অনুভূতি #Roja_islam #part 4

0
817

#অনুভূতি
#Roja_islam
#part 4
বর্ণ হাসি থামিয়ে আস্তে আস্তে বেলার কাছে যায়। বেলার মুখ টা দুইহাতে উঁচু করে ধরে।কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে বেলার মায়া ভরা মুখে বর্ণ তারপর। আলতো করে বেলার কপালে নিজের ঠোট ছুঁয়ে দেয়।সাথে সাথে বেলা কেপে উঠে আর এক ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় বর্ণ কে। বর্ণ একটু পিছিয়ে যায় ধাক্কা খেয়ে।
– কত্ত বড় সাহস হনুমান তোর। আমায় টাচ করিস? লুচু কোথাকার।
.
বর্ণ থ বনে গেলো বেলার কথায়।
– এই মেয়ে কে লুচু?
– এখানে আপনি ছাড়া কে আছে?
আমি আপনাকেই বলেছি।
– আমি লুচুর কি করলাম? – রেগে
– এ মা আপনি কিছু করেন নি তো। আমার কপালে চুমু কে দিলো? – অবাক হয়ে
– কপালে চুমু দিলে লুচু হয়?- বিষণ রেগে
– লুচু রা যাই করে না কেনো।তারা এটাই বলে এটা কে লুচু গিরি বলে না। ঠিক আপনার মতো…..
.
বর্ণ এবার রেগে ফায়ার।বেলার কথা শুনে।
বর্ণ বেলার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে।আর বেলা পিছাতে থাকে।
– এই… এই হনুমান। এগুচ্ছেন কেনো এভাবে?
– তুমি পিচ্ছাছ কেনো?তোমায় দেখাতে লুচু গিরি কাকে বলে?
– মা…..মায়ায়- মা…..মায়ায়ানে?
– মানে দেখতেই পাবে।
.
বেলা ভয়ে পিছাতে পিছাতে শাড়ি পেঁচিয়ে পরার কারনে ঠাস করে পরে যায়।
– আয়ায়ায়ায়ায়া..আম্মুউউউউউউ।
– এই চুপ। – বেলার মুখ চেপে ধরে বর্ণ।
– আমি ব্যথা পাইছি তো…
-এখুনি চলে যাবে।- বাকা হেসে
– কিভাবে?
– দেখতেই পাবে চলো।
.
বলেই বর্ণ বেলা কে কাঁধে তুলে রুমে এনে দাড়া করায়। আর এক টানে বেলার পরনের শাড়ি খুলে নেয়।
– আম্মুউউউউ এই হনুম…..
.
আর কিছু বলার আগেই বর্ণ বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে। বেলার চোখ দুইটা মুহুর্তে রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে যায়। বেলা হাত দিয়ে ইচ্ছে মতো বর্ণ কে চিমটি,কিল,ঘুষি দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু বর্ণ তার সুন্দরী বউ কে কিছ করতে ব্যস্ত।১০ মিনিট পর ছেড়ে দেয় বর্ণ। বেলা নিচে বসে পরে কান্না করতে থাকে আর ঠোট মুছতে থাকে।বর্ণ নিজে কি করেছে নিজেই বুঝতে পারছে না।
– কত খারাপ লোকের সাথে বিয়ে দিয়েছে হারামি বাবা। আমি থাকবো না এখানে লুচু ওর সাথে। চলে যাবো হস্টেল। – কাঁদতে কাঁদতে
.
বলেই বেলা উঠে হাটা দিতে নিলেই। বর্ণ ধাক্কা দিয়ে বেডে ফেলে দিয়ে বেডের সাথে চেপে ধরে বেলা কে।
– ছাড় বলছি আমাকে আমি চিল্লাবিল্লা করবো। লুচু কোথাকার লুচু।
– আবার আদর পেতে চাইছ??লুচু বলছ কেনো? লুচু বলেছ দেখেই কিন্তু এমন করেছি। – দাতে দাত চেপে
– তোর আদর নিয়ে তুই বসে থাক সালা হনুমান – মনে মনে
– না… না আমি আর বলবো না ছেড়ে দিন প্লিজ।
– মনে থাকবে?
