#টিপ_টিপ_বৃষ্টিতে
#পর্ব_২
লেখিকা #Sabihatul_Sabha
শুভ একবার ঐশীর দিকে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। অন্য দিকে তাকিয়ে বললো,
~ তুমি নিশ্চয়ই জানো বিয়েটা কিভাবে হয়েছে.. পরিস্থিতির চাপে পড়ে আমি তোমাকে বিয়ে করেছি..!! আমার তোমার মতো মেয়েকে বিয়ে করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছে ছিলো না।
ঐশী চোখ মুখ খিঁচে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর মতো মেয়ে বলতে শুভ কি বুঝালো!!.?ও নিজেও তো এমন রসকষহীন, গম্ভীর পুরুষ কে বিয়ে করার কথা কল্পনাতেও কখনো আনে নি।যে কি-না বিয়ের রাতে বউয়ের রুমে আশা তো দূর একবার উঁকি ও দেয়নি।
শুভ আবার বলা শুরু করলো, ‘ আশা করি তুমি আমার কথা বুঝতে পারছো। আমি চাই না আমাদের বিয়ের কথা ভার্সিটির কেউ জানুক। আমার নিজের একটা মান সম্মান আছে। শুধু পড়াশোনায় ভালো হলেই চলে না। স্বভাব চরিত্র চলাচলের স্টাইল ভালো হওয়া লাগে। তোমার মতো ভাউন্ডলে, ছন্নছাড়া, অগোছালো মেয়ে কখনো শুভ মাহমুদ আহনাফ এর বউ হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। আমি চাই বাহিরের কারো কাছে কখনো আমাকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দিবে না। আর আমার কাছ থেকে কখনো অন্য কিছু আশা করবে না। তোমার যেভাবে ইচ্ছে চলাফেরা করতে পারো কিন্তু এমন কিছু করোনা যেটায় আমাদের বাড়ির মান সম্মান নষ্ট হয়ে যায়।
শুভর কথা শুনে মেজাজ তুঙ্গে উঠে যায় ঐশীর। নিজের রাগ সংযোজন করার জন্য হাত মুষ্টি বদ্ধ করে চোখ বন্ধ করে নিলো ঐশী। সময়ে সবগুলো কথার জবাব অক্ষরে অক্ষরে দিবে ঐশী।
শুভ যেভাবে এসে ছিলো ঠিক সেভাবেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। তবে ওর চোখ মুখে লেগে আছে রাগ,ক্ষো*ব,বিরক্তকর চাহনি।
ঐশী ছোটো থেকেই বাবা মা সবার প্রচুর আদর পেয়ে বড় হয়েছে। কখনো কেউ কিছু বলেনি। ওর জেদ অনেক বেশি।
শুভর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিয়ে বলে উঠলো, ‘ যেই মুখ দিয়ে আজ আমাকে এত কথা শুনিয়ে গেলেন। সেই মুখ দিয়ে এক সময় শুধু বলবেন ভালোবাসি এই ভাউন্ডলে, ছন্নছাড়া, অগোছালো মেয়েটাকেই ভালোবাসি । যেই চোখে আজ আমার মতো মেয়েকে বিয়ে করেছেন বলে এত রাগ,ঘৃণা, সেই চোখে এক সময় আপনার এই ঘৃণিত মেয়েটির জন্য সমুদ্র মতো গভীর ভালোবাসা দেখবো।
হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মুছে হাতের শাড়ি টির দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো। শাড়িটা বিছানার উপর রেখে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো।
বাহিরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে। ঘা শির শির করা বাতাস। ঐশী ব্যালকনি থেকে যতদূর দেখা যায় চোখ বোলালো। মনের ঘরের লুকোনো কষ্ট গুলো মনে হতেই চোখ জলে ভরে উঠলো। বেইমান পুরুষের কথা সে মনে আনবে না। কখনো আনবে না৷ কত রাত না ঘুমিয়ে ছাঁদে বসে সংসার কিভাবে সাজাবে সেই গল্প করেছে। পুরুষটি তার মিষ্টি মিষ্টি কথার গভীর প্রেমে ফেলে দিয়েছে। যখন বলতো ভালোবাসি তখন ঐশী লজ্জায় লজ্জাবতী গাছের মতো নুইয়ে পড়তো। আজ সব কিছুই দোস্বপ্ন হয়ে গেছে। যদি সম্ভব হতো এই বৃষ্টির পানির মতো সেই ঠ*ক, প্রতা*রক পুরুষটিকে নিজের মন থেকে মুছে দিতো।
বৃষ্টির ঝাপটায় চোখ,মুখ, কাপড় সব ভিজে গেছে।
ঐশী ব্যালকনি থেকে রুমে এসে অবাক। এই লোক আবার এসেছে কেনো..? কিছু বলার আগেই শুভ ঐশীর দিকে এক পলক তাকিয়ে গট গট করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
ঐশী শুভর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কেটে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
বেগুনি রঙের শাড়ি, দুই হাত ভর্তি বেগুনি রঙের চুড়ি, চোখে কাজল, মুখে হালকা সাজ, ঠোঁটে হালকা মেরুন রঙের লিপস্টিক। খুব সুন্দর লাগছে ঐশী কে।
পূর্ণা কিছু ক্ষন অবাক চোখে ঐশীর দিকে তাকিয়ে চোখের থেকে কাজল নিয়ে ঐশীর কানের পিছে লাগিয়ে দিলো।
ঐশী প্রথম কিছু না বুঝলেও যখন বুঝলো ফিক করে হেঁসে দিলো।
পূর্ণাঃ খুব সুন্দর লাগছে ঐশী তোকে।এতদিন কোথায় লুকিয়ে রেখেছিস তোর এই সৌন্দর্য!! ভাই তো আজকে দেখলেই ফিদা হয়ে যাবে.. বলেই চোখ মারলো।
পূর্ণার কথা শুনে ঐশী খিলখিল করে হেঁসে উঠলো।
পূর্ণা মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো। ঐশীকে আগে থেকেই পূর্ণার খুব পছন্দ। স্কুল ছুটি পেলেই এক ছুটে চলে যেতো ঐশীদের বাড়িতে। আজ সেই মেয়েটা ওর ভাবি। প্রথম যখন শুনেছে ঐশীর বিয়ে ঠিক হয়েছে খুব মন খারাপ হয়ে ছিলো। মনে মনে ও সব সময় ঐশীকে ওর ভাইয়ার পাশে চাইতো। কিছু ওর ভাই তো ঐশীকে একদম পছন্দ করে না। ঐশীর চলাফেরার কিছুটা ছেলেদের মতো।পেন্ট,শার্ট পড়া যখন তখন বাইক নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া। ভার্সিটিতে বাইক নিয়ে যাওয়া শুভর একদম পছন্দ না। প্রথম প্রথম তো আব্বুকে এসে বলতো ” তোমার এই বোনের বেয়াদব মেয়েকে শাসন করতে পারে না। ছেলেদের মতো চলাফেরা সারাদিন বন্ধু দের নিয়ে বাইক নিয়ে ঘোরাফেরা করে। একটু শাসন করতে বলো.” আর আজ সেই মেয়েটা ভাইয়ার বউ।
ঐশীর ডাকে ঘোর থেকে বের হলো পূর্ণা।
পূর্ণাঃ চলো আপু। নিচে যেতে আম্মু বলেছে..
ঐশীঃ চল..
ঐশী নিচে নামতেই নীলা( ঐশীর মামী) ঐশীর দিকে তাকিয়ে হাসি দিয়ে এগিয়ে এসে বললো,’ মাশাল্লাহ খুব সুন্দর লাগছে আমাদের ঐশী মা কে।’
ঐশী হাসি দিয়ে মামী কে বললো,’ মামী আগে কি কালো লাগতো..?’
নীলা বেগম হেঁসে বলে উঠলো, ‘ সেটা কখন বললাম। তোকে আমার কাছে সব সময় সুন্দর লাগে। আর ফিসফিস করে বললো, ‘ সেই জন্যই তো অনেক আগে থেকে আমি তোকে আমার ছেলের বউ করতে চেয়েছি। কিন্তু….
