ঝরা_বকুলের_গল্প #পর্ব_৮ #মেহা_মেহনাজ

0
311

#ঝরা_বকুলের_গল্প
#পর্ব_৮
#মেহা_মেহনাজ
.
.
.
কাদামাটির ঘরে খালি পায়ে বকুল দৌড়ে গেল। এক ছুটে তুষারের ঘরের সামনে গিয়ে থামে। দরজা লাগানো নয় তবে চাপিয়ে রাখা। বকুল দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। এভাবে হুট করে চলে আসা ঠিক হয়নি। মানুষটা ঘুমুচ্ছে। সাত সকাল বেলা টেনে তুলে ‘বৃষ্টি হয়েছে’ কথাটা বলা কতটুকু যৌক্তিক? কিন্তু বকুলের বলতে ইচ্ছে করছে। ভীষণ বলতে ইচ্ছে করছে। বকুল সিদ্ধান্ত নিলো সে ঢুকবে। একবার ডাক দিবে, যদি তাতে তুষারের ঘুম ভাঙে তাহলে তো হলো। আর না ভাঙলে বকুল বেরিয়ে যাবে। বিরক্ত করবে না। যত কষ্টই হোক, অপেক্ষা করবে মানুষটা উঠার।

“ওইনে কি করোস?”

বকুল চমকিত হয়ে পেছন ঘুরলো। আরজু ভ্রু কুঁচকে সরু চোখে তাকিয়ে রয়েছেন।

সঙ্গে সঙ্গে বকুলের হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়।

“আ…আমি আ…আসলে…”

“কি? আমতা আমতা করোস ক্যান? কি করতাছিলি এইনে?”

বলতে বলতে আরজু এগিয়ে এলেন। ভীষণ জহুরি চোখে বকুল কে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। বকুল ঘাবড়ে গেল তবে যতটুকু সম্ভব উপর দিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করে গেল সাধ্যমতো।

“ভাইজানের কাছে আইছিলাম। ভাইজান কইছিল সক্কাল বেলা পূবের বিলে যাইবো। আমি যেন লইয়া যাই। হেয় তো একলা চিনে না কিছু। এই লিগা ডাক পাড়তে আইছি আম্মা। কিন্তু হেয় মন কয় ঘুমাইতাছে। থাউক, ঘুমাক। উডলে পরে নিয়া যামুনি।”

গড়গড় করে মাথায় যা মিথ্যে এলো তাই বলে দ্রুততার সঙ্গে জায়গা ত্যাগ করে ও। আরজু বেগম ওর যাওয়ার পানে রক্তিম চোখে তাকিয়ে রইলেন। মেয়ের মতিগতি তার কাছে বিশেষ ভালো লাগে না।

________

“ও বউ, নতুন বউ।”

রুনু বেগম বড় দুর্বল গলায় ডেকে উঠলেন। শাহজাদি কই গেছে, জানা নেই! গত দুইদিন যাবত হুট করে কেমন শরীর কামড়ানো জ্বরে পড়েছেন তিনি। জ্বর অল্প উঠে কিন্তু কেমন মাথা ঘোরায় খালি। রেশ থেকে যায় অনেকক্ষণ। আর একটা বিচ্ছিরি শরীর ম্যাজম্যাজ ভাব…রুনু বেগম অতিষ্ট হয়ে গেছেন। মুখের রুচি নষ্ট হয়ে গেছে। মেজাজ খিটখিটে লাগে। এর উপর নতুন যন্ত্রণা দিচ্ছে শাহজাদি। কোনো কাজে মন নেই মেয়ের। যতক্ষণ মোরশেদ ঘরে থাকে ততক্ষণ সে খুব ভালো। শান্ত, নম্র-ভদ্র। এটা ওটা কাজ হাতে করতেই থাকে। যেন মোরশেদের সামনে ভালো সাজার চেষ্টা। মোরশেদ বেরিয়ে গেলেই শাহজাদি বেরিয়ে যায়। এদিক ওদিক, এ বাড়ি ও বাড়ি, টিভি ও দেখে আবার অন্যের বাড়ি বসে। এদিকে নিজের ঘরে কি হচ্ছে, কত কাজ- সেসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় তার কই? গতকাল সেই দুপুরে গোসল করে কাপড় ধুয়ে শুকাতে দিয়েছিল দড়িতে। সেই কাপড় ভোর রাতের বৃষ্টিতে ভিজে চুপচুপ করছে। রুনু বেগম দেখেছেন, কিন্তু ছুঁয়েও দেখেননি। ভিজুক, ভিজে সব নষ্ট হয়ে যাক। শেষ হয়ে যাক। তাঁর বড় বিরক্ত লাগতে শুরু করেছে। সংসারটা গোল্লায় যাচ্ছে…

