#নতুন_তুই_আমি
💜💜
Writer:-Nargis Sultana Ripa
🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹🌹
!
পর্ব:-৭১
!
তামান্না আর সিয়াম হোটেল ছাড়লো সকাল আট টার পর। তামান্না গাড়িয়ে উঠে বললো,
“আমার না কেমন জানি লজ্জা লাগছে।”
“কেনো?”
“আব্বু-আম্মুর সামনে হোটেল থেকে ফিরবো? কেমন একটা লাগছে আমার।”
“এটা কেমন লাগার কি আছে? ওরা কি হোটেলে থাকে নি কখনো?”
“ছিহ। কিসব বলো!”
“কি আবার বললাম? ওরাও বিয়ে করেছে আমারও করেছি, তো বিয়ের পরের কাজও তো সেইম হবে তাই না?”
“ধ্যাত।”
“হা হা হা। রাগ করিস না।”
“রাগ করতে বয়েই গেলো আমার।”
“আহা সোনা বউ, বাচ্চা-কাচ্চার মুখ দেখতে চাইলে এইটুকু লজ্জা তো পেতেই হবে তোমাকে।”
“সিয়াম!”
তামান্না ক্ষেপে গিয়ে সিয়ামের কাঁধে ফোন দিয়ে বারি দিলো একটা।
“আআও।”
“অসভ্য।”
“বাচ্চার বাবাকে মারছিস? বাচ্চা একবার হতে দে দুজনে মিলে তোর লম্বা চুল ধরে টানবো।”
“কিহ?”
“জি। দেখে নিস তুই। তোর কি হাল করি দুজনে মিলে।”
“নিজে তো একটা বেয়াদপ। চিন্তাগুলোও বেয়াদপ টাইপ। বাচ্চাকে দিয়ে মায়ের চুল ধরানোর কথা বলছে!”
“হাড্ডি পিষে খাবো তোর তামান্নু। বরকে বেয়াদপ বলিস।”
“তো কি করবো। যে বর এসব উল্টা-পাল্টা কথা বলে তাকে আরো অনেক কিছু বলা উচিত।”
“কি কি শুনি?”
“এতো বলতে পারবো না আমি। যতসব!”
তামান্না জানালার দিকে তাকিয়ে রইলো। গাল দুটো ফুলে আছে। আরো একটু রাগলে আরো একটু ফুলবে। তারপর সাদা থেকে লাল-নীল!
সিয়াম এক হাতে স্টেয়ারিং ঘুরিয়ে অন্য হাতে তামান্নার হাত ধরতেই তামান্না ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিলো।
“সরো, দু হাতে গাড়ি চালাও।”
সিয়াম আবারও হাত টা ধরলো। তামান্না এবারও সরিয়ে দিতে চাইলো কিন্তু দিলো না। তবে তাকালোও না।
সিয়াম বললো,
“এতো রাগ করলে তোর বেবী টাও কিন্তু টমেটোর মতো লাল হবে।”
তামান্না এবার ফিরে তাকালো সিয়ামের দিকে। ধমকের স্বরে বললো,
“হোক। আমার বাচ্চা টমেটোর মতো লাল, আকাশের মতো নীল, বেগুনের মতো বেগুনী হোক তাতে তোর কি? হ্যাঁ? তোর কি?”
“হা হা হা হা। তামান্নু, ভুলে যেয়ো না-তোমার বাচ্চার বাপ হবো বাপ।”
“উফফ। সিয়াম! আমার কিন্তু সত্যি সত্যি রাগ হচ্ছে এবার। কিসের বাপ-টাপ?”
“তার মানে? তুই কি এতক্ষণ মিথ্যা মিথ্যা রাগ করছিলি নাকি?”
“ধুর বাবা। কাকে কি বলি আমি! ভাল্লাগে না।”
সিয়াম গাড়ি থামালো। তামান্না তবুও কথা বললো না।
সিয়াম বললো,
“ভার্সিটি যাবি?”
তামান্না কথা বললো না।
সিয়াম হেসে বললো,
“ফুচকা খাওয়াবো। যাবি?”
