#অন্যরকম তুমি
#পর্বঃ৬
#তানিশা সুলতানা
“এই মেয়ে তোমার কি কোনো দিন বুদ্ধি হবে না?
সাবিনা বেগম ছোঁয়ার হাত ধরে টেনে এক পাশে নিয়ে ফিসফিস করে বলে।
ছোঁয়া কাচুমাচু হয়ে দাঁড়ায়।
” আমি কি করলাম?
মুখটা কালো করে রিনরিনিয়ে বলে।
“কি করেছো?
” হুমম কি করেছি?
“আমার ছেলে তোমার হাত ধরেছে এটা ভাসুর শশুড়ের সামনে বলতে লজ্জা করলো না তোমার?
দাঁতে দাঁত চেপে বলেন তিনি।
” ওমা হাত ধরা আবার খারাপ না কি?
কপাল চাপকে সাবিনা বেগম।
“আমার ছেলে ডাকছে তোমায়। যাও
ছোঁয়ার দিকে কটমট চোখে তাকিয়ে বলে সাবিনা বেগম।
” ডাকছে তো বকা দেওয়ার জন্য। ভালো তো আর বাসবে না।
আপনি আর আপনার ছেলে দুজনই এক। কথার সাথে করলার জুস ঝড়ে।
বলেই এক দৌড় দেয় ছোঁয়া। নাহলে শাশুড়ী এখন চোখ দিয়েই ভর্স করে দেবে।
কুত্তা বিলাইয়ের সাথে ধবধবে সাদা রুমে ছোঁয়াকে বন্ধি করে রেখেছে সাদি।
রুমে ঢোকার সাথে সাথে কোনো কথা না বলেই হাত ধরে টেনে এই রুমে এনে দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছেন করলা সাহেব।
ছোঁয়ার রাগ আকাশ ছুঁই ছুঁই। লোকটার কতবড় সাহস ছোঁয়াকে রুমে বন্দি করে রাখে?
“শা*লা খবিশ। জীবনেও বউ পাবি না। আমার মতো ইনোসেন্ট কিউট সুইট মেয়েকে বন্দি করে রেখেছিস?
একবার বের হই তোর টাক মাথার সব গুলো চুল টোনে টেনে ছিঁড়বো আমি।
ছোঁয়ার অদ্ভুত গালি শুনে সাদি কাচুমাচু হয়ে আশেপাশে তাকায়। সবাই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাদির দিকে।
আসলে সাদির অফিসের দুজন স্টাফ এসেছে। আর ওদের সাথে এসেছে আবির। সাদি একটা প্রজেক্ট করেছে। সেটা দেখবে বলে এসেছেন ওনারা।
যদিও সাদির ওনাদের বাড়িতে আনার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। কিন্তু আবির এক প্রকার জোর করেই এসেছে।
ছোঁয়ার পরিচয় জানবে বলে।
তাই সাদি ছোঁয়াকে রুমে এনে আটকে রেখেছে। ও চায় না ছোঁয়াকে আবির দেখুক।
সাদি দাঁতে দাঁত চাপে।
আবির শব্দ করে হেসে ওঠে।
” বোনকে রুমে বন্দি করে রেখেছো নিশ্চয়?
আবির এক গাল হেসে বলে।
“গাইস
প্রজেক্ট দেখা শেষ?
এবার চলুন আমার সাথে।
সাদি ধাপ করে ল্যাপটপ বন্ধ করে বলে।
” ওমা যাবো কি? আন্টি যে বললো লান্স করে যেতে। আমি আবার আন্টির কথা ফেলতে পারবো না।
আবির আড়মোড়া ভেঙে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে বলে।
আদি বিরক্ত হয়। যত তারাতাড়ি সম্ভব এদের এখান থেকে বের করতে হবে। নাহলে ওই ইডিয়েট টা মানসম্মানের দফারফা করে ফেলবে।
“ওই দজ্জাল শাশুড়ী তেঁতো ছেলে। দরজা খুলে দিন। আমার আম গুলো গাছ তলায় পড়ে আছে। কেউ নিয়ে যাবে।
ছোঁয়া দরজা ধাক্কাতে ধাক্কাতে আবারও বলে ওঠে।
চমকে ওঠে সাদি। আবিরের হাসি চওড়া হয়।
” আমিই বরং দরজাটা খুলে দিয়ে আসি।
বলেই আবির উঠে বসে।
সাদি বড়বড় পা ফেলে দরজা খুলে ভেতরে ঢুলে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
ছোঁয়া বড়বড় চোখ করো তাকায়।
কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়ায়।
“এই যে মিস্টার সমস্যা কি আপনার? আমাকে এখানে বন্দী
ছোঁয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই সাদি ছোঁয়ার গলা থেকে ওড়না টেনে নিয়ে হাত বেঁধে দেয়। তারপর কাবাড থেকে কসটিউব বের করে ছোঁয়ার মুখে লাগিয়ে দেয়।
ছোঁয়া বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে। এটা কি হলো?
