#ভালোবাসি তোকে ❤
#লেখিকা: অনিমা কোতয়াল
#পর্ব- ৪১
.
আমি বেডে হেলান দিয়ে হাতে বই নিয়ে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছি আদ্রিয়ানের দিকে আর আদ্রিয়ান আমার পায়ের নখ কেটে দিচ্ছে। আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। ও ওর কোলের ওপর আমার পা রেখে একহাতে পা ধরে রেখে আরেক হাত দিয়ে খুব যত্ন সহকারে নেইল কাটার দিয়ে নখ কেটে দিচ্ছে। আমার ব্যপারটাতে যেমন লজ্জা লাগছে ঠিক তেমনই অস্বস্তিও হচ্ছে। কারণ ও তো আমার স্বামী হয়। আর ও আমার পায়ে হাত দিচ্ছে ব্যপারটা মোটেও ভালো লাগছেনা আমার। কিন্তু ও তো ওই, যেটা একবার ঠিক করে সেটাই করে ছাড়ে। তাই আমি নিতান্তই একটা অবলা বাচ্চা। যার এখন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কোন কাজই নেই।
আসল ব্যপারটা হলো ডিনার করে এসে আমি পড়ছিলাম। বেশ ঘন্টাখানেক পর আদ্রিয়ান এসে আমার ওপর এক গ্লাস দুধ খাওয়ানো নামক অত্যাচার টা চালানোর পর ও বলল,
— ” বেশ ঠান্ডা পরেছে এখন। টেবিলে বসতে হবেনা। বেডে এসে কম্বলের নিচে এসে পড়।”
আমি বইয়ের দিকে তাকিয়েই বললাম,
— ” সমস্যা নেই। খুব বেশি পড়া বাকি নেই আমি টেবিলেই পড়তে পারব।”
বলে আবার পড়ায় মনোযোগ দিলাম। হঠাৎ করেই ও আমায় কোলে তুলে নিতেই আমি বেশ অবাক হয়ে তাকালাম ওর দিকে। ও আমায় বেডে বসিয়ে দিয়ে বইটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,
— ” সবসময় আমি যেটা বলি ঠিক তার উল্টোটা বলে আমায় না রাগালে তোমার রাতের ঘুম হয়না তাইনা?”
আমি ওর দিকে তাকিয়ে মেকি হাসি দিয়ে বললাম,
— ” আসে নাই তো। তুমি জানো তোমার ওই রাগে লাল হয়ে যাওয়া মুখটা না দেখা অবধি সবকিছু একদম ফাঁকা ফাঁকা লাগে।”
ও আমার নাকটা টিপে দিয়ে বলল,
— ” হ্যাঁ অনেক দুষ্টুমি হয়েছে এবার ভালো ভদ্র মেয়ের মতো চুপচাপ পড়াটা কম্প্লিট করো। ঘুমাতে হবে তো।”
বলে আমার গায়ে কম্বল দিতে গিয়ে ওর চোখ পরল আমার পায়ে। ভ্রু কুচকে ফেলে বলল,
— ” নখ কাটোনা কতদিন হলো?”
ওর কথা শুনে আমিও তাকালাম পায়ের দিকে। সত্যিই নখগুলো বেশ বড় হয়ে গেছে। ইদানিং পড়াশোনার চাপ এতোটাই বেড়ে গেছে যে নিজের দিকে খেয়াল রাখার সময়টা খুব কমই পাচ্ছি। আমি ওর দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে বললাম,
— ” এই ফ্রাই’ডে তেই কেটে ফেলবো। প্রমিস।”
— ” আজকে মান’ডে আর তুমি ফ্রাই’ডেতে নখ কাটবে তাইনা?”
