তোমায়_পাবো_বলে
পর্ব_২৬
#নিশাত_জাহান_নিশি
“আসছি আমি। সৌরভের সাথে কথা বলেই তবে বাড়ি ফিরব। নিজের যত্ন নিও। আর মা, পিয়ালী, পায়েল সবার খেয়াল রেখো। কিছু না বুঝলে মা কে অবশ্যই ডেকে দিও।”
পেছন থেকে চেঁচিয়ে উঠে আমি আবদারের স্বরে লোকটাকে বললাম,,
“সাবধানে যাবেন পরশ। আর হ্যাঁ, দুপুরের লাঞ্চটা কিন্তু একসাথেই করব।”
ক্ষনিকের মধ্যে লোকটা চৌকাঠের ওপার থেকে ফিরে এসে ঝড়ের বেগে আমায় আলিঙ্গন করে ঘাড়ে দীর্ঘ এক চুমু খেয়ে বললেন,,
“উঁহু। না খেয়ে অপেক্ষা করতে হবে না আমার জন্য। আর কাজ শেষ হলেই আমি বাড়ি ফিরব। আবদারটা রাখতে পারি নি বলে কষ্ট পেও না ওকে?”
দাঁতে দাঁত চেঁপে আমি বাম হাতের কনুই দিয়ে লোকটার বুকের পাজর মাঝে সজোরে এক খোঁচা মেরে বললাম,,
“যাত্রা পথ থেকে ফিরে এলেন কেন? আমি বলেছিলাম ফিরে আসতে?”
লোকটা আমায় ছেড়ে বুকে হাত রেখে মুখটা কাঁচুমাচু করে বললেন,,
“তুমি ও দেখছি এসব যাত্রা পথ মানতে আরম্ভ করে দিয়েছ। একদম মায়ের মতো। মানে সংসার জীবনে ঢুকতে না ঢুকতেই প্রাচীন যুগের বউদের মতো প্রাচীন চিন্তাভাবনায় প্রভাবিত হতে শুরু করেছ?”
“শুনুন? এসব মুরুব্বিদের মনের বিশ্বাস। তাদের বিশ্বাস বোধ থেকেই যুগের পর যুগ এই প্রথা গুলো চলে আসছে। আর ভবিষ্যতে ও চলবে। মানতে প্রবলেম কি হুম? ক্ষতি তো হচ্ছে না তাই না? উল্টে না মানলেই আমি দেখছি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই আমাদের উচিত তাদের বিশ্বাস বোধকে যথেষ্ট সম্মান করা।”
পরশ শার্টের কলারটা ঠিক করে গাঁ ছাড়া ভাব নিয়ে বললেন,,
“হয়েছে হয়েছে। আর শুনতে চাইছি না এসব নীতিকথা। আসছি আমি। নিজের যত্ন নিও।”
পরশ মৃদ্যু হেসে রুম থেকে প্রস্থান নিলেন। লোকটার যাওয়ার পথে তাকিয়ে আমি মলিন হেসে বললাম,,
“আপনাকে ছাড়তে মোটে ও মন সায় দিচ্ছিল না পরশ। বিয়ের পর দিনই আপনাকে বাড়ি থেকে বের হতে হলো!”
দীর্ঘশ্বাস নির্গত করে আমি রান্নাঘরের দিকে অগ্রসর হলাম। রান্নাঘরের চৌকাঠে পা রাখতেই দেখলাম শ্বাশুড়ী মা হাঁড়ি, পাতিল মাজছেন! জিভ কেটে আমি দৌঁড়ে মায়ের হাত থেকে পাতিলটা ছিনিয়ে নিয়ে অর্নগল গলায় বললাম,,
“এসব আপনি কি করছেন মা? আমি আসছিলাম তো। আমিই তো হাঁড়ি পাতিল গুলো মাজতাম।”
মা রগচটা ভাব নিয়ে আমার হাত থেকে পাতিলটা কেড়ে নিয়ে বললেন,,
“তোমার এসব কালির কাজ করতে হবে না। কয়েকদিন যাবত গ্যাস থেকে কালি উঠছে। পাতিলের তলা কালিতে ভরে যাচ্ছে। এই কালিতে হাত কালো হয়ে যাবে তোমার। পরে তো নিশ্চয়ই বদনামটা আমারই হবে! যে শ্বাশুড়ী মা কালির কাজ করাতে করাতে বউয়ের হাত কালো করে ফেলেছে! বাইরের কেউ না, আমার নিজের ছেলেই এসে আমার বদনাম করবে!”
