#দর্পহরন
#পর্ব-২৩
“তন্ময় ভাইয়া! তুমি! কবে এসেছো? কেউ বলেনি তো আমাকে?”
শুভ্রা বাচ্চাদের মতো আহলাদ করছে। দেখে গা জ্বলে গেলো রণর। সে ভদ্রতা করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো শুভ্রার পাশে। তন্ময় নামের ছেলেটা এগিয়ে এসে শুভ্রাকে জড়িয়ে ধরে-“শুধু আমি না মাও এসেছে শুভ্রা। তোকে সারপ্রাইজ দেব বলে বলিনি।”
“সত্যি! চাচীও এসেছে?”
“হুমম, সত্যি। ওই যে দেখ।”
তন্ময় পেছনে ইশারা করতেই দেখা গেলো ওদের। পুরো ইব্রাহিম পরিবারকে। সবাইকে দেখে হাত নাড়িয়ে শুভ্রা রণর কানে ফিসফিস করলো-“ভাইয়া এসেছে ভাবীকে নিয়ে। আপনি আপনার চ্যালেন্জ হেরে গেলেন এবার শাস্তির জন্য প্রস্তুত হয়ে যান।”
রণও পাল্টা হাসি দিলো-“সব শাস্তি মাথা পেতে নেব। তার আগে আরও একটা কাজ করতে হবে আপনাকে।”
শুভ্রা অবাক হলো-“আবারও? শাস্তি কিন্তু ডবল হবে বলে দিচ্ছি।”
রণ মৃদু হেসে মাথা দুলায়-“হোক। এখন দয়া করে মহিলাদের নিয়ে নিজের কামরায় গিয়ে বসুন। ওখানেই খাবার দিন। এখানে সব রাজনৈতিক নেতাকর্মী আছে। কাজেই এখানে আপনার না থাকলেও চলবে।”
শুভ্রা ভয় পাওয়া গলায় বললো-“আপনি কি করবেন ওদের? আব্বাকে আবার কিছু বলবেন নাতো?”
রণ হেসে দিলো-“আমি কি করবো? আমাকে দেখে কি মারপিট করা গু*ন্ডা কিংবা মানুষ খু*ন করা খু*নী মনেহয়?”
শুভ্রা শীতল কন্ঠে বললো-“আপনাকে বিশ্বাস নেই। সব করতে পারেন আপনি।”
রণ আশ্বাস দিলো-“ভয় নেই আজ কিছু করবো না।”
শুভ্রা ভরসা পেলো কিনা বোঝা গেলো না। তবে মহিলাদের সাথে নিয়ে সে বাড়ির ভেতর চলে গেলো। যাওয়ার আগে তন্ময়ের সাথে রণর পরিচয় করিয়ে দিতে ভুললো না। রণ তন্ময়কে সাথে নিয়ে সালিম সাহেবের দিকে এগিয়ে গেলো। মুখে হাসি ঝুলিয়ে সোহেলের সাথে হ্যান্ডসেক করলো। শরীফ আর তাহের আগে থেকে আন্তরিক রণের প্রতি এটা ওদের আচরণে বোঝা হয়ে গেছে। সবাইকে নিয়ে দক্ষিণ দিকের প্যান্ডেলে দিকে গেলো রণ। ওখানেই এলাকার গন্যমান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের বসানো হয়েছে। এলাকার অনুষ্ঠান বলেই আয়োজনটা বাড়ির সামনের ফাঁকা মাঠে করা হয়েছে। এলাকার লোকজন আর তৃনমুল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য এই অনুষ্ঠান করা। রণ চায় সকলের সাথে তার সম্পর্কটা সহজ হোক। কতটুকু সফল হবে সেটা সময় বলবে।
মিনু আর রিমা জলির সাথে গল্প করছে তার কামরায়। তুলতুল এ ঘরে একা বসে আছে। শুভ্রা খাবারের প্লেট তুলতুলের দিকে এগিয়ে দিলো-“এমন চুপচাপ বসে আছো কেন ভাবি? কি হয়েছে?”
তুলতুল চমকে গেলো ভীষণভাবে। সে মিনমিন করলো-“কিছু না আপা। এমনিতেই।”
শুভ্রা খানিকটা অবাক হলো। তুলতুল মাথা তুলেও তাকাচ্ছে না পাছে শুভ্রা সব বুঝে যায় এই ভয়ে। শুভ্রা কাছে এসে বসলো। তুলতুলের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো-“ভাবি, তোমার মুখে কি হয়েছে? কেমন যেন লাগছে দেখতে? আর বোরকা পরেছ কেন? ভাইয়া মানা করেনি?”
