এক_তুমিতে_আসক্ত #পার্টঃ১৭ #Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

0
446

#এক_তুমিতে_আসক্ত
#পার্টঃ১৭
#Writer:#মারশিয়া_জাহান_মেঘ

অর্ষা এইবার রাগ নিয়ে বললো,”আপনার কি এখনো মাথা পেইন কমেনি? প্রান্তিক চোখ বন্ধ করে জবাবে বলে,’এতো অল্পতে বিরক্ত হয়ে গেলে হবে নন্দীনি এখনোতো পুরো জীবনটাই বাকি” প্রান্তিকের কথার পূর্ণ অর্থ বুঝতে পারেনি অর্ষা তবে প্রান্তিকের মুখে নন্দীনি ডাকটা বেশ কৌতুহল সৃষ্টি করেছে তার মনে। প্রান্তিক চোখ খুলে দেখে অর্ষা গভীর ভাবনায় মগ্ন। প্রান্তিক অর্ষার হাত ধরে টেনে বিছানায় বসায়। নিজেও একটু নড়াচড়া করে বসে। অর্ষা বললো,”কি হলো মাথা পেইন শেষ? তাহলে আমি যাই” অর্ষা উঠে যেতে চাইলেই প্রান্তিক অর্ষার হাত ধরে ফেলে। অর্ষা প্রশ্নান্তর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। প্রান্তিক আবার অর্ষাকে তার সামনাসামনি বসিয়ে বললো,”তোমাকে আমি যেতে বলেছি?

“না মানে..

” অর্ষা ধরো তোমাকে কেউ ছোট থেকেই ভালোবাসে৷ মনে করো তোমাদের বিয়েও হয়ে গেছে কিন্তু তুমি জানোনা। বড় হয়ে তুমি জানলে তোমার প্রতিক্রিয়া কেমন হবে? অর্ষা প্রান্তিকের মুখে এমন অদ্ভুত প্রশ্ন শুনে বেশ অবাক হলো। অর্ষা বুঝতে পারছেনা সে কি উত্তর দিবে। অর্ষার ভাবনার মাঝে প্রান্তিক আবার বলে,”কি হলো অর্ষা বলো”। অর্ষা এইবার জ্বিব দিয়ে ঠোঁট টা ভিজিয়ে নিয়ে বললো,”জানিনা কি হবে তবে ছোট সময় একটা মেয়ে বা একটা ছেলে কিইবা বুঝে? বড় হয়ে তাদের মতামত চেঞ্জ হতেই পারে। আর এখন কি ওইদিন আছে নাকি? যে এমন হবে আপনিওনা….আজব। প্রান্তিক অর্ষার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে আছে আর ভাবছে,”যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেইটাই হচ্ছে।

১২১.

সাহেরা বেগমের ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। মেয়েকে ছাড়া থাকতে। একমাত্র বেঁচে সম্বল তাইফা৷ সাহেরা বেগম আলমারি থেকে এলবামটা বের করে লুকিয়ে রাখা একটা ছোট ছেলে বাচ্চার ছবি বের করলো। মুহুর্তেই সাহেরা বেগমের চোখের পানি চকচক করে উঠলো। কারণ ছবিটা আর অন্য কারোর নয় তার নিজের ছেলের। এখনো কাঁদায় তাকে সেই বৃষ্টি ভেজা রাতে হসপিটালে তার ছেলে বেডে নেই এই খবরটা”। সাহেরা বেগম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভাবলেন,”কি জানি আমার ছেলেটা কোথায় আছে কেমন আছে.

১২২.

তাইফা টেবিলে বসতেই রিমির মা যেনো কেমন একটা চাহনি দিলো। তাইফা বেশ বুঝতে পারছে তাইফার এইখানে আসাটা রিমির মায়ের ঠিক ভালো লাগেনি। তাইফা খেয়ে দেয়ে রুমে এসে রিমিকে বলশলো,”রিমি এইখানের ভার্সিটির হোস্টেল আছে?
“না কেনো বলতো?

” না আসলে আমি উঠার জন্য”

“তুই আমার বাড়ি থাকতে হোস্টেলে কেনো উঠবি?

” তোর বাড়ি একদিন থাকবো দুইদিন থাকবো কিন্তু সবসময়তো থাকা সম্ভব নয়।

“কিন্তু..