শাহজাদি এখনো আসেনি। সে কি বাড়িতে নেই?

রুনু বেগম ক্লান্ত অবসাদ মাখা দেহটা নিয়ে কোনোরকমে টেনেটুনে বিছানায় উঠে বসে পুনরায় ডাক দিলেন,

“আরে ও শাহজাদি…বউ!”

এবার শাহজাদি রুমে এলো। তার চোখে মুখে উপচে পড়া বিরক্তি।

“কি আম্মা? ডাকতাছেন ক্যান?”

“তোমারে ডাকনের আগে আমার অনুমতি নেওয়া লাগব?”

“না হেইডা না। দেখতাছেন যহন আইতাছি না, এর মানে কাম করতাছি কুনু। একটু পরে আইতাম তো।”

“কোন ঘোড়ার মাতাডা যে করতাছিলা তুমি, তা আমারে বুঝাইতে আইসো না। আমার পোলারেই বুজাইয়ো ওইসব।”

শাহজাদি চোখ বড় বড় করে বলল,

“আপনের পোলারে বুজামু মানে? আপনে কি কইতে চান? আমি আপনের পোলারে দেহাইয়া কাম করি? হেই না থাকলে কাম করি না?”

রুনু বেগম অবাক চোখে তাকালেন। বকুল কোনোদিন একটা উচিত কথাও রুনু বেগমের সামনে বলার সাহস পায়নি। আর সেখানে দুদিন এসেই এই মেয়ে তাকে চোখ গরম দেখায়!

“চোখ নামাইয়া কতা কও বউ! তোমার বাপ-মায়ে এডি শিখাইছে নাকি? আদব লেহাজ তো কিসু নাই। পারো খালি তর্ক করতে।”

“আমার বাপ-মা তুইল্যা কতা কইবেন না আম্মা। আপনে কি লিগা ডাকছেন আমারে?”

“আমি বিয়ান কাইল হইতে না খাইয়া আছি। হেই খবর রাখছো?”

“আপনের পেট, আপনে খাইছেন কি খান নাই এত খবর আমি রাখমু কেমনে? সংসারের কাজ কইরাই বাঁচি না।”

“তুমি আবার আমারে কামের দোহাই দেহাও বউ! আজ মোরশেদ আইয়া নেক। বড় উজাইছো তুমি। এত উজানি ভালা না।”

“কন গা। আমি কি ডরাই নাহি? অন্যায় না করলে ডরামু ক্যান?”

শাহজাদি মুখ ভেংচি কেটে বেরিয়ে গেল। রুনু বেগমকে সম্পূর্ন উপেক্ষা করে। যবে থেকে এই মেয়ে গর্ভবতীর খবরটা সবাই কে জানিয়েছে, তবে থেকে এর দাপটে বাড়িতে টেকা দায়। কিন্তু আজ যা হলো, অতিরিক্ত মাত্রায় হলো। এখনই যদি ঘরের বউকে না শুধরানো যায় তাহলে মোরশেদের কপালে বড় শনির দশা অপেক্ষা করছে।

