#দর্পহরন
#পর্ব-১৮
রাত নয়টা পয়তাল্লিশ মিনিটে তিনবার কবুল বলে রণ আর শুভ্রা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো। মুরুব্বিদের সালাম করার নিয়মে যেয়েই বিপাক বাঁধলো। শুভ্রা তার শশুরবাড়ির লোকদের সালাম করলেও রণ দাঁড়িয়ে রইলো। সে মুখে সালাম জানালো হাতের ইশারায়। ইব্রাহিম সালিম হাসলো-“বেয়াইন, আপনার ছেলেরে দেখি আদব শেখান নাই? মানলাম সে প্রতিমন্ত্রী কিন্তু আমি তো তার শশুর লাগি এখন। আর বিয়ের পর মুরুব্বিদের দোয়া নিতে হয় এটা কি তাকে বলে দিতে হবে?”
রণ কিছু বলতে চাইছিল জলি তাকে চোখের ইশারায় শান্ত থাকতে বলে মৃদুস্বরে জবাব দিলো-“ভাইসাহেব, পায়ে হাত দিয়ে সালাম করার ব্যাপারে ধর্মে নিষেধ আছে। আমার ছেলেকে এভাবেই শিখিয়েছি। আর শুধু সালামে কি আদব বোঝা যায়? দেখতে হবে আচরণ কেমন? আমার ছেলে আলহামদুলিল্লাহ আদবের দিক দিয়ে সেরা। মানুষ হিসেবে অসাধারণ আর ছেলে হিসেবে লাখে একটা। এতটুকু বলতে পারি অন্যায় ব্যাতীত সে আপনাদের কখনো অসম্মান করবে না।”
সালিম সাহেব আরও কিছু হয়তো বলতেন কিন্তু মোর্শেদ থামালো। জলি হাসলো-“আরেকটা কথা ভাইসাহেব। বলেছিলাম স্বল্প পরিসরে আয়োজন করতে। আপনি এলাহি কান্ড করেছেন। এমনটা না করলেও পারতেন। আমরা চেয়েছিলাম ক’দিন পরে সবাইকে জানাবো। এতো তাড়াহুড়োর কিছু ছিলো না। যাইহোক যা করেছেন ভালো করেছেন।”
সালিম চতুর হাসি দিলো-“কি বলেন বেয়াইন! একমাত্র মেয়ের বিয়ে আর আমি আয়োজন করবোনা? আপনি কি জানেন না মেয়ের বিয়ে লুকিয়ে দিতে হয় না।”
জলি কথা না বাড়িয়ে মাথা নাড়ে-“আমরা তাহলে বিদায় নেই। ওখানে যেয়ে অনেক আনুষ্ঠানিকতা করতে হবে।”
এ কথা শোনা মাত্র রিমা এগিয়ে এসে জলির হাত ধরলো-“আপা, আমার বড় আদরের মেয়ে শারমিন। একটু জেদি হইলেও মনটা পরিস্কার। আপনি ওকে দেখে রাইখেন আপা।”
জলি স্বান্তনা দিলো-“আপনি ভাববেন না আপা। আমার দুই মেয়ের সাথে ও আরেকটা মেয়ে হয়ে থাকবে। আমরা অন্তত মেয়ে আর বউয়ের মধ্যে তফাৎ করি না।”
সালিম হাত মুঠি করলো। জলির প্রতিটা কথা তার কানে সীসা ঢালছে যেন। এই মহিলা এতো কথা জানে আগে কোনদিন বোঝেনি। এখন বুঝতে পারছে ছেলেটা এতো বুদ্ধি কোত্থেকে পায়।
বিদায় বেলায় শুভ্রা কাঁদলো না খুব একটা। মায়ের হাউমাউ কান্না শুনে কেবল তার চোখের কোল ভিজেছিল। এই পুরো দৃশ্য দূর থেকে দেখেছে তুলতুল। রিমার কান্না দেখে তার খুব নিজের মায়ের কথা মনে পড়ছে। ভালো মতো বিয়ে হলে তার মাও নিশ্চয়ই এভাবে কেঁদে কেটে বিদায় দিতো তাকে? তুলতুলের ভীষণ মনখারাপ হলো। শুভ্রার বিয়েতে তাকে কোথাও দেখা যায়নি। না তার বাড়ির লোকেরা নিমন্ত্রিত ছিলো। সালিম সাহেবের নিষেধ ছিলো তুলতুল যেন কারো সামনে না আসে। শুভ্রার জন্য খারাপ লাগে তুলতুলের। একসাথে থাকতে থাকতে মেয়েটার উপর মায়া পড়ে গেছিল। সাদা মনের মেয়ে, কোন প্যাচ নেই। বাপ ভাইয়ের মতো কুটিল নয় একদমই। মেয়েটা মনেহয় জানেইনা ওর বাপভাই কতটা খারাপ। এই যে তুলতুলকে তুলে এনে বিয়ে করা হয়েছে এটা কি শুভ্রা জানে?
