#প্রেমমানিশা(২৪)
আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন বলে সকলে বাড়িতেই আছে। ছুটির দিন হওয়ায় যে যার যার মতো পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে। এমন কি চিরকাল রুটিন মেনে চলা সানাহ্ও। তার সবসময়ের রুটিন হলো ছুটির দিনে সে সকাল নয়টার আগে উঠবে না। সেটা মেনেই সে এখন গভীর ঘুমে তলিয়ে আছে। কিন্তু সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাকিদের জন্য হলেও সেটা মিসেস কায়নাতের জন্য না। সাপ্তাহিক ছুটিতেও উনি বরাবরের মতো ভোরেই উঠেন। ভোরে উঠে সকলের জন্য নাস্তা তৈরি করেন।
আজ ফারহান আর মিসেস আশার ব্রেকফাস্টে আসার কথা বলেই মিসেস কায়নাতের চিন্তার অন্ত নেই। যতই বান্ধবী হোক তবুও তো হবু বেয়াইন। একটু মান মর্যাদা তো দিতেই হবে। এসব ভেবেই মিসেস কায়নাত আজ আয়োজন করেছেন হরেক রকমের খাবার। নাস্তায় সকলের জন্য কাচা আটার পরোটার পাশাপাশি চিকেন তন্দুরি করেছেন। সেই সঙ্গে মিষ্টি হিসেবে পায়েস তো আছেই।
সকালে সবাই এত অইলী খাবার খেলেও সানাহ্ সেটা খাওয়ার পাত্রী না। সে বরাবরই কম তেলে রান্না করা খাবার খায়। তাই সানার জন্য স্পেশালি চিকেন টাকোস করেছেন। টাকো সানাহ্ বেশ আগ্রহ নিয়েই খায়। বরাবরই পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি সানার আগ্রহ বেশি। নিজ গন্ডির মধ্যে থেকে যতটা নিজেকে পশ্চিমা সংস্কৃতির সঙ্গে জড়ানো যায় ততটাই জড়ায় সে।
সানার ফিরে আসার পর আজই প্রথম একসঙ্গে ওরা সকলে খাবে। একসঙ্গে খাবার আয়োজন করার মূল কারণ হলো আজ সানাহ্ আর ফারহানের বিয়ে নিয়ে যাবতীয় প্ল্যানিং প্লটিং করা হবে। কাকে ইনভাইট করবে, কোথায় অনুষ্ঠান করবে, অনুষ্ঠানে মেনু কি কি থাকবে এগুলোই। তাছাড়া অনুষ্ঠানের জন্য সানাহ্ আর ফারহানের ড্রেসও বাছাই করতে হবে। অনেক কাজ পড়ে আছে। বিয়ে বাড়িতে কি কাজ কম থাকে ? তার উপর ওরা মেয়ে পক্ষ। খাটনি তো নেহাৎ কম নয়।
ফারহানদের বাড়িতেও তোরঝোর চলছে। মিসেস আশা রান্নাঘরে ব্যস্ত তার হবু ছেলের বউয়ের পছন্দের খাবার তৈরি করতে। আজ সানার জন্য উনি টরটিলা উইথ চিকেন স্টাফিং নিয়ে যাবেন। মেয়েটা চিকেন দিয়ে তৈরি সবই খেতে পছন্দ করে। তার মধ্যে টাকোস আর টরটিলা অন্যতম। এগুলো দেখলে সানাহ্কে খাওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।
এইদিকে মিসেস আশা ব্যস্ত থাকলেও ফারহান বসেছে তার কলেজের কিসব কাগজপত্র নিয়ে। কাল থেকে এগুলোই করে যাচ্ছে। স্টুডেন্টদের এসাইনমেন্টের ওয়ার্ক পেপার দেখা চলছে। কাগজে সে চোখ বুলাচ্ছে ক্ষিপ্র গতিতে। মন তার বড্ড আনচান করছে। এতদিন কতকিছু ভেবে রেখেছিল যে সানাহ্ ফিরে এলে তাকে নিয়ে উইকেন্ডগুলোতে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াবে। কিন্তু ঘুরা তো দূর কাল সকালের পর তাদের মধ্যে কোনো কথাই হয়নি।
সেই যে সানাহ্কে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে তারপর না আছে কোনো ম্যাসেজ, না আছে কোনো ফোন কল। এমন কি কলেজেও দেখা হয়নি দুজনের। অবশ্য ফারহান চেয়েছিল সানার সঙ্গে দেখা করতে কিন্তু খুজেই পায়নি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলো সানাহ্ ক্লাস শেষ হতেই বেরিয়ে গেছে। ফারহানের আর বুঝতে বাকি রইলো না সানাহ্ তাকে ইচ্ছা করে ইগনোর করছে। রাগে দুঃখে ফারহানও আর আগ বাড়িয়ে কোনোকিছু করলো না। কেন সে কেন করবে ? সানার কি দায়িত্ত্ব ছিলনা ফারহানকে ফোন করে তার খোজ নেওয়ার ? সব দায়িত্ত্ব শুধু ফারহানই কেন করবে ?
