#শরতের_বৃষ্টি
#লেখনীতে_তাশরিফা_খান
পর্ব–৪৪
গায়ে হলুদ বলে কথা সারা বাড়ি মেহমানে পরিপূর্ণ। সুন্দর সন্ধ্যাটা আলোয় মাতোয়ারা। অর্নবদের বাড়ির সবাই ডালা নিয়ে অনেক আগেই এসে পরেছে। ছাঁদে অনেকে নাচানাচি করছে। বাচ্চারা ছাদের এক দিকে লাফাচ্ছে। আনিকার বোনেরা মিলে স্টেজে ফলমূল, ডালা সুন্দর করে সাজিয়ে রাখছে। সবাই চাচ্ছে হলুদের অনুষ্ঠানে যেনো কমতি না থাকে।আনিকার মা, মিসেস রোকেয়া রহমান, মিসেস শাহনাজ আর অন্যান্য বয়স্ক মহিলারা বসে বসে গল্প করছেন। হলুদের সব দায়ীত্ব ছোটরা নিয়েছে। অর্নব আনিকাকে দেখতে না পেয়ে বিরক্ত হচ্ছে। রনি ওর পছন্দ মতো মেয়ে খোজায় ব্যস্ত। নিরব এদিক ওদিক তাকিয়ে আঁখি কে খুঁজছে। সাজ্জাদ ওকে নিয়ে কোথায় গেলো সেটাই ভাবছে। সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। এদিকে বক্সে বাজছে “হলুদ বাটো, মেন্দি বাটো” গায়ে হলুদের গান।
সাজ্জাদ আঁখিকে টানতে টানতে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যাচ্ছে। আঁখি হা করে বোকার মতো দেখছে। অনেক মানুষ সিঁড়ি দিয়ে উঠছে নামছে আর ওদের দিকে হা করে দেখছে। আঁখিতো লজ্জায় মরে যাচ্ছে। এদিকে সাজ্জাদ রেগে আছে। আঁখি কে টেনে তিন তলা পর্যন্ত নামাতেই আমিনুর রহমানের সামনে পড়লো। তিনি ঘর থেকে বের হতে যাচ্ছিলেন। আঁখি ভয়ে ভয়ে ওর বাবার দিকে তাকালো। আমিনুর রহমান রেগে তাকিয়ে আছেন। কি ভাবছেন কে জানে? সাজ্জাদের খবর নেই ও আঁখিকে হাতে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আঁখি এবার চরম রেগে যাচ্ছে। এত মানুষের সামনে এমন করার কারন বুঝতে পারছে না। সাজ্জাদ ওকে রুমে নিয়েই ছেড়ে দিলো। ছাড়া পেয়ে আঁখি রেগে শাড়ির আঁচল টা কোমরে গুঁজে বললো।
“এই আপনার সমস্যা কি হুম? আমার হাত ধরে এভাবে টেনে নিয়ে আসলেন কেনো?”
আঁখি সাজ্জাদের দিকে আঙ্গুল উঁচিয়ে কথাটা বললো। সাজ্জাদ রেগে কোমরে হাত দিয়ে অন্য দিকে তাকালো। অগত্যা কপাল কুচকে বিরক্ত নিয়ে বললো।
“আমার সমস্যাটা হচ্ছে তুমি মিসেস চক্ষু! বুঝেছো?”
আঁখি যেনো আকাশ থেকে পড়লো। মুখে হাত দিয়ে হা করে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো। ও ভেবেই পাচ্ছে না ও কি করে সাজ্জাদের সমস্যা হলো? আজ তো সাজ্জাদ কে কোনো বিরক্ত করেনি ও? আঁখি কোনো কারন না খুঁজে পেয়ে জিজ্ঞাসা করলো।
“আমি আপনার সমস্যা হলাম কোথায়? আমি কি ছোট বাচ্চা যে আপনার কোলে হাগুমুতু করে দিবো সেই সমস্যায় আছেন? নাকি বারবার কোলে উঠতে চাচ্ছি? কোনটা?”
