#হিংস্র_ভালোবাসা
#Writter_Farhana_Chobi
#পর্ব-২৯
.
.
.
🍁
হসপিটালের বেডে শুয়ে আছে অফিস্যার রায়হান শিকদার ৷ দু টো পা হারিয়ে একপ্রকার ভেঙ্গে পরে অফিস্যার কিন্তু আগুনের প্রতি প্রতিশোধের জ্বলন্ত লাভা নিভে নি বরং একটু একটু করে হাজার গুন বেরে গেছে তার জ্বলজান্ত প্রমান হচ্ছে সামনে দারিয়ে থাকা এক আগুন্তক৷
— অফিস্যার আমাদের এখানে কেনো ডাকা হয়েছে আর আপনার এই অবস্তা কেনো..??(ফারহা)
— সব জানতে পারবেন তার আগে সান্ত হয়ে বসুন..(অফিস্যার)
ফারহা টুল নিয়ে বসতে অফিস্যার বলতে শুরু করে…
— মিসেস চৌধুরী আমি জানি কেনো আপনি মিস্টার চৌধুরীর সাথে এখনো আছেন তবে আপনি যে কারনে মিস্টার চৌধুরীর সাথে আছেন তা সত্যি অমূলক ……(অফিস্যার)
— মানে কি বলতে চাইছেন ..??;যা বলবেন একটু ক্লিয়ার করে বলুন ….(ফারহা)
— হু আমি ক্লিয়ার করেই বলছি , আপনি চৌধুরী ম্যানশনে প্রবেশ করেছিলেন আপনার জমজ বোন ফারিহার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে তাই তো….??(অফিস্যার)
ফারহা চোখ মুখ শক্ত করে কড়া জবাব দিলো অফিস্যার কে….
— দেখুন অফিস্যার আপনার নষ্ট করার মতো ইনাফ টাইম থাকলেও আমার নেই আমাকে বাড়ি ফিরতে হবে মেঘ যে কোন সময় বাড়িতে পৌছে যেতে পারে আর সব থেকে বড় কথা নীলা বাড়িতে একা আছে ….(ফারহা)
ফারহার কথা শুনে অফিস্যার হা হা করে হেসে উঠে ৷ অফিস্যারের হাসি দেখে ফারহা এক প্রকার বিরক্ত হয়ে বসা থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে অফিস্যার হাসি থামিয়ে বলে…
— মিসেস চৌধুরি আপনি আপনার বোনের খুনিদের সম্পর্কে অর্ধেক সত্যি টা জানেন বাকি সত্যি টা এখনো আপনি জানেন না ৷ যেটা আমি জানি…..
অফিস্যারের কথা গুলো শুনে ফারহা ওখানে থমকে গেলো ৷ গুটি গুটি পায়ে আবার টুলে যেয়ে বসে পরলো ফারহা কারন টা হলো বাকি সত্যি টা জানা……
— অফিস্যার কোন প্রকার ভনিতা না করে সোজাসুজি বলুন আমার বোনের খুনিদের সম্পর্কে কি বলতে চান….???(ফারহা)
— ওহ মিসেস চৌধুরী আপনার মুখের কনফিউশনের ফেস টা বেস লাগছে কিন্তু ….
ফারহা এবার রেগে গিয়ে বলতে যাবে তার আগে অফিস্যার বলে..” সরি সরি মিসেস চৌধুরি আমি আসলে মজা করছিলাম ৷ এখন মজা না করে সত্যি টা বলছি ….