মিসেস আশা মিনিট দশেক পর ফারহানকে বললেন ফারহান যেন রেডি হয়ে নেয়, উনি এখনই ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে বের হবেন। ফারহান মিসেস আশার কথা শুনে মাথা নেড়ে সায় দিল কিন্তু জায়গা ছেড়ে উঠলো না। তার জানা আছে এখন তার মা এক ঘন্টা ধরে গোসল করবে তারপর রেডি হবে। ততক্ষণে ফারহানের কাজ শেষ হয়ে যাবে। আর দুটো পেপার আছে।
সানাহ্ সবেমাত্র ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমেছে। বাড়িতে থাকায় একটা কালো হাটুর নিচ অব্দি টিশার্ট আর একটা ট্রাউজার পড়েছে। গায়ে জড়ানো আছে সাদা কালো মিনি স্কার্ফ। নিচে নেমে দেখলো নিচে কেউ নেই। রান্নাঘরে গিয়েও দেখলো কেউ নেই। একটু খুজাখুজি করে দেখলো তার জন্য টাকোস বানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বাকি সব তথাকথিত শাহী খানাও চোখে পড়ল। খাবারগুলো দেখে মুখ ভেংচি দিলো সানাহ্। ছিঃ সকাল সকাল এত অইলি খাবার কে খায়।
সানাহ্ তার প্লেটটা মাইক্রোওয়েভে দিয়ে খাবার একটু
করে নিলো। খাবার গরম হতেই মাইক্রোওয়েভ থেকে বের করে যখন খাবার ঘরের দিকে পা বাড়াবে তখনই মাথায় একটা প্রশ্ন এলো। এত সকাল সকাল কোন গেস্ট আসবে যে এত খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। বস্তুত সানাহ্ ফারহানদের আসার কথা জানে না। মিসেস কায়নাত ওকে বলেননি হুট করে চমকে দিবেন বলে।
যাক বাড়িতে গেস্ট আসলে তাতে সানার কি ? সানাহ্ থরী গেস্টদের অ্যাপায়ন করবে। তাই কে আসবে সেটা নিয়ে মাথা ঘামিয়ে লাভ নেই। এখন তাড়াতাড়ি খেয়ে কাজে লেগে যেতে হবে। আজকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন তাই নিজের ঘরটা পরিষ্কার করা দরকার। ঘর ঝাড়া, জানালা মোছা, ফার্নিচার ব্রাশ করা, ফ্যান মোছা আর ঘরটা ভালো করে লাইজল দিয়ে মোছা। আহ্ আজ অনেক কাজ। তাড়াতাড়ি কাজে লেগে না পড়লে এগুলো করতে করতেই বেলা পেরিয়ে যাবে।
ফারহানের মন আনচান। মন তার ছুটছে সানাহ্দের বাড়ির দিকে। কিন্তু মন ছুটলে কি হবে ? তার মা তো আর হাত চালাচ্ছে না। সে ধীর গতিতে কিসব খবর ঢোকাঢুকি করছে। আজব তো খাবার নেওয়ার কি আছে ? ওরা তো ওখানে খেতেই যাচ্ছে নাকি ?