“আপনি ভুল ভাবছেন মা। কেউ কিছু বলবে না। আপনার ছেলে তো মোটে ও না। উনি উল্টো খুশি হবেন, আপনার হাতে হাতে কাজ এগিয়ে দিলে। দিন পাতিলটা আমাকে। আমি করে নিচ্ছি এসব।”
“তুমি অন্য কাজ কর। ফ্রিজ থেকে মাছ, মাংস বের করে ভিজিয়ে দাও। পিয়ালীর জন্য চিংড়ি মাছের মালাইকারি করব। মেয়েটা এমনিতেই অসুস্থ। তার উপর আজ মেরেছি, বকেছি। ভেতরটা অশান্তি লাগছে আমার। তাই মেয়েটার পছন্দের খাবারই আজ রান্না করব। আর পরশের জন্য মুরগির মাংস ঝাল করে রান্না করতে হবে। ছেলেটা আমার এই কয়েকদিনের ধকলে একদম শুকিয়ে গেছে। ভালো করে খাওয়াতে হবে ছেলেটাকে। আর শুনো? তোমার তো শিং মাছের ঝোল খুব পছন্দ না? আমি বাজার থেকে নিয়ে আসছি শিং মাছ। আপাতত তুমি ঝাল করে মুরগিটা রান্না কর। আমি বাজার থেকে ফিরে এসে চিংড়ি মাছ আর শিং মাছটা রান্না করব!”
বিস্মিত আমি! মা আমার পছন্দের খাবারের কথাটা ও মাথায় রেখেছেন? মানতে ভীষন কষ্ট হলে ও ঠিক তাই হয়েছে! তবে এতো এতো আইটেম রান্না করাটা আমার পছন্দ না। তার উপর মা বলছেন বাজারে যাবেন! খুবই দৃষ্টিকটু! আমি অন্তত চাই না আমার পছন্দকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে মা রোদে, ঘেমে, পরিশ্রম করে বাজারে যাক। গলা খাঁকিয়ে আমি নিম্ন গলায় মাকে বললাম,,
“মা আজ থাক না। আপনাকে কষ্ট করে বাজারে যেতে হবে না। পরশ যেদিন বাজার যাবেন ঐ দিন না হয় শিং মাছটা আনিয়ে নিবেন। আজ প্লিজ থাক মা। এমনিতেই আজ অনেক পদ রান্না হচ্ছে। অযথা এতো রান্না করে কি লাভ বলুন? আমরা আর কতটুকুই বা খাব?”
“উঁহু। পরে তো বলবে, শ্বাশুড়ী শুধু নিজের ছেলে এবং মেয়েদের খাবার দাবারের খেয়াল রাখেন। আমি ছেলের বউ বলে আমার দিকটা খেয়ালই রাখেন না। আমি এতো সমালোচনার মুখে পড়তে চাই না বুঝেছ? তাছাড়া, শ্বাশুড়ীদের তো এমনিতে ও দোষের শেষ নেই!”
ফিক করে হেসে দিলাম আমি। মা ভ্রু যুগল কুঁচকে আমার দিকে খড়তড় দৃষ্টিতে তাকাতেই আমি হাসি চেঁপে রেখে বললাম,,
“খল শ্বাশুড়ীর অভিনয়টা আপনাকে ঠিক মানায় না মা। আপনার অভিনয়ে আমার হাসি পায়, কান্না পায় না!”
বিকট শব্দে পাতিলটা বেসিনের উপর রেখে মা ময়লা হাতটা ভালো করে ধুঁয়ে রাগে গজগজ করে রান্নাঘর থেকে প্রস্থান নিচ্ছেন আর বলছেন,,
“বাজারে যাচ্ছি আমি। বেশিক্ষন লাগবে না ফিরতে। মসলা ব্ল্যান্ড করা আছে। ফ্রিজ থেকে নামিয়ে নাও। ফিরে এসে যেন দেখি আমার ছেলের মুরগির মাংসটা রান্না হয়ে গেছে!”