আপনি হয়তো এটা জানেন যে আপনার বোন যে দিন নিখোজ হয় সে দিন রাতে আপনার বোন আপনার সাড়ি পড়ে বের হয় বন্ধুর বার্থ ডে পার্টিতে যাবে বলে এবং যথারিতি আপনার বোন পার্টি ইনজয় করে রাতে বেরিয়ে যায়৷ কিন্তু মাঝ পথে কেউ বা কারা আপনার বোন কে কিডন্যাপ করে নিয়ে যায় ৷ তবে তাদের উদ্দ্যশ্যে আপনাকে কিডন্যাপ করা কিন্তু আপনারা দুবোন জমজ হওয়ার জন্য তারা ভুল করে আপনার বোন কে তুলে নিয়ে যায়………
অফিস্যারের কথার মাঝে ফারহা বলে ওঠে ” অফিস্যার আপনার এই কথা গুলো আমি আগে থেকে জানি কে আমার বোন কে কিডন্যাপ করিয়েছে আরহান চৌধুরী মেঘের বাবা…”
— ইয়াহ এটা ঠিক কিডন্যাপ আরহান চৌধুরী করিয়ে থাকলেও ওনাকে কিডন্যাপ করার অর্ডার অন্য কেউ দিয়েছিলো তার উদ্দ্যেশ্য ছিলো আপনি আপনার ক্ষতি করা কিন্তু দূর্ভাগ্যে ক্রমে আপনার জায়গায় আপনার বোনের বলি চরে যায় ৷
— এক মিনিট অফিস্যার আপনি কি বললেন আরহান চৌধুরী কে অন্য কেউ অর্ডার দিয়ে ছিলো আমাকে কিডন্যাপ করতে ..? কিন্তু কেনো..??(ফারহা)
— বলছি তার আগে বলি তারা যদি আপনাকে কিডন্যাপ করতে পারতো তাহলে হয়তো তারা আপনাকে খুন করতো না ৷আপনাকে তাদের লিডার Ak কাছে পাঠিয়ে দিতো সে হইতো আপনাকে ধর্ষন করে নারী পাচার কারিদের কাছে বিক্রয় করে দিতো …
— কিন্তু আমাকে কেনো .?? আর সে লিডার কে যে আমার পিছুনে পরে আছে..??(ফারহা)
— আমার কথা এখনো শেষ হই নি মিসেস চৌধুরি ..পুরো টা শুনোন তারপর আপনি নিজে সব টা বুজতে পারবেন……..(অফিস্যার)
অফিস্যারর কথা শুনে ফারহা চুপ করে যায়…
— যা বলছিলাম , যখন Ak জানতে পারলো যে তারা আপনাকে নয় আপনার বোন কে কিডন্যাপ করেছে তখন তিনি সাথে সাথে অর্ডার করে দেয় ফারিহা কে মেরে ফেলতে কারন ফারিহা ততোক্ষনে সেই আসল লিডারের মুখ টা দেখে ফেলেছিলো আর এদিকে Ak ভয় ছিলো যদি ওকে ছেড়ে দেয় আর ওনি সবটা আপনাকে বলে দেয় তাহলে ওনার সব প্লান ভেস্তে যাবে ৷ তাই আরহান চৌধুরী কে অর্ডার করে ফারিহা কে মেরে ফেলতে আর আরহান চৌধুরী ছিলো সেই অপেক্ষায় কারন তিনি ভেবেছিলেন ওটা আপনি ছিলেন আর ওদের লিডার Ak ওনাকে কিছু জানায় নি …..
এখন আপনার প্রশ্ন থাকতে পারে আপনাকে কেনো ..??
কারনটা হলো আপনার বাবার সাথে ওনার শত্রুতা ….. …
— আমার বাবার সাথে কারোর কোন শত্রুতা নেই অফিস্যার…(ফারহা)
— ভেবে দেখুন মিসেস চৌধুরী কেউ তো আছে যার সাথে আপনার বাবা অনেক বড় অন্যায় করেছিলো..!!(অফিস্যার)
অফিস্যারের কথা শুনে ফারহার মাথায় শুধু আগুনের কথা আসছে ৷ ফারহা নিজের অজান্তে আগুনের নাম নিয়ে ফেলে…
— আগুন……
— ইয়েস মিসেস চৌধুরী , আগুন খান অরফে AK একজন সফল বিজনেসম্যান সমাজের সামনে তবে আড়ালে একজন নিকৃষ্ট প্রকৃতির লোক ৷ যার হাত ধরে শত শত নারী পুরুষ দেশে বিদেশে পাচার হয় ৷ তাদের অরগ্যান নিয়ে বিজনেস করে ৷ ছোট ছোট বাচ্চাদের শরীলের বিভিন্ন অংশ কেটে নিয়ে তাদের মৃত্যুর কোলে তুলে দেয় ৷ ইভেন দেশের টাকা মৃল্যবান সম্পদ তা চুরি করে বাইরের দেশে বিক্রয় করে ৷ আর এখন যে দেখছেন সমাজে প্রায় অনেক যুবক যুবতীদের হাতে নেশা জাতীয় দ্রব তা সব সাপ্লাই Ak লোক করে পুরো বাংলাদেশে ……
ফারহা এতোক্ষন এক ঘোড়ের মধ্যে ছিলো অফিস্যারের কথা গুলো যেনো সব ওর মাথার উপর থেকে চলে গেলো ৷ ফারহা বিশ্বাস করতে পারছে না আগুন ওর ছোট বেলার বেস্টফ্রেন্ড ওর সাথে এমন একটা জঘন্য গেম খেলবে ৷ ভাবতে ফারহার রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আসছে…..