আঁখির কথা শুনে সাজ্জাদ অবাক হয়ে তাকালো। ও যেনো রিয়াকশন দিতে ভুলে গেলো। হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছে না। কিসের মধ্যে কি? ও কি বলছে আর আঁখি কি টেনে নিয়ে আসছে। ওর মনে হলো আসলেই এই মেয়েটা স্বাভাবিক নয়, অস্বাভাবিক। স্বাভাবিক কিছু ওর থেকে আশা করাটাও অস্বাভাবিক! সাজ্জাদ কে চুপ থাকতে দেখে আঁখি ধমক মেরে বলে উঠলো।
“কি হলো মি সাজসাজ! এবার চুপ করে আছেন কেনো? আমি কি সমস্যা করলাম বলছেন না কেনো?”
“এত সেজেগুজে ওখানে গিয়েছো কেনো? আজকে কি তোমার গায়ে হলুদ যে এভাবে সেজেছো? এক্ষুণি শাড়ি পাল্টে ফেলো। অন্য কিছু পড়ে ছাদে যাও! ছাদে যেনো আর শাড়ি পড়া না দেখি।”
আঁখি ওর কথার কিছুই বুঝলো না। একটুও সাজেনি তাও বলছে সেজেছে? আঁখি ওর কোমরে গোঁজা শাড়ির আঁচল টা বের করতে করতে ঠোঁট উল্টে বললো।
“আমি মোটেও সাজিনি। একদম মিথ্যা কথা বলবেন না। আমাকে যেতে দিন কাজ আছে।”
কথাটা বলে আঁখি সামনে পা বাড়াতেই সাজ্জাদ ওর আচল টেনে ধরলো। হঠাৎ করে ধরায় আঁখির কাঁধের উপরের পিনটা ছুটে গেলো। আঁখি চমকে কাঁধে হাত দিয়ে শাড়িটা ধরে দাঁড়িয়ে গেলো। সাজ্জাদ এত কিছু খেয়াল করেনি। আঁখি ওর কথা না শোনায় প্রচন্ড রেগে আছে। রেগে শাড়ির আঁচল টা শক্ত করে ধরে রেখেছে। আঁখির ভিতরে কেমন যেনো একটা লাগছে। অনুভুতিটা একেবারেই প্রকাশ করার মতো না। পিছনে তাকাতেও কেমন যেনো লজ্জা লাগছে ওর। বুঝতে পারছেনা এসব কি হচ্ছে? সাজ্জাদের মুখভঙ্গি ও দেখতে পারছে না। আঁখি লজ্জায় শাড়িটা ধরে আস্তে করে বললো।
“শাড়িটা ছাড়ুন প্লিজ!”
সাজ্জাদ শাড়িটা আরও শক্ত করে ধরে আঁখি দিকে এগিয়ে বললো।
“শাড়িটা খুলে তারপর বাইরে যাবে।”
সাজ্জাদ আরেকটু আগাতেই আঁখি কেঁপে উঠলো। তবুও কাঁপা কাঁপা গলায় আস্তে করে বললো।
“নাহ আমি এটা পরেই যাবো!”
সাজ্জাদ বারবার বলার পরেও আঁখি কথাটা না শোনায় ও রেগে গেলো। না শব্দটা ও একেবারেই পছন্দ করে না। সাজ্জাদ শাড়ির আঁচল টা ধরে টেনে ছিড়ে ফেললো।
শাড়ি ছেঁড়ার শব্দে আঁখির সব ফিলিংস উড়ে গেলো। আঁখি অবাক হয়ে সাজ্জাদের দিকে তাকালো। অগত্যা নিজের শাড়ির আচলটা ধরে ঠোঁট উল্টালো। কি হলো এটা? আঁখি বুঝতে পারেনি সাজ্জাদ এমন করবে। ওর এত সাধের শাড়িটা। আঁখি কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো।
“কি করেছেন এটা?”
“দেখতে পাওনি কি করেছি? এবার পড়ো! বেশি করে পড়ে ছাঁদে আসো। আমার কথা না শোনার ফল এটা!”