তুলতুলের হাত কেঁপে উঠলো। সে ব্যস্ততার ভান করে জোর করে পোলাও মেখে মুখে তুললো-“কি হবে আপা কিছু হয়নি।”
শুভ্রা তুলতুলের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো-“কিছু একটা তো অবশ্যই হয়েছে। কি হয়েছে সেটাই ধরতে পারছি না।”
তুলতুল এবার হাসার চেষ্টা করলো-“আরে আপা কিছু হয়নি বললাম তো। এখন কি শান্তিমতো খেতে দেবে? নয়তো খাবার রেখে দিচ্ছি।”
শুভ্রা তুলতুলকে আঁটকায়-“না না তুমি খাও ভাবি। আমি পানি নিয়ে আসছি দাঁড়াও।”
শুভ্রা ঘর থেকে বের হবে এমন সময় রণ এসে দাঁড়াল-“আসবো?”
শুভ্রা তাকায়-“হ্যা আসুন।”
রণ রুমে ঢুকে কোন ভনিতা না করে তুলতুলকে ডাকলো-“তুলতুল তুমি প্লিজ আমার সাথে এসো। তোমার মা আর ভাই অপেক্ষা করছে। তারা তোমার সাথে দেখা করতে চায়।”
তুলতুল হতবাক হয়ে রণর দিকে তাকায়। অবিশ্বাসী গলায় বললো-“কি বলছেন এসব? আমার মা আর ভাই কেন এখানে আসবে?”
রণ আবারও মৃদুস্বরে বলে উঠলো-“দেরি করো না তুলতুল। তোমার হাতে সময় খুব কম। কেউ টের পাওয়ার আগেই ফিরে আসতে হবে এখানে।”
তুলতুল হতবিহ্বল হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। তার শরীর কাঁপছে ভীষণ ভাবে। সে কি করবো বুঝতে পারছে না। রণ তাড়া দিলো-“হাতটা ধুয়ে এসো তাড়াতাড়ি।”
তুলতুল যন্ত্রচালিত মানুষের মতো এগিয়ে গেলো। শুভ্রা কিছু বুঝতে পারছে না। সে পালাক্রমে তুলতুল আর রণকে দেখছে। এতোটা অবাক সে তার জীবনে হয়নি। বোকার মতো দু’জনার দিকে তাকিয়ে থেকে জানতে চাইলো-“আপনি কি করছেন আমি বুঝতে পারছি না। ভাবিকে চেনেন আপনি?”
রণ শুভ্রার চোখে চোখ রেখে হাসার চেষ্টা করলো-“না চিনি না। আজই প্রথম দেখলাম। আর প্লিজ বোঝার চেষ্টাও করবেন না আমি কি করছি। শুধু একটা অনুরোধ আপনার চাচী আর মাকে ব্যস্ত রাখবেন দশ পনেরো মিনিট আপনার ভাবীর ফিরে আসা পর্যন্ত। পারবেন তো?”
শুভ্রা স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললো-“আর এমনটা আমি কেন করবো? আমার কি ঠেকা আপনাকে হেল্প করতে?”
রণ হাসি থামিয়ে বললো-“আমার জন্য করার দরকার নেই আপনার ভাবির জন্য করবেন। প্লিজ এখন প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করবেন না। ফ্রি টাইমে এসব নিয়ে ঝগড়া করার প্রচুর সময় পাবেন।”
“কিন্তু কি করতে চাইছেন সেটাই তো বুঝতে পারছি না। এতো লুকোচুরির কি আছে এখানে? মা জানলে কি হবে?”
রণ ঠোঁটে হাত দিলো ইশারা করলো-“শশশ, আস্তে কথা বলুন। জানলে কি হবে সেটা এই মুহুর্তে না জানলেও হবে। প্লিজ দয়া করে পনেরোটা মিনিট নিজের মগজ চালানো বন্ধ করুন। আই রিকোয়েস্ট।”
শুভ্রা রাগ করে দু’ঠোঁট চেপে ধরে রাখলো। পরক্ষণেই জবাব দিলো-“তিনটে কাজ হয়ে যাচ্ছে। সবই বকেয়া রয়ে যাচ্ছে কিন্তু?”
শুভ্রার বোকা বোকা কথায় রণ হেসে দিলো-“যা খুশি চেয়ে নেবেন। আপাতত হেল্প করুন। প্লিজ!”
রণর কড়োজোরে মিনতি দেখে শুভ্রা চুপ করে গেলো। তুলতুল বেরিয়ে আসতেই রণ আশেপাশে তাকিয়ে তুলতুলকে তার পিছু আসার ইঙ্গিত দিলো।
“মা! ভাইয়া! তোমরা এখানে?”
