আমার প্রিয় তুমি পর্ব-৮

0
1737

#আমার_প্রিয়_তুমি
#মেহজাবিন_তানিয়া
পর্ব-৮

১৫.

তাহরিমা এখনো ঘুমাচ্ছে । কালকের ঔষধের পাওয়ার এখনো কাটেনি তাই সকাল দশটা বেজে আসলো কিন্তু তাহুর ঘুম ভাঙ্গার কোনো খবর নেই।
গতকাল বিকেলে তাহুর ঘুম ভাঙ্গার পরেই তানভিকে জানানো হয় । তারপর শিলা জোর করে ভাত খাইয়ে দেয়। খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তানভি চলে আসলে বাসার পথে রওনা দেয়। রাকিবের ঘটনার পর তাহু অনেকটা চুপচাপ হয়ে যায়। ‌ তাই রাস্তায় আর কোনো কথা বলে না । কিন্তু তানভি নানান কথা বলতে থাকে যাতে তার পরির মন ঠিক হয়ে যায়।

বাসার থেকে কিছুটা দূরে হাঁটা থামিয়ে দেয় ওরা । তানভি বিদায় নেওয়ার সময় স্কুলে ঘটনা মা-বাবাকে বলতে না করে দেয় শুধু শুধু তারা চিন্তা করবে তাই। আর বলে বাসায় যেনো বলে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে শিলা ওদের বাসায় নিয়ে যায়। তাহুকেও নিষেধ করে দেয় এইসব নিয়ে চিন্তা না করতে। রাকিব আর কখনো এমন করার সাহস পাবে না । ঠিক মত থাকতে বলে সেখান থেকে বিদায় নেয় তানভি।

সকাল দশটা ত্রিশ মিনিটে গিয়ে তাহু ঘুম থেকে উঠে ওর মাও ওকে ডাক দেয়নি অসুস্থ বলে। ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ থম মরে বসে থেকে ফ্রেস হতে চলে যায়।
ফ্রেস হয়ে এসে দেখে ওর ফোন বাজছে। আননোন নাম্বার দেখে প্রথমে কোনো গুরুত্ব দিলো না বাজতে বাজতে কেটে গেলো। কিন্তু দ্বিতীয় বারের মতো বেজে উঠলো। এবার রিসিভ করে হ্যালো বলার আগেই ঐ পাশ থেকে রাগী কন্ঠ ভেসে এলো ‘কি বেপার ফোন ধরতে এতো টাইম লাগে কেন, কই ছিলা তুমি ,ফোন কই থাকে তোমার।’
তাহু কিছুই বুঝতে পারলো না আর এমন রেগে যাওয়ার মানেও বুঝতে পারলো না ।
তাহু কিছু বলার আগেই আবার বললো বিকেলে আমাদের বাগানে আসবে কথা আছে। বলেই ফোন কেটে দিলো।

১৬.

বিকেল চারটা তাহু রাস্তার পাশ দিয়ে হাঁটছে আর বকবক করছে ।আজ ওর বাসা থেকে বের হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিলো না কিন্তু কি আর করার ঐ তানভি মহাশয় কি বলবে আল্লাহ মালুম যার জন্য এমন তলব। তাছাড়া ঐ হাওলাদার সাহেবের জন্যই সে আজ সুস্থ ভাবে বাসায় পৌছাতে পারছে।সেই মানবতার খাতিরেই তার সাথে দেখা করতে যাওয়া।

বিকেল চারটা বিশ সেই চল্লিশ মিনিট ধরে অপেক্ষা করছে তানভি যেখানে তাহুদের বাসা থেকে আসতে সময় লাগে মাত্র পনেরো মিনিট কিন্তু তার প্রিয়তমার কোনো খবর নাই । তাই এদিক ওদিক হাঁটছে।
আজ রাতে সে চলে যাবে ঢাকা জরুরী কাজ পরে গেছে আর যাওয়ার আগে তা পরিকে দেখে যাবে না এটা তো হতে পারে না । তাই তাকে আসতে বলা। না হলে আজ বের হতে কখনোই বলত না।
হাঁটতে হাঁটতে রাস্তার পাশে চলে এলো তাহু যে দিক দিয়ে আসবে সে দিকে তাকিয়ে দেখে দূরে তার সাদা পরি আজ কালো হয়ে আসছে।
কালোর মাঝে গোলাপী রঙের কাজ করা থ্রীপিস পরে আস্তে আস্তে হেটে আসছে তাহু।

তানভি লক্ষ্য করে তাহুর ফরসা শরীরের কালো রংটা ফুটে ওঠছে । মনোমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইল।
তাহু কাছে আসলে কেমন আছে জিগ্যেস করলো আর বাসায় কোনো সমস্যা হইছে নাকি সেটাও বললো।

আজব এতো খবর দিয়ে আপনি কি করবেন ভাই। আমাকে কেন ডেকেছেন সেটা বলেন। কিন্তু মুখে বললো জি ভালো আছি আর বাসায় কোনো সমস্যা হয় নাই।

ওহহহ….গুড! আমি আজ ঢাকা চলে যাচ্ছি ।নিজের ক্ষেয়াল রেখো কোথাও একা যেও না । কোথাও গেলে শিলা আর মেহু নিয়ে যেও । মনে রেখো দূর থেকে কেউ একজন তোমার জন্য চিন্তা করবে ।আর সব থেকে বড় কথা একবার ফোন দিলে যেন ধরা হয় দ্বিতীয় বার যেনো না দেয়া লাগে। মনে থাকে যেনো।
তাহুর হাতে ছোট্ট এক পেকেট ধরিয়ে দিলো আর বললো বাসায় গিয়ে খুলবে । এখন এখান থেকে সোজা বাসায় যাবে ।

শুধু মাথা নাড়িয়ে পেছন ঘুরে হাঁটা ধরলো তাহু এতোক্ষণে যেন প্রান ফিরে পেলো সে।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here