায় বলতে পারো? আমি দেখছি ব্যাপারটা”

সাজ্জাদ এমন ভাব করছে যেনো কিছুই হয়নি। ও নিজেকে যথেষ্ট স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। ওর ভাব ভঙিও স্বাভাবিক। ওকে দেখে মনে হবে না ও এত বড় কাজ করে এসেছে। ও আরও মুখ দিয়ে আস্তে আস্তে শিষ বাজাচ্ছে। সাজ্জাদ সবার দিকে তাকালো। সবাই গম্ভীর হয়ে দাড়িয়ে আছে। কেউ কিছু উওর দিচ্ছেনা বলে সাজ্জাদ ঘাড় বাকিয়ে রুমের দিকে পা বাড়ালো। যেতে যেতে বললো।

“তোমাদের ঘুম আসছেনা তোমরা মূর্তির মতো দাড়িয়ে থাকো। আমার প্রচুর ঘুম আসছে আমি ঘুমাতে গেলাম। বাই গুড নাই এভরিবডি!”

সাজ্জাদ এগুলো বলে রুমে প্রবেশ করবে তার আগেই আশরাফ খান পিছন থেকে গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন।

“তুমি এত রাতে কোথায় গিয়েছিলে? তার জবাবটা আগে দিয়ে তারপর নাহয় ঘুমাতে যাও!”

কথাটা শুনে সাজ্জাদ দাঁড়িয়ে গেলো। পিছনে ঘুরে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো।

“ওহ বাবা! এটা কোনো প্রশ্ন? তোমার প্রশ্ন শুনে আমার ঘুম পাখি ফুরুত করে চলে গিয়েছে। আরে মাম্মী! তুমি তোমার হাসব্যান্ডকে বোঝাও ছেলে বড় হয়েছে কোথায় গেছে তার হিসাব নিয়ে হবে? ছেলে মেয়েদের বেশি শাসন করতে নেই। তবে বেশি বিগড়ে যায়। আমার বাবার কাড়ি কাড়ি টাকা আছে সো এত রাতে চুরি করতে যাওয়ার মতো কষ্ট আমি করবো না। অতটা বোকা নই আমি!”

“আমাকে শাসন করা শিখাতে এসো না। এত বড় বড় ভাষন দিচ্ছো তবে নিজের বিয়ে করা বউ রেখে বাড়িতে এসেছো কেনো? বিয়ে করেছো বাবার বাড়ি ফেলে রাখতে? এটা বড় চালাক লোকের পরিচয়?”

গম্ভীর গলায় কথাগুলো বলে উঠলেন আশরাফ খান। সাজ্জাদ অবাকের উপর অবাক হচ্ছে। ওর বাবা কি করে জানলো? তার মানে ওর বন্ধুদের কাজ। সাজ্জাদের খুব রাগ হলো। এখন ওদের পেলে ধোলাই দিয়ে বুঝিয়ে দিতো বেইমানীর ফল। সাজ্জাদ দাঁতে দাঁত চেপে হাত মুঠ করে দাড়িয়ে রইলো। আশরাফ খান আবারও বললেন।

“বউ রেখে বাড়িতে আসা ভদ্র বাড়ির ছেলেদের কাজ নয়। বিয়ে যখন করতেই পারছো ফেলে এসেছো কিসের জন্য? বউ নিয়ে ঘরে আসবে যাও!”

“কি বলছো এসব? আমি বিয়ে করেছি তা কে বললো? এই মাঝ রাতে উল্টাপাল্টা কি সব বলছো? আম্মু! তুমি কিছু বলো!”

আশরাফ খান কথাটা বলেই সোফায় বসেছেন। সাজ্জাদ বুঝেছে তারা জেনে গেছে তবুও শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করলো। কিন্তু তাতে লাভ হলো বলে মনে হচ্ছে না। আশরাফ খান চুপ করে আছেন। সাজ্জাদ ওর মা বোনের দিকে তাকালো। তারা চোখ দিয়ে ইশারা করলো যা বলছে তা করতে। এছাড়া আর কিছু করার নাই। সাজ্জাদ আবারও চিল্লিয়ে বললো।

“আরে বিয়েই করিনি বউ কোথা থেকে আসবে?”

