লাল নীল সংসার পর্ব -১৩

#_লাল_নীল_সংসার_
#_মারিয়া_রশিদ_
#_পর্ব_১৩_

আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন। শিশির একটা পার্কের পাশে দাড়িয়ে আছে। অপেক্ষা করছে কারোর জন্য। অপেক্ষা করছে তার মায়াবী মুখের আশায়। এই প্রথম শিশির ছোয়াকে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ছোয়াও রাজি হয়েছে। শিশির একটু নার্ভাস ফিল করছে। কিন্তু, তাও নিজের এক অদ্ভুত শান্তি লাগছে।

শিশির পাশে তাকাতেই চোখ যেন সেইদিকেই আটকে যায়। এ কাকে দেখছে সে? ছোয়া! এতো সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে? এতো সুন্দর সে? নাকি তার কাছেই এতো সুন্দর দেখায় মেয়েটাহকে?

ছোয়া আজ একটা কালো রং এর শাড়ি জড়িয়ে নিয়েছে। চুল গুলো খোপা করে একটা সাদা জারবেলা ফুল, চোখে টানা কাজল, হাত ভর্তি কালো রেশমি চুড়ি, পরে এগিয়ে আসছে। ছোয়া এগিয়ে এসে শিশিরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দেয়। শিশিরও একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে ওঠে,
–” আসসালামু আলাইকুম!”

ছোয়াও হেসে বলে ওঠে,
–” ওয়ালাইকুম আসসালাম!”

–” ভেতরে যাওয়া যাক?”

–” হুম!”

দুইজনেই পার্কের ভেতরে আসে। পার্কের ভেতর লোকজনের সংখ্যা কম, ওরা একপাশে একটা বেঞ্চে বসে। এদিকটাই মানুষজন নেই বললেই চলে। দুইজনেই কিছুটা দুরত্ব বজায় রেখে বসেছে। দুইজনের মাঝেই এক অন্যরকম অনুভুতি কাজ করছে।

শিশির ভাবছে,, ছোয়া তার প্রস্তাবে রাজি হবে তো? নাকি ফিরিয়ে দিবে তাকে? ফিরিয়ে দিবে তার ভালোবাসা? ভয় লাগছে শিশিরের। ছোয়াকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে নাহ, শিশিরের প্রতি তার অনুভূতি কেমন। শিশির কিছু সময় চুপ থেকে ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ছোয়া!”

শিশিরের এমন মায়াভরা ডাকে কিছুটাহ কেঁপে উঠে ছোয়া। আস্তে আস্তে শিশিরের দিকে তাকায় ছোয়া। শিশিরকে আজ খুব পবিত্র দেখাচ্ছে। আকাশী রং এর পানজাবিতে বেশ সুন্দর লাগছে। শিশির ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আমার তোমাকে কিছু কথা বলার ছিলো।”

ছোয়া আবার যেন কেঁপে উঠে। শিশির তাকে তুমি বলে সম্বোধন করছে? এতো মায়া দিয়ে কেন কথা বলছে লোকটা? এতো মায়া দিয়ে কথা বললে যে ছোয়া নিজেকে সামলাতে পারবে নাহ। আর কি বলবে সে? তাও ছোয়া সব ভাবনা সরিয়ে রেখে স্বাভাবিক ভাবে বলে ওঠে,
–” বলুন।”

