💕ভালোবাসি💕 (দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প) Samira Afrin Samia #নিপা পর্বঃ ৩

💕ভালোবাসি💕
(দুষ্টু মিষ্টি ভালোবাসার গল্প)
Samira Afrin Samia
#নিপা
পর্বঃ ৩

—মিষ্টি আর তুষার বাসায় চলে আসলো। রাতে তুষার মিষ্টিদের বাসায় রাতের খাবার শেষ করে চলে যেতে চাইলে মিষ্টি তুষারকে যেতে দেয়নি। মিষ্টি তুষারকে সাথে নিয়ে ভুতের মুভি দেখতে বসে গেল।
তুষার – ওরে বাবা রে মেরে ফেলবি নাকি?
মিষ্টি – আমি তোমাকে মারব কেন?
তুষার – এত জোরে চিমটি দিলি কেন। মানুষের মাংস খাওয়ার ইচ্ছে হইছে নাকি?
মিষ্টি – কি করব।হঠাৎ করে চোখের সামনে ওই পেত্নীটা এসে গেল। আমার তো মনে হয়েছিল টিভি থেকে বের হয়ে সুজা আমার সামনে এসে গেছে। ভয় লাগছে তাই ত চিমটি দিয়ে দিছি।ইচ্ছে করে দিছি নাকি?
তুষার – এত ভয় লাগে তাহলে ভুতের মুভি না দেখলেই ত পারস।
মিষ্টি – ভয় লাগে কিন্তু দেখতে ও ভালো লাগে।
তুষার – হ,,,,, তোর ত ভুতের মুভি দেখতে ভালো লাগে কিন্তু আমার এই চিমটি গুলো খেতে একদমই ভালো লাগে না। আমি আর কোনো দিন ও তোর সাথে ভুতের মুভি দেখব না। তোর মত পেত্নীর থেকে মুভির পেত্নী গুলা অনেক ভালো।
মিষ্টি – হা,,,,না দেখো আমার কি।আমি একা একাই দেখতে পারব।
তুষার – হ জানি তুই কেমন একা একা দেখতে পারবি।সেই আমার কানের কাছে গিয়ে ঘ্যানঘ্যান করবি। এখন ঘুমা আমি যাই।
মিষ্টি – যাও যাও কত ভাব যে দেখতে হবে। একটু ভয় পায় বলে তোমার এত ঢং দেখতে হয়।