বলে আদ্রিয়ান উঠে গিয়ে ড্রয়ার থেকে নেইল কাটার বের করে এসে আমার পায়ে হাত দিতে গেলেই আমি সাথে সাথেই পা সরিয়ে ফেলে উত্তেজিত কন্ঠে বললাম,
— ” আরে কী করছো টা কী? প্ পায়ে হাত দিচ্ছো কেন? আমি নিজেই কেটে নিতে পারব।”
আদ্রিয়ান বিরক্তিকর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,
— ” চুপচাপ পড়তে থাকো। আমায় আমার কাজ করতে দাও।”
বলে ও আমার পা ধরে নিজের কোলের ওপর নিয়ে নিল। আমি আর কী বলবো। জানি কিছু বলে লাভ নেই তাই চুপচাপ শুধু দেখে যাচ্ছি ওর কান্ড। হঠাৎ ওর কথায় হুস এলো আমার। ও গম্ভীর কন্ঠে বলল,
— ” আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে না থেকে পড়াটা শেষ করো।”
আমিও মুখ ফুলিয়ে রেখে পড়ায় মনোযোগ দিলাম। পড়াটা কম্প্লিট হতে হতে আমার পড়াটাও শেষ হয়ে গেল। আমি একটা হাই তুলে ওকে কিছু বলব তার আগেই ও আমার হাত ধরে সামনে নিয়ে নখ কাটতে নিলেই আমি বললাম,
— ” আদ্রিয়ান প্লিজ! প্লিজ! বা হাতেরটা কেটো না। অনেক কষ্টে বড় করে ডিজাইন করে কেটে রেখেছি।”
আদ্রিয়ান পাত্তা না দিয়ে আমার হাত চেপে ধরে রেখে বলল,
— ” এসব ফাল্তু স্টাইল কে শিখিয়েছে তোমাকে? এরপর জেনো হাত বা পায়ের নখ একটুও বড় না দেখি।”
বলে আমার এত সাধের নখগুলো সব কেটে দিলো। রাগে দুঃখে কিছু বলতেও পারছিনা আর সহ্যও করতে পারছিনা। শুধু কাঁদোকাঁদো মুখ করে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। নখ কাটা শেষ হতেই আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম,
— ” হয়ে গেছে তোমার? এবার ঘুমোই?”
আদ্রিয়ান মুচকি হেসে আমাকে বুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে বলল,
— ” রাগ হয়েছে আমার ওপর?”
আমি এবার একটু রেগে গেলাম। আমি ওর বুকে একটা কিল মেরে বললাম,
— ” সবসময় জ্বালাও তুমি আমায়। যতখুশি এখন জ্বালিয়ে নাও। যখন আমি থাকবোনা তখন দেখবো কার ওপর এসব টর্চারগুলো করো তুমি। যেদিন চিরকালের মতো হারিয়ে যাবো সেদিন বুঝবে।”
এটুকু বলার সাথে সাথেই ও আমার হাত ধরে একটানে বেডে ফেলে দিয়ে দুই হাত শক্ত করে চেপে ধরল বেডের সাথে। ওর দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেলাম আমি, চোখ লালচে হয়ে আছে, ঠোঁট কাঁপছে। দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে মারাত্মক রকমের রেগে আছে আমার ওপর। ও দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
— ” আজ বলেছ বলেছ। ভবিষ্যতে এরকম কথা উচ্চারণ করলে আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবেনা। সারাজীবনের জন্যে কথা বলাটাই বন্ধ করে দেব তোমার যদি এরকম কথা মুখ দিয়ে বেড় হয়। মাইন্ড ইট।”
আমি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। আমার এই সামান্য কথায় ও এতোটা ডেস্পারেট হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। আমি কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললাম,
— ” আদ্রিয়ান আমিতো জাস্ট…”