আশরাফ খান এবার খুব রেগে গেলেন। রেগে সাজ্জাদের কাছে গিয়ে গালে সজোরে থাপ্পড় দিলেন। সাজ্জাদ চমকে উঠলো গালে হাত দিয়ে অবাক চোখে ওর বাবার দিকে তাকালো। ওর বাবা কখনও ওর গায়ে হাত তোলেনি যত অন্যায় করতো শুধু বকতো আজ মেরেছে। ওকি আজ বেশি অপরাধ করেছে? সাজ্জাদ রেগেমেগে একাকার হয়ে যাচ্ছে। আজ ওর বাবা না হলে এর মজা বুঝিয়েই ছাড়তো। মিসেস শাহনাজ আর সাদিয়া মুখে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো। তারাও বুঝতে পারেনি এমন কিছু হবে। মিসেস শাহনাজ স্বামীর দিকে এগিয়ে বললেন।

“কি করছো এসব? এত বড় ছেলের গায়ে হাত তুলছো?”

আশরাফ খান রেগে নিজের স্ত্রীকে বললেন।

“ছোট থেকে কি দেইনি ওকে বলো? তবুও ঠিক মতো মানুষ করতে পারিনি। পড়ালেখা শেষ করেও বেকার আড্ডা বাজি করে ঘুরে বেড়ায়। রাস্তায় বের হলেই লোকের টিটকারী শুনতে হয়। বিয়ে করবে না করবে না বলে বাড়ি মাথায় তুলেছে এখন যখন আমার বন্ধুকে কথা দিয়েছি তখন ও বিয়ে করেছে। এখন আমার বন্ধুকে কি জবাব দিবো? আমার মানসম্মান সব শেষ করে দিলো। এতই যখন আঁখি কে পছন্দ তখন আমাদের একবার বললেই হতো, আমি কি বাঁধা দিতাম? খুশি মনে ধুমধাম করে ঘরে তুলতাম। কি করছে ও বলো তো? এর পরেও চুপ থাকি কি করে?”

আশরাফ খান কথাগুলো বলতে বলতে হাফিয়ে উঠলেন। সাজ্জাদের খুব খারাপ লাগছে কিন্তু কি করার? ও তো ইচ্ছে করে করেনি। সাজ্জাদ ওর বাবার দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা গলায় বললো।

“বাবা! তোমরা বিষয়টা বুঝতে পারছো না। আমি সব কিছু খুলে বলছি! আসলে এটা একটা এক্সিডেন্ট। এটা কোনো বিয়েই না। ও আমি কেউই রাজি না। ভুল বসত..”

সাজ্জাদ আরও কিছু বলতে লাগছিলো কিন্তু আশরাফ খান ওকে হাত উচু করে থামিয়ে দিলো। মিসেস শাহনাজের দিকে তাকিয়ে বললো।

“তোমার ছেলেকে যেতে বলো শাহনা( শাহনাজ)! আমি আর কথা বলতে চাইনা। ওকে বলো ও যেনো বউ ছাড়া ঘরে না আসে। বিয়ে যখন করেছে বউ নিয়েই ঘরে আসবে। ”

কথাটা বলেই আশরাফ খান নিজের রুমের দিকে চলে গেলেন। মিসেস শাহনাজ সাজ্জাদের দিকে এগিয়ে এসে বললো।

“এভাবে দাড়িয়ে না থেকে বউ ঘরে নিয়ে আয়। আমার তো অনেক খুশি খুশি লাগছে। যাই আমি বরণ ডালা সাজাচ্ছি।”

“আরে আম্মু!”

সাজ্জাদের কথা না শুনেই মিসেস শাহনাজ হাশি মুখে চলে গেলেন। সাদিয়া সাজ্জাদের কাঁধে ধাক্কা মেরে বললো।

“উপরে উপরে সারাদিন ঝগড়া আর নিচে নিচে প্রেম দরিয়া বইছে এটাতো জানতাম না। তো কবে থেকে এই ডুবে ডুবে জল খাওয়া হচ্ছে? আমাদের বললে কি ক্ষতি হতো শুনি?”