শাহজাদি শ্বাশুড়ির ঘর থেকে বেরিয়েই রান্নাঘরে এসে ঢুকলো। আজ উঠোনে পানি। বাহিরের চুলা বৃষ্টির পানিতে ভিজে এক পাশ দিয়ে খসে পড়েছে। পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত ছিল। গতকাল তাড়াহুড়োয় আর মনে ছিল না। রান্নাঘরের উপরে আবার কাঠের তৈরি মাচা করা। সেখানে লাকড়ি রাখা হয়। শাহজাদি সন্তর্পণে একবার এদিক ওদিক চাইলো। তারপর সিড়ি বেয়ে মাচায় উঠে আসে। একটু ভেতরে এগিয়ে একটা নোংরা টুপলি জাতীয় ঝোলানো বস্তু থেকে ছোট শিশিটা বের করে কোঁচে ভরে নিলো। তারপর আবার নিচে নেমে এলো সাবধানে। নিচে নেমেই কোঁচের উপর একটা হাত রেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। শিশিটা ভর্তি তরল। তার এই সংসারকে নিজের হাতের মুঠোয় রাখার জন্য খুব কাজে দেবে!

নারিকেল কোড়ানো হচ্ছে। সন্ধ্যায় খেজুরের গুড় আর চালের গুড়া দিয়ে ভাপা পিঠা তৈরি করা হবে। মকবুলের আদেশ, মেহমান বাড়িতে, তার উপর শহরের ভালো জায়গার লোক, ভালো পয়সা দিয়ে থাকছে। একটু খাতির যত্ন না করলেই নয়!

বকুল উঠোনের এক কোণে পিড়ি পেতে বসে নারিকেল কোড়াচ্ছে আর বার বার বাড়ির দিকে তাকাচ্ছে। এখনো তুষারের সাড়াশব্দ নেই। বেলা কতটা চড়লো! এত অলস কেন এই ব্যক্তি? বকুলের পেটতা গুড়গুড় করছে। কখন একটু বলতে পারবে ও তুষারকে কথাটা!

আরজু বেগম কর্কশ কণ্ঠে বলে উঠলেন,

“সারাদিন কি নারিকেলই কোড়াইতে থাকবি নাকি? জলদি উঠ, থালাডি মাইজা লইয়া আয়। যা…”

বকুল অনিচ্ছাসত্ত্বেও উঠে দাঁড়াল। এমনই সময় দেখা গেল, ধসূর বর্ণের ট্রাউজার এবং কমলা গেঞ্জি গায়ে তুষার হাই তুলতে তুলতে বাড়ির বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। বকুল খুশি হলো। অনেক অপেক্ষার পর কাঙ্ক্ষিত বস্তু চোখের সামনে দেখলে মানুষ যতটা খুশি হয়, ঠিক ওমন। সে দিক দিশা ভুলে বেহুশের মতো প্রায় উঁচু কণ্ঠে বলে উঠল,

“ভাইজান, বৃষ্টি আইছিল। মেলা বৃষ্টি।”

তুষার বুঝতে পারল, বকুলের এহেন কথা বলার কারণ। সে মৃদু হাসে। দাওয়া থেকে নিচে নামতে নামতে প্রত্যুত্তর করল,

“বলছিলাম না, যার হৃদয়ে প্রেম আছে, সে প্রকৃতির ভাষা বোঝে।”

বকুল উপর-নিচ মাথা দোলালো।

ওদের কথোপকথনের আগা গোড়া আরজু বেগমের মাথায় ঢোকে না।

“কীয়ের বৃষ্টি? এই বকুল, কিতা হইছে?”

বকুলের হুশ ফিরে আসে এই সময়ে। আশেপাশে কে আছে না আছে সব ভুলে এভাবে চেঁচানো টা ঠিক হয়নি। এখন যদি তিল কে তাল বানায় এই মহিলা, তাহলে ওর কপালে দুঃখ আছে। অবশ্য ওর কপালে সবসময়ই দুঃখ থাকে। একটু বেশি, একটু কম- এই যা!