আর কিছু বলার আগেই ও আমার কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে কয়েকটা শ্বাস নিয়ে তারপর বলল,
— ” এতো ভয়ংকর কথা বলোনা জানপাখি। আমার সহ্য হয়না। তুমি ধারণাও করতে পারবেনা কতটা ভালোবাসি তোমাকে। কতোটা ডেস্পারেটলি চাই আমি তোমায়। তোমাকে ছাড়া মুহূর্তগুলো কল্পনা করাটাও আমাকে মৃত্যুসম যন্ত্রণা দেয়। তোমাকে হারানোর ভয় আমাকে প্রতি মুহূর্তে তাড়া করে বেড়ায়। তোমাকে ছাড়ার বাঁচা তো দূরে থাক সে কথা কল্পণাও করতেও আমার আত্মা কেঁপে ওঠে। আমাকে ছেড়ে কোথাও যেওনা জানপাখি। আমি পারবোনা সেটা মানতে। শেষ হয়ে যাবো আমি। একদম শেষ হয়ে যাবো।”
এটুকু বলে ও আমার কপালে গভীরভাবে একটা চুমু দিয়ে নিজের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরল। ওর সারা শরীর হালক কাঁপছে। আমিও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম ওকে। ও একটু পরপর ওর উষ্ণ স্পর্শে ভরিয়ে দিচ্ছে আমাকে আর আমি চোখ বন্ধ করে ওর সেই ভালোবাসা সাদরে গ্রহন করছি। হঠাৎ আমার কী হলো জানিনা আমি ওর উন্মুক্ত কাধে আলতো করে খুব চুমু দিলাম। ও সাথেসাথেই থেমে গেল। তারপর আমাকে আরো জোরে জরিয়ে ধরে ওভাবেই আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পরলো। কান্না পাচ্ছে এই মুহূর্তে আমার। জানিনা কেন? কিন্তু চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। এতো ভালোবাসে কেন ও আমাকে। যদি সত্যিই কোনোদিন আমার কিছু হয়ে যায়। বাঁচতে পারবেনা ও। একেবারেই পারবেনা। কিন্তু ওর কিছু হয়ে গেলেও তো আমি ঠিক থাকতে পারবোনা। অথচ কোনো একজনকে আগে যেতেই হবে তাইনা? প্রকৃতি এতো নিষ্ঠুর কেন? এই নিয়ম এতো নিষ্ঠুর কেন? কেন না চাইতেও নিজের আপন লোকেদের চির বিদায় দিতে হয় আমাদের? কেন?
___________________
আরও দুটো দিন কেটে গেল। আমি একয়েকদিন ইচ্ছে করেই আদ্রিয়ানকে আমার অনুভূতি নিয়ে কিছুই বলিনি। বলিনি যে ভালোবাসি আমি ওকে। যদিও নিজের ডায়রির পাতায় অনেক আগেই ওকে ভালোবাসার কথা লিখেছি। কিন্তু সরাসরি তো আর ওকে বলিনি। কারণ আমি চাই যে আমাদের সিক্স মান্হ এনিভার্সেরিতেই ওকে নিজের মনের কথাটা বলব। আর সেটি শুনে ও কতটা খুশি হবে তা ভাবলেই আমার মনও খুশিতে ভরে ওঠে। আজ আমাদের সিক্স মান্হ এনিভার্সিরি। জানিনা আদ্রিয়ানের মনে আছে কি না কারণ ও আমায় এখনও উইশ করেনি। তবে আজ রাতে আমি আদ্রিয়ানকে আমার মনের কথা বলবো। জাবিন, আপিদের বলে প্লান করিয়ে রেখেছি ওরাই আজ আমাদের রুমটা সুন্দরভাবে ডেকোরেট করে রাখবে। কারণ আজ আমার ক্লাস সন্ধ্যার পর আছে। আর আদ্রিয়ানের ল্যাবে যাবো। অনেকদিনের শখ ছিল আদ্রিয়ানের ল্যাবটা ঘুরে দেখার। কিন্তু সেই সুযোগটা আর হয়নি। কারণ আদ্রিয়ান আমায় নিতেই চাইতোনা ওর ল্যাবে। এমন কী মহামূল্যবান জিনিস আছে ওখানে কে জানে? অনেক ড্রামা করে ইমোশনাল ব্লাকমেইল করে রাজি করিয়েছি। প্রথমে ওখানে যাবো তারপর ওখান থেকে সোজা মেডিকেল। সুতরাং দুজনেই আজ বাড়িতে থাকবোনা। খাওয়ার টেবিলে হঠাৎ বাবা বললেন,
— ” ইফাজ, আদ্রিয়ান?”