– হ্যা থাকবে।
– শাড়ি পরিয়ে দি চলো।
-কিহহহ
– আবার কি? আবার আদর লাগবে। – চিল্লিয়ে
– না না কিছু লাগবে না পরিয়ে দিন। – অসহায় হয়ে।
– ওকে আমি। রাহি কে ডেকে দিচ্ছি তোমায় শাড়ি পরিয়ে দিবে।
– আচ্ছা।- খুশি হয়ে।
.
বর্ণ গিয়ে রাহি কে পাঠায়।আর নিজে গিয়ে ডাইনিং এ বসে। রাহি রুমে এসে শুনে।
বেলা বর্ণ ওর চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে।আর একা একাই যা তা বক বক করছে।
– হাহা ভাবি। আমার ভাইকে বকা দিচ্ছো তুমি?
– ক..কই… কই না তো আমি শুধু। হনুমান টা কে কুচি কুচি করে আমার বিল্লি কে খাওয়াবো বলছিলাম।
– হাহাহা ভাবি ইউ আর সো ফানি।
– এই তুমি বলে দিবে না তো ঐ হনুমান লুচু কে। তাহলে কিন্তু তোমার খবর আছে।
– না না আমার খবর করতে হবে না আমি বলবো না।
ওকে।
– হ্যা। বাট তুমি কে হও ঐ হনুমান এর?
– হাহা।আমি ঐ হনুমান এর বোন গো আমার সুন্দরী ভাবি।
– বেলার গাল টেনে।
.
বেলা চুপ করে গেলো।
– ইশ আমি কত টা বোকা। বোনের সামনে ভাইকে কুচি কুচি করবো বলছি। আল্লাহ কাউ কে জেনো এবারের মতো না বলে। আর বলবো না পচা কথা আমি – মন মনে।
.
রাহি বেলা কে চুপ থাকতে দেখে বলে।
– কি ভাবি ভয় পাচ্ছো। আমি কাউ কে বলে দিবো? আমি বলবো না খুশি।
– হু। – বেলা জোরপূর্বক একটা হাসি দেয়।
– এদিকে এসো দাড়াও আমি পরিয়ে দি শাড়িটা। ভাই কিন্তু নিচে ওয়েট করছে লেইট হলে বকা দিবে।
– কে ভয় পায় তোমার ভাই কে। অসহ্য। – মনে মনে।
.
তারপর
রাহি সুন্দর করে বেলা কে শাড়ি পরিয়ে দেয়।
– ভাবি ভাইয়া চোখ ফেরাতে পারবে না আজ তোমার থেকে। তোমাকে হুর দের মতো লাগছে একদম।
-লজ্জা কেনো দিচ্ছ আমাকে? – হেসে
– হাহা ভাবি ইউ আর সো কিউট।
চলো আর সাজাবো না তোমায়। শুধু শাড়ি তেই মেরে ফেলবে সবাই কে।
– হি হি। তোমার ভাইটা মরলেই হইছে আমার। – বলেই মুখে হাত দিলো বেলা।
– হুম ভাবি বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। আমার ভাইটা এতোটাও খারাপ না।
– সরি .. এমনি বলে ফেলেছি। – কাঁদকাঁদ হয়ে।
– আচ্ছা নিচে চলো আর সরি বলতে হবে না।
.
রাহি বেলা কে নিয়ে নিচে যায়। বেলা একটু ভয়ে আছে।বর্ণ এর বাবা না জানি আবার কি বলে বেলা কে। কিন্তু বেলা তো জানে না তার শ্বশুর কোন সময়ই চলে গিয়েছে।
– আল্লাহ এই হারামি শ্বশুর এর বকা থেকে বাঁচাইয়ো তুমি আমাকে। আমি ছোঁট মানুষ স্টক করে ফেলবো পরে। – মনে মনে
.
নানান চিন্তা করতে করতে রাহির সাথে ডাইনিং এসে দেখে শুধু বর্ণ বসে আছে। দেখেই বেলার মাথা গরম হয়ে গেলো।
– ভাবি তুমি ভাইয়ার সাথে ব্রেকফাস্ট কর। আমি কলেজ গেলাম। ওকে?