★★★
হাসিখুশি দুই বোন তাদের একমাত্র ভাইয়ের বিয়েতে যায়নি। এটাও রণর ইচ্ছে। বোনদের ওই লোকের সংস্পর্শে নিতে দেবে না কিছুতেই। বলা যায় তাদের মনে কি আছে। বোনদের নিয়ে রিস্ক নেবে না। হাসিখুশির মন খারাপ হয়েছে কিন্তু ভাইয়ের জেদের কারণে হাড় মেনেছে। ওরা বাড়িতে তৈরি হয়ে বসে ছিলো ভাবিকে বরন করে নিতে। গাড়ি এসে থামা মাত্রই দুই বোন আর বাকী কাজিনরা হুড়মুড় করে নিচে নেমে এলো। রণ এমনিতেই বিরক্ত হয়ে ছিলো। পুরোটা রাস্তা সে একটা কথাও বলেনি। চুপ করে বসে ছিলো। মেজাজ দেখানোর উপায় নেই বলে শরীর জুড়ে রক্তকনিকাগুলোর অবাধ্য ছোটাছুটি চলছে। রণ নিশ্চুপ নেমে গেলো গাড়ি থেকে।
এ বাড়ির দোতলাটা নিজের কাজের জন্য ব্যবহার করছে রণ। ও সোজা দোতলায় এলো। গায়ের শেরওয়ানি খুলে নরমাল পোশাক পরে নিলো। আজ এখানে মিহির আর রাজীব দু’জনই আছে। এই মুহূর্তে রণর দু’জনকেই দরকার বলে মিহিরকে ফিরতে দেয়নি এলাকায়। রণকে দেখে মিহির আর রাজীব দু’জনই একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো। বুঝতে পারছে রণর মেজাজ ভীষণ খারাপ। মিহির রণর কানে ফিসফিস করলো-“ভাই, নিচে অনেক সাংবাদিক আছে। বিয়ের খবর কভার করতে চায়। কি করবো?”
রণ ভ্রু কুঁচকে ছিলো। খবর শুনে দু’জনকে দেখলো পালা করে-“একটা কাগজে সংক্ষিপ্ত আকারে বিবৃতি লিখে ওদের হাতে দিয়ে দে। আর চা মিষ্টি খাইয়ে বিদায় কর। বিয়ে নিয়ে কোন হইচই যেন না হয় এটা কড়া ভাবে মানা করে দিবি। পরে সবাইকে বলা হবে এটাও জানিয়ে দিস।”
দু’জন মাথা দুলায়। রাজিব বেরিয়ে গেলো।
“দিলশাদ ফোন দিয়েছে? ওদিকে কি খবর?”