— মিসেস চৌধুরি আর একটা কথা Ak অরফে আগুন খান একজন আন্ডারওয়াল্ডে কিং …..
— Whaat.. আগুন আন্ডারওয়াল্ডে কিং তবে ও যে আমাকে বলেছিলো..
— দেখুন মিসেস চৌধুরি Ak আপনাকে কি বলেছিলো তা আমি জানি না তবে আপনার মুখের রিয়েকশন দেখে বুজতে পারছি জানোয়ারটার কথার সাথে আমার কথার কোন মিল নেই ….
— এক মিনিট অফিস্যার আমার একটা প্রশ্ন আছে,,??
— হ্যা বলুন কি জানতে চান ..!!
— আগুন যদি আমার ক্ষতি চেয়ে থাকে তবে আমাকে এতো হেল্প করেছিলো কেনো ..?? আর চার টা বছর বা আমার ফ্যামিলি কে প্রটেক্ট করলো.???(ফারহা)
— এর কারন টা আপনি ..(মুচকি হেসে বললো অফিস্যার)
— এর কারনটা আমি.!! মানে টা কি অফিস্যার..???(রেগে)
— হ্যা আপনি কারন এতো বছর পর আগুন আপনার উপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য দেশে ফিরে কিন্তু মাঝখানে হঠাৎ করে চাল টা উলটে যাওয়ায় আগুন সেখানে থেমে আবার নতুন করে গুটি সাজাতে থাকে কিন্তু মিস্টার চৌধুরির বাড়িতে প্রবেশ করা ওদের উপর এমন মারাত্বক নিক্ষুত পরিকল্পনা করে এট্যাক করবেন এটা আগুন ভাবতে পারে নি যখন দেখলো আপনার যে কোন বুদ্ধিমান লোক কে এক মুহূর্তে ঘোল খাওয়াতে পারেন তখন থেকে আগুন তার গুটি গুলো গুটিয়ে নেয় আর আপনাকে নিজের জগতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলে তবে আপনি একটা কথা বলুন তো Ak কখনো কি আরহান চৌধুরীর সামনে দারিয়েছে..??
ফারহা একটু ভেবে উওর দিলো ” নাহ আগুন কখনো সবার সামনে আসতে চাইতো না”
— তাহলে মিলিয়ে নিন আমার বলা কথা গুলো…
ফারহা মাথায় হাত দিয়ে পুনরায় কথা গুলো ভাবতেই মাথা কেমন যেনো হ্যাং হয়ে আসছে কিছুই ভাবতে পারছে না ফারহা ……..
— মিসেস চৌধুরী আপনার হাসবেন্টের সামনে বিপদ আর এই বিপদের নাম হলো আগুন …..
আগুনের বিপদের কথা শুনে ফারহা হুট করে উঠে দারিয়ে যায়…….
— অফিস্যার থ্যাংইউ আমাকে সত্যি টা জানানোর জন্য …
— মিসেস চৌধুরী আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না ৷ আপনি পুলিশের হেল্প নিয়ে তাদের আইনের হাতে তুলে দিন….(অফিস্যার)
— নাহ অফিস্যার আগুন কে আমি কিছুতেই আইনের হাতে তুলে দিবো না কারন আইনের ফাক গলিয়ে ঠিক ও ছাড়া পেয়ে যাবে ৷ আর আমি তা কিছুতেই হতে দিতে পারি না অফিস্যার ৷
— আপনার কথা গুলো ঠিক কিন্তু ..
— কোন কিন্তু নয় অফিস্যার , আপনার কি মনে হয় পুলিশ অফিসাররা আগুন কে কখনো ধরতে পারবে বা আপনার উপর করা অন্যায়ের শাস্তি দিতে পারবে ..???না অফিস্যার পারবে না কারন আগুনের ক্ষমতার কাছে আপনার আইনের হাত ছোট তাই যা করতে হবে আমাকে করতে হবে ৷ আর মেঘ ঠকাবো না আমি অনেক হয়েছে এই লুকুচুরি খেলা এবার প্রত্যেক কের মুখোশ খোলার পালা (ফারহা)
— বেস্ট অফ লাক মিসেস চৌধুরী , তবে সতর্ক থাকবেন আর আশে পাশে নজর রাখবেন কখন কোথা থেকে এট্যাক করবে আপনি বুজতে ও পারবেন না….