বকুল উত্তর করার আগে তুষার এগিয়ে এসে বলল,

“ওই গতকাল একটা বাজি ধরেছিলাম ওর সাথে যে আজ ভোর বেলায় বৃষ্টি হবে এই নিয়ে। বকুল বলল, হবে না। আমি বলেছিলাম হবে। তো আমি জিতলে বকুল আমাকে একটু বাইরে ঘুরিয়ে দেখাবে। আমি এখানে এসেছিই প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার জন্য। যেহেতু আমি জিতেছি, তাই আজ থেকে প্রতিদিন বকুল আমার সহকারী হিসেবে আমাকে নিয়ে বের হবে। আশা করছি, এতে আপনার আপত্তি নাই। আর নাহলে আমি কাকা কে বলব, সমস্যা নাই। কাকাকে বললে উনি ঠিকই অনুমতি দিবেন।”

আরজু বেগম হিসেব মেলালেন। মকবুল পইপই করে বলে দিয়েছেন, আর যাই হোক, যতদিন এই ছেলে এখানে আছে ততদিন যেন ভালো রকমের সেবা যত্ন পেয়ে যায়। তুষারের চেনা পরিচিত অনেক মানুষ রয়েছেন যারা স্রেফ শখের বশে বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে ঘুরে বেড়ান। তুষারের মাধ্যমে এরকম লোকেরা যদি মনপুরায় আসে তাহলে সবার আশ্রয় হবে মকবুলের বাড়ি। আর তারা কেউই মাগনা থাকবে না। তুষারের মতোই ভালো রকমের পয়সা দিয়ে থাকবে। তার উপর তুষারের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখলে কখন কোন বিপদে এই ছেলেকে সাথে পাওয়া যাবে, তাও তো বলা যায় না! সব মিলিয়ে তুষার এখন ওদের জন্য লাভজনক একটি অংক। তাই এর সাথে মিলমিশ করে থাকাই ভালো।

আরজু বেগম অনিচ্ছা নিয়ে বললেন,

“যাইয়ো নিয়া…”

বকুল অবাক হলো। ওর মনে হলো, ও কানে ভুল শুনেছে। আরজু বেগম কিভাবে অনুমতি দিয়ে দিলো! এটা সহজ কোনো কথা নয়।

তুষার বলল,

“তোমার কাজ থাকলে সব শেষ করে তৈরি থেকো। আমি খেয়ে দেয়ে তোমাকে নিয়ে বের হবো।”

বকুল বিস্ময় নিয়ে বলল,

“আইচ্ছা।”

তারপর নোংরা বাসন নিয়ে চলে গেল পুকুর পাড়ের দিকে। ও চলে যেতেই তুষারকে ডেকে উঠেন আরজু বেগম। বললেন,

“তোমারে একখান কতা কই। তুমি আমার নিজের পোলার মতোই। মনে কিছু নিও না।”

তুষার বলল,

“আপনি নির্দ্বিধায় বলতে পারেন।”

“আমার দুইখান পোলারে আমি যেই চোখে দেহি, তোমারেও হেই চোখে দেহি। তাই আমার চিন্তা হইলো। কইতাছি বুঝছো। বকুলের থেইকা দূরে দূরে থাইকো। বেশি বিশ্বাস কইরো না ওরে। ওর স্বভাব কিন্তু ভালো না। হাত টানের দোষ আছে। আইজ সক্কাল বেলা দেখতাছি, ওয় তোমার ঘরের সামনে দাঁড়াইয়া কি যেন করতাছিল। আমি গেছি পরে থতমত খাইয়া সইরা গেছে। আমার মন কয়, ওয় টেহা চুরি করবার লিগা… দেহো, তুমি আমার কতা বুজতাছো তো? ওর থেইকা ইট্টু সাবধানে থাইকো বাপজান…”

হুট করেই একটা চিনচিনে ব্যথা অনুভব করল তুষার ওর বুকের বাম পাশটায়। এরকম জীবন আর এরকম লোকজনের মাঝে বসবাস মেয়েটার?