ঐশী হেঁসে বললো,’ কিন্তু কি..?
নিলা বেগমঃ কিছু না রুমে যা।
ঐশীঃ মামী আমার থেকে কিছু লোকাতে হবে না। আমি জানি কেনো কখনো বলোনি।
নীলা বেগম হতাশার সুরে বললো,’ সব ঠিক হয়ে যাবে ঐশী। তবে তোকে ধৈর্য ধরতে হবে।
পিছন থেকে শুভর নানু বলে উঠলো, ‘ এতো বেলা পর্যন্ত নতুন বউ ঘুমায়। কি দিন আসলো, আমাদের দিনে তো ফজরের সময় উঠে নামাজ পড়ে কাজে লাগতাম। আর এখনের বউয়েরা দশটার আগে রুম থেকেই বের হয় না।
নীলা বেগম নিজের মা’য়ের কথায় কিছু বললেন না। তারা দিয়ে ঐশীকে রুমে যেতে বললো। উনি ভালো করেই জানেন উনার মা ঐশীকে একদম পছন্দ করে না। এমন মেয়েকে ছেলের বউ করেছে বলে কম কথা শুনেনি। তাতে উনার কিছু জায় আশে না। পারলে নিজের মেয়ে পূর্নাকেও ঐশীর মতো বানাতেন উনি।
নীলা বেগমঃ ঐশী শুভ এখন অনুষ্ঠান করতে চাচ্ছে না। আমি অনেক বুঝিয়েছি। এদিক দিয়ে আপা আর দুলাভাই অনুষ্ঠান করে আবার বিয়ের সব কিছু করতে চাচ্ছেন। শত হলেও তুই উনাদের একমাত্র মেয়ে। এখন আমি কি করবো..?
ঐশীঃ এটা আমার উপর ছেড়ে দাও মামী। আমি আব্বু আম্মুকে বুঝিয়ে নিবো।
ঐশী সিঁড়িতে পা রাখতেই পেছন থেকে শুভ ভাইয়ার নানু ডেকে উঠলো।
পিছন ফিরে একটা নজর কারা হাসি দিয়ে এগিয়ে গেলো উনার দিকে।
নীলা বেগম রান্না ঘরে রান্না করছে আর আল্লাহ কে ডাকছে।
নানুঃ সুজা হয়ে দাঁড়াও।
ঐশী ভদ্র মেয়ের মতো ঘোমটা দিয়ে সুজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নানুঃ রান্না বারা পারো তো..?
ঐশী কিছু না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। সত্যি বলতে সে কোনো দিন কিছু রান্না করে নি। শুধু কফি বাঁধে আর কিছুই পাড়ে না।
নানুঃ এই মেয়ে এখন মুখে কি আডা লাগায় রাখছো নাকি..? অন্য সময় তো মুখ দিয়ে খইফুটে।
ঐশীঃ আসলে নানু বাবার বাড়িতে তো আর কোনো কাজ করতে হয়নি তাই কিছু পারি না। তবে মামীর কাছ থেকে শিখে যাবো।
নানুঃ বিয়ের পর কিসের মামী। আজ কাল কার বউয়ের মুখে মা ডাক আসে না। জামাইর মা রে মা ডাকতে কষ্ট হয়। আর শিখবা কবে। কবরে গিয়ে মনে হয় নাতির বউয়ের রান্না খামু।একটা মাত্র নাতি কত শখ ছিলো। আর কেমন মেয়ে তুমি বিয়ের পরের দিন জামাই কাজে চলে যায় নতুন বউ রেখে।
ঐশীঃ নানু উনি ভার্সিটির লেকচার । আর উনার বিয়েটা হঠাৎ করে হয়েছে। কেউ জানেনা। ভার্সিটিতে না গেলে উনার সমস্যা হবে তাই গিয়েছে।
নানু বিরবির করে বললো, ‘ বিয়াদব মাইয়া লগে লগে কথা কয়।
রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বললো,’ তোমার শাশুড়ী কে বলে আমার জন্য পায়েস রান্না করে আনো। দেখি হাতের রান্না কেমন।
ঐশী আচ্ছা বলে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো মনে মনে হাজারটা গালি দিতে দিতে গেলো বুড়ী কে। ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কাটলো শুভর নানু।