এভাবে কয়েক দিন কেটে গেল…………..
— মিষ্টি সকালে ঘুম থেকে উঠেই তুষারদের বাসায় চলে গেল। মিষ্টি তুষারের রুমে গিয়ে দেখে তুষার এখনও ঘুমিয়ে আছে।
মিষ্টি – ষাঁড় মহাশয় এখনও নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। আমি আজ এত সকালে উঠে গেলাম আর তুষার এখনও ঘুমাচ্ছে। দাঁড়াও তোমার আরামের ঘুম আমি হারাম করছি।
— যেই ভাবা সেই কাজ মিষ্টি বাহির থেকে এক গ্লাস পানি এনে তুষারের উপর ফেলে দিল। তুষার এক লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে বসলো।
তুষার – বাবা রে আমার রুমের ছাদ ভেঙ্গে গেল নাকি?
তারাতারি করে বেড থেকে নেমে দাঁড়ালাম।মিষ্টি আমাকে দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। উপরে তাকিয়ে দেখি ছাদ ঠিকই আছে। মিষ্টির হাসি দেখে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না এই কাজ গুলো কে করেছে।
মিষ্টি –
তুষার – তুই এই সকাল বেলা এই কাজ করছিস।দাড়া তোকে দেখাচ্ছি মজা।
মিষ্টি – এতক্ষণ ষাঁড়টার কান্ড কাহিনী দেখে সেই হাসি পাচ্ছিল। কিন্তু এখন আর এক মূহুর্ত ও এখানে থাকা যাবে না। তুষার আমাকে ধরতে পারলে আমার তেরোটা বাজাবে।
তুষার –
মিষ্টি – তুমি আমাকে ধরতে পারলে তো কিছু করবে।
— মিষ্টি একথা বলে এক দৌড়ে তুষারের আম্মু আব্বুর কাছে চলে আসলো। তুষার ও মিষ্টির পিছন পিছন দৌড়াচ্ছে।
তুষার – মিষ্টি ভালো হবে না দাঁড়া বলছি। আজকে তোর খবর আছে দাঁড়া তুই।
মিষ্টি – আমি দাঁড়ালে তুমি আমাকে মারবে। আমি দাঁড়াবো না। আন্টি গো আমাকে বাঁচাও। তোমার ষাঁড় ছেলেটা আজ বুঝি আমাকে মেরেই ফেলবে।
— মিষ্টি দৌড়াতে দৌড়াতে এসে তুষারের আম্মুর পিছনে লুকিয়ে গেল।
তুষারের আম্মু – কি হলো তোদের সকাল সকাল এত দৌড়াদৌড়ি আর চেচাঁমেচি করছিস কেন?
মিষ্টি – আন্টি তুষার আমাকে মারছে।
তুষার – ওই মিথ্যুক মেয়ে আমি তোকে কখন মারলাম?
আমি তো এখনও তোকে ধরতেই পারলাম না। কিভাবে এমন মিথ্যা কথা বলিস?
মিষ্টি – ধরতে পারলে তো মারতে। ধরতে পারোনি তাই মারনি।
তুষারের আম্মু – তুষার তুই ও কি ছোট বাচ্চা। তোর ও কি মিষ্টির সাথে সব সময় এভাবে ঝগড়া করতে হবে?
তুষার – আম্মু এই পেত্নীটা কে জিঙ্গেস করো আমার উপর পানি দিছে কেন?
মিষ্টি – আমি তোমাকে র্বাথডে উইশ করতে আসছিলাম। এসে দেখি তুমি তখনও ঘুমোচ্ছিলে কত ডাকার পর ও উঠনি তাই তো পানি দিছি। আর মাত্র এক গ্লাস পানি ই তো দিছি।
তুষার – র্বাথডে উইশ কি এখনই করতে হবে পরে করা যেত না?
তুষারের আব্বু – একদম ঠিক কাজ করছো মামনি।ওর উপর এক গ্লাস পানি না দিয়ে এক বালতি পানি ঢালার উচিত ছিল। নবাবজাদার দুপুর বারোটা পর্যন্ত ঘুমাতে হবে।
তুষার – আব্বু এখনও বারোটা বাজেনি।এখন সবে মাত্র নয়টা বাজে। আমি কোনো দিনও বারোটা অবধি ঘুমোয়নি।
তুষারের আম্মু – চুপ কর তুই। মেয়েটা তোকে র্বাথডে উইশ করতে আসছে আর তুই ওকে মারতে দৌড়াচ্ছিস।
যা তুই ফ্রেশ হয়ে আয়।
তুষার – এই বাড়িতে তো আমার কোন দামই নাই। সব সময় মিষ্টির কথাই তোমরা শুনবে। আমি তো তোমাদের ছেলে না। আমাকে তো ছোট বেলা মেলা থেকে কুড়িয়ে আনছো।
তুষারের আব্বু – এত কথা না বলে ফ্রেশ হয়ে আস।
মিষ্টি – আন্টি র্বাথডে পার্টি দিবা না?
তুষার – না। আমি ওই সব পার্টি টার্টি পছন্দ করি না। আর মুসলিমরা র্বাথডে সেলিব্রেট করে না।
মিষ্টি – ষাঁড় প্লিজ এই এক বারই পার্টি দিব। আর কোনো দিন ও না। প্লিজ পার্টি করতে দেও।
তুষার – আমি যখন না করছি তখন না ই। কোনো পার্টি হবে না।
মিষ্টি – আন্টি তুমি কিছু বলো না। আমি আমার সব ফ্রেন্ডদের কে ইনভাইট করে ফেলছি।
তুষারের আম্মু – তুষার মেয়েটা যখন এত করে বলছে তখন না হয়……
আচ্ছা দেখ তোর র্বাথডেতে মিষ্টি কত খুশি ও পার্টি দিতে চায় ও তো আগে থেকে ওর ফ্রেন্ডদের কে ও ইনভাইট করে ফেলছে।
— তুষার মিষ্টির মাথায় আস্তে একটা থাপ্পড় দিয়ে।
তুষার – আমার র্বাথডে নিয়ে ওর এত আগ্রহ কেন?
মিষ্টি – তোমার র্বাথডে মানে তো আমার ও র্বাথডে।
— তুষার মিষ্টির দিকে তাকিয়ে হেসে দিল।
তুষার – ধুর গাধী। আমার র্বাথডে তোর র্বাথডে হবে কি করে।আমরা কি একই দিনে জন্মেছি?
বোকা কোথাকার।
মিষ্টি – আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড তাই না?
তুষার – হুম
মিষ্টি – তাহলে তোমার জিনিস মানে আমার। আর আমার জিনিস মানে তোমার। বেস্ট ফ্রেন্ড একজন আরেক জনের সুখ দুঃখ সব কিছু ভাগ করে নেয়। তাহলে আমরা কি আমাদের র্বাথডে শেয়ার করতে পারব না। সব শেষে কথাটা তো ঐ টাই তোমার মানে আমার আমার মানে তোমার। এখন পার্টি করতে দেওনা প্লিজ।
তুষার – তোর কোনো কথা আমি ফেলতে পারছি। তুই সব সময় যে করেই হোক আমাকে দিয়ে তোর ইচ্ছে পূরণ করিয়েই নিবি।তাহলে আজ সেটা না হয়ে পারে নাকি। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে সবাইকে তোর কথার জ্বালে ফেলে দিস।
মিষ্টি –

— পার্টির সব আয়োজন মিষ্টি একাই করলো। বাসা সাজানো থেকে শুরু করে সব কাজ। পুরো বাসা ফুল দিয়ে সাজানো সাথে ছোট ছোট ক্যান্ডেল।বিভিন্ন কালারের নেট দিয়ে সিরি সাইট সাজানো হয়েছে। সাদা ও আকাশী কালারের অনেক গুলো বেলুন ফ্লোরে রাখা হয়েছে। সব কিছু একদম পারফেক্ট।

চলবে 💕