ওরা দুজনেই একসাথে তাকালো বাবার দিকে। বাবা বললেন,
— ” তোমাদের বিয়ের পর তো তোমরা এখনও কোথাও ঘুরতে যাওনি। তাই আমি চাই তোমরা ঐসম বাইরে কোথাও থেকে ঘুরে আসো। তোমাদের কী মত?”
ইফাজ ভাইয়া বললেন ওনার কোনো সমস্যা নেই। আর আদ্রিয়ান বলল ওরও সমস্যা নেই। আমরা দুজনেই খাওয়া শেষ করে বেড়িয়ে পরলাম। বেড়োনোর আগে ইশারায় জাবিন আর আপিকে থামস আপ দেখিয়ে এসছি। আমি জানি ওরা ঠিক সুন্দরভাবে এরেঞ্জমেন্ট করে ফেলবে। গাড়িতে আদ্রিয়ান আমাকে বলল,
— ” অনি তুমি জেদ করছিলে তাই নিয়ে আসলাম। কিন্তু শর্ত মনে আছে? আমার পার্মিশন ছাড়া কোনো কিছুতে হাত দেবেনা।আর ভুল করেও এদিক ওদিক যাবেনা।”
— ” হ্যাঁ হ্যাঁ মনে আছে। ল্যাবে তো না জেনো এমাজনে যাচ্ছি।”
সারাটাদিন আদ্রিয়ান আর আদিব ভাইয়ার সাথে ল্যাবে ভালো সময়ই কাটিয়েছি। ল্যাব থেকে আদ্রিয়ান আমাকে সোজা মেডিকেলে ড্রপ করে দিলো। ওর রাত অবধি কাজ আছে তাই গার্ডরাই আমাকে নিয়ে যাবে। তবে ওকে আজ ছাড়তে মন চাইছিল না। মনে হচ্ছিল এখন ছেড়ে দিলে হয়তো আর কোনোদিন ধরতে পারবনা। কিন্তু সবসময় কী আর মনের কথা শোনা যায়? আমি ক্লাসে যেতেই অরু, ইশু, ঐশি ওরা সবাই মিলে একেএকে আমায় জরিয়ে ধরে কনগ্রাচুলেট করলো সিক্স মান্থ এনিভার্সিরির। অরু বলল,
— ” কিরে ভাইয়া কী গিফট দিল?”
আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,
— ” এখনও উইশও করেনি খবিশটা। কী জানি মনে আছে কী না?”
ইশু বলল,
— ” আরে আছে আছে। এটা ভোলার মানুষ জিজু না। দেখ কোন সারপ্রাইজ এরেঞ্জ করছে হয়তো। ”
ঐশি বলল,
— ” তুই কী দিবি জিজুকে?”
আমি মুচকি হেসে বললাম,
— ” ও অনেক দিন যাবত বলছিল কালো ঘড়ির কথা। তাই সেটাই কিনেছি। আর তার সাথে একটা লাভ লেটারের কার্ড যেখানে আমি আমার মনের সব কথা লিখেছি, আর ওর ফ্যাবরেট লাল গোলাপ ফুল। সব রুমে বেডের ওপর সাজিয়ে রেখে এসছি। ”
অরু খোঁচা মেরে বলল,
— ” আরে বাহ। আজ রাত তো ফুল রোমান্টিক হবে হ্যাঁ?”
