দর্পহরন #পর্ব-১

0
1283

#দর্পহরন
#পর্ব-১

বর্ষীয়ান নেতা ইব্রাহিম সালিমের একমাত্র কন্যা শুভ্রাকে এয়ারপোর্ট থেকে অপহরণ করা হলো। মেয়েটা চেয়েছিল নিজের পরিবারকে সারপ্রাইজ দিতে। তাই কাউকে না জানিয়ে দীর্ঘ দিন পর চুপি চুপি দেশে ফিরেছিল নিজের পঁচিশতম জন্মদিন পালনের উদ্দেশ্য নিয়ে। একদম চুপি চুপিও নয়। একজনকে জানিয়েছিল। কিন্তু বুঝলো একজনকে জানানো খুব ভুল হয়েছে। বুঝলে কি হবে তখন আর কিছু করার নেই শুভ্রার।

জ্ঞান হারানোর ঠিক আগ মুহূর্তে শুভ্রা বুঝলো সে অপহৃত হয়েছে। বুঝতে কিছু সময়ের দেরীর কারনে অপহৃত শুভ্রা জ্ঞানহীন পড়ে রইলো একটা টয়োটা করোলার ব্যাকসিটে। অথচ এই কিছুক্ষণ আগেও শুভ্রা ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলো। ওকে দেখে বাবা কি বলবে সেটা ভেবে নিজের মধ্যে উত্তেজনা টের পাচ্ছিল। সেই মেয়েটাকেই এখন কিনা মৃতের ন্যায় পড়ে থাকতে হচ্ছে! জ্ঞান থাকলে বোকামীর জন্য নিজেকে কষে ধমক দিত শুভ্রা।

আধাঘন্টা আগেও নিজেকে বেশ বুদ্ধিমতী ভাবছিল সে। একা একা সব কাজ করতে পারে ভেবে তার আত্মবিশ্বাসের পারদ আকাশ ছুঁয়েছিল। আধাঘন্টা আগে সব ফর্মালিটি পূরণ করে যখন লাগেজ নিয়ে
বেড়িয়ে এলো তখনই লোকটাকে চোখে পড়েছিল শুভ্রার। ওর নামের প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে ছিলো। মুখে মাস্ক পরে থাকা লোকটাকে চিনতে পারেনি শুভ্রা। ও দেশে আসছে এই খবরটা ছোট চাচ্চু বাদে আর কাউকে জানায়নি। তাই চাচ্চু পাঠিয়েছে ভেবে খুশিতে আটখানা হয়ে শুভ্রা লোকটার দিকে এগিয়ে যায়।

লোকটা লাগেজ গাড়িতে তুলে রেখে গাড়ির দরজা খুলে দিল শুভ্রাকে। ঠিক তখনই কথাটা মনে পড়লো। চাচ্চু বলেছিল, নিজে আসতে না পারলে বিশ্বস্ত কাউকে পাঠাবে। মাস্ক পরে নিজেকে আড়াল করবে এমন কাউকে কি পাঠাবে চাচ্চু? প্রশ্নটা মনে এলেও যাচাই করার সুযোগ পেল না শুভ্রা। দেরি হয়ে গেছে ততক্ষণে। কেউ একজন তার পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলো হয়তো৷ কিছু একটা ঠিক নেই ভেবে শুভ্রা চিৎকার করবে ঠিক এমন সময় সেই কেউ একজন তার মুখে আলতো করে রুমাল চেপে ধরলো। ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে শুভ্রা ঢলে পড়লো রুমাল চাপা দেওয়া মানুষটার কাঁধে। লোকটা আশপাশ দেখে নিয়ে তড়িঘড়ি শুভ্রাকে গাড়ির ভেতর ঠেলে দিলো। ভেতরে বসে থাকা একজন ওকে ধরে সিটে শুইয়ে দিলো। জ্ঞান হারিয়ে চোখ বন্ধ করার আগে কেবল শুনতে পেলো-“প্যাকেট পিকআপ ডান।”

