তিনি আমার সৎমা পর্বঃ৭

0
881

#তিনি_আমার_সৎমা

পর্বঃ৭

বসার ঘরের পরিবেশ থমথমে। কারো মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। দাদী তো হতভম্ব হয়ে আফজাল সাহেবের দিকে তাকিয়ে আছেন যেনো শুনতেই পারেননি কি বলেছে সে। চোখের পাতা ফেলতেও ভুলে গিয়েছেন। আমার হৃৎপিণ্ডটা ধক ধক করছে। এক মা কে হারিয়েছি আমি৷ যাকে পেয়েছি তাকে আপন করে নেওয়া শুরু করেছি মাত্রই। এখন কি তিনিও আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন? না না তা কীভাবে হবে? এটা আমি কিছুতেই হতে দিবো না। আমি মায়ের দিকে তাকালাম। শুধু তার মধ্যেই কোনো বিকার নেই। মিটমিট করে হাসছেন যেনো মনে হলো। যেনো আগেই জানতেন তিনি আফজাল সাহেব এই কথা বলবেন।
শান্তস্বরে মা বললেন,”আমার অপরাধ?”
বেশ ভারিক্কি গলায় আফজাল সাহেব বললো,”তোমার অবৈধ সম্পর্ক আছে অন্য পুরুষের সাথে। সে সাক্ষীও আছে আমার কাছে। এই বাড়িতে তুমি এসেছো নীরার মাথায় হাত বুলিয়ে, ওর নরম মনের সুযোগ নিয়ে ওর এতো সম্পত্তি হাতাতে। এসব সাক্ষী আমার কাছে আছে।”
আমার মনে হচ্ছে আমি কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছি। কি বলছে কি লোকটা এসব? না না এটা কোনোদিন সম্ভব নয়। মায়ের মতো মানুষ কোনোদিন এমন হতে পারে না। যেভাবে সে আমার জীবন বাঁচিয়েছে একমাত্র মায়ের মমতা ছাড়া এটা কোনোদিন সম্ভব না। আর সে কিনা আমার দূর্বলতার সুযোগ নিতে আমার সম্পত্তি গ্রাস করবে? কোনোদিন সম্ভব নয় এটা।
দাদী বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়েছেন। এতোদিন তিনি কোনো কথা বলতে পারেন নি এই লোকটার ভয়ে। আজ যেনো একটু সাহস পেয়েছেন উনি। মনে হয় নতুন মায়ের সাহসিকতায় সবাই সাহসী হয়ে উঠেছে।
“আফজাল, ভুলে যেও না আমি এখনো বেঁচে আছি। তুমি আমাকে মা বলে কোনো সম্মান করোনা। আমার সামনে রাত্রির সাথে যা করেছো, আমি কিচ্ছু করতে পারিনি। রুনাকে তুমি বিয়ে করে এনেছো। মাত্র কিছু মাস হয়েছে বিয়ের। এরমধ্যে সে বাড়ির রূপটাই পালটে ফেলেছে। নীরা আর রনিকে তাদের মায়ের অভাব বুঝতে দিচ্ছে না। তুমি বললে আর আমরা বিশ্বাস করে নিবো সব?”
আফজাল সাহেব কিছু বলতে যাবে তার আগেই মা বললেন,”মা থাক না। ওকে বলতে দিন। দেখি আমার বিরুদ্ধে কি কি প্রমাণ আছে ওর কাছে। আমিও একটু দেখতে চাই কতোটা বাড়তে পারে ও।”
এবার একটু তেতে যায় আফজাল সাহেব।
“ও তাই? এসব কিছু বানানো? বেশ কোর্টেই কেস উঠুক। ওখানেই সাক্ষী আসবে, প্রমাণ হবে৷ তোমাকে জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়বো আমি।”
এবার মা একটু হাসলেন। হঠাৎ হাসি থামিয়ে লোকটার চোখের দিকে তাকালেন একদৃষ্টিতে। আফজাল সাহেব চোখ নামিয়ে নিলেন।
“সাক্ষী? প্রমাণ? কোর্ট? আচ্ছা আফজাল, তো এতোদিন কই ছিলো তোমার প্রমাণ? গতকাল তোমার ক্রাইম পার্টনারকে জেলে যেতে হয়েছে আমার জন্য। আর আজই তুমি প্রমাণ যোগাড় করে ফেললে? একরাতেই সব সাক্ষীরা এসে তোমাকে বলেছে আমার অবৈধ সম্পর্ক আছে? আমি নীরার সম্পত্তির জন্য এই বাড়ি এসেছি?”