আমি লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললাম। এরপর স্যার এলো। ক্লাস শেষ করার পর আমরা থার্ড ফ্লোরে গিয়ে একটু রেস্ট করছি। স্যারের কাছে কাজ আছে তারপর চলে যাবো।একটু অস্হির লাগছে তাই এপ্রোন খুলে ওদের ওখানে বসতে বলে আমি ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর ব্যালকনিতে গেলাম। ব্যালকনি বললে ভুল হবে ছোটখাট ছাদই বলা যায়। ওখানে গিয়ে একটু হেটে নিজেকে রিফ্রেশ করছি। একটা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছে। আজ আদ্রিয়ান জানবে আমার মনে কথা। কী বলবে ও সব শুনে? কী করবে? শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরবে? আজ আমাকে সম্পূর্ণরুপে নিজের করে নেবে? কতটা খুশি হবে ও? এসব ভাবতে ভাবতেই ফোন বেজে উঠলো। তাকিয়ে দেখি আদ্রিয়ান কল করেছে।মুচকি হেসে রিসিভ করে রেলিং এর কাছে গিয়ে দাড়ালাম। আদ্রিয়ান বলল,
— ” ক্লাস শেষ?”
— ” হ্যাঁ এক্ষুনি চলে আসবো?”
— ” তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যেও জানপাখি। আমিও তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবো। ”
আমি কিছু বলার আগেই কেউ আমার পিঠে হাত রাখল। আমি পেছনে তাকিয়ে দেখি সেই কালো পোশাক পরে হুডি আর মাস্ক পরা দাঁড়িয়ে আছে। সে বলল,
— ” সারপ্রাইজ। হ্যাপি সিক্স মান্থ ম্যারেজ এনিভার্সিরি।”
ওপাশ থেকে আদ্রিয়ান ক্রমশ “হ্যালো” বলে যাচ্ছে। আমি কাঁপা গলায় বললাম,
— ” ক্ কে আপনি..?”
আমার কথার উত্তর না দিয়ে সে বলল,
— ” তোমার গিফট নেবে না?”
বলে আমার গলা ধরে রেলিং এ চেপে ধরলো। আমি ভয় পেয়ে গিয়ে বললাম,
— ” ন্ না না প্লিজ। ডোন্ট ডু দিস প্লিজ। আদ্রিয়ান..”
আদ্রিয়ান ওপাশ থেকে কিছু বলছে কিন্তু আমি শুনতে পাচ্ছি না। ভয়ে আমার শরীর অসার হয়ে আসছে। আরেকবার আদ্রিয়ান নাম নেওয়ার সাথেসাথেই লোকটা জোরে ধাক্কা মারলো আমায়। আর আমি ছিটকে নিচে পরে গেলাম মুখ দিয়ে আদ্রিয়ান শব্দটাই গগন কাঁপিয়ে বেড়িয়েছিল। কয়েক সেকেন্ড পর প্রচন্ড জোরে আঘাতে আমার নিশ্বাস আটকে গেল। সবটাই অন্ধকার লাগছে। প্রচন্ড যন্ত্রণায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি। হয়তো এখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবো আমি। আদ্রিয়ানের বলা সেই কথাটাই বাজছে, “আমাকে ছেড়ে কোথাও যেওনা জানপাখি। আমি পারবোনা সেটা মানতে। শেষ হয়ে যাবো আমি। একদম শেষ হয়ে যাবো।” আমি যেতে চাইনা আদ্রিয়ান। যেতে চাইনা আমি। প্লিজ আমাকে ধরে রাখো শক্ত করে ধরে ধরে রাখো। আমি হারিয়ে যাচ্ছি। আমি মরতে চাইনা। তোমাকে একা ছেড়ে যেতে চাইনা আমি। আমাকে বাঁচিয়ে নাও আদ্রিয়ান প্লিজ বাঁচিয়ে নাও।
#চলবে…