#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ১৮
.
কারও আলতো ডাকে আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম। ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেওয়া আমার মোটেও পছন্দের কাজ নয়। তাই একগাদা বিরক্তি নিয়ে ভ্রু কুচকে পিটপিটিয়ে চোখ খুলে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি আদ্রিয়ান হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি দুই হাতে বিছানায় ভর দিয়ে উঠে বসলাম। দু-তিনবার একটানা চোখ ঝাপটা দিয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে রইলাম। উনি বেডে বসে বললেন,
— ” বিকেলে ঘুমাতে বলেছি বলে কী সন্ধ্যা ভরে ঘুমাবে নাকি? ”
আমি কিছুক্ষণ ওনার দিকে তাকিয়ে থেকে ব্যপারটা বোঝার চেষ্টা করলাম। আস্তে আস্তে মনে পড়ল যে আমি আপির রুমে ছিলাম। তাহলে এখানে কীকরে এলাম? ওনার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আমি? উনি ভ্রু কুচকে বললেন,
— ” কী হলো? যাও গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসো। আমি মিনুকে কফি আনতে বলেছি। কফি খেয়ে পড়তে বসবে। গো ফাস্ট।”
ওনার কথা শুনে আমি তাড়াতাড়ি উঠে চলে গেলাম ওয়াসরুমে। সকালে যেই ধমকি দিয়েছেন তারপর ওনার কথা অমান্য করার সাহস নেই আমার। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে দেখি কফি চলে এসছে। আমাকে দেখে উনি হাতের ইশারায় ডাকলেন। আমি চুপচাপ গিয়ে বেডে উঠে আসাম করে বসে পরলাম। উনি কফির মগটা আমার দিকে এগিয়ে দিলেন। আমিও ভদ্র মেয়ের মতো কফির মগটা নিয়ে বসে রইলাম। উনি আমার একটা বই নিয়ে দেখছেন আজকে কী পরাবেন। আর আমি একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আর কফির মগে চুমুক দিচ্ছি। সকালে এভাবে বকলেন, কতগুলো কথা শোনালেন অথচ এমন একটা ভাব করছে জেনো কিছুই হয়নি। একটাবার সরি বলারও প্রয়োজন মনে করছেন না? একটা ভেংচি কেটে আবারও কফিতে কনসেনট্রেট করলাম। উনি বই মার্ক করে আমার দিয়ে বললেন,
— ” কম্প্লিট করো, ইন ওয়ান ইয়ার।”
আমিও কথা না বলে বইটা নিয়ে পড়তে বসে গেলাম। ওনার প্রতি ভীষণ রাগ লাগছে আমার। এমন কেনো লোকটা? এতোটা রুড? আমি শুনেছি তাড়াই শাসন করেন যারা ভালোবাসেন। যেমন বাবা, মা,আপি,ভাইয়া। কিন্তু এই ছেলেটা সবসময় আমাকে শুধু আমাকে শাসনই করে। একটু তো ভালোবাসতেও পারেন। অন্তত একবার তো বলতে পারত যে,.” সকালে রাগের তোমার সাথে ওরকম ব্যবহার করে ফেলেছি। আ’ম সরি।” তা বলবে কেনো ইগোতে লাগবে তো ওনার । এসব ভাবছি আর মুখ ফুলিয়ে পড়ছি। প্রায় আধঘন্টা পর হঠাৎ উনি নরম গলায় বললেন,
— ” অনি..”
আমি একটু চমকে উঠলাম। এখন কী সরি বলবেন সকালের ঘটনার জন্যে? এসব ভাবতে ভাবতেই উনি বলে উঠলেন,
— ” কালকে তো কোচিং নেই তাইনা?”
উফফ ইচ্ছে করছে ফ্লাওয়ার ভ্যাস দিয়ে লোকটার মাথাটাই ফাটিয়ে দেই। উনি যখনই আমার সাথে কথা বলেন, যেটুকুই বলেন সব কথা ঘুরেফিরে সেই লেখাপড়াতেই এসে থাকে। অদ্ভুত! আমিযে ওনার বউ সেটা ভাবতে গেলে এখন নিজরই হাসি পায়। উনি আবার বললেন,
— ” কী হলো বলো?”
আমি এবার বিরক্তি নিয়ে ওনার দিকে তাকালাম তারপর বললাম,
— ” না আজ ছিলোতো, কাল নেই।”
— “তোমাদের বাড়ির সবাইকে ইনভাইট করা হয়েছে। ওনারা সবাই কাল সারাদিন এখানেই থাকবেন।”
আমি অবাক হয়ে তাকালাম ওনার দিকে। কিছুক্ষণ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থেকে জোরে চেচিয়ে বললাম,
— ” সত্যিই?”