এবার একটু তোতলাতে শুরু করলো আফজাল সাহেব।
“প্রমাণ অনেক আগেই পেয়েছি। তোমাকে সুযোগ দিচ্ছিলাম তুমি ভালো হও কিনা। কিন্তু না, তুমি নীরাকে উষ্কাচ্ছো আমার বিরুদ্ধে। যাতে ওর বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠো তুমি। আর ওর আঠারো বছর হওয়ার পরপরই ওর কাছ থেকে সব সম্পত্তি নিতে পারো। এসবই তোমার প্লান। তুমি এই বাড়িতে আসার আগেই সব প্লান করে এসেছো। সব জেনেশুনে এসেছো এখানে। আমাকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করে তোমার রাস্তা ক্লিয়ার করেছো।”
আমি এতোক্ষণ কোনো কথা বলিনি। চুপ করে ওদের কথা শুনছিলাম। কিন্তু আর থাকতে পারলাম না। একটা ছোট্ট মাথা আর কতো চাপ নেবে? আমিও তো একটা মানুষ। কেনো আমার জীবনটা বাকি দশটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক হলো না? কেনো আমি বাবা মাকে নিয়ে সুখে থাকতে পারলাম না?
চিৎকার করে উঠলাম আমি।
“এনাফ। আর কতো নাটক করবেন সবাই আমার সামনে? আমি আর নিতে পারছি না। আমার মুক্তি দরকার এগুলো থেকে। এক সম্পত্তির জন্য এতোকিছু। আমার মা কে চলে যেতে হলো পৃথিবী থেকে। চাই না এই সম্পত্তি আমার। নিয়ে নিন সব আমার কাছ থেকে। আমাকে শুধু একটু শান্তি দিন। আর কিচ্ছু চাইনা আমি আপনাদের কাছে, কিচ্ছু না।”
এই বলে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পড়লাম আমি। দাদী আর মা দুইজন ছুটে এলেন আমাকে ধরার জন্য। আমি ওদের হাত সরিয়ে দিলাম আমার শরীর থেকে।
মা একটু অবাক হয়ে বললেন,”তুমিও কি আমাকে সন্দেহ করছো নীরা? তুমিও মনে করো যে, আমি সম্পত্তির জন্য এখানে এসেছি? তোমার মা হয়ে উঠতে চাচ্ছি। শুধুমাত্র তোমার সম্পত্তির জন্য?”
“আমার মনে হওয়া না হওয়াতে কিচ্ছু আসে যায়না মা। এই পৃথিবীতে একজনই আমার আপন ছিলো। আমার মা। সেই মা আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। আমার মাকে আমি খোঁজার চেষ্টা করেছি তোমার মধ্যে। আমি জানিনা কি হবে আমার সাথে। আমি এখন কাউকে বিশ্বাস করতে পারিনা।”
সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু আফজাল সাহেবের মুখে হাসি। মনে হচ্ছে সে সফল তার কাজে।
“নীরা।”
আমি মায়ের দিকে তাকালাম। তার অসহায় মুখটা দেখে আমার ভিতরটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে। আমি কোনোভাবে বিশ্বাস করতে চাচ্ছি না স্বার্থের জন্য উনি এমন করতে পারেন।
“মা, আমি একটু শান্তি চাই। এই বাড়িটা নরক হয়ে উঠেছে আমার কাছে। আমাকে এমন কোথাও নিয়ে চলো যেখানে আমার একটু শান্তি হয়।”
“তুমি কেনো যাবে? যে এই বাড়িটা নরক করে তুলেছে সে চলে যাবে। উনি প্রমাণ দিবে বলেছে তো? দিক প্রমাণ, আমিও দিবো। দেখি কে জেতে কে হারে।”
চোখ বড় বড় হয়ে যায় আফজাল সাহেবের। আমতা আমতা করে বলে,”প্রমাণ? কি প্রমাণ আছে তোমার কাছে?”
“জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ। তোমার ভালোবাসার বন্ধু,তোমার আজীবন ক্রাইম পার্টনার মিস্টার হাশেমের কাছে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হও। ডিভোর্সের ব্যবস্থা করো, দেখা যাবে কি হয়।”
আমি আর বসতে পারলাম না। একছুটে উঠে এসে নিজের ঘরে এসে বসলাম। মাও এলেন আমার পিছু পিছু।
আমাকে বসে থাকতে দেখে আমার মাথায় এসে হাত বুলিয়ে দেন। আমি ঘোলাটে দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাই। এরপর ছোট্ট করে একটা হাসি দিয়ে বলি,”আমার বিশ্বাসটা যেনো আর ভেঙে না যায় মা। আমি তোমাকে হারাতে চাইনা।”
মা আমাকে দুইহাত দিয়ে চেপে বুকে টেনে নিলেন। তার প্রতিটা নিঃশ্বাস আমাকে জানান দিচ্ছে তিনি অসৎ হতে পারেন না।

বেশকিছু দিন স্কুলে যাওয়া হয়নি। পরীক্ষার বেশি বাকি নেই। তাই আজ যেতেই হবে। মা টিফিন বানিয়ে দেবে। বাড়ির বানানো টিফিন খেয়ে বেশ অভ্যাস হয়ে গেছে আমার। আমি রেডি হচ্ছি আর মা টিফিন বানাচ্ছে।
“নাও নীরা৷ তোমার টিফিন।”
আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে স্মিত হাসলাম। ঘামে ভিজে গিয়েছে রান্নাঘরে যেয়ে। কি ভীষণ স্নিগ্ধ লাগছে তাকে। আমি জড়িয়ে ধরি তাকে।
“নীরা আজ তুমি স্কুল থেকে ফিরলে আমরা এক জায়গায় ঘুরতে যাবো।”
আমি অবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে। অনেকদিন স্কুলের বাইরে আর কোথাও যাইনা আমি। মায়ের এই বাড়ি ছেড়ে বেরোনো নিষিদ্ধ ছিলো। আফজাল সাহেব ও কোনোদিন বের হননি আমাদের নিয়ে। তাই ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে আনন্দে ভরে ওঠে মনটা।
“সত্যি মা? কোথায় যাবো আমরা?”
“দেখি কোথায় যাওয়া যায়। তবে আর কাউকে নিবো না। শুধু তুমি আর আমি। তোমার ছুটির পর আমি স্কুল গেটে দাঁড়াবো। ওখান থেকে নিয়ে যাবো তোমাকে।”
আমি ভীষণ খুশি হই। ঘুরতে যাওয়া যে কতো আনন্দের, সেই আনন্দ তো ভুলতেই বসেছিলাম। আমি মায়ের কপালে একটা চুমু এঁকে বেরিয়ে যাই।
ক্লাস শেষ হওয়ার সাথেই খুশিতে নাচতে নাচতে বেরিয়ে আসি আমি। একটু ভয় ভয়ও করে। আফজাল সাহেব যে ধুরন্ধর মানুষ, মা কে আসতে দেয় কিনা কে জানে।
তবে গেটের বাইরে মা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে দুশ্চিন্তা দূর হয় আমার। আমাকে দেখে মা হাত নাড়ে, আমিও হাত নাড়াই।
মা ইশারা করে একটা রিকশাতে উঠতে।
“মা কোথায় যাচ্ছি আমরা?”