মিহিরকে দ্বিধান্বিত দেখায়-“ওরা আজকে জামিনের কোন চেষ্টাই করে নাই। দিলশাদ বললো এবার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন মঞ্জুর করেছে।”
রণ হাসলো-“বুঝিসনি কেন চুপ করে বসে আছে? ভেবেছে আমাকে দিয়ে কাজ সারবে। ওদের কি প্ল্যান হতে পারে বলতো? আমার তো মাথা জট পাকিয়ে যাচ্ছে।”
মিহির মাথা চুলকালো। এরকম পরিস্থিতিতে সে কখনো পড়েনি কাজেই কোন আইডিয়া নেই আসলে। সে মিনমিন করলো-“ভাই, কি করবেন জানি না। তবে এইবার পরিস্থিতি পাল্টে যাবে। সোহেলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। এরইমধ্যে নান্টু গায়েব হয়ে গেছে। সবাই ভাববে আপনি সালিমের দলে ভিরে গেছেন।”
রণ গম্ভীর হয়ে রইলো। কিছুক্ষণ ভেবে বললো-“একটা কাজ করতে পারবি? আচ্ছা থাক। দেখি দিলশাদের সাথে কথা বলি। আর শোন, একটা কাজ দেই তোকে। আমার শশুরের সব বৈধ অবৈধ কাজের তথ্য একত্রে করে আমাকে দিবি। আর ওই যে অভিযোগ বক্সে অভিযোগ জমা হইছিল ওইগুলার বর্তমানে স্ট্যাটাস আমাকে আপডেট দে। আগামী সপ্তাহে আমি এলাকায় যাব। এর একটা আউটপুট দেখাতে চাই এলাকার লোকজনকে। বুঝতে পেরেছিস?”
বলেই মুচকি হাসলো রণ। মিহির অদ্ভুত দৃষ্টিতে রণকে দেখছে। আসলে বুঝতে চাইছে রণ কি করতে চাইছে। মিহির কিছু বলবে তার আগেই রাজিব এসে খবর দিলো, রণকে জলি ডেকে পাঠিয়েছে।
★★★
“বিয়ে করে বউ এনেছ। এতো রাতে দোতলায় কি কাজ রণ? এই শিক্ষা দিয়েছি তোমাকে?”
জলির কথায় রণ ভীষণ বিরক্ত-“মা, তোমাকে আগেই বলেছিলাম বিয়ের পর আমার জীবন নিয়ে মাথা ঘামাবে না তুমি।”
রণর খালা মলি গম্ভীর হলো-“দেখ রণ, যা হয়েছে তা হয়েছে। এসব নিয়ে সিনক্রিয়েট না করাই ভালো। তুই চাসনি বলে যেনতেন ভাবে বিয়েটা হলো। ছেলেমেয়েরা সবাই খুব মন খারাপ করেছে। এখন তোকে মনে রাখতে হবে তুই কোন হেলাফেলার মানুষ না। এমন কোন কাজ করা উচিত হবে না যাতে লোকের হাসির পাত্র হতে হয়।
লোকে এসব জানলে নিউজ হবে। জবরদস্তির বিয়ে কিংবা বউয়ের সাথে তোর ঝামেলা চলছে এসব ঘরের মধ্যে থাকুক। লোকে জানলে তোর ইমেজে ইফেক্ট হবে বাবা।”
রণর মামা ব্যরিস্টার খোকন ভাগ্নের কাঁধে হাত রাখলো-“মায়ের উপর রেগে থাকিস না রণ। মা তোর ভালো চেয়েছে বলেই এমন একটা কাজ করেছে। আর বিয়ে যেহেতু হয়ে গেছে সেহেতু মানিয়ে চলার চেষ্টা কর। তুই আমাদের পরিবারের সন্তানদের কাছে আদর্শ মানুষ। তুই এমন কিছু করিস না যাতে ছোট ভাই বোনদের নজরে ছোট হতে হয়। বাকী তুই বুঝদার বাচ্চা, কি বলবো তোকে?”
রণ চুপচাপ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। সবার এক্সপেকটেশন পূরণ করতে করতে তার নিজের চাওয়া পাওয়া ভুলে গেছে সে। ভালো হওয়াটা কি দোষের? মা কেন তার উপর সব চাপিয়ে দিচ্ছে?