★★★

এই মুহূর্তে ইব্রাহিম সালিম বসে আছেন দলীয়প্রধানের কার্যালয়ে। ভীষণ ব্যস্ত কার্যালয়ে উৎসব মুখর পরিবেশ বলা চলে। কারণ সামনে নির্বাচন আসছে। কাকে কোন এলাকা থেকে নমিনেশন দেবে সেটা নিয়ে জোর আলোচনা, সমালোচনা, তদবির চলছে। ঘনঘন দলীয় মিটিং হচ্ছে। নমিনেশন পেতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের নিজেদের এলাকায় জনপ্রিয়তা কেমন সেসব নিয়ে যাচাই বাছাই চলছে গোপনে।

তবে ইব্রাহিম সালিমের এসব নিয়ে ভাবনা নেই। তার নির্বাচনী এলাকায় সে দীর্ঘদিন ধরে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। আধিপত্য বিস্তার শুরু হয়েছিল তার বাবা ইব্রাহিম খলিলের হাত ধরে। তিন দশক আগে তিনি এলাকার সাংসদ ছিলেন, এরপর বড়ভাই ইব্রাহিম মোর্শেদ। তারপর তিনি বিগত একদশকের বেশি সময় ধরে তার এলাকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত সাংসদ। রীতিমতো পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রসিদ্ধ ইব্রাহিম সালিম তাই নমিনেশন পাওয়া নিয়ে ভাবে না মোটেও। সে জানে তার এলাকায় তার থেকে যোগ্য প্রাথী আর কেউ নেই। আগামী এক দশকেও হবে না।

তুখোড় রাজনৈতিক হিসেবে আলাদা খ্যাতি আছে ইব্রাহিম সালিমের। বাবার রাজনৈতিক ক্ষমতা আর পারিবারিক প্রতিপত্তিকে ব্যবহার করে নিজের আলাদা জায়গা তৈরী করেছে ইব্রাহিম সালিম। সে চাইলে তার এলাকা অচল করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যে এলাকা ঢাকার অদূরে এবং শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত। তাই দলে তার আলাদা সন্মান আছে। সিনিয়র জুনিয়র সকলে তাকে যতনা সমীহ করে তার চেয়ে বেশি করে ভয়। স্বয়ং দলীয় প্রধান তাকে সমঝে চলে।