তুলতুল এক ছুটে যেয়ে মাকে জড়িয়ে ধরলো।তহুরা মেয়েকে বুকের মধ্যে নিয়ে হুহু করে কেঁদে দিলেন। ফাহিমও বাচ্চাদের মতো কাঁদছে। সে মা বোনকে জড়িয়ে ধরে আছে। এরকম একটা দৃশ্য দেখে রণর চোখেও জল এলো। সে হাত দিয়ে চোখের কোলটা মুছে নিলো আলতো হাতে। তহুরা তুলতুলের মুখে হাজারটা চুমু খেলো-“তুলতুল, কেমন আছিস মা? ওরা তোকে মারে? অনেক অত্যাচার করে তাই না? কত শুকিয়ে গেছে আমার মেয়েটা।”
তুলতুল মাথা নাড়লো-“না মা মারে না। কিছুই বলে না।”
ফাহিম কান্না থামিয়ে বোনের দিকে স্নেহময় দৃষ্টিতে তাকায়-“সত্যি আপা? তোমাকে বোরখা পড়াইছে কেন?”
তুলতুল মিথ্যে বললো-“আমাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয় নাই এইজন্য। অনুষ্ঠানের আগে মুখ দেখানো মানা। তোমরা ভাইবো না আমি ভালো আছি মা।”
বলতে বলতে কাঁদে তুলতুল-“কতদিন পর তোমাদের দেখলাম মা। আমার কি যে ভালো লাগতেছে। এখন আমি মরে গেলেও আফসোস থাকবে না।”
তহুরা অস্থির হয়ে গেলো তুলতুলের কথা শুনে। পাগলের মতো বারবার বলতে লাগলো-“ও তুলতুল, তুই মরার কথা কেন বললি? মরবি কেন তুই? ওরা তোকে কি বলছে? তুলতুলরে বল তাড়াতাড়ি। থাক তুই আর যাইস না ওইখানে। চল আমাদের সাথে। তোকে নিয়ে ঢাকায় চলে যাব।”
তুলতুল মাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। মায়ের গালের সাথে গাল ঠেকিয়ে রেখে বলে-“কোথায় যাব মা? বাংলাদেশের কোন কোনায় পালিয়ে বাঁচবো না। আমি তো এখন বেঁচে আছি, ভালো আছি। তোমরা আমাকে নিয়ে ভেবোনা। ভাইয়া, মায়ের খেয়াল রাখবা। কত্ত শুকায় গেছে আমার মা।”
তিনজনেরই চোখ ভেজা। রণ ঘড়ি দেখলো-“তুলতুল যেতে হবে।”
তহুরা যাওয়ার কথা শুনেই তুলতুলকে বুকের সাথে জাপ্টে ধরলো-“ও বাবা, তুমি তো এখন মন্ত্রী হইছো। আমার মেয়েটাকে আমার বুকে ফিরায় দিতে পারবা না? আমি স্বামীহারা মহিলা অনেক কষ্ট করে এই ছেলেমেয়ে দুইটাকে মানুষ করছি। আমার বুকের ধনকে আমার বুকে ফিরায় দাও না বাবা। আর কিছু চাই না বাবা, আমাদের আর কিছু চাওয়ার নাই।”
রণ মনকে কঠোর করে এগিয়ে এসে তহুরার সামনে বসলো-“খালা, বাবা ডেকেছেন তো? আপনার মেয়ে আপনার বুকে ফিরবে। তবে আজকে না খালা। আমি কথা দিচ্ছি খুব তাড়াতাড়ি আপনার মেয়েকে আপনার কাছে ফিরিয়ে দেব। ভরসা রাখেন আমার উপর।”
তারপর তুলতুলের দিকে তাকালো-“তুলতুল বোন আমার চলে তাড়াতাড়ি। ওরা সন্দেহ করুক এমনটা চাই না।”
তুলতুল অনেক কষ্টে নিজেকে তহুরার থেকে ছাড়িয়ে নেয়। রণ ফাহিমের দিকে তাকায়-“তোমরা এখানেই থাকো আমি না বলা পর্যন্ত বেরুবে না।”
ফাহিম মাথা দুলায়। রণ তুলতুলকে দোতলায় যাওয়ার ইশারা করে নিচে নেমে গেলো।
অনুষ্ঠান চুকে যাওয়ার পর রাতে ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শুয়ে ছিল রণ। তখনই মোবাইলে ম্যাসেজ এলো। ঘুমঘুম চোখে ম্যাসেজ খুলে দেখলো লেখা আছে-“আপনি কেথায়? রুমে আসুন এখনি।”
অবাক রণ ভাবছে সালিম সাহেবের মেয়ের আবার হলোটা কি? সে নিজ থেকে রণকে ম্যাসেজ করেছে? ক্লান্ত শরীর নড়তে চাইছে না বুঝতে পেরে রণ পাল্টা ম্যাসেজ পাঠালো-“তিনতলায় আছি। শরীর ভীষণ ক্লান্ত। পরে আসলে হয় না?”