– ওকে বাই
– ভাই আমি গেলাল।
– বাই কালি।- ফোন টিপতে টিপতে
– বজ্জাত ভাই।
.
রাহি যেতেই বেলা তেড়ে গেলো বর্ণ এর কাছে।
– এই… এই হনুমান?
.
বর্ণ পাশে তাকিয়েই দেখে বেলা দারিয়ে আছে। বর্ণ হা করে তাকিয়ে আছে বেলার দিকে। বেলা লাল টুকটুকে একটা শাড়ি পরেছে মুখে কোনো সাজ নেই। স্নিগ্ধ লাগছে একদম বেলা কে। চুল গুলো ছাড়া কপালের ছোট ছোট চুল গুলা চোখে মুখে বিচরণ করছে।মুগ্ধ হয়ে দেখছে বর্ণ।বেলা কোন সময় থেকে ডাকছে। বর্ণ এর কানেই যাচ্ছে না। বেলা আর না পেরে সামনে গরম কফির মগে বর্ণ ওর এক আঙুল চুবিয়ে ধরে সাথে সাথে বর্ণ ওর হুস ফিরে।
– আউউউউ। আর ইউ মেড? কি করলে এটা???
– কতক্ষণ ধরে ডাকছি হ্যা? জেগে জেগে ঘুমাচ্ছিলেন আপনি।আমি কি করবো?
– তাই বলে। গরম ফফিতে আঙুল চুবিয়ে দিবা
?- রেগে।
– হ্যা দিবো এখন বলেন আপনার বাবা কই?
– কেনো বাবা কে দিয়ে কি কাজ তোমার? ওহ বাবাকে বলবে বুঝি আমি লুচু।
– যেটা জিজ্ঞেস করছি ঐ টা বলেন? – রেগে
– বাবা দেশের বাইরে গিয়েছে বিজনেস এর কাছে।
– হাতে ফু দিতে দিতে।
– তাহলে আমাকে কেনো শাড়ি পরিয়েছেন? বাবা তো চলে গিয়েছে..
– বাবা চলে গিয়েছে বলে আমি তোমাকে শাড়ি পরাতে পরবোনা?
– না পরবেন না।
– পরতে তো তোমাকে হবেই। আমি যা বলবো তাই করতে হবে তোমাকে। – খুব রেগে
– না আমি ডিভোর্স চাই। আমি থাকবো না এ বাড়িতে। শুনে নিন আমায় জোর করে বিয়ে দিছে আমার হারামি বাবা। আমি এই বিয়ে মানি না।আমি নিয়ান কে ভালোবাসি…….
.
বেলা অন্য কাউকে ভালোবাসে শুনে বর্ণ রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে। ঠাসসসস এক চড় বসিয়ে দেয় বেলার গালে। বেলা ছিটকে পরে যায় ফ্লোরে।
বর্ণ বেলা কে টেনে তুলে দু বাহু ধরে চিল্লিয়ে বলতে থাকে।
– এই বিয়ে কি পুতুল খেলা যে তোর ডিভোর্স চাই? বল?
.
বেলা ভয়ে চুপসে গেছে। বর্ণ এর চোখ মুখ দেখে। আর কথা বলতে পারছে না বেলা। শুধু কেঁদে যাচ্ছে।
– কি হলো কথা বলছিস না কেনো এখন।
ওকে ফাইন আমি ই বলি আমি দিবো না তোকে ডিভোর্স। আমার তোকে চাই।চাই মানে চাই।
– আমাকে বাবা সহ্য করতে না পারলেও। কোনো সময় হাত উঠায় নি আমার উপর কিন্তু আপনি? আপনি সত্যি খুব বাজে।- কাঁদতে কাঁদতে
.
বেলার কথা শুনেই বর্ণ বেলা কে ছেড়ে দেয়। বেলা দৌড়ে উপরে চলে যায়।
– উফফ রাগের মাথায়। ছোট মেয়ে টা কে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আমার এমন করা ঠিক হয়নি। সত্যিই তো বিয়ে টা জোর করে হইছে।কিন্তু বেলা অন্য কাউকে ভালোবাসে?
.
কিছুক্ষন পর।
বর্ণ বেলার জন্য খাবার সার্ভ করে নিয়ে উপরে যায়
চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here