কুকুর আর বিড়াল বিছানায় আরাম করে বসে দেখছে ছোঁয়াকে।
” এবার কথা বলো? ইডিয়েট একটা।
কমনসেন্স নেই তোমার?
ইচ্ছে করছে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দেই।
কড়া গলায় বলে সাদি।
ছোঁয়া ভ্রু কুচকে শুধু তাকিয়ে আছে। কি পরিমাণ নির্দয় এই লোকটা ভাবা যায়?
সাদি দীর্ষ শ্বাস ফেলে আবার দরজা খুলে বেরিয়ে যায়। ছোঁয়া সেদিকে অসহায় চোখ করে তাকিয়ে থাকে। এই ছিলো কপালে?
বাইরে এসে দেখে আবিররা রুমে নেই। নিশ্চয় মা নিয়ে গেছে। থ্যাংক গড।
সাদিও চলে যায়। আপদ গুলোকে বাড়ি থেকে বের করতে পারলেই শান্তি।
খাবার না খেয়ে বাড়ি থেকে নরবেই না আবির।
সাবিনা বেগম খাবার বেরে দিচ্ছে ওনাদের। আদি মুখ বাঁকিয়ে বুকে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।
আবির এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। ছোঁয়াকে খুঁজছে। কিন্তু কোথাও নেই মেয়েটা?
তাহলে কি এই বাড়িতে থাকে না ও?
তাহলে থাকে কোথায়?
মনে মনে আওড়াতে থাকে আবির।
“শাশুড়ী, শাশুড়ী আপনি কোথায়?
ছোঁয়া বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে।
চমকে ওঠে সাদি। এই মেয়ে এখানে আসলো কি করে?
সাবিনা বেগম ভ্রু কুচকে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। এই মেয়ের কোনো কান্ডব ঙ্গান নেই।
আবিরের মুখে হাসি ফুটে ওঠে।
সাদিকে সামনে দেখে মুখ ভেংচি কাটে ছোঁয়া। সাদি চোখ পাকিয়ে তাকায় ছোঁয়ার দিকে। তাতে ছোঁয়া পাত্তা দেয় না।
আবির খাওয়া বাদ দিয়ে তাকিয়ে আছে।
ছোঁয়া ওড়নায় বেঁধে নিয়ে এসেছে আমগুলো।
সাদির ইচ্ছে করছে এই মেয়ের মাথা ফাটাতে।
” তোমার মেয়ে তোমাকে খুঁজছে।
বাচ্চা তো। বাচ্চা মেয়ে রেখে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করো কি করে?
সাদি গম্ভীর গলায় বলে। আবিরের মুখটা কালো হয়ে যায়। এইটুকু মেয়ের আবার মেয়ে আছে? ভাবা যায়? দুই দিনে কতশত কল্পনা জল্পনাই না করেছিলো ছোঁয়াকে নিয়ে।
এতে বড় ছ্যাকা খাবে কে জানতো?
ধুর
ছোঁয়া সাদিকে ভেংচি কেটে সিঁড়ি বেয়ে হনহনিয়ে চলে যায়।
সাদি ফোঁস করে শ্বাস নেয়।
চলবে
ছোট হওয়ার জন্য সরি। এক্সাম চলছে আমার। কিন্তু অসুস্থার জন্য এক্সামই দিতে পারছি না। তো গল্প লেখবো কি করে? আগের দিন এইটুকু লিখে রাখছিলাম।
পরবর্তী পর্ব বড় করে দেবো ইনশাআল্লাহ।