সেসব ভেবে মনে মনে তৃপ্তির ঢেকুর তোলে ইব্রাহিম সালিম। আত্মবিশ্বাস ঠিকরে পড়ে তার চেহারা আর আচরণে। আজ দলীয় প্রধান ডেকেছে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে। সে জানে তার মতামত বিশেষ গুরুত্ব রাখে দলীয়প্রধানের কাছে। ইব্রাহিম সালিম বীরদর্পে বসে আছেন অতিথি কক্ষে। দলীয় প্রধানের পিএ খোকন কবির উঁকি দিলো-“স্যার, ম্যাডাম অপেক্ষা করতেছে আপনার জন্য।”
“ঘটনা কি কবির? আজকে হঠাৎ ম্যাডাম ডাকলো কেন? জানো কিছু?”
কবির হাত কচলায়-“আমি ছোট মানুষ স্যার, ম্যাডামের মনের খবর কিভাবে জানবো?”
ইব্রাহিম সালিম মাথা দুলালেন। আজ ম্যাডামের ব্যক্তিগত কক্ষে ডাক পড়েছে দেখে খানিকটা অবাক হলেন। তাহলে কি ম্যাডাম কোন ব্যক্তিগত সমস্যায় পড়ে তাকে ডেকেছে? অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। ইব্রাহিম সালিম রুমে ঢুকে সালাম ঠুকলেন। ম্যাডামের হাতে একটা বই। সেটা থেকে নজর সরিয়ে একবার দেখলেন তাকে-“কি খবর সালিম? শরীর কেমন আছে তোমার?”
বইয়ের নামটা দেখে নিলো ইব্রাহিম সালিম। ড্রেমোক্রেসি এন্ড হিউম্যান রাইটস। মুচকি হেসে সামনের চেয়ারে বসলো-“ভালো আছি আপা। আপনার শরীর কেমন?”
ম্যাডাম মাথা নাড়লেন। কিছুক্ষণ দু’জনেই চুপ করে রইলো। ম্যাডাম নিমগ্ন হয়ে বই পড়ছে। সালিম তাকে বিরক্ত করতে পারলোনা। মোবাইল ব্যবহারের উপায় নাই, ম্যাডামের সামনে এমন আচরণ শোভন দেখায় না। অনেকটা সময় এভাবেই পার হলো। ইব্রাহিম সালিম অধৈর্য্য হয়ে উসখুস করেন। তখনই ম্যাডাম বই বন্ধ করে চোখ থেকে চশমাটা খুললেন ধীরে। চোখ বুঁজে বসে রইলেন। কিছুক্ষণ পর বললেন-“সালিম, তোমার এলাকার খবর কি? সব ভালো? রেপ কেসটার কোন সুরাহা হলো? আসামি ধরা পড়েছে? আর ওই যে স্কুল ছাত্র ছেলেটা মারা গেলো সেই মামলার অগ্রগতি কি?”
ইব্রাহিম সালিম ঢোক গিললেন কয়েকবার। ম্যাডাম আসলে আজকে কি কারণে ডেকেছে তাকে? এসব খবর তার কানে দিলোই বা কে? জবাব না পেয়ে ম্যাডাম চোখ খুললেন-“কথা বলছো না কেন সালিম?”
“আপা, এগুলো তো পুরনো খবর। এলাকায় সব এখন ঠান্ডা। ভালোভাবে চলছে সব। নির্বাচন নিয়ে কিছু ভাববেন না।”
ম্যাডাম খুব ধরে লম্বা শ্বাস নিলেন। ঘোলা চোখে সালিমকে জড়িপ করলেন। সে দৃষ্টির মানে বুঝে পেলো না সালিম।
“খবর পেয়েছি তোমার এলাকায় জনঅসোন্তোষ চরমে উঠেছে। সামনে ভয়ে হয়তো কেউ কিছু বলতে পারে না কিন্তু ভোট হলে তোমার ভরাডুবি হবে। পরপর কয়েকটা ইন্সিডেন্ট হয়েছে তোমার ছত্রছায়ায় এবং একটারও বিচার হয়নি। এমনকি ভুক্তভোগীদের মামলা নিতে চায়নি থানা। এরকম চললে কি ক্ষমতায় থাকতে পারবো বলো তো?”
ষোলতে চলা এসির কোল্ড টেম্পারেচারেও দরদর করে ঘামে সালিম। ম্যাডাম কি সত্যিই এসব বলছে তাকে? নিজের কানটা আঙুল দিয়ে ঘুচড়ে দিলেন। নাহ কান ঠিকই আছে। ম্যাডাম তার দিকে তাকিয়ে আছেন। সালিম নজর ফিরিয়ে নিলো।
“ভাবছি এই অবস্থায় তোমাকে নমিনেশন দেওয়া ঠিক হবে না। তোমার এলাকা আমার জন্য খুব জরুরি এটা জানো তো? আমি কিছুতেই ওই আসন হাতছাড়া করতে চাই না। পরবর্তী মেয়াদে তোমার এলাকা নিয়ে অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে মাথায়। প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। এখন তুমি বলো এই অবস্থায় কি উচিত হবে হার নিশ্চিত জেনেও তোমাকে নমিনেশন দেওয়া?”
ইব্রাহিম সালিম নিশ্চুপ। সে জানতোনা আজ এ ধরনের কোন আলাপ হবে। তাই যুৎসই কোন জবাব না পেয়ে চুপ করে রইলো। ম্যাডাম পুনরায় মুখ খুললেন-“তুমি আমার ভাইয়ের মতো বলেই তোমার সাথে খোলাখুলি আলাপ করলাম। আমি চাইনা তোমার সাথে এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র মনকষাকষি হোক।”
“আপনি যেমন বলবেন তেমনই হবে আপা।”
বিরবির করলো ইব্রাহিম সালিম। ম্যাডাম সে কথা শুনে খুশি হলেন কিনা বোঝা গেলোনা। সালিম টলতে টলতে ম্যাডামের রুম থেকে বেড়িয়ে এলো। ভুতগ্রস্থের মতো গাড়িতে উঠলেন। তার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না ম্যাডাম আপা তাকে এই কথা বলেছে। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ইব্রাহিম সালিমকে এই মুহূর্তে ভাঙাচোরা এক মানুষ মনেহচ্ছে।