উনি ভ্রু কুচকে নিজের কানে হাতে দিয়ে বললেন,
— ” চুপ! আমার কান! এতো চিৎকার করার কী আছে?”
আমি নিজেকে সামলে নিয়ে গলা ঝেড়ে বললাম,
— ” নাহ মানে বলছিলাম যে অর্ণব ভাইয়া, সজীব ভাইয়া, কাব্য সবাই আসবেন? সারাদিন থাকবেন?”
— ” হ্যাঁ রে বাবা সবাই থাকবেন। আসলে কদিন যাবত তোমার পড়ার খুব প্রেশার পরছে। সেই বিয়ের পর দুদিনের জন্যে গিয়েছিলে আর তো যাওয়া হয়নি। ওদের সাথে একটা দিন কাটালে তোমারও মাইন্ড ফ্রেশ হবে আর ওনাদেরও ভালো লাগবে।”
আমি এতোই খুশি হয়েছি যে হুট করেই হাটুতে ভর দিয়ে সোজা হয়ে ওনার গিয়ে একটু এগিয়ে ওনার কাধে থুতনি রেখে ওনাকে জরিয়ে ধরে বললাম,
— ” থ্যাংকিউ। থাংকিউ সোওও মাচ।”
ওনাকে টাইট করে জরিয়ে ধরে আছি। কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারলাম যে কী করছি তাই তাড়াতাড়ি ছেড়ে একটু দূরে সরে বসলাম। ওনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনিও একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন। হয়তো আমি এমন কিছু করবো সেটা উনি ভাবতেই পারেননি। কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে উনি একটা টেডি স্মাইল দিয়ে নিচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরলেন। আমি সাথেসাথেই চোখ সরিয়ে নিলাম। আমি লজ্জা পেয়ে উঠে দাঁড়িয়ে চলে যেতে নিলেই উনি আমার হাত ধরে নিজের দিকে টান মারলেন। আমি সোজা ওনার।বুকের ওপর গিয়ে পরলাম। আমি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। আমাকে অবাক করে দিয়ে আমাল কোমর ধরে ঘুরিয়ে বেডে শুইয়ে দিয়ে। আমার পাশে নিজের কুনুইয়ের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পরলেন। আমি হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে। উনি আমার সামনের চুলগুলো কানের পিঠে গুজতে গুজতে বললেন,
— ” তোমাকে তো আমি বাচ্চা মেয়ে ভেবেছিলাম। কিন্তু তুমি যে এতোটা এডভান্স জানতাম না তো?”
উনি এইটুকূ স্পর্শ করাতে আমি এমনিতেই সব গুলিয়ে ফেলেছি, নিশ্বাস হালকা ভারী হয়ে আসছে। উনি নিজের মুখ আমার দিকে এগিয়ে আনতেই আমি চোখ খিচে বন্ধ করে ফেললাম। ওনাল নিশ্বাস আমার গলায় মুখে এসে পরছে আস্তে আস্তে সেটা গাড়ো হচ্ছে আর ততোই বিছানার চাদর খামচে ধরছি। কিন্তু অনেকটা সময় পার হওয়ার পরেও কোনো কিছুই অনুভব করতে পারছিনা। তখন পিটপিট করে চোখ খুলে দেখি উনি বিছানায় হেলান দিয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন। আমি হকচকিয়ে উঠে বসে ওনাকে কিছু বলবো তার আগেই উনি ভ্রু নাচিয়ে বললেন,
— ” কী হ্যাঁ? সবসময় উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথায় ঘোরে তাইনা?”