সাজ্জাদ রেগে ওর দিকে তাকিয়ে বললো।

“যা বুঝবিনা তা নিয়ে একদম কথা বলবিনা।”

“আমরা কিছুই বুঝিনা নিজে তো বুঝে গুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলছেন। এবার এত কিছু না বলে বাবা যা বলচে তা করেন। হুহ!”

কথাটা বলে সাদিয়া সাজ্জাদ কে মুখ বাকিয়ে চলে গেলো। সাজ্জাদ চুপচাপ দাড়িয়ে ভাবলো আঁখি কে তো বললো বিয়ে না এটা। আখিও বাসায় চলে গেছে ওকে কি করে আনবে? এদিকে ওর বাবাও রেগে একাকার। সাজ্জাদ আর ভাবতে পারছেনা। সব আঁখির জন্য হয়েছে। সাজ্জাদের ইচ্ছে করছে ওকে ড্রেনে চুবাতে। সাজ্জাদ রেগেমেগে বাসা থেকে বেড়িয়ে ছাদে চলে গেলো।

———————————-

ভয়ের দরুণ মানুষের শরীরে যে পরিবর্তনগুলো ঘটে, তাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন- শারীরিক এবং মানসিক। শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে- মাথা ব্যথা, মাথার ভেতর হালকা মনে হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, ঘাড় ব্যথা, মুখ শুকিয়ে আসা বা পিপাসা লাগা, কাঁপুনি হওয়া, হাত-পা ঠান্ডা অথবা অবশ হয়ে আসা, বুক ধড়ফড় করা, হৃৎস্পন্দন দ্রুত হওয়া, শ্বাসকষ্ট, পেটে ব্যথা, পেটের ভেতর অস্বস্তিভাব, ঘুমের ব্যাঘাত ইত্যাদি। আর মানসিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে- মনোযোগে ব্যাঘাত, সিদ্ধান্তহীনতা, অনিশ্চয়তার আশঙ্কা, মৃত্যুভয়, স্মরণশক্তি হ্রাস, অকারণেই বিরক্ত বোধ করা, শব্দের প্রতি অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতা, অস্থিরতাসহ প্রভৃতি নানা উপসর্গ। আমাদের শরীরের সিমপ্যাথেটিক স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র, হরমোন, বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক যৌগের মাধ্যমে এ পরিবর্তনসমূহ পরিলক্ষিত হয়। মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত এন্ডোরফিন, ডোপামিন, অক্সিটোসিনের মত কিছু হরমোন এবং নিউরো বার্তাবহসহ এড্রেনালিন গ্রন্থি এবং স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে নিঃসৃত এড্রেনালিন ও নর-এড্রেনালিন জাতীয় রাসায়নিক বার্তাবহ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভয়ের দরুণ উদ্ভুত ‘ফ্লাইট’ এবং ‘ফাইট’ রেসপন্সে সাহায্য করে। ফ্লাইট রেসপন্স হচ্ছে ভয়ের বিষয় থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা এবং ফাইট রেসপন্স হচ্ছে ভয় আনয়নকারী ক্ষতিকর বিষয় বা বস্তুকে মোকাবেলা করে তাকে পরাজিত করতে চাওয়ার প্রবণতা। কার্যকর ও সঠিক সমন্বয় সাধনের জন্য ভয় নামক অনুভূতি থেকে উদ্ভুত এ দুই ধরনের প্রতিক্রিয়াই আমাদের জন্য জরুরি।

কিন্তু ভয়ের এ অনুভূতি যখন অতিরিক্ত এবং লাগামছাড়া হয়ে যায়, তখন বিষয়টা আর স্বাভাবিক থাকে না। অবচেতন মনের ভয়ের অনুভূতি যখন নির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করে যায়, তখন উৎপন্ন হয় অস্বাভাবিক ভীতি বা ভয়রোগ বা ফোবিয়া। আঁখি ওর বাবাকে সোফায় বসা দেখে এতটাই ভয় পেয়েছে যে ও কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলছে। ওর ভিতরে একটাই ভয় করছে ওর বাবা কি জেনে গেছে? যদি জেনে যায় তবে ওর সাথে কি ব্যবহার করবে৷ আঁখি অতিরিক্ত ভয়ের কারনে অনুভুতি শুণ্য হয়ে পড়ছে। গলা দিয়ে একটা শব্দ ও করতে পারছে না। আঁখিকে চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে দেখে আমিনুর রহমান রেগে বলে উঠলেন।

“এই বাড়িতে এসেছো কি করতে?”