রেগে কথাটা বলেই হনহন করে বেড়িয়ে গেল সাজ্জাদ। আঁখি রেগে পিছন থেকেই ঘুসি উচালো। ওর ইচ্ছা করছে সাজ্জাদের গলা টিপে মেরে ফেলতে। আঁখি রেগে ফোঁসফোঁস করে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। এবার অনুষ্ঠানে কি করে যাবে? একটাও ছবি তোলেনি এখনও। আঁখি বিরক্ত নিয়ে “ধুর” বলেই বিছানায় বসে পড়লো। পরক্ষনেই ভাবলো মন খারাপ করে বসে থেকে কি হবে? অনুষ্ঠানের আনন্দ মাটি করাটা বোকামি হবে। এটা ভেবেই আঁখি হালকা কাজের একটা লেহেঙ্গা পড়ে অনুষ্ঠানে যাবার সিদ্ধান্ত নিলো।
———————————-
আঁখিকে শাড়ি চেঞ্জ করতে দেখে সবাই জিজ্ঞেস করছে কি হয়েছে চেঞ্জ করছে কেনো? ওটায় খুব সুন্দর লেগেছিলো। এটা ওটা! আঁখি সবাইকে বলেছে পিনে লেগে ওর শাড়ি ছিঁড়ে গিয়েছে। আনিকাকে ছাদে নেওয়া হলো। ওর পাশে আঁখি আর ওর বোনেরাও আছে। আঁখি কে শাড়ি চেঞ্জ করতে দেখে নিরব বুঝে গেছে কি হয়েছে। সাজ্জাদ ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। অর্নব আনিকাকে দেখেই ফিদা। ওকে যেনো হলুদ পাখির মতো লাগছে।আনিকা অর্নবের সাথে ম্যাচিং করে সাদা সুতোর কাজের একটি হলুদ রংয়ের লেহেঙ্গা পড়েছে। গলায়, হাতে, কানে ও টিকলি পড়েছে সাথে সাদা পাথর আর হলুদ কৃত্রিম ফুলের তৈরি অর্নামেন্টস্। কুব সুন্দর লাগছে ওকে! এতক্ষণে অর্নবের বিরক্ত কাটলো। ওকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখে পাশ থেকে রনি ওকে হালকা ধাক্কা মেরে বললো।
“কিরে? চোখের পলকটা ফেল এবার। না হলে চোখ খুলে বাইরে বেড়িয়ে আসবে যে ভাই!”
ওর কথায় আশিক, সাজ্জাদ পাশে অনেকেই হেসে ফেললো। অর্নব ওর দিকে তাকিয়ে বললো।
“আমার বৌকে আমি দেখছি তোর জ্বলছে কেনো রে?”
“বাসর রাতের জন্য দেখাটা একটু তো বাকি রাখ!”
আলসামি ভাব ঝেড়ে কথাটা বললো রনি। অর্নব আর কিছুই বললো না। হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হলো। সবাই এক এক করে হলুদ লাগাতে লাগলো। দু স্টেজের মাঝে অনেক ফাকা জায়গা। ওখানে নাচ হবে! এর মাঝেই সব আলো নিভে গিয়ে ওই মাঝখানে আলো জ্বলে উঠলো। ওখানে আঁখি দাঁড়ানো ছিলো। বক্সে গান শুরু হলো সাথে সাথে আখিও সুন্দর করে নাচতে লাগলো।
তোমরা দেখ গো আসিয়া
কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া,
তোমরা দেখ গো আসিয়া
কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া,
এগো কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া
এগো কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া রে,
কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া হায় রে
কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া,
তোমরা দেখ গো আসিয়া
কমলায় নৃত্য করে থমকিয়া থমকিয়া।