আমি ভ্রু কুচকে ফেললাম। উনি হালকা ধমকের সুরে বললেন,
— ” আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে পড়াটা কম্প্লিট করো তাড়াতাড়ি। কালকে এমনিতেই পড়া বেশি হবেনা। সো ফাস্ট? আমি আসছি একটু।”
আমি আহম্মকের মতো ওনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম। কী লোকরে বাবা? কোথায় ভাবলাম আমার বরটার হয়তো একটু সুমতি হয়েছে। কিন্তু আমার কপাল কী আর এতো ভালো নাকি। ব্যাটা নিরামিষ সারাজীবন নিরামিষই থাকবে। কী ভাবলাম আর কী হলো?নিজেই তো ওমন অদ্ভুত বিহেভ করলো আমার নিজেই ধমকালো। খাটাশ কোথাকার।এক্সাক্টলি সমস্যাটা কোথায় এর? মাথার তার কী সবগুলো ছেড়া না কী? আব্বু বেছে বেছে অবশেষে একটা পাগলের সাথে বিয়ে দিলো আমাকে? আল্লাহ আমার সহায় হও। আমার এই তারছেড়া বরটার তারগুলো একটু জুড়ে দাও প্লিজ। হেল্প মি।
__________________
সকালের রোদের আলো চোখে পরতেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। একটা হাই তুলে আস্তে আস্তে উঠে বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সাড়ে ন’টা বাজে। কাল রাতে অনেক্ষণ পর্যন্ত পড়িয়েছেন উনি আমায়। যেদিন আমার কোচিং থাকেনা সেদিনের আগের রাত অনেক রাত অবধি পড়ান আর সকালে বেশিক্ষণ ঘুমাতে দেন আজ হয়তো তাই এখনও ডাকেন নি। আমি বিছানা ছেড়ে ওয়াসরুমে গেলাম ওখান থেকে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে গেলাম। আর নিচে গিয়ে আমি অবাকের চরম সীমায় পৌছে গেছি। আব্বু, আম্মু, মামা, মামী, ভাইয়ারা, সুলতানাপ্পি মানে আমার ছোট ফুপ্পি, ফুপা, ওহি, অন্ত সবাই এসছে। ওরা আজ আসবে আমি জানতাম কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি চলে আসবে সেটা আশা করিনি আমি। অবাক হয়ে দেখছি ওদেরকে। আব্বু আম্মু আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন আমি ছুটে গিয়ে আব্বুকে জড়িয়ে ধরলাম আব্বুও ধরলো আমায়। আমি কেঁদেই দিয়েছি পুরো। আব্বু আমার মাথায় হাত রাখতেই আমি ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলাম। আম্মুও কাধের ওপর দিয়ে হাত দিতেই আমি আম্মুর দিকে ঘুরে আম্মুকেও জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলাম। বাবা বললেন,
— ” দেখো মেয়ে কীভাবে কাঁদছে? আরে তুই এভাবে কাঁদলে তো ওরা মনে করবে আমরা এখানে এসে ভীষণ টর্চার করছি।”
মামনীও সায় দিয়ে বললেন,
— ” ঠিকই তো এভাবে কাঁদতে আছে?”
কিন্তু আমি হালকা আওয়াজে কেঁদে যাচ্ছি। তখনই আদ্রিয়ান বলে উঠলেন,
— ” বাবা, মামনী তোমাদের এখানে ডেকেছিলাম কারও মন ভালো করার জন্যে এখন সে যদি এইভাবে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদতে থাকে তাহলে কিন্তু আমিই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাবো।”
ওনার কথা শুনে আমি কান্না থামিয়ে মুখ ফুলিয়ে তাকিয়ে রইলাম ওনার দিকে। সবাই হেসে দিলো। আদ্রিয়ান এবার আব্বু আম্মুকে সালাম দিলেন। ভাইয়ারা ওদের সাথে কুশল বিনিময় করলেন। তারপর কাব্যর দিকে তাকিয়ে হাইফাইভ করে বললেন,
— ” হাই চ্যাম্প। কেমন আছো?”
কাব্যও হেসে বলল,
— ” একদম। তুমি?”
— ” বিন্দাস।”
— ” কিন্তু ভাইয়া তুমি বলেছিলে আমাকে ক্রিকেটের ব্যাটিং এর নতুন কয়েকটা স্ট্রাটেজি শেখাবে?”
আদ্রিয়ান হালকা হেসে বলল,
— ” আপাতত একটু ব্যস্ত আছি ভাইয়া। সময় করে শিখিয়ে দেবো।”
বলাই হয়নি যে আদ্রিয়ান খুব ভালো ক্রিকেট খেলে। শুধু ক্রিকেট না ম্যাক্সিমান স্পোর্টস এ ভালো। শুনেছি বক্সিং চ্যাম্পিয়ন তাও ইউকে তে। এটা শোনার পর থেকেই ওনাকে আর ঘাটাই না। যেই মাসেল আর লোহার মতো হাত, তারওপর বক্সিং চ্যাম্পিয়ন। একটা পাঞ্চ যদি মারে, এমনিতেই আমার নাক হালকা বোঁচা এরপর আর খুজেই পাওয়া যাবেনা। এবার উনি ওহির কাছে গেলো। ওহি সুলতানাপ্পির মেয়ে, এবার ক্লাস ফোর এ। খুব মিষ্টি আর দুষ্টুও। আদ্রিয়ান ওহির আছে ওকে কোলে তুলে নিয়ে বলল,
— ” তো আপুমনি কেমন আছো?”
ওহি মুখ ফুলিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে নিয়ে বলল,
— ” তোমার সাথে আড়ি আছে আমার।”
আদ্রিয়ান একটু অবাক হয়ে বলল,
— ” কেনো তা কেনো?”