— থ্যাংকস অফিস্যার , আমি আজ আসছি ভাই বাইরে অপেক্ষা করছে…(ফারহা)
কেবিন থেকে বার হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখি ভাই (আদিল)ফোনে কারো সাথে কথা বলছে দেখে মনে শুধু কথা না রিতিমতো হুমকি দিচ্ছে ৷ আমি সামনে গিয়ে দারাতে আমাকে দেখে কল কেটে দিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ….
— ভাই কাকে এতো ধমকাচ্ছিস..??(ফারহা)
— ইয়ে মানে কাউ কে না আচ্ছা বাদ দে এখন বল অফিস্যারের সাথে কথা হলো..??(আদিল)
— হুম এখন চল বাড়িতে যেতে হবে নীলা বাড়িতে একলা আছে…(কথা এরিয়ে গিয়ে)
— ফারু তোর একটা ফোন পেয়ে লন্ডন থেকে নেক্টস ফ্লাইটে বিডি তে আসলাম আর এখন তুই আমাকে কিছু বলছিস না ৷ আমার এখানে এসে লাভ কি হলো বল? আর এখন তো তুই আমাকে ভালোবাসিস না সব ভালোবাসা মেঘের জন্য তাইনা …(মুখ কালো করে বললো)
— ওরে নোটাংকি বাজ তুই আমার একমাত্র ভাই তোকে ভালোবাসবো না তো কাকে ভালোবাসবো হুম ৷ আর সময় হলে সব টা জানতে পারবি তার আগে আমার একটা কাজ করে দে তো…!(ফারহা)
— বাহ বাহ কাজের বেলায় কাজি কাজ ফুরালে ফাজি তাই না ৷ এখন আমার অবস্তান টা হলো ফাজির জায়গায় ৷ (মুখ ফুলিয়ে)
— ভাই আ’ম সিরিয়াস ইটস নট এ্যা জোক…(ফারহা)
ফারহার গম্ভির কথা শুনে আদিল এবার মজা রেখে সিরিয়াসলি ফারহার কথা গুলো শুনতে লাগলো…..
— …………….(ফারহা)
— ডান হয়ে যাবে ,
— তাহলে আমাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে কাজ টা সেরে ফেল জলদি কারন আমাদের হাতে সময় কম যা করতে হবে খুব সাবধানে আর তারাতারি করতে হবে…(ফারহা)
আদিল ফারহা বাড়ির পিছুনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় এদিকে ফারহা বাড়িতে ঢুকে নীলা কোথাও না দেখতে পেয়ে গার্ডদের কাছে জ্বিগাসা করার জন্য বাইরে আসতে দেখে সব গার্ড মারাত্মক জখম হয়ে পরে আছে ফারহা দেরি না করে এ্যামুলেসে খবর দিয়ে মেঘের নাম্বারে অনেক বার ট্রাই করে কিন্তু মেঘের নম্বর বার বার সুইচ অফ বলায় ফারহা বেশ চিন্তিত হয়ে পরে ৷ এদিকে নীলা কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না অন্য দিকে মেঘের ফোন অফ ৷ ফারহা এখন কি করবে ভেবে পাচ্ছে না ৷ ফারহার মাথায় হঠাৎ করে মিহুর কথা আসতে ফারহা মিহুকে ফোন করতে ফারহাকে পিছুন থেকে কেউ একজন মুখ চেপে ধরে ৷ মিনিটের মধ্যে ফারহা অজ্ঞান হয়ে যায়……….
— হ্যালো বস কাজ শেষ ম্যাম কে অজ্ঞান করে নিয়ে আসছি….(রিক)
— গুড জব রিক , আমি ওয়েট করছি তোমাদের জন্য ,মেঘ ফিরে আসার আগে ফারহা কে নিয়ে চলে এসো ….(আগুন)
— ওকে বস……….
.
.
.
.
.
#To_be_Cotinued………………🍁🍁🍁
#StayHome ❤️
#StaySafe 💜