এই কথা শুনে আঁখি আরও ভয় পেলো। আপনা আপনি ওর চোখ ভিজে উঠলো। ও কান্না ভেজা চোখে চমকে ওর বাবার দিকে তাকালো। আমিনুর রহমানের তাতে কিছুই আসে যায়না। তিনি মেয়ের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। অন্য দিকে তাকিয়ে বললেন।

“আমাদের মানসম্মানের কথা না ভেবে যখন নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পেরেছো তখন এখানে এসেছো কি করতে? যাকে বিয়ে করেছো তার কাছেই যাও! এই বাড়ির দরজা তোমার জন্য বন্ধ।”

আঁখির ভিতরটা এবার ভেঙে চুরে একাকার হয়ে গেলো। ওর বাবা এতটা কঠোর হবেন সেটা বুঝতে পারেনি ও। আঁখি দৌড়ে ওর বাবার পায়ের কাছে গিয়ে বসে পড়লো। ঠুকরে কেদে উঠে বললো।

“আব্বু তুমি বিশ্বাস করো আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি। সব ভুলবশত হয়ে গেছে। মাফ করে দেও প্লিজ!”

আমিনুর রহমান পা ছাড়িয়ে উঠে গেলেন। আঁখি থম মেরে অসহায় ভাবে ওর বাবার দিকে তাকালো। আমিনুর রহমান রেগে বললেন।

“যখন বিয়ের কথা জিজ্ঞাসা করেছিলাম তখন বলে দিলেই হতো। এমন তো না যে জিজ্ঞাসা করিনি। বেশি আদর দিয়েই খারাপ করে ফেলেছি। এজন্যই এখন এই সোসাইটিতে মুখ দেখাতে পারবো না। আমি তোমার মুখও দেখতে চাই না। নিজের শ্বশুর বাড়িতে যাও! আজ থেকে মনে করবে তোমার বাবা বাড়ি নাই। বাবা মাও নাই! বের হও!”

“এভাবে বলো না। আমাদের একটাই মেয়ে। ওকে ছাড়া থাকবো কিভাবে?”

রোকেয়া রহমান টলমলে চোখে কথাটা বললেন। আমিনুর রহমান প্রতিউওরে বললেন।

“যে মেয়ে আমাদের মানসম্মানের কথা ভাবে না ওমন মেয়ে আমার দরকার নাই। যদি ছোট থাকতে জানতাম এমন হবে তো তখনেই মেরে ফেলতাম।”

আমিনুর রহমান খুব রেগে আছেন। রেগে কি বলছেন নিজেই বুঝতে পারছেন না। আঁখি অনুভুতি শুণ্য হয়ে বসে আছে। কি বা বলার আছে ওর! কিছু সময়ের ব্যবধানে কি হলো কিছুই বুঝতে পারলো না। রোকেয়া রহমান কাঁদছেন। আঁখি চুপচাপ উঠে দাড়ালো। কান্না ভেজা চোখে একপলক ওর মা বাবার দিকে তাকিয়ে সামনে পা বাড়ালো। রোকেয়া রহমান স্বামীর দিকে তাকিয়ে কেঁদে কেঁদে বললেন।

“এতটা নির্দয় হয়ো না। ওকে থাকতে বলো দয়া করো!”

আমিনুর রহমান তিল পরিমাণ ও নড়লেন না। তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল। রোকেয়া রহমান কাদতে কাঁদতে নিজের রুমে চলে গেলেন। আঁখি হাটতে পারছেনা। ওর গায়ে মনে হচ্ছে শক্তি নাই তবুও পা টেনে টেনে রুম বাসা থেকে বেড়িয়ে গেলো। আমিনুর রহমান চুপ করে সোফায় বসে পড়লেন। তার সাজানো সংসারটা এলোমেলো হয়ে গেলো।

ইনশাআল্লাহ চলবে…..

(রি-চেইক করিনি ভুল হতে পারে। লাইক কমেন্ট এতই কম যে গল্প লেখার ইচ্ছা নেই।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here