রণ ভীষন মন খারাপ করে ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। ভেতর থেকে হাসাহাসির আওয়াজ আসছে। রণর ভ্রু কুঁচকে গেলো। এই মেয়ের সাথে সবার এতো কিসের হাসাহাসি সে ভেবে পেলো না। এতো অল্প সময়ে সবার সাথে ভাব জমিয়ে ফেলেছে কি করে? ভাবনা আঁটকে রেখে রণ দরজার আওয়াজ দেওয়া মাত্রই সবার হাসি থেমে গেলো। হাসি এসে দরজা খুললো। ওকে দেখে ঢোক গিললো। ভেতরে তাকিয়ে বললো-“ভাইয়া এসেছে। চল আমরা এখন যাই।”
সেকেন্ডের মধ্যে রুম খালি হয়ে গেলো। খালাতো মামাতো বোনেরা কেউ কেউ একবার তাকিয়ে রণকে দেখে মুখ টিপে হাসলো। রণ সেই হাসির কারণ খুঁজে না পেয়ে বিরক্ত হলো। ঘরে ঢুকেই দেখলো শুভ্রা ভদ্র মেয়েটি সেজে লম্বা ঘোমটা টেনে মাথা নিচু করে বসে আছে। তার কি করনীয় সেটা ভেবে পেলো না রণ। এই মেয়ের সাথে কথা বলার মতো কিছু খুঁজে পেলো না। অনেকটা সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো বোকার মতো। তারপর সোফায় যেয়ে বসলো।
শুভ্রা ঘোমটার আড়ালে চুপচাপ বসে থেকে রণর কীর্তি দেখছে। তার চোখেমুখে দুষ্ট হাসির রেখা। সে ইচ্ছে করে একটু কাশলো-“উহুম উহুম।”
রণ চমকে উঠলো। শুভ্রা নাকি কন্ঠে বললো-“নতুন বউকে দেখবেন না মন্ত্রীমশাই?”
রণর কুঞ্চিত ভ্রু যুগল আরও খানিকটা কুঁচকে গেলো। কি করতে চাইছে মেয়েটা? নিশ্চয়ই কোন মতলব আছে। রণ সন্দিহান নজরে তাকিয়ে রইলো। শুভ্রা আবারও কথা বলে উঠলো-“আরেহ! ওভাবে বসে আছেন কেন? নতুন বউয়ের মুখ দেখার রীতি পূরন করে আমাকে মুক্তি দিন। আর কতোক্ষণ বসে থাকবো?”
রণ কড়া গলায় বললো-“কে বসে থাকতে বলেছে আপনাকে? ফাজলামো হচ্ছে আমার সাথে? কোন মুখ দেখাদেখি হবে না। আপনার যা ইচ্ছে হয় করুন।”
শুভ্রা ভারী লেহেঙ্গা নিয়ে অনেক কষ্টে নেমে এসে রণর মুখোমুখি দাঁড়াল। ওর চেহারার উপর এখনো ওড়না ঝুলছে। সে গলায় আহলাদ ঢেলে বললো-
“প্লিজ ঘোমটাটা তুলুন। বাসর রাতে বউয়ের মুখ না দেখলে স্বামীর অমঙ্গল হয়। আমি কি করে আপনার অমঙ্গল চাইবো বলুনতো? শত্রু হলেও আপনিই আমার স্বামী, আমার প্রাননাথ।”
রণ হতভম্ব হয়ে উঠে দাঁড়ায়। এই মেয়েটা তাকে বোকা বানাতে বন্ধ পরিকর বোঝা যাচ্ছে। ওড়নায় উপর দিয়ে শুভ্রার বঁধু সাজে সজ্জিত চাঁদ মুখখানা ঘরের উজ্জ্বল আলোয় চকচক করছে। রণ সেদিকে তাকিয়ে হেসে দেয়-“খুব স্বামীর চিন্তা আপনার, তাই না?”
শুভ্রা মাথা দুলায়। রণ হাসতে হাসতে বললো-“এককাজ করুন। আপনি সোফায় বসে থাকুন আমি একটু ঘুমাব। ঘুম থেকে উঠে না হয় আপনার মুখ দেখবো কিনা সিদ্ধান্ত নেব।”
শুভ্রার চেহারা থেকে হাসি মিলিয়ে গেল। মন খারাপ করে দরজার দিকে এগুলো। রণ জিজ্ঞেস করলো-“কোথায় যাচ্ছেন?”