পায়েস রান্না করতে গিয়ে ঐশীর অবস্থা একদম খারাপ। যে মেয়ে কোনো দিন রান্নাঘরে আসেনি তার জন্য হঠাৎ পায়েস রান্না করাটা যুদ্ধের মতো হয়ে গেছে।
পায়েস রান্না শেষ করে গিয়ে গোছল করে নিচে আসলো।
ঐশীর চুল অনেক বড় আর খুব সুন্দর। চুলের টপ টপ পানিয়ে ওর পিছনের জায়গাটা পানি জমে গেছে।
পূর্ণার ডাকে পিছন ফেরতে গিয়ে পানির মধ্যে পিছলে পড়ে যেতে নিলে কেউ ওর কোমর জড়িয়ে ধরে পড়ে যাওয়া থেকে বাঁচিয়ে নিলো।
ভয়ে ঐশীর বুক কেঁপে উঠল। পড়লে নিশ্চয়ই খুব ব্যাথা পেতো।
কিন্তু কে ধরে আছে। তারাতারি সামনে তাকিয়ে অপরিচিত মুখ দেখে বিদুৎ গতিতে হাত ছাড়িয়ে দূরে গিয়ে দাঁড়ালো।
দূর থেকে কেউ রাগে হাত মুষ্টি বদ্ধ করে রেখেছে। অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সামনের দু’জনের দিকে।
ছেলেটি হা করে ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে।
ভেজা চুল, কালো শাড়ি,মুখে মেকআপ এর কোনো ছিটেফোঁটা ও নেই। কতটা পবিত্র, স্নিগ্ধ লাগছে দেখতে মেয়েটিকে।
ছেলেটি এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ঐশী অস্বস্তিতে এদিক ওদিকে তাকিয়ে সামনে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো আরো কয়েকজন ছেলেমেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর কেউ কেউ মুচকি মুচকি হাসছে।
ঐশী পিছিয়ে যেতেই পূর্ণা গিয়ে সোনিয়া আপু বলে একটা মেয়েকে জড়িয়ে ধরলো।
ঐশী বুঝলো সব গুলো পূর্ণার নানু বাড়ির লোক।
ঐশী রান্না ঘরের দিকে নিঃশব্দে চলে গেলো।
ছেলেটা এবার বলে উঠলো, ‘ এই পূর্ণা এই মেয়েটি তোর ওই ফুপিমণির মেয়ে না..?’
পূর্ণাঃ বাহ্ আদিত্য ভাই তোমার তো স্মৃতিশক্তি খুব ভালো। গাড়ি থেকে দেখেছো কবে এখনো মনে রেখেছো..!
আদিত্য কিছু না বলে মুচকি হাসি দিয়ে রান্নাঘরের দিকে তাকালো।
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই।
আদিত্য ভাই আর সোনিয়া দুইজন হলো পূর্ণার খালাতো ভাইবোন। আর মাহতিম ভাই, সৌরভ ভাই সুরভি ওরা হলো পূর্নার মামাতো ভাইবোন। ওরা সবাই টুরে ঘুরতে গিয়ে ছিলো। বাসায় যাওয়ার পথে এখানে চলে আসলো৷ আজ থেকে কাল যাবে।
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে। শুভর অপেক্ষায় বসে আছে। শুভ নিজের রুম থেকে বের হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছে সোনিয়া অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শুভর দিকে। ওর চাওয়া খেয়াল করে সুরভি সোনিয়ার মাথায় ঘাট্টা মারলো। সোনিয়া রেগে সুরভির দিকে তাকালো।
শুভ এসে বসতেই। নীলা বেগম খাবার বেরে দিচ্ছেন আর ঐশী এগিয়ে দিচ্ছে।
সব চেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হলো শুভ বাসায় আসার পর থেকে ঐশী একবার ও শুভর দিকে তাকায় নি।সব কিছু এগিয়ে দিচ্ছে। এমন ভাব করছে যেনো শুভ ওর কিছুই না। শুভ বার কয়েক বিরক্তি কর দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালেও সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিয়েছে।