শিশির উঠে এগিয়ে এসে ছোয়ার সামনে দাড়ায়। ছোয়া কিছুটা অবাক হয়ে বসা থেকে উঠে দাড়ায়। শিশির ছোয়ার দিকে একটু এগিয়ে এসে ছোয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ছোয়া! তোমার সাথে আমার হঠাৎ দেখা হয়েছিলো। আমার পাশে তোমার অসোয়াস্তি মুখের ছাপ দেখেছি প্রথম দিন। আমি তোমার মুখের অসোয়াস্তি দুর করতে নিরাপত্তা দিয়েছিলাম। তারপরেই যতোবার তোমার সাথে আমার দেখা হয়েছে সব দুইজনের জানা মতে নাহ। হঠাৎ হঠাৎ করে। ছোয়া! আমি তোমার আইডি কখনো খুঁজে বেড়াই নি। কাকতালীয় ভাবে তোমার আইডি আমার সামনে চলে আসে। কিন্তু, তাও আমি তোমাকে রিকোয়েস্ট দেয় নি। কেন জানো? কারন, আমি আমার পরিবারকে শক্ত করে ধরে রাখার একমাত্র খুঁটি। আবার আমার খুব একটা আয়ও ছিলো নাহ। আমার পরিবারকে চালিয়ে তোমাকে সুখী করার মতো সামর্থ আমার ছিলো নাহ। তাই আমি তোমার প্রতি কোনো অনুভুতির সৃষ্টি করতে চাই নি। কিন্তু, আমি ব্যর্থ। সত্যিই ব্যার্থ। আমি নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে তোমাকে রিকোয়েস্ট পাঠালাম। তোমার সাথে কথা বলা শুরু করলাম। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে, নিজের অজান্তেই, নিজের মাঝে তোমার নামের অনুভুতি সৃষ্টি হলো। কিন্তু, তোমাকে কখনো বলি নি। সব আমি নিজের মাঝে রেখেছি। কেন বলি নি, জানো? কারন, আমি চাই নাহ তুমি কখনো অসুখী থাকো। আমার পরিবার থেকে তোমার পরিবারের অবস্থা ভালো ছিলো, তাই আমি নিজের অনুভূতি নিজের মাঝেই চাপা দিয়ে রেখেছি।”

ছোয়া শিশিরের চোখের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে। কি বলছে শিশির এইসব? ছোয়ার চোখ ছলছল করছে। শিশির আবার বলে ওঠে,
–” জানো ছোয়া, এতোদিন নিজের অনুভুতি গুলো কে চাপা দিয়ে রাখলেও, তোমাকে নিয়ে সব সময় ভাবতাম। সব সময় তোমার কথায় মনে হতো। কিন্তু আজ আর নিজেকে সামলাতে পারলাম নাহ। আর সত্যি কথা বলতে, আজ আমি নিজেকে সামলাতেও চাই নি। কারন কি জানো? কারন, আজ আমার পায়ের নিচের মাটি শক্ত হয়েছে। ভেসে যাওয়া খড়কুটো গুলো আজ তার অবস্থান করে নিতে পেরেছে। তোমাকে ভালো রাখার পরিস্থিতি তৈরি করতে পেরেছি। গতকাল আমার প্রোমোশন হয়েছে। আমি ম্যানেজার পদে এসে গেছি। তোমাকে ভালো রাখার সমস্ত যোগ্যতা আমার হয়ে গেছে। তাই আর নিজেকে আটকাতে চাই নাহ। আমি গতকাল থেকেই ভাবছিলাম কখন তোমাকে বলবো। তাই আজ, যা এতোদিন করি নি, তাই করলাম। তোমাকে আজ দেখা করতে বললাম। জীবনের প্রথম কোনো মেয়ের সাথে দেখা করতে আসলাম।”

ছোয়া শুধু চুপচাপ শিশিরের কথাগুলো শুনছে। ভারি হয়ে আসছে তার চোখ। শিশির একটা জোরে নিশ্বাস নিয়ে বলে ওঠে,
–” ছোয়া! জীবনের সব থেকে বড় একটা কথা তোমাকে বলতে চাই। জীবনের প্রথম একটা অনুভুতির কথা বলতে চাই। ছোয়া! আমি তোমাকে ভালোবাসি! অনেক অনেক ভালোবাসি! অতিরিক্ত ভালোবাসি তোমাকে! তোমাকে ছাড়া আমি এখন কিছুই ভাবতে পারি নাহ! এতোটাই ভালোবাসি তোমাকে! I love you choya..!”