“নিউ মার্কেট।”
“হঠাৎ নিউ মার্কেট কেনো মা?”
“আজ সারাদিন শপিং করবো আমরা। অনেক মজা হবে।”
শপিং করতে কার না ভালো লাগে। আজ তো খুশি আর খুশি।
অনেক অনেক শপিং করলাম আমরা। বলতে গেলে সব আমারই কেনাকাটা। মা তেমন কিছু কিনলো না। রনি আর দাদীর জন্যও নেওয়া হলো।
“মা এতো যে কেনাকাটা করলাম, কারণটা কি?”
“কেনো নীরা? কেনাকাটা করতে কি কোনো উপলক্ষ লাগবেই?”
“না তবুও। কিন্তু আমার সব টাকা তো আফজাল সাহেবের কাছে। দিলো সে তোমাকে এতো টাকা?”
“তার দেওয়া লাগবে কেনো? এগুলো সব আমার নিজের জমানো টাকাতে কেনা।”
“এতো টাকা তুমি খরচ করলে আমার জন্য?”
“বাহ রে! আমার মেয়ের জন্মদিন সামনে আর আমি একটু কেনাকাটা করবো না?”
আমি তো আরো একপ্রস্থ অবাক হলাম। তবে কি এসব আমার জন্মদিনের জন্য? ভুলেই তো বসেছিলাম প্রায় জন্মদিনের কথা। মা ঠিকই মনে করে রেখে দিয়েছে।
“আমার জন্মদিন তোমার মনে আছে মা?”
“মেয়ের জন্মদিন মায়ের মনে থাকবে না তো কার থাকবে?”
খুশিতে চোখে পানি চলে আসে আমার। এতো আনন্দ লাগছে কেনো আজ আমার?
“তবে নীরা। এখন কিন্তু তোমাকে আরো বেশি শক্ত হতে হবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে সব পরিস্থিতি মোকাবিলা করার।”
“কি বলছো মা এসব? আমি এগুলো কেনো করতে যাবো?”
“আঠারো বছর বয়স হচ্ছে তোমার।আঠারো বছর হলেই সব সম্পত্তি তোমার নামে চলে আসবে। তখন আফজাল সাহেব সহ আরো অনেকের নজর পড়বে এদিকে। তোমাকে সব বুঝে নিতে হবে। আগলে রাখতে হবে।”
আমি ভয়ে ঢোক চাপলাম। এসব কীভাবে করে। এই ব্যবসাবাণিজ্য কিছুই তো বুঝিনা আমি।
“তুমি কোথায় থাকবে মা? তুমি এসব দেখো। আমি তো এগুলো পারিনা।”
ম্লান হাসলো মা। মায়ের মিষ্টি মুখে এমব হাসি মানায় না। আমার একটু কষ্ট লাগলো দেখে।
“তা কি করে হয় নীরা? আফজাল সাহেবের স্ত্রী হয়েই ওই বাড়ি গিয়েছি আমি। সে যদি আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয় কীভাবে ওখানে থাকবো আমি?”
“আমার মা হয়ে থাকবে। ওই বাড়ি আমার। আমি ঠিক করবো ওখানে কে থাকবে না থাকবে। একবার মা কে হারিয়েছি আমি, আর হারাতে পারবো না।”
“তা হয়না মা। আফজাল ওই বাড়ি ছেড়ে কোথাও যাবে না, যতদিন বাড়ি তোমার কাছে আছে। কারণ ও কোর্ট থেকে যেভাবে হোক তোমার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আনবে। আর ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার পরে কীভাবে ওই মানুষের সাথে একই বাড়িতে থাকবো আমি নীরা মা?”