” না রিমি কোনো কিন্তু নেই। চল একটা বাসা খুঁজি।

“এই শহরে একা একটা মেয়েকে কে ভাড়া দিবে?

” সেইটাই ভাবছি। কিন্তু খুঁজতেতো কোনো প্রবলেম নেই।

“হুম চল তবে।

১২৩.

প্রিয়ন্তি আর অর্ষা বসে আছে স্টাডি রুমে। প্রান্তিক তাদের একদম সামনে। প্রান্তিক রাগীভাবে তাকিয়ে প্রিয়ন্তি আর অর্ষাকে বললো,” তোরা একটা অংকও করিসনি? রেজাল্ট কি আনবি তোরা? আর অর্ষা..তোমাকেতো আমিইই..

“আরে ভাইয়া আগে কথাটাতো শুনুন। অংক করার সুযোগটা কোথায়? গ্রামে গিয়েছিলাম তো। অর্ষার সাথে প্রিয়ন্তিও বললো,” হুম হুম তাইতো।

“ওহ তাইতো তাইনা? অংকটা আমি সেনাই ঝুঁড়িতে যাওয়ার আগে করিয়েছি। এক্ষুনি অংকটা করে দে। প্রান্তিকের কথায় প্রিয়ন্তি আর অর্ষা একে অপরের দিকে ঘাবরে তাকায়। প্রান্তিক আড়ঁচোখে ওদের দিকে তাকিয়ে বললো,” প্রিয়ন্তি আর অর্ষা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াও।

“ক ক্ কেনো ভাইয়া?

” অর্ষা…

“ওফ দাঁড়াচ্ছিতো।

” কানে ধরে এক পা উঠিয়ে দাঁড়াও।

“কিই!

” বুঝেছি কানের ট্রিটমেন্ট করাতে হবে। অর্ষা প্রান্তিকের এমন কথা শুনে থতমত খেয়ে যায়। প্রিয়ন্তি কাঁদো কাঁদো ফেইস নিয়ে বলে,”ভাইয়া প্লিজ আজকে আমাকে ছেড়ে দাও কাল থেকে সবসময় অংক করবো সত্যি”

“তাতো হচ্ছেনা প্রিয় তোরা দুজন দাঁড়িয়ে থাক আমি গোসল সেরে আসছি। ওয়াশরমে গেলেও আমার চোখ এড়াতে পারবিনা কিন্তু সো…. এইটা বলে প্রান্তিক অর্ষার দিকে বাঁকা হেসে চলে গেলো।

১২৩.

” অনেকতো ঘুরলাম বাসাতো পেলাম না কি হবে এইবার তাফু?

“এই বাড়িটাতে ভাড়া না পেলে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে।

” কি ব্যবস্থা করবি?”

“আগে দেখি পরে বলবো চল”

“চাচা…এইখানে ভাড়া দেওয়া হবে?

” হুম হবে কিন্তু ব্যাচলর না।

“চাচা একটু দেখেন না প্লিজ।

” আচ্ছা দাঁড়াও একটু আমি বড় মেডামরে কইয়া আসি”। রিমি একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। যাইহোক যোগাযোগ তো হবে বাড়ির মালিকের সাথে। বুঝিয়ে বললে হয়তো বুঝবেন। এইসব ভাবতেই দারোয়ানের ডাক এলো ভেতরে যেতে।

১২৪.

“প্রিয় তুই যা। প্রান্তিকের কথায় প্রিয়ন্তির খুশি আর ধরে রাখে কে৷ সে রুম থেকে চলে গেলো। অর্ষা মনে মনে শুধু ভাবছে” একবার শুধু আমি রেহায় পাই তোকে আমি দেখে নিবো প্রিয়”।

“এইখানে আসো।

” ক্ কেনো ভাইয়া?

“আমার টিশার্ট চুজ করে দাও”

“কিই! আমি?

” হুম তুমি” কোনটা পড়বো?

“এইটা পড়েন ভাইয়া আপনাকে মানাবে বেশ”।

” ব্লু কালারের টা?

“হুম” আচ্ছা যাও। অর্ষা যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই প্রান্তিক শান্ত সুরে ডাকলো “অর্ষা”

“হুম ভাইয়া” প্রান্তিক অর্ষার সামনে গিয়ে হঠাৎ অর্ষার কপালে চুমু একেঁ দিলে৷ অর্ষা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে প্রান্তিকের দিকে। সে বুঝতেই পারছেনা সে কি প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here