কোনো একটা জবাব না দিলেই নয়, তাই তুষার বলল,

“কার থেকে আমাকে সাবধানে থাকতে হবে, আমি বেশ ভালো করে বুঝতে পারছি কাকী।”

তারপর আর একটি কথারও সুযোগ না দিয়ে তুষার এগিয়ে গেল পুকুর পাড়ের দিকে। পুকুর থেকে পাঁচ ফিট দূরে কল পাড় টা বসানো হয়েছে। মাঝে মাঝে কল চাপলে পানি আসে না। এই চাপ কলটায় এমনিতেও সমস্যা। প্রায়শই পানি তুলতে ঝামেলা হয়। তখন পুকুরের পানি দিয়ে সব কাজ সমাধা করা হয়। আজকেও কলে সমস্যা। সকাল থেকেই পানির নাম গন্ধ নেই। বকুল মাঝারি আকৃতির দুই বালতি পানি তুলে নিয়ে কল পাড়ের এক পাশে পিড়ির উপর বসে আপনমনে থালা বাসন পরিষ্কার করছে। কারো পায়ের আওয়াজ শুনে বকুল মাথা তুলে দেখে তুষার ওর দিকেই এগিয়ে আসছে।

বকুল বলল,

“পানি লাগবো?”

তুষার মাথা দোলালো,

“তুলে দিলে মন্দ হয় না।”

বকুল নিজের হাত ধুয়ে উঠে পড়ল।

“আইচ্ছা, ঢাকা শহরের সবাই কি আপনের মতো সুন্দর কইরা কতা কয়?”

“কই! না তো! আমি সবাইকে বলতে শুনিনি। বরং অনেক কম মানুষ বইয়ের ভাষায় কথা বলে।”

“ওহ! আপনার কতা কেমুন কঠিন কঠিন লাগে। অনেক শব্দ, কি কন না কন, বুজি না। তয় শুনতে ভালাই লাগে। তাই জিগাইলাম।”

“আচ্ছা বুঝলাম। আসলে গ্রাম শহরটা কোন ব্যাপার না। তুমি চাইলে যেকোনো জায়গায় থেকে, যেকোনো পরিবেশে বড় হয়েও সুন্দর করে কথা বলাটা রপ্ত করতে পারবে।”

“কি জানি…গেরামে তো সবাই যেমনে কতা কয়, হেমনেই শিখছি। কেউ কুনুদিন শিখায় নাই। এই লন, আপনের পানি…”

কথা বলতে বলতে বকুল পুকুর থেকে ছোট এক বালতি পানি তুলে দিলো। তুষার বলল,

“ধন্যবাদ।”

তারপর একটু থেমে পুনরায় বলল,

“তুমি সেই সময়ে অবাক হয়েছো যখন আমি তোমার সৎ মায়ের কাছে অনুমতি চেয়েছি, তাই না?”

বকুল স্বীকার করে,

“হ, হইছি। আরও হইছি হেয় রাজী হইছে তা দেইখা। হের রাজী হওনের কতাই না। কেমনে কি হইলো…যাউক, যা হয় ভালার লিগা হয়। আপনেরে ধন্যবাদ আসলে। আপনের উছিলায় আমি ইট্টু ঘুরার সুযোগ পামু।”

“ঘুরতে পছন্দ করো?”

“মেলা…”

“আর কি পছন্দ করো?”

“ঘুরতে ঘুরতে উড়তে বড় ভালা পাই। আর তারপর উষ্টা খাইয়া নিচে পইড়া গায়ের ছাল চামড়া ছিলতেও ভাল লাগে।”

বকুল হাসে। ওর কথার গভীরতা হুট করে তুষারের বোঝার সাধ্যের বাহিরে চলে যায়।

“মানে?”

বকুল চেপে গেল,

“কিছু না। আপনে আপনের কাম করেন, আমি আমার কাম করি।”

“বকুল! খালি কথা লুকাও মেয়ে…”

বকুল হাসে, তুষারের কথার পিঠে কথা ছুঁড়ে দেয় না। তুষারের মনে হয়, এত চমৎকার স্নিগ্ধ হাসি ও বহুদিন দেখেনি!

(চলবে)
★যারা পড়েন, সবাই রিয়েক্ট দিয়েন!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here