অবশেষে মিসেস আশা যখন তার সব কাজ শেষ করে বাড়ির সদর দরজায় লক দিয়ে বের হলেন তখন ফারহানের কলিজায় পানি এলো। অপেক্ষা করতে করতে সে ক্লান্ত। মায়েরা সব কাজে এত সময় নেয় কেন ? সব জায়গায়ই কি খাবার গাট্টি বোঁচকা বেধে নিয়ে যেতে হবে ? একদিন না নিলে কি হয় ? ফারহান ভেবে পেলো না ।
মিসেস আশা যখন উনার জিনিসগুলো গাড়ির ব্যাক সিটে রেখে সামনে বসলেন তখন ফারহান বললো ‘ এতক্ষণ কি করছিলে মা ? তোমার হবু ছেলের বউয়ের পছন্দের খাবার বানাতে এত সময় লাগে ? কি এত বানাচ্ছিলে ? বিরিয়ানি করলে নাকি ? ‘
‘ নাহ্, সানার অইলী খাবার পছন্দ না। তাই ওর জন্য টরটিলা উইথ চিকেন স্টাফিং করেছি। যাই হোক এখন তাড়াতাড়ি হাত চালা…. পৌঁছতে হবে তো ‘
ফারহান আর কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো। গাড়ি আস্তে আস্তে বাড়ির চত্বর পেরিয়ে রাস্তায় উঠে এলো। সানার বাড়ি এখান থেকে গাড়িতে প্রায় দশ মিনিটের পথ। পথ নিতান্তই অল্প কিন্তু এই দশ মিনিটও যেন ফারহানের কাছে দশ বছর মনে হচ্ছে। এতটা আগ্রহ নিয়ে কখনও কোনো মেয়েকে দেখার জন্য অপেক্ষা করেনি। সানাহ্ ছাড়া আজ পর্যন্ত কারোর জন্য ফারহান এতটা যন্ত্রণাময় অনুভূতি হয়নি। করেনি কারোর প্রতি টান অনুভব। এমনকি রিয়াশা যখন কলেজ জীবনে প্রপোজ করেছিল তখনও না।
বসার ঘরে সকলে জড়ো হয়েছে। ফারহানরা এসেছে সবে দশ মিনিট পেরিয়েছে। মিসেস আশা আর মিসেস কায়নাত নিজেদের মধ্যে কথা বলতে ব্যস্ত। মিস্টার কবিরও ফারহানের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু ফারহানের মন সেদিকে নেই। ফারহানের চোখ খুঁজে বেড়াচ্ছে বিদেশিনীকে। এসে থেকে একবারও নিচে নামেনি অথচ আন্টি বললেন সে নাকি বাড়িতেই আছে। তাহলে কি ফারহান এতটাই বিরক্তির কারণ হয়ে উঠেছে যে তাকে দেখতে একবার নিচেও নামা যায় না ?
কথার মাঝেই মিস্টার কবির খেয়াল করলেন তার হবু জামাইয়ের চোখ শুধু এইদিক ঐদিকেই ঘুরঘুর করছে যেন কাউকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। মিস্টার কবিরের হাসি পেলো, বেচারা এসে থেকে যাকে খুঁজছে সে তো জানেই না যে ফারহান এসেছে। মিস্টার কবিরের ফারহানের অবস্থা দেখে হাসি পেলেও অন্তর্দেশে একটা সূক্ষ্ম ভালো লাগা তৈরি হলো। যাক তার মেয়েটাও এত বছর পর আবার সুখের হাতছানি পেতে চলেছে।
‘ তুমি কিন্তু গিয়ে সানাহ্কে দেখে আসতে পারো। সিড়ি দিয়ে উঠে লাস্টের কামরা,টু দ্যা সাউথ সাইড ‘
ফারহান সানাহ্কে খুঁজতে ব্যস্ত থাকলেও ওর কানে মিস্টার কবিরের কথা ঠিকই ঢুকলো। কথাটা শুনে একটু লজ্জা পেলো সেই সঙ্গে অসস্তিতেও পড়ল। অসস্তি কাটানোর নিরন্তর চেষ্টা করে বললো ‘ না না…. না মানে আঙ্কেল ‘
‘ সমস্যা নেই…. তুমি যাও, আমি এখানে সামলে নিবো। আই থিঙ্ক সানাহ্ যদি জানত তুমি এসেছো তাহলে হয়তো এক আধবার নিচে ঢু মারলেও মারত। তুমি যাও আমি দেখছি ‘
মিস্টার কবিরের কথা শুনে সস্তি পেলো ফারহান। যাক বউ না বুঝলেও বউয়ের বাপ ঠিকই তার বেয়াড়া মনকে বুঝতে পেরেছে। মিস্টার কবিরের দিকে তাকিয়ে নিরুচ্চারে বললো ‘ হ্যাটস অফ টু ইউ শশুরজি ‘