★★★

মোবাইলে রিং হওয়ার সাথে সাথে রিসিভ হলো। তাড়াহুড়োয় ফোনটা হাত থেকে মেঝেতে পড়তেই মেজাজ খারাপ হলো রণর। এবার খুব সাবধানে ফোনটা তুলে কানে ঠেকালো। ওপাশ থেকে কানে যেন মধু বর্ষন হচ্ছে। অন্তত রণকে দেখে তাই মনেহচ্ছিলো। কথা শুনতে শুনতেই তার ঠোঁটের হাসি বিস্তৃত হচ্ছিল।
“আচ্ছা, ঠিকাছে। বাকীটা আমি সামলে নিতে পারবো। তোমরা এখন যাও।”
ফোন কেটে দিয়ে উঠে দাড়ালো রণ। নিজের পচ্ছন্দের গানের কলি ভাজতে ভাজতে আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো। আঙুল দিয়ে খানিকক্ষণ চুল ঠিক করলো, মুখ দেখলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে। কিছু কি বোঝা যায়? নিজেকে প্রশ্ন করে উত্তর খুঁজলো কিছুক্ষণ। উত্তরেটা না বোধক হতেই রণ আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বকে আঙুল তুলে বন্দুকের ন্যায় তাক করে গুলি ছুড়লো-“নিজেকে সামলে রাখিস রণ, চারিদিকে অনেক শত্রু তোর। শত্রুদের মধ্যেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বুঝলি?”
আয়নার রণ জবাব দিলো-“বুঝলাম। তুইও বুঝে নে রণ বদলে গেছে। এই রণ ভীড়ে বাঁচতে শিখে গেছে। যত অন্ধকারই থাক আলো জ্বালতে ভুল হবেনা তার।”
বলেই মুচকি হাসলো সে। মন দিয়ে আরো কিছুক্ষন নিজেকে দেখলো। গায়ের আঁটোসাটো গেঞ্জিটা খুলে ফেললো। আয়নায় নিজের মাসলঅলা শরীরটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো। পাঁচ ফিট এগারো উচ্চতার পেটানো শরীরটা বেশ আকর্ষনীয় দেখাচ্ছে। রণর কাছের মানুষগুলো ওর এই ট্রান্সফর্মে ভীষণ অবাক হয়। বছর পাঁচেক আগেও এতোটা ফিগার কনসাস ছিলোনা রণ। হঠাৎ করে জিম করতে শুরু করলে ওর মা হোসনে আরা বেগম জলি ভীষণ অবাক হয়ে ওকে বলেছিলেন-“তুই তো এমনিতেই অনেক ফিট বাবাই, তোর জীম করার কি দরকার?”
রণ মিষ্টি হেসে মাকে জবাব দিয়েছিলো-“মা জিমটা আমি শরীর না মনের ফিটনেসের জন্য করছি। মনের দিক দিয়ে আমি এখনো শিশুর মতো সরল আছি, ঝামেলা দেখলে ঘাবড়ে যাই। জিম করে দেখি সেটা কাটানো যায় কিনা। ওই যে বলে না, শরীর আর মন একে অপরের পরিপূরক। শরীর ফিট হলে মনটাও আস্তে আস্তে ফিট হতে শুরু করবে।”
জলি ছেলের কাছে এসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেছিলো-“পাগল ছেলে! তোর মন তো বরাবরই ফিট। আজকাল এমন মনের দেখা পাওয়া যায় না। সকলের ময়লা জমা মন বলেই তাদের কাছে তোরটাকে আনফিট মনেহয়। কিন্তু মনে রাখিস তোর পরিস্কার মনটাই তোর বড় শক্তি। ওটাই তোকে সকলের চেয়ে আলাদা করবে। তোর বাবাও কিন্তু এরকমই ছিলো। মনটা পাল্টে ফেলিস না বাবাই, সবাই এরকম হতে পারে না চাইলেও।”
ভাবতে ভাবতে হাসলো রণ। তার মা বাবার শিক্ষা এ যুগে একেবারে অচল। এখন মানুষ বেশি সন্মান পেলে ভ্রু কুঁচকে তাকায়, ভদ্র ব্যবহারকে দূর্বলতা ভেবে সুযোগ নিতে চায়। তাই বলে রণ অভদ্র হতে চায় না। ও কেবল মানুষ ভেদে সঠিক আচরণ করতে চায়। যে যেমন তার সাথে তেমন আচরণ। যদিও এটা বেশ কঠিন কাজ। বিশেষ করে তার মতো মানুষের জন্য তো আরো কঠিন। ব্যবসায়ী এবং মুক্তিযোদ্ধা বাবা আর স্কুল শিক্ষিকা মায়ের সন্তান হিসেবে সারাজীবন ভদ্র নম্র ব্যবহারের শিক্ষাই পেয়েছে। সেই নম্রতাই যে তাদের জীবনে কাল হয়ে দাঁড়াবে তা কে জানতো? কতকিছু হারাতে হলো জীবনে। মাথার উপর থেকে বাবার ছায়া, তাদের সাজানো গোছানো সংসার, তার তারুণ্যের দিনগুলো।