মায়ের যাওয়ার পথে তাকিয়ে আমি মিটিমিটি হেসে বললাম,,
“আপনি খুব বোকা মা। যতই খারাপ শ্বাশুড়ী মা সাজার অভিনয় করুন না কেন আপনার ভালো দিকটাই বার বার প্রকাশিত হচ্ছে! আমি ঠিক বুঝতে পারছি মা, আপনি যা করছেন সাময়িক রাগ বোধ থেকে করছেন। মন থেকে একটা কাজ ও করছেন না।”
ফ্রিজ থেকে মাছ, মাংস বের করে আমি ভিজিয়ে দিলাম। মসলার বক্সটা বের করে শুকনো জায়গায় রাখলাম। দুটো হাড়ি এখন ও ঘঁষার বাকি আছে। হাত লাগিয়ে আমি হাড়ি গুলো ঘঁষতে আরম্ভ করলাম। হাঁড়ি গুলো ঘঁষা শেষে আলু কাটতে কাটতেই আই থিংক মাছ এবং মাংসের বরফটা গলে যাবে। মসলাটা ও নরমাল হয়ে আসবে।
,
,
ঘন্টা খানিক বাদে। মুরগির মাংস রান্নাটা প্রায় শেষের দিতে এগুতেই হঠাৎ পেছন থেকে পায়েল ব্যস্ত গলায় আমায় ডেকে উঠল। পিছু ফিরে তাকাতেই দেখলাম পায়েল ফোনে স্ক্রলিং করছে আর আমায় শুধিয়ে বলছে,,
“ভাবী? মা কোথায়?”
“মা তো বাজারে গেছেন পায়েল। কেন? কিছু লাগবে তোমার?”
“না ভাবী, এমনি।”
উদ্বিগ্ন গলায় আমি বললাম,,
“আচ্ছা। পিয়ালী আপু কি করছেন এখন? সুস্থ তো কিছুটা? দেখ না, আমি তো রান্নার কাজ ছেড়ে যেতেই পারছি না আপুকে দেখতে।”
পায়েল হঠাৎ প্রসঙ্গ পাল্টে ফোনটা চোখের সম্মুখ থেকে সরিয়ে নির্বোধ হেসে বলল,,
“ভাবী? তোমার সাথে না আমার জরুরী একটা দরকার ছিল!”
প্রশ্নবিদ্ধ গলায় বললাম,,
“কি দরকার পায়েল?”
“হিমেশ ভাইয়ার ফোন নাম্বারটা হবে?”
ভ্রু যুগল কিঞ্চিৎ উঁচিয়ে আমি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে বললাম,,
“কেনো বল তো? কি এমন বিশেষ দরকার আছে হুম?”
পায়েল মাথা নুঁইয়ে লজ্জামিশ্রিত হাসি দিয়ে বলল,,
“তেমন বিশেষ কোনো দরকার না। এমনিতেই চাইলাম!”
ইতোমধ্যেই লক্ষ্য করলাম মা বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে রান্নাঘরের চৌকাঠে এসে দাঁড়ালেন। কপালে উদয়স্ত বিন্দু বিন্দু ঘাম রেখা মুছে মা অগ্রে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই হঠাৎ প্রকান্ড চোখে দৌঁড়ে এসে আমার পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালেন। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি তাজ্জব দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকাতেই মা এক টানে আমার গাঁ থেকে শাড়িটা খুলে ফ্লোরে ছুঁড়ে মারলেন। অমনি দেখতে পেলাম আমার শাড়ির আঁচলটায় সামান্য আগুন লেগে আছে! ধীর গতিতে আগুনটা পুরো শাড়িতে ছড়িয়ে পড়ছে। মুখে হাত চেঁপে আমি ঘর্মাক্ত শরীরে সাংঘাতিক ভয় নিয়ে চেতনা শক্তি হারানোর পূর্বেই মা আমায় শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরলেন। পায়েল বেকুব ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ভয়ে অনবরত কেঁপে কেঁপে উঠছে। মা দাঁতে দাঁত চেঁপে পায়েলকে বললেন,,
“কি করছিলি তুই এখানে? টয়া না হয় পিছন ঘুড়ে ছিল বলে আন্দাজ করতে পারে নি শাড়ির আঁচলে আগুনের আঁচ লেগেছে। তোর দৃষ্টি তো টয়ার দিকেই ছিল তাই না? দেখতে পাস নি তুই? মেয়েটার শাড়ির আঁচলে আগুনের তাপ লেগেছে? পোঁড়া পোঁড়া গন্ধ ও পাস নি?”