প্রকাশ্যে কিছুই বললো না। শুধু একবার মিস্টার কবিরের দিকে তাকিয়ে ইশারায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। মিসেস কায়নাত আর মিসেস আশাকে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো। উনারা গল্প করতে ব্যস্ত। আর অতসী এখানে নেই। সে এখনও ঘুমোচ্ছে। এই একটা দিনই যা ছুটি পায় তাতে ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়।
ঘর ঝেড়ে, জানালা মুছে এখন শুধু সানার ফ্যানটা মুছে ফার্নিচারগুলো মুছলেই হবে। এরপর লাইজল দিয়ে ঘরটা মুছে সে ফ্রী। এই কাজগুলো সানাহ্ প্রতি সপ্তাহেই করে। এছাড়াও প্রতিদিন ফার্নিচার মোছা তো আছেই। বাড়ি লোকালয় থেকে একটু দূরে হওয়ায় রোজ ফার্নিচার না মুছলেও চলে কিন্তু সানার খুঁতখুঁতে মন মানতে নারাজ। সে প্রতিদিনই ঘর টিপ অ্যান্ড টপ রাখবে। এটাই তার ন্যাচার।
হঠাৎ দরজায় নক করার শব্দে সানার কাজে ব্যাঘাত ঘটলো। কাজে ব্যাঘাত ঘটায় সানাহ্ বিরক্ত হলো না। এটা জানা কথা উইকেন্ড আসলেই সবার মাথার পোকা নড়ে উঠে। ঐদিনই সবার সানার ঘরে আসার কথা মনে পড়ে। এমনিতে সানাহ্ বাড়ি না থাকলে বুয়া এসে ঘর পরিষ্কার করা ছাড়া কেউই সচরাচর ঘরে ঢুকে না। কিন্তু উইকেন্ড এলেই সকলে যত ইচ্ছা ঘরে উকি ঝুঁকি মারে।
স্পেশালি সানার মা। সানাহ্ বাড়ি থাকলে ঘরে উকি দেওয়া উনার স্বভাব। আর এতে সানার কিছু করার নেই। একদিন বলে একটু মুখ বুজে সহ্য করে নেয় কিন্তু যেদিন মেজাজ গরম থাকে সেদিন বাড়ির উপর দিয়ে টর্নেডো বয়ে যায়। পুরো ঘর সানার চোখের আগুনেই যেন ভস্ম হয়ে যায়। সেইদিন নম্র, ভদ্র, সভ্য সানাহ্ও বাঘিনীর মত গর্জে উঠে। তবে আজ সানার মন এভারেজ। ভালোও না খারাপও না।
‘ কাম ইন প্লিজ…. ‘
সানার পারমিশন পেয়ে ঘরের দরজা খুলতেই সানাহ্কে দেখে চমকে গেলো ফারহান। চোখ দুটো বড় বড় রসগোল্লার আকার ধারণ করলো। ঘরে ঢুকেই যে সানাহ্কে এরকম অবস্থায় দেখবে ভাবেনি। ফারহান স্থানুর মত দাড়িয়ে আছে। তার চোখ সানার দিকে। ঘরের এসি বন্ধ করে কাজ করায় সানার মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। ঘরে চতুর দিকে শুধু পানির লীলাখেলা। রুমের অবস্থা যাচ্ছে তাই, একেবারে হুলুস্থুল বেজে আছে। হয়তো ঘর গোছাচ্ছে বলেই। বুক শেলফের সবগুলো বই নামানো।
সানাহ্ বিছানার তোষকের উপর মোড়া রেখে তার উপর দাড়িয়ে ফ্যান মুছছে। কাজে ব্যস্ত থাকা সানাহ্কে অপূর্ব দেখাচ্ছে। তার চুলগুলো উচুঁ করে খোঁপা করা আর মুখে একটু আধটু ঘরের ঝুল লেগে আছে। ফারহান এক দৃষ্টে সেই দৃশ্য দেখছে। এই সানাহ্কে দেখে ফারহান নিজ মনেই তাদের বিয়ে পরবর্তী সংসারের দৃশ্য সাজিয়ে ফেললো। যেখানে ফারহান সারাদিন পর ভার্সিটি থেকে আসবে আর সানাহ্ ওর জন্য ভালবেসে শরবত বানিয়ে আনবে। ফারহান সেই শরবত তৃপ্তি নিয়ে খাবে আর সানাহ্ ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিবে। কী চমৎকার ভাবনা তাইনা ?