“আপনার মায়ের কাছে।”
“কেন?”
“তাকে যেয়ে বলি যে তার ছেলে বাসর রাতে বউয়ের মুখ দেখতে চাইছে না।”
রণ রেগে গেলো-“মিস শুভ্রা, যথেষ্ট নাচিয়েছেন আমার মাকে। আগে কিছু বলিনি বলে ভাববেন না এখনও সব মেনে নেব। আমাদের মধ্যকার ব্যাপারে তাকে দূরে রাখবেন এটাই মঙ্গল হবে আপনার জন্য।”
শুভ্রা ঘুরে দাঁড়িয়ে রণর দিকে তাকিয়ে বললো-“প্রথমত আমি এখন মিস না মিসেস। দ্বিতীয়ত, আপনার মা আপনার মতো খারাপ মানুষ না। ভালো মন্দ জ্ঞান আছে তার। তাই তাকে কোন ব্যাপারেই দূরে রাখবো না।”
রণ রাগী দৃষ্টি নিয়ে শুভ্রার দিকে তাকিয়ে রইলো। শান্ত গলায় বললো-“আপনার সমস্যা কি বলবেন? আপনার মতো সুন্দরীকে পাত্তা দেইনা এটা গায়ে জ্বালা ধরায় তাই না?”
শুভ্রা অনড়ভাবে বললো-“এতো কথা শুনতে চাই না। আপনি আমার মুখ দেখবেন নাকি শাশুড়ী মায়ের কাছে যাব?”
রণর মনটা বিদ্রোহ করতে চাইছে। মা এ কিসের মধ্যে ফাঁসালো তাকে? সে ক্লান্ত গলায় বললো-“আপনি দয়া করে নিজ হাতে ঘোমটা তুলুন আমি আপনার মুখ দর্শন করি। প্লিজ আর আর্গু করবেন না। যদি এতেও রাজি না থাকেন তাহলে আপনি মায়ের কাছে যেতে পারেন।”
শুভ্রা কিছু সময় চুপচাপ রইলো। তারপর দু’হাতে ওড়না তুলে মাথায় রাখলো। রণ দিকে তাকিয়ে আছে সে। তার চেহারায় নতুন বউয়ের মতো স্বাভাবিক লজ্জার লেশমাত্র নেই। তীক্ষ্ণ নজরে রণকে বিদ্ধ করতে চাইছে। রণ তাকিয়ে থেকে বললো-“দেখলাম। এবার খুশি? প্লিজ এবার আমাকে ঘুমাতে দিন। কাল একটা জরুরি মিটিং আছে সকালে।”
শুভ্রা মাথা দুলিয়ে মিষ্টি হাসলো-“ঘুমান তবে তার আগে আমার গিফটটা দিন।”
“গিফট!” রণ চেচিয়ে উঠলো। শুভ্রা দুষ্ট হাসি দিলো-“নতুন বউয়ের মুখ দেখে গিফট দিতে হয়।”
“এনাফ! যথেষ্ট ফান করেছেন। এবার দয়া করে থামুন। তাছাড়া আপনার মুখ আমি দেখতে চাইনি আপনি জোর করে দেখিয়েছেন। এখন আবার জোর করে গিফটও দাবী করছেন। আপনি তো দেখছি আজব ধরনের বেহায়া মেয়ে? শুনুন কোন গিফট টিফট দিতে পারবোনা। মানুষ বউ দেখে গিফট তখনই দেয় যখন তার মন প্রশান্ত হয়। আপনাকে দেখে তো আমার মনের শান্তি বিনষ্ট হয়ে গেছে। কিসের গিফট দেব আপনাকে?”
বলতে বলতে রণ বিছানায় গা এলিয়ে দিলো। শুভ্রা ওকে দেখতে দেখতে দাঁত কিড়মিড় করে বিরবির করলো-“গিফট তো আপনাকে দিতেই হবে মিস্টার রণ। দেখি কিভাবে গিফট না দিয়ে থাকেন আপনি।”
চলবে—
©Farhana_Yesmin