” তাহলে বরং এসব কিছু আমার আঠারো বছর হওয়ার পর আমি তোমাকে লিখে দিবো। তাহলে তো এসব কিছু তোমার হয়ে যাবে। আর আমাকে ছেড়ে যাবে না তুমি।”
চমকে উঠে মা তাকালো আমার দিকে। আমি মিষ্টি করে হাসলাম তার দিকে তাকিয়ে। রিকশাতে বসেই মা এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আমি মায়ের কাঁধে মাথা রাখলাম। কি ভীষণ শান্তি আর ভরসার জায়গা। বুঝতে পারলাম মা কাঁদছে। ফিসফিস করে বললো,”অনেক বড় হও মা, অনেক বড় হও।”

সেদিন রাতে হঠাৎ করে আমার ঘুম ভেঙে যায়। আফজাল সাহেবের সাথে ঝামেলা হওয়ার পর থেকে মা আমার সাথেই ঘুমায়। আমি মা কে জড়িয়ে ধরে ঘুম দিই, অনেক ভালো লাগে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাওয়ায় অনেকক্ষণ বুঝতে পারিনা কয়টা বাজে। বালিশের নিচ থেকে মোবাইল বের করে দেখি ঘড়িতে সময় রাত দুইটা পঁয়তাল্লিশ। কিন্তু আমার পাশে মা নেই। এতো রাতে মা গেলো কোথায়?
আমি উঠে যেয়ে ওয়াশরুম দেখলাম, ওখানে নেই। ডায়নিং, ড্রয়িং সব জায়গার লাইট অফ। একটু দুশ্চিন্তা হলো আমার। কারণ আফজাল নামক লোকটাকে একটুও ভরসা করিনা আমি।
আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে হাঁটতে লাগলাম আমি। মনে হলো একবার মা কে ডাকি চিৎকার করে। পরে মনে হলো থাক কি দরকার। বাকিদের ঘুম ভেঙে যাবে।
হঠাৎ খেয়াল করলাম আফজাল সাহেবের ঘরের লাইট জ্বলছে। এতোরাতে লোকটা লাইট জ্বালিয়ে কি করে? আমি আস্তে আস্তে হেঁটে তার ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালাম৷
এবং তখনই অবাক হয়ে খেয়াল করলাম আমার মায়ের স্যান্ডেলজোড়া ঘরের বাইরে।
মানে মা এই ঘরে? তারা দুইজন এখনো বৈধ সম্পর্কে আছে। এভাবে স্বামী স্ত্রীর ঘরের সামনে এসে আড়ি পাতা মোটেই ভালো কথা না। কিন্তু সমস্যাটা সেখানেই। দুইজন দুইজনকে দেখতে পর্যন্ত পারে না এখন। ডিভোর্সের কথা পর্যন্ত উঠেছে।এতোরাতে দরজা বন্ধ অথচ লাইট জ্বালিয়ে কি কথা তাদের? একটু উশখুশ করতে থাকি আমি। ভিতরের কথা শোনা কি ঠিক হবে নাকি হবে না?
একবার ভাবলাম থাক চলে যাই। হয়তো নিজেদের মধ্যে সব ঠিক করে নিচ্ছে তারা। তাহলে তো ভালোই হয়। মা এখানেই থাকবে, কোথাও যাবে না আমাকে ছেড়ে।
চলেই আসছিলাম ফিরে। হঠাৎ করেই মায়ের একটা কথা শুনে থমকে দাঁড়াই আমি। আমার হাতপা কেঁপে উঠলো থরথর করে। আমি কি ঠিক শুনলাম?

(চলবে)

(পাঠক একটু অসুস্থ থাকার কারণে এই পর্বটা দিতে সামান্য দেরি হলো। তার জন্য দুঃখিত। খুব তাড়াতাড়ি গল্পটা শেষ হতে চলেছে। একটা টুইষ্ট দিয়ে গল্পটা শেষ হবে। পাঠক কি ধরতে পারবেন টুইষ্টটা? দেখা যাক, কয়জন বলতে পারেন। অনেক ধন্যবাদ সবাইকে গল্পটা এতো পছন্দ করার জন্য।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here