ঘরে আগত ব্যক্তির সাড়া শব্দ না পেয়ে এবার সানাহ্ চোখ তুলে তাকালো। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্যাচুর মত দাড়িয়ে থাকা ফারহানকে নজরে পড়ল। হুট করে ফারহানকে দেখে অপ্রস্তুত হয়ে মোড়ার থেকে নামলো সানাহ্। ভাগ্যিস কাজ করবে বলে গায়ে বড় ওড়না জড়িয়েছিল যাতে শরীরে বেশি ময়লা না পড়লে। ওড়নাটাই আজ বাঁচিয়ে দিলো। কিন্তু এখন ফারহানকে মোটেই এক্সপেক্ট করেনি সানাহ্। ওর ঘরে চিরকালই ওর মা,বাবা আর অতসীর পদধূলি পড়েছে। আজ সেই নিয়ম ভেঙে যে ফারহানের চরণ পড়বে সেটা সানার কল্পনাতীত।
‘ আপনি ? ‘
হুট করে ফারহানকে দেখে অপ্রস্তুত সানাহ্ বললো। ফারহান সানার প্রশ্ন শুনে নিজেকে সামলে নিল। এগিয়ে গিয়ে সানার রুমের বিন ব্যাগে বসে বললো ‘ হুম আমি। তুমি তো এলেনা…. তাই আমারই আসতে হলো। তুমি কালকের পর থেকে এমন ব্যবহার করছো যেন আমাদের ঠিক হওয়া বিয়ে ভেঙে গেছে তাই তুমি আমাকে ইগনোর করছো যাতে অন্য কোনো ছেলেকে বিয়ে করতে পারো। ‘
কথাগুলো ফারহান রসিকতা করে বললেও সেগুলোর প্রভাব সানার উপর অন্য ভাবে পড়লো। সানাহ্ কথাগুলো সিরিয়াসলি নিয়ে কটমট চোখে ফারহানের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বললো ‘ তাহলে আমার মতো প্লে গার্লকে বিয়ে করছেন কেন ? দুনিয়ায় কি মেয়ের অভাব পড়েছে ? আমার থেকেও অনেক সুন্দরী মেয়ে পাবেন। ওদের বিয়ে করুন। একটা কেন দশটা বিয়ে করুন। এক বউকে নিয়ে সংসার করতে বোর হয়ে গেলে অন্য বউকে নিয়ে সংসার করবেন। ‘
‘ আরে আরে তুমি সিরিয়াসলি নিচ্ছো কেন ? আই ওয়াজ জোকিং। দেখলে এখনই তোমার মধ্যে বউ বউ ভাইবস আসছে। আমি একটা বললাম আর তুমি দশটা শুনালে। ভালো ভালো…. প্রগ্রেস ভালো হচ্ছে। এরপর বিয়ে হলে এভাবেই ঝগড়া করবে আমার সাথে। ঠিকাছে ? আইডিয়াটা ভালো না ? ‘ ফারহান দাত বের করে হাসতে হাসতে বললো।
সানাহ্ রেগে দাত কিরমির করতে করতে কাজে মন দিল সানাহ্। সানার রাগে গা জ্বলছে। ফারহানকে দেখলেই তার মনে পড়ছে ফারহান কিভাবে হেসে হেসে ওইদিন ওই রিয়াশা ফিয়াশার সঙ্গে কথা বলছিল। ফারহান সানাহ্কে এভাবে রাগতে দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠল আর সানাহ্ ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল। সানাহ্ বুঝে উঠতে পারছে না সে এমন কি বললো যে ফারহান হাসছে তাও এত জোরে। এরপর তো বেশি হাসলে ফারহানের পেট ব্যাথা করবে।
~ চলবে ইনশাআল্লাহ্….
ছবিয়াল: Tufan’s Artbin
( দয়া করে নাইস, নেক্সট বাদ দিয়ে অন্য কমেন্ট করুন কারণ একই কমেন্ট দেখতে দেখতে আমি শেষ। নাইস, নেক্সট কোনো কমেন্ট হতে পারে না। কিছু মানুষ আছে সবকিছুতেই নাইস, নেক্সট কমেন্ট করে। আমি যদি গল্প আজ দিবো না বলে পোস্ট করি তখনও একই অবস্থা। যেন এই শব্দগুলো তাদের কিবোর্ডে সেভ করা। দয়া করে এসব থেকে বের হয়ে আসুন। )