— ” তুমি ছোট আপিকে নিয়ে চলে এসছো।”
আদ্রিয়ান হেসে দিয়ে বলল,
— ” ওহ এই ব্যাপার? কিন্তু আমিতো তোমার ছোট আপিকে নিয়ে আসিনি। তোমার ছোট আপি নিজেই চলে এসছে আমার কাছে।”
আমি বেশ অবাক হয়ে তাকালাম। কী লোকরে বাবা। মানছি আমি জেদ করে তখন একটু ড্রামা করেছিলাম কিন্তু তাই বলে এভাবে বলবে? ওহি একবার আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
— ” তবুও আড়ি। দুজনের সাথেই আড়ি।”
আদ্রিয়ান চিন্তিত হওয়ার ভান করে বলল,
— ” হুমম। কী করা যায় কী করা যায়? রাইট। দেখোতো এটা পেলে আমার আপুমনির রাগ ভাঙ্গে কী না?”
বলে পকেট থেকে একটা চকলেটের প্যকেট বের করে দিলো ওহির হাতে। ওহি খুব খুশি হয়ে আদ্রিয়ানের গালে একটা কিস করে বলল,
— ” থ্যাংকিউ।”
আদ্রিয়ানও হেসে ওহির গালে কিস করলো। তারপর অন্ত মানে সুলতানাপ্পির ছেলে। দুবছর হয়েছে। ওকে আদর করল। আমি শুধু মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছিলাম। একটা মানুষ এতোটা পার্ফেক্ট কীকরে হয়। উনি যেনো সবার জন্যেই তৈরী। সবরকম পরিস্হিতিতে নিজেকে আলাদাভাবে ফুটিয়ে তুলে সেটা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা ওনাকে দিয়েছেন। এরপর আমিও ওহি আর অন্তকে নিয়ে অনেকক্ষণ মজা করে সময় কাটালাম।
_________________
সকালের ব্রেকফাস্ট সেড়ে আমরা সব ভাইবোনরা একজায়গায় বসে গল্প করছি। আমি, আপি, কাব্য, সজীব ভাইয়া, অর্ণব ভাইয়া, ইফাজ ভাইয়া। শুধু নেই আদ্রিয়ান আর আদিব ভাইয়া। অর্ণব ভাইয়া বলল,
— ” কীরে পিচ্চি বিয়ে তো করেই নিলি। খুব তো বলেছিলি বিয়ে করবিনা এখনতো আঠারো পেড়োতেই করে ফেললি।”
কাব্যও পিঞ্চ করে বলল,
— ” আরে বোঝনা কেনো ভাইয়া? এরকম সবাই বলে। শেষে দেখা যায় তাড়াই সবার আগে বিদায় নিয়েছে।”
আমি ওদের দুজনের দিকে তাকিয়েই একটা ভেংচি কাটলাম।
সজীব ভাইয়া বলল,
— ” তো বুড়ি। আদ্রিয়ানের সাথে ঠিকঠাক হয়ে গেছেতো?”
আমি কিছু বলব তার আগেই অর্ণব ভাইয়া বলল,
— ” আরে বুঝছোনা? জিজুকে দেখোনি? যেই লেভেলের রোমান্টিক উনি। দেখো সারাদিন হয়তো রোমান্স করেই কাটে এদের।”
আমি ভীষণ বিরক্ত হলাম। কে বলবে এরাই আমার বড় ভাই? সো রিডিকিউলাস। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
— ” রাখো তোমাদের রোমান্স। দেখে দেখে একটা নিরামিষের সাথে বিয়ে দিয়েছো আমার। হাজবেন্ট তো না আস্তো একটা টিচার। সারাদিন পড়া পড়া আর পড়া আর কিছুই নেই। আমার ওপর রীতিমতো অত্যাচার করে। শুধু পারে কথায় কথায় ধমকাতে আস্তো একটা বজ্জাতের হাড্ডি।”
আপি একটু মেকি হেসে বলল,
— ” অনি চুপ কর।”
আমি একটু রেগে বললাম,
— ” কেনো? চুপ কেনো করবো? তোমরা যা খুশি করবে আমি বললেই দোষ। আমার জীবণটাই তেজপাতা বানিয়ে দিয়েছো। আমার কী মনে হয় জানো? ঐ ওনার মধ্যে শিউর কোনো ডিফেক্ট আছে নইলে এমন নিরামিষ মানুষ হয়?”
খেয়াল করলাম ওরা ভীত চোখে আমার পেছনে তাকিয়ে আছে। আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
— ” আরে আমি তোমাদের সাথে কথা বলছি তোমরা পেছনে কোন উগান্ডার দিকে তা..”
বলতে বলতে পেছনে তাকিয়েই থেমে গেলাম। গলাটা মুহূর্তেই শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। একটু শুকনো ঢোক গিলে হাসার চেষ্টা করলাম কিন্তু আফসোস পুরোপুরি ব্যর্থ হলাম।
#চলবে…
( রি-চেইক হয়নি। টাইপিং মিস্টেকগুলো একটু বুঝে নেবেন।)