ছোয়া চোখ বন্ধ করে ফেলে। চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে ছোয়ার। এ কোন পরিস্থিতির সামনে পড়লো সে? কি করবে এখন সে? নিজের অনুভূতি কে চাপা দিবে কিভাবে? কি বলবে শিশিরকে? নিজের দূর্বলতাকে ঢেকে রাখবে কি করে? এমন সময় ছোয়ার সামনে ভেসে উঠে তার ভয়ংকর অতীত। তাড়াতাড়ি চোখ খুলে ফেলে ছোয়া! না, না, শিশিরকে নিজের সাথে জড়াতে পারে নাহ সে। কিছুতেই নাহ। শিশির ছোয়ার দিকে আর একটু এগিয়ে এসে ছোয়ার দুই হাত নিজের দুই হাতে মাঝে নিয়ে নেয়। ছোয়া অবাক হয়ে শিশিরের দিকে তাকায়। শিশির ছোয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না ছোয়া। তুমি যদি অনুমতি দাও তাহলে আমি বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো। কিন্তু, দয়া করে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো নাহ। আমার তোমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হবে। প্লিজ, ছোয়া….”

শিশির আর কিছু বলার আগেই ছোয়া জোরে নিজের হাত টেনে ছাড়িয়ে নেয়। শিশির অবাক ছোয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। ছোয়ার এমন ব্যবহার যেন তার মানতে কষ্ট হচ্ছে। ছোয়া নিজের চোখ মুছে শক্ত গলায় বলে ওঠে,
–” মি. শিশির! আপনি আমাকে নিয়ে এতো কিছু ভেবে ফেলছেন? আমি ভাবতে পারছি নাহ। দুইদিন ম্যাসেজে একটু ভালো করে কথা বলেছি দেখে, আর আজ একটু দেখা করতে এসেছি জন্য আপনি ভেবে নিলেন আমি আপনাকে ভালোবাসি। সরি, মি. শিশির! আপনি ভুল ধারনা নিয়ে আছেন। আমি আপনাকে ভালোবাসি নাহ। আর নাহ, আপনার প্রতি আমার কোনো দূর্বলতা আছে। আমি শুধু আপনার সাথে পরিচয় হয়ে একটা সুসম্পর্ক রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু, আপনি তো দেখছি, সেইটার অন্য মিনিং বের করে নিয়েছেন। আমাকে মাফ করবেন, এরকম কোনো ফিলিংস আমার নেই।”

ছোয়া কথা গুলো শক্ত গলায় বললেও, চোখ বেয়ে অজস্র অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। শিশির স্তব্ধ হয়ে ছোয়ার কথা শুনছে। ছোয়ার কঠোর কঠোর কথা গুলো শিশিরকে থমকে দিয়েছে। ছোয়া শিশিরের দিকে তাকিয়ে আবার বলে ওঠে,
–” আমি যদি জানতাম, আপনি আমাকে এইসব বলার জন্য এখানে ডাকবেন,, তাহলে আমি এখানে কখনোই আসতাম নাহ। আমি তো ভেবেছিলাম, আপনি এমনি আমাকে ডেকেছেন। যেমন একজন বন্ধু আর একজন বন্ধু কে ডাকে। একে অপরের সাথে ভালো বন্ধুত্বপূর্ন সময় কাটানোর জন্য। কিন্তু, আপনি তো দেখি!!! যাই হোক, আমি আর এখানে এক মুহুর্তও থাকতে চাই নাহ। আমি গেলাম। আল্লাহ হাফিজ!!”

কথাগুলো বলে ছোয়া চলে যেতে নিলেই শিশির ছোয়ার হাত ধরে ফেলে। ছোয়া পিছন ফিরে অবাক হয়ে একবার হাতের দিকে আবার শিশিরের দিকে তাকায়। শিশির সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। ছোয়া রাগী কন্ঠে বলে ওঠে,
–” আমার হাত ছাড়ুন মি. শিশির!”

শিশির একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ছোয়ার সামনে দাড়ায়। ছোয়া একবার শিশিরের দিকে তাকিয়ে আবার অন্যদিকে তাকায়। শিশির ছোয়ার দিকে তাকিয়ে হালকা হাসে। ছোয়ার চোখের পানিতে কাজল হালকা লেপ্টে গেছে, যাতে ছোয়ার চোখ আরও সুন্দর দেখাচ্ছে। নাক, চোখ লাল হয়ে আছে। চোখের পাপড়িতে পানির ফোটা লেগে আছে। মেয়েটাকে আরও বেশি সুন্দর লাগছে এইভাবে। বাহ! তার মায়াবীনি কান্না করলে তো আরও বেশি সুন্দর লাগে। এতো রুপ কেন মেয়েটার? ছোয়া অন্য দিকে তাকিয়েই বলে ওঠে,
–” আমার হাত ছাড়ুন।”