রণ অন্যমনস্ক হয়ে সাদা শার্ট গায়ে চাপালো। অনেকদিন ধরে মনের ক্ষততে প্রলেপ দেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছিল না। এবার কি পারবে? লোকে যেখানে পৌছানোর স্বপ্ন দেখে নিজেকে সেই অবস্থানে পৌঁছানো কতটা কঠিন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে সে। কিন্তু দৃঢ় কল্প সে সেই অবস্থানে পৌছানোর ব্যাপারে। পরিচিত মহলে মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর সে, বয়স ত্রিশ চলছে। মা বিয়ের কথা বলে বলে হয়রান, সে নিজেও বোঝে বিয়েটা করা উচিত কিন্তু অংক মেলে না বলে বিয়ে করা হচ্ছে না। সরল অংকের হিসেবে কোনো একটা গড়মিল হয়েছে সেটা না মেলা পর্যন্ত বিয়ের ভাবনা করা যাবে না। আপাতত সে গড়মিলটা ঠিক করে অংক মিলানোর চেষ্টা করছে সে। রনর আশা খুব দ্রুত অংক মিলিয়ে ফেলতে পারবে সে।

তৈরি হয়ে নিজেকে দেখলো রণ। এতোগুলো বছর ধরে নিজেকে ইস্পাতের ন্যায় কঠিন বানিয়েছে। কতটা পেরেছে তা বোঝার সময় আসন্ন ভেবে চোয়াল শক্ত হলো। রণর রণাঙ্গনে আবিভার্বের সময় হয়ে গেছে অবশেষে।

চলবে—
©Farhana_Yesmin

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here