তামান্না রেগে গিয়ে বললো,
“উফফ। ভালো লাগে না। বাড়ি যাবো আমি।”
“আহা রে! বউ টা আমার।”
“দেখো, ফাজলামী করবে না একদম।”
“ইশশ!”
“কান্না করে ফেললো কিন্তু?”
“এই না না।”
“বাসায় যাবো।”
“কেনো? চল ভার্সিটিতে গিয়ে ফুচকা খাওয়াই তোকে। মায়েদের যা খেতে মন চায় খাওয়াতে হয় তা না হলে বেবীর নোনা পড়ে।”
এমনিতেই ক্ষেপে আছে তামান্না। তারউপর সিয়ামের এমন বদমাইশী মার্কা কথা তামান্না রীতিমতো খামচে ধরলো সিয়ামকে,
“এমন করো কেনো? রাগ পায় না আমার?”
“আরে আরে ছাড়।”
“কিসব বলিস তাহলে?”
“আচ্ছা। বলবো না আজ থেকে।”
“তাহলে বাড়ি নিয়ে যাও এখন।”
“ওকে। ডান।”
সিয়াম বাড়ির কাছাকছি এসেই গাড়ি থামিয়েছিলো। তাই খুব অল্প সময়ের মাঝেই বাড়ি চলে এসেছে।
তামান্না বাসায় ডুকে অবাক। কেউ নেই। পুরো বাসা খালি।
“কি ব্যাপার? এরকম ফাঁকা বাড়ি।”
“কোনো ব্যাপার না।”
“আব্বু-আম্মু? রাইয়ান?”
“ওরা আছে। এখন একটু কফি করে দে না প্লিজ।”
“ইশশশ। পারবো না আমি কফি করতে।”
তামান্না চলে উপরে চলে যেতে চাইলো সিয়াম পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
“কই যাছ?”
“কি হচ্ছে কি?”
সিয়াম তামান্নার ডান গালে চুমু দিয়ে বললো,
“রোমাঞ্চ হচ্ছে।”
“ইশশ। ছাড়ো কেউ এসে যাবে।”
“উমহু।”
“মানে কি এসবের?”
“এতো ছটফট করলে কি করে হবে। চুপচাপ দাঁড়া না।”
“আমি…..”
“চুপ। আদর করছি তো। কথা কম বলবি। কেউ বাসায় নেই। তাই বাসায় আমরা।”
“মানে?”
“খালামনি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই সকালেই বেড়িয়ে গেছে সবাই।”
“খালামনি অসুস্থ?”
“হ্যাঁ।”
“আমি তো শোনলাম না।”
“কেউ শুনে নি। ভোরে জানতে পেরেছে সবাই।”
“তুমিও?”
“হ্যাঁ।”
“আমাকে কেনো বললে না?”
“তোকে বললে তুইও হসপিটালে যেতে চাইতি তাই।”
“কিহ! খালামনি হসপিটালে? তারমানে এতটাই অসুস্থ! আর তুমি?”
“আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো?”
“হয়েছে। রাগবো না? তোর কাজকর্মে যে রাগ না করবে সে মহামানবী। আমি কোনো মহা মানবী নই।”
“আরে বুদ্ধু সবাই সেখানে আছে তুই আমি গিয়ে কি করবো। তাই জানাই নি। আচ্ছা যা, ওরা এলে আমি আর তুই বিকালে যাবো। ওকে?”
“সত্যি না কি পাম দিচ্ছিস?”
“পাক্কা সত্যি। পাম দিলে তো ফুলে যাবি। আমি চাই শুধু তোর পেট টা ফুলুক।”
সিয়ামের প্রতিটি কথাই তামান্না যেন নতুন করে অবাক হয়। পেট ফুলা! এই কথাটাও এভাবে বলে কোনো হাজবেন্ড।
তামান্না হাসলো। বললো,
“কফি খাবে না?”
“না করলি তো একবার।”
“এখন তো সাধছি।”
“ওকে, যা করে নিয়ে আয়।”