পায়েল প্রত্যত্তুরে শুকনো গলায় বলল,,
“বিশ্বাস কর মা। আমি একটু ও খেয়াল করি নি। কথার মধ্যে ডুবে ছিলাম প্রায়! শাড়িটায় যে ঐ পাশ দিয়ে আগুন লেগেছে বুঝতে পারি নি আমি।”
ভয়ে জানটা বের হয়ে আসার উপক্রম হয়েছে আমার। কন্ঠনালিতে শব্দরা দলা পেকে আছে। ধীর গতিতে আমি মাকে ঝাপটে ধরে কম্পিত গলায় বললাম,,
“মামামা। পাপাপানি খাব।”
মা ব্যতিব্যস্ত গলায় পায়েলকে বললেন,,
“দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি দেখছিস এখানে? পানির গ্লাসটা এগিয়ে দে মেয়েটাকে।”
ধ্যান ভেঙ্গে পায়েল গ্লাস ভর্তি পানি এনে আমার মুখের কাছে ধরতেই আমি গড়গড় করে পুরোটা পানি শেষ করে মায়ের কাঁধে মাথা ঠেঁকিয়ে দিলাম। ঐদিকে পায়েল ব্যস্ত শাড়ির আগুনটা নিভাতে। মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে নমনীয় গলায় বললেন,,
“আজ বিকেলে আমার সাথে শপিং এ যাবে। সালোয়ার স্যুট পড়বে এইবার থেকে। শাড়ি কাপড় অনেকেই সামলাতে পারে না। কি দরকার এত রিস্ক নিয়ে শাড়ি কাপড় পড়ার?”
মাথা নাঁড়িয়ে আমি সম্মতি প্রকাশ করতেই মা পায়েলকে ডেকে বললেন,,
“টয়াকে রুমে নিয়ে যা। আর শুন? আসার সময় পাশের বাড়ির রহিমাকে ডেকে দিস তো। মাছ গুলো কেটে দিলেই আমি রান্না বসাব।”
পায়েল তার বুকের ওড়নাটা আমার অর্ধনগ্ন শরীরে জড়িয়ে দিল। আমায় রুমে রেখে পায়েল পাশের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হল। ভয়ে এখন ও আমার শরীর থরথরিয়ে কাঁপছে। নিশ্বাস নির্গত করার বেগটা ও কুলাতে পারছি না। কেন জানি না আম্মুর কথা ভীষণ মনে পড়ছে! রান্না ঘরে কখন ও রান্নার কাজে যেতে হয় নি আমায়। সবসময় আম্মু, চাচীমনিরাই সব দিক সামলে নিয়েছিলেন। আমি এমনিতে ও অনেকটা বেপরোয়া স্বভাবের। হিতাহিত জ্ঞান খুব অল্প আমার মধ্যে। ধীরে, সুস্থে, গুছিয়ে কাজ করতে পারি না আমি। এর জন্য অনেক বকুনি শুনেছি আম্মুর কাছ থেকে। কতদিন হলো আম্মুর সাথে কথা হয় না, দেখা হয় না, আম্মুর কোলে মাথা রেখে কোন আবদার করা হয় না। পরিবারের সবাইকে ভীষণ মিস করছি। বাবার কথা ও খুব মনে পড়ছে। ইচ্ছে করছে এক ছুটে মা-বাবার কাছে ফিরে যাই। চাচা, চাচীমনি, চাচাতো বোনদের কাছে ফিরে যাই! তবে এসবের মাঝে একটা প্রশ্ন রয়েই যায়! মা-বাবা, বাড়ির বাকি সদস্যরা কি আদৌ আমায় মিস করছেন? আমার কথা মনে করে চোখের জল ফেলছেন?