আঁখির নাচ শেষে সবাই হাতে তালি দিলো। সাজ্জাদ রেগে বোম হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আঁখি নেচেছে এটা ওর একটুও ভালো লাগেনি। সবাই কেমন করে তাকিয়ে আছে। আজ ওর খবর আছে। পরক্ষনেই ওখানে অনেক মেয়েরা জড়ো হলো। আঁখি সাদিয়া আর আনিকার কাজিনরা! বক্সে গান শুরু হয়েছে তালে তালে সবাই সুন্দর করে নাচছে।
ছেলেরা সুযোগ বুঝে, সৎ ব্যাবহার করে ঠিক
এক পাখি উড়ে গেলে, পাতবে জাল অন্যদিক
ঘুম থেকে উঠে শুরু, প্রেম পিরিতির প্রপোজাল
হোয়াটস্যাপ-ফেসবুকেতে কেঁদে শোনায় মনের হাল
যতই করো নাটক বাজি, হবোনা তো আমি রাজি
তাইতো বলছি বারে বার বার বার
ছেলেদের ভাল লাগে না আর।
ছেলেরা গানটা শুনে রেগে তাকালো। ওদের পচানো হচ্ছে? সবগুলোই ফোসফাস করছে।
সামনে সেজে সাধু দেখায় মিথ্যে কথার জাদু
জিরো হয়ে দেখায় হিরো চাল
প্রতি রাতে হলেই বসে মাতাল রা চাতালে
বলে ভাই আর একটু ঢাল (x2)
যতই করো নাটক বাজি, হবোনা তো আমি রাজি
তাইতো বলছি বারে বার বার বার
ছেলেদের ভাল লাগে না আর।
বাজলে প্রেমের বাজা, হবে মনটা পুড়ে ভাজা
তাইতো প্রেমের নেবো না রে চাপ
আস্তে করে কাটো বাবু সাইড চেপে হাঁটো
এবার আমায় করো তুমি মাপ (x2)
যতই করো নাটক বাজি, হবোনা তো আমি রাজি
তাইতো বলছি বারে বার বার বার
ছেলেদের ভাল লাগে না আর।
সবাই মিলে খুব সুন্দর করে নাচলো। বড়রা ওদের নাচ দেখে খুব হাসছে। আসলেই খুব সুন্দর আর হাসির নাচ এটা!ছেলেদের ভালো করেই পচানো হয়েছে। রনি সাজ্জাদের দিকে তাকিয়ে রেগে বললো।
“দোস্ত! ওরা আমাদের অপমান করছে। ওদের ছেড়ে দিলে হবে না। আমরা নাচ না পারি তো কি? গান তো পারি। ” বন্ধু তোরা ফাঁকিবাজ” গানটা গাই চল!”
সাজ্জাদ কথা না বলে গম্ভীর হয়ে উঠে দাড়ালো। স্টেজের পাশে গিটার রেখেছিলো ওটা হাতে নিয়ে মাঝখানে চলে গেলো। ওখানে দাঁড়িয়ে গিটার বাজিয়ে গাইতে লাগলো।
ধর্ষিতাদের সাজা হতে হবে, ধর্ষকের কেন খোঁজ?
সমাজ বলেছে ঘরে রবে নারী, কেন তারা বের হয় রোজ?
কেন প্রতিদিন এখানে ওখানে নারীদের যায় দেখা?
কেনইবা তারা সন্ধ্যেবেলায় বের হয় পথে একা?
সমাজ বলেছে ছেলেরা এমনই, দুষ্টুমিতে ভরা
কেন বোকা নারী ছেলেদের হাতে বারে বারে দেয় ধরা!
নিশ্চই তারা ছলনা করে ছেলেদের ডাকে কাছে
পোশাকে-আশাকে ঠিক নেই, আরও কত দোষ আছে
আমি বলি এই ধর্ষণ রোধে নারীদের দাও ফাঁসি
তবেই মিটবে ধর্ষণ case, সমাজের মুখে হাসি
আমরা পুরুষ জাতে ধর্ষক, এভাবেই গড়া প্রাণী
মনে মনে কত ধর্ষণ করি, আমরাই শুধু জানি
আমি বলি এই ধর্ষণ রোধে নারীদের দাও ফাঁসি
তবেই মিটবে ধর্ষণ case, সমাজের মুখে হাসি
আমরা পুরুষ জাতে ধর্ষক, এভাবেই গড়া প্রাণী
মনে মনে কত ধর্ষণ করি, আমরাই শুধু জানি
শুধু একটু সাহসের অভাব, তাই পারি না জোরে
ধরে নিয়ে যেতে প্রতিদিন আমি যাকে ইচ্ছে করে
শুধু মাঝে মাঝে সুযোগ এলে হঠাৎ কোনোখানে
ধর্ষক রুপ বের হয়ে আসে কি যেন আনমনে
কি এমন দোষ বুঝেই পাই না, এত কেন কথা হয়?