শিশির ছোয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” ঐদিকে তাকিয়ে কেন বলছো ছোয়া? আমার দিকে তাকিয়ে বলো, হাত ছাড়তে।”

ছোয়া একপলক শিশিরের দিকে তাকিয়ে অন্য দিকে তাকায়। ছোয়ার চোখ দিয়ে এখনও পানি গড়িয়ে পড়ছে। শিশির ছোয়ার চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া পানি আংগুলের মাথায় নিয়ে ছোয়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তুমি নাকি আমাকে ভালোবাসো নাহ, তাহলে এই চোখ থেকে পানি কেন গড়িয়ে পড়ছে ছোয়া? এই মুক্ত গুলো কি আমার ভালোবাসাময় কথা গুলো শুনে গড়িয়ে পড়ছে? নাকি,, আমাকে এতো কঠোর কথা গুলো শুনানোর জন্য গড়িয়ে পড়ছে,, কোনটা?”

ছোয়া ভেজা চোখ নিয়ে শিশিরের দিকে তাকায়। কি বলছে শিশির এইসব? তাকে যে কথার জালে জড়িয়ে দিচ্ছে। কিন্তু, ছোয়া যে কখনোই তার অনুভুতির কথা শিশিরকে বলতে পারবে নাহ। কখনোই নাহ। শিশির ছোয়ার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে ওঠে,
–” ছোয়া! তুমি নিজেও জানো, তুমি আমাকে ভালোবাসো।”

শিশিরের কথা শুনে ছোয়া চমকে শিশিরের দিকে তাকায়। শিশির ছোয়ার চোখের দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে ওঠে,
–” হুম! আমি তোমার চোখে নিজের জন্য ভালোনাসা দেখেছি ছোয়া! তোমার কথায় নিজের প্রতি ভালোবাসার টান অনুভব করেছি। তাই আমি তোমাকে নিজের ভালোবাসার কথা জানানোর সাহস পেয়েছি। ছোয়া! আমি জানি নাহ, তুমি কেন নিজের ভালোবাসাকে চাপিয়ে রেখেছো। আমি জানি নাহ, কেন তুমি আমাকে দুরে সরিয়ে দিচ্ছো। আমি সব সময় তোমার পথ চেয়ে বসে থাকবো। তুমি আমাকে ভালোবাসো ছোয়া, এইটা তোমার চোখই বলে দেয়। প্লিজ! ছোয়া! কেন এমন করছো? আমাকে কেন দুরে সরিয়ে দিচ্ছো? ভালোবাসি ছোয়া! খুব ভালোবাসি তোমাকে।”

ছোয়া কোনো কথা নাহ বলে শিশিরের হাতের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায়। শিশির ছোয়ার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। এতো সময় শিশিরের চোখ ছলছল করলেও, চোখ থেকে পানি গড়াতে দেয় নি শিশির। কিন্তু, ছোয়া চলে যেতেই শিশিরের চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। আঙ্গুল দিয়ে অশ্রুকণা গুলো মুছে নেয় শিশির। তারপর আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়ে পার্ক থেকে বেরিয়ে যায়।


আদনান অনেক সময় ধরে ভার্সিটির মাঠে বসে আছে। স্নেহার আসার কথা এখনও আসছে নাহ। মেজাজ খারাপ হচ্ছে। এমন সময় রিয়াদ এসে পাশে বসে আদনানের। আদনান রিয়াদের দিকে একবার তাকিয়ে আবার ফোন চালাতে থাকে। রিয়াদ আদনানকে একটা চিমটি দিতেই আদনান চেচিয়ে উঠে হাত ঘসতে ঘসতে বলে ওঠে,
–” ফাজিল! মেয়েদের মতো চিমটি দিস কেন?”

রিয়াদ জোরে হেসে দেয়। এমন সময় পাশ থেকে মেয়েলি কন্ঠে কেউ বলে ওঠে,
–” মেয়েরা শুধু চিমটি দেয়?”