সুরভি বললোঃ ঐশী তুমিও বসো না আমাদের সাথে।
ঐশী হাসি দিয়ে বললো, ‘ না আপু আপনারা খেয়েনিন আমার এখন খিদে নেই।
নীলা বেগমঃ বেশি কথা না বলে চুপচাপ বসে পর ঐশী।
ঐশী কথা না বাড়িয়ে সোনিয়ার পাশের চেয়ারে বসে পরলো। সোনিয়া একবার ঐশীর দিকে তাকিয়ে আবার নিজের খাওয়ায় মন দিলো।
আদিত্য বার বার খাবার রেখে ঐশীর দিকে তাকাচ্ছে। ওরা কেউ এখনো বিয়ের বিষয় কিছুই জানে না। হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় বাসার মানুষ বাঁধে বাহিরের কেউ জানেনা এই বিয়ের বিষয়টা।
শুভর নানু পায়েস এর বাটিটার দিকে ইশারা করে বললো উনাকে দেওয়ার জন্য।
ঐশী মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছে। এই কুটনী মহিলা একটু খারাপ হলে আবার ওকে নানা কথা শুনাবে।
পায়েস মুখে দিয়ে থু!থু করে ফেলে দিলো।
নানুঃ এটা কি বানাইছো.এত বড় মেয়ে হইছো এখনো একটু পায়েস রান্না করতে পারো না.?
ঐশী মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
নীলা বেগমঃ কেনো মা ভালো হয়নি..? আসলে আম্মা তুমি তো জানো ঐশী কখনো কিছু রান্না করে নি। প্রথম তো একটু খারাপ হবেই।
শুভ শান্ত দৃষ্টিতে ঐশীর দিকে তাকিয়ে বললো,’ আম্মু নানু যেহেতু পায়েস পছন্দ করে। তুমি নিজে রান্না করতে৷ যাকে তাকে দিয়ে রান্না করাও কেনো..?
ঐশীর অপমানে চোখ জ্বালা ধরে উঠলো।
আদিত্য ওর নানুর দিকে তাকিয়ে বললো,’ আহা ডার্লিং পায়েস ভালো না হলে অন্য কিছু খাও। আর প্রথম প্রথম রান্না করলে একটু আধটু খারাপ হতেই পারে। একটা কাজ করো পায়েস এর বাটিটা এদিকে দাও।
পূর্ণা বাটি এগিয়ে দিতে নিলে। ওর নানু বলে উঠলো, ‘ এই পায়েস কেউ খেতে হবে না। কষ্ট হলেও আমি খেয়ে নিচ্ছি।’
আদিত্যঃ সুইটহার্ট তুমি কষ্ট করে খাবে আর আমি তা বসে বসে দেখবো ভাবলে কিভাবে। পূর্ণা বাটিটা এদিকে দাও।
পূর্ণা বাটিটা আদিত্যের দিকে এগিয়ে দিলো।
আদিত্য একটু পায়েস নিজের প্লেটে নিলো আর মনে মনে আল্লাহ কে ডাকছে বলে তো ফেললো কিন্তু ওর তো একদম পায়েস পছন্দ না।
আল্লাহ আল্লাহ করে এক,দুই চামচ মুখে দিয়ে স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে ওর নানুর দিকে। তারপর সবার প্লেটে একটু একটু বেরে দিয়ে আবারও তাকালো নিজের সুইটহার্ট এর দিকে।
সুইটহার্ট বিরবির করে এদিক ওদিকে তাকাচ্ছে। যেনো চোর চোরি করতে গিয়ে ধরা পরেছে।
শুভ খাবার খেয়ে উঠে চলে গেলো। নিজের সামনে এই মেয়েকে সয্য করছে এটাই অনেক। আবার ওর হাতের খাবার খেয়ে নিজের রুচির বারোটা বাজাতে চায় না।
আদিত্য শুভর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ওর সুইটহার্টকে বলে উঠলো…
চলবে..
ভুলত্রুটি মার্জনীয়।