বের হয় কেন বেহায়া নারী, কেন নাই মনে ভয়?
দুয়েকটা ভাই হয়েই তো যায়, এ এমন কি কাজ?
আমি ধর্ষক বলছি তোমায়, এ আমার সমাজ
এই যে মেয়ে, আর ক’টা দিন, প্রস্তুতি নিয়ে রাখো
তোমার ছেলে ধর্ষক হবে, তুমি নিশ্চিত থাকো
তখন তুমি তার পাশে থেকে রক্ষা করো তাকে
ধর্ষিতারই সাজা হয় যেন, ছেলে নিরাপদ থাকে
আমি বলি এই ধর্ষণ রোধে নারীদের দাও ফাঁসি
তবেই মিটবে ধর্ষণ case, সমাজের মুখে হাসি
আমরা পুরুষ জাতে ধর্ষক, এভাবেই গড়া প্রাণী
মনে মনে কত ধর্ষণ করি, আমরাই শুধু জানি
মনে মনে কত ধর্ষণ করি, আমরাই শুধু জানি
মনে মনে কত ধর্ষণ করি, আমরাই শুধু জানি
এবার মেয়েরা গাল ফুলিয়ে আছে। রনি এবার মেয়েদের পচাতে পেরে অনেক খুশি। হাতে তালি দিচ্ছে আর শিষ দিচ্ছে। গান শেষে সাজ্জাদ ঠোঁট বাকিয়ে হেসে উঠে গেলো। অনেক হাসি মজায় অনুষ্ঠান শেষ হলো। খাওয়া দাওয়া করে সবাই চলে গেছে দু একজন ছাড়া। রাত ১২টার কাছাকাছি। সাজ্জাদ বাসায় কোথাও আঁখি কে না পেয়ে আনিকাদের বাসায় গেলো। ওখানে না দেখতে পেয়ে ও ভয় পেয়ে গেলো। মনের মধ্যে হাসফাস করতে লাগলো। একটু আগেও ছিলো এখন কোথায় গেলো? সাজ্জাদ ওখানে না দাড়িয়ে পাগলের মতো তাড়াতাড়ি করে ছাদে গেলো। দৌড়ে ছাদে যেতেই দেখলো। আঁখি আর নিরব দাড়িয়ে কথা বলছে। সাজ্জাদ এতটাই দৌড়ে গেছে যে শব্দ পেয়ে আঁখি নিরব দুজনেই চমকে ওর দিকে তাকিয়েছে। সাজ্জাদের এখানে আসার কারন বুঝতে পারছে না ওরা কেউয়েই। আঁখি কিছু বলতে গিয়েও সাজ্জাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো না। ওকে কেমন যেনো লাগছে পুরো শরীর ঘামিয়ে আছে। সাজ্জাদের ভিতরে এসে অভিমান ভিড় করলো। ও যাকে পাগলের মতো খুঁজে বেড়াচ্ছে সে এখানে আনন্দে আছে। ও এসে বিরক্ত করলো তাকে? সাজ্জাদ কিছু না বলে রেগে ওখান থেকে হনহন করে চলে গেলো। আঁখি কিছু বুঝতে না পেরে ঠোঁট উল্টে ওর পিছনে পিছনে গেলো। নিরব দীর্ঘশ্বাস ফেলে বুকে হাত গুঁজে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। আঁখি কিছু না বুঝলেও ও সাজ্জাদের বিষয়টা বুঝতে পেরেছে। তাহলে কি অবশেষে ও আঁখি আর সাজ্জাদের মাঝে সম্পর্ক ভাঙার তৃতীয় ব্যক্তি হয়ে গেলো?
ইনশাআল্লাহ চলবে….
রি-চেইক করিনি।