আদনান তাড়াতাড়ি পাশে তাকিয়ে দেখে ছোয়া এসে তার পাশে বসেছে। রিয়াদ তাড়াতাড়ি বলে ওঠে,
–” আদনানের কথায় তো তাই মনে হচ্ছে।”

স্নেহা রিয়াদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” তাই?”

রিয়াদ সম্মতিসূচক মাথা নাড়তেই স্নেহা আদনানকে একটা জোরে চিমটি দেয়। আদনান জোরে চেচিয়ে উঠে। রিয়াদ আর স্নেহা জোরে হেসে দেয়। আদনান হাত ডলতে ডলতে স্নেহার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
–” চুড়েল! এতো জোরে কেউ চিমটি দেয়। চামড়া উঠে গেলো।”

স্নেহা হাসতে হাসতে বলে ওঠে,
–” তুই তো বললি, মেয়েরা নাকি শুধু চিমটি দেয়। আমিও তো একটা মেয়ে তাই দিলাম।”

স্নেহার কথা শুনে রিয়াদ আরও জোরে হেসে দেয়। স্নেহাও হাসতে থাকে। আদনান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে ওঠে,
–” আমাকে মাফ করবেন। আমার ভুল হয়ে গেছে।”

আদনানের এই কথা শুনে রিয়াদ আর স্নেহা আরও হাসতে থাকে। ওদের হাসি দেখে আদনানও হেসে দেয়। ওরা গল্প করতে করতে ডিসিশন নেয় আজ তিনজন খুব ঘুরবে। যেমন কথা তেমন কাজ,,, তিনজনই বেরিয়ে পড়ে ঢাকায় হালকা ভ্রমনের উদ্দেশ্যে।


রাতের বেলা……
শিশির বিছানার উপর আধশোয়া হয়ে আছে। ভাবছে, ছোয়ার কথা। ছোয়া তাকে প্রত্যাখান করলো, কিন্তু শিশিরের যে সব সময় মনে হয়েছে ছোয়া তাকে ভালোবাসে। আজও ছোয়ার চোখে পানি দেখেছে, আর তাছাড়া ছোয়া শেষে কথা থেকে এক প্রকার পালিয়ে চলে গেলো। শিশিরের কিছুই ভালো লাগছে নাহ। ছোয়ার ভালোবাসা দরকার তার।

প্রোমোশন টাহ হওয়ার পর ভেবেছিলো হয়তো সে সব পেয়ে যাবে এইবার। পরিবারকে সুখী করতে পারবে,, ছোয়াকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে পারবে। কিন্তু, ছোয়া যে তাকে ছেড়ে চলে গেলো। সত্যিই কি ছোয়া তাকে ছেড়ে চলে গেলো? মানতে পারছে নাহ শিশির। নাহ,, এতো সহজে ছোয়াকে যেতে দিবে নাহ সে।

শিশির একদম নিশ্চিত ছোয়া তাকে ভালোবাসে। আজ ছোয়ার চোখের পানিই বলে দিছে,, ছোয়া তাকে ভালোবাসে। কিন্তু,, কোনো তো কারন আছে। যার জন্য ছোয়া তাকে প্রত্যাখান করেছে। সেইটাই জানতে হবে এখন তাকে। কিন্তু কিভাবে?

ছোয়া আজ আর অনলাইনে আসে নি। বার বার চেক করেছে শিশির। কিন্তু,, ছোয়া অফলাইন। ছোয়ার বাসাও সঠিক ভাবে চিনে নাহ সে। শুধু জানে,, ফার্মগেটের আশেপাশে। কিন্তু, কোথায় তা জানে নাহ। উফ! বিরক্তিকর। শিশির মুখে হাত দিয়ে মনে মনে বলে ওঠে,
–” ভালোবাসি ছোয়া! অনেক অনেক ভালোবাসি! প্লিজ,, চলে আসো আমার কাছে। দয়া করো। মেনে নাও আমার ভালোবাসাকে। দয়া করো।”

#_চলবে…………🌹

{{ অনেকেই আমাকে হয়তো বকা দিবেন,, বেশি কথা বলবেন আমি জানি,,, কিন্তু কাহিনি এখানেই শেষ নাহ।।।😌
আরও কাহিনি আছে,,,তাই ধৈর্য ধরুন,,, আর অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্বের জন্য।!! 🤗🤗 }}

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here