এসব ভাবতে ভাবতেই জানি না কখন আমি ফুঁফিয়ে কেঁদে উঠলাম। শরীরের জোর খুঁইয়ে আসতেই নিস্তেজ শরীর নিয়ে আমি বিছানায় গাঁ এলিয়ে দিলাম। অর্ধ নগ্ন শরীরেই ঘুমিয়ে পড়েছি। গাঁয়ে কিছু জড়ানোর বোধটা ও মাথায় কুলায় নি!
,
,
মস্তিষ্কে কারো হাঁটার প্রকট শব্দ সক্রিয় হতেই আমি ফটাফট আঁখিযুগল খুলে ঘুম ভেঙ্গে উঠে বসলাম। আশেপাশে পূর্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে কাউকে অবলোকন করতে না পেরে আমি ব্যালকনীর দিকে দৃষ্টিকোণ করতেই দেখলাম দুপুরের কড়া রোদে পরশের অস্থির মুখখানায় নিদারুন দুশ্চিতার ভাব। জ্বলন্ত সিগারেটে ফুঁক দিয়ে লোকটা ব্যালকনী জুড়ে পায়চারী করছেন। কপাল কুঁচকে দেয়াল ঘড়িটার দিকে দৃষ্টি স্থির করতেই দেখলাম দুপুর ২ টা বাজছে ঘড়িতে। হুড়মুড়িয়ে বসা থেকে উঠতেই লক্ষ্য করলাম আমার অর্ধনগ্ন শরীরটা এখন মায়ের জামদানী কাপড়ে আবৃত। বুঝতে আর বিলম্ব হলো না, মা এসেছিলেন আমার রুমে! হয়তো আমার খোঁজ নিতে, আমাকে দেখতে। ঐ অবস্থায় আমাকে দেখেই হয়ত মা শাড়িটা শরীরে জড়িয়ে দিয়ে গেছেন! ঠোঁটের আলিজে ম্লান হাসি ফুটিয়ে আমি ব্যালকনীর দিকে কদম বাড়িয়ে অস্ফুটে স্বরে পরশকে পেছন থেকে ডেকে বললাম,
“পরশ?
পরশ প্রত্যত্তুরে নিম্ন গলায় বললেন,,
“হুম।”
“কখন এলেন আপনি? কোনো সাড়া শব্দ পেলাম না যে।”
পরশ সিগারেটটায় লাস্ট ফুঁক দিয়ে শার্টের প্রথম বাটনটা খুলে ম্লান গলায় বললেন,,
“এই তো কিছুক্ষন হলো। তুমি ঘুমুচ্ছিলে তাই ডেকে দেই নি।”
“বাহ্! আজ এত ভালো বর হয়ে গেলেন! হয়েছে টা কি?”
পরশ নিরুত্তর। দেখেই বুঝা যাচ্ছে মনে মনে লোকটা কোনো অভিসন্ধিতে ব্যস্ত। লোকটার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি চিন্তিত গলায় লোকটাকে শুধিয়ে বললাম,,
“আপনাকে এতো চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন পরশ? কিছু হয়েছে?”
আকস্মিকভাবে পরশ আমার চুলের ভাঁজে মুখ ডুবিয়ে আদুরে গলায় বললেন,,
“কোথায় আমাকে চিন্তিত দেখাচ্ছে হুম? আমার বউটা দেখছি ইদানিং একটু বেশিই বুঝছে আমাকে!”
“বেশিই তো বুঝব। আমি আপনাকে বেশি বুঝব না তো কে বুঝবে হুম? তাছাড়া আপনি অফিসের পোশাক না ছেড়েই সিগারেট ফুঁকতে শুরু করে দিয়েছেন না? মানে, সিগারেটের নেশা এতই গাঢ় আপনার?”
হাত থেকে সিগারেটটা ব্যালকনীর গ্রীল দিয়ে বাইরে নিক্ষেপ করে পরশ আমার ঘাড় থেকে মুখ উঠিয়ে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে আমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললেন,,
“আচ্ছা? পিয়ালীর সাথে হিমেশকে ঠিক কতটা মানাবে?”
#চলবে….?