শুভ্রা এবার ফোনই দিয়ে বসলো-“না হয় না। আপনার সাথে কি শর্ত ছিলো মনে নেই? এখনি আসুন। আমি ওয়েট করছি।”
অগত্যা বাধ্য হয়ে রণ উঠলো। স্যান্ডেল পায়ে গলিয়ে ধীর পায়ে দোতলায় নেমে এলো। শুভ্রার রুমের দরজায় টোকা দিলো-“আসবো।”
“হ্যা, আসুন।”
রণ দরজা ঠেলে ঢুকলো। শুভ্রা বিছানায় বসে আছে। তার সামনে একটা কাঁচের বল ভর্তি কাঁচামরিচ। রণকে দেখে মিষ্টি করে হাসলো শুভ্রা-“তিন তিনটে কাজের পুরস্কার বাকি দেখে আমার ধৈর্য্য হচ্ছে না। জানেন তো, বাকীর কাজ ফাঁকি। তাই ভাবলাম একটা কাজের পেমেন্ট অন্তত নিয়ে রাখা দরকার। তাই না?”
রণ জবাব দিলো না। সে ভাবছে শুভ্রা কি করতে চাইছে আসলে? রণর ভাবনা বুঝেই মেয়েটা মুচকি হাসলো। গলায় মধু ঢেলে শুধালো-“আরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আসুন এখানে আমার সামনে বসুন। আপনার প্রথম কাজের পেমেন্ট হিসেবে এই কাঁচামরিচ গুলো খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন প্লিজ।”
রণ সাথে সাথে বুঝে গেলো শুভ্রার প্রতিশোন পরায়ন মনের ভাবনা। সে বেশ জোরেই হেসে উঠলো-“প্রতিশোধ নিতে চাইছেন?”
শুভ্রার মুখের হাসি গায়েব। সে গম্ভীর মুখ করে বললো-“নেওয়া উচিত না? আমার আর আপনার মধ্যে হিসেবের সমতা আসেনি এখনো। যতদিন সমতা না আসবে ততদিন আমরা প্রতিদ্বন্দি হয়ে থাকবো, স্বামী স্ত্রী হয়ে উঠতে পারবোনা।”
রণ বিরবির করলো-“স্বামী স্ত্রী হতে চাইছে কে?”
শুভ্রা না বুঝে তাকালো-“কিছু বলছেন?”
“না মানে বলছিলাম যে আমাকে সাজা দেওয়ার জন্যই আপনি ও বাড়ি গেলেন না?”
শুভ্রা রণর দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটা কি কথার খেলা খেলে তার খেলা পন্ড করতে চাইছে?
“না কাজের পুরস্কার নেব তাই যাইনি। সব পুরস্কার বাকী রেখে দেওয়া রিস্ক। দেখা যাবে পরে বললেন কিসের পুরস্কার। আমি বাপু কোন রিস্ক নিতে চাই না।”
“তা আর কি কি করতে হবে এরপর? বুঝতে পারছি দুইমাসের শোধ নেবেন। একেবারে বলে দিলেই ভালো হয়।”
শুভ্রার চোখ জুড়ে ক্রুর হাসি-“আগে বললে মজা আছে? শুনুন আর কথা বলবেন না। খেতে শুরু করুন তো।”
“ইয়ে মানে এতগুলো মরিচ খেতে হবে সত্যিই? কাল কিন্তু বাইরে বাইরে থাকতে হবে আমাকে। পেট খারাপ হলে ভীষণ বিপদে পড়বো।”
রণ মুখেচোখ কাচুমাচু করলো। শুভ্রা অবশ্য তাতে একটুও গললো না-“জ্বি হা। পুরো বাটি শেষ করবেন আমার সামনে বসে।”
রণ ঢোক গিললো। শুভ্রা মনে মনে খুব করে হাসলো। অন্যকে সাজা দিতে গেলে মজা লাগে। আর সেই সাজা যখন নিজের উপর এসে পড়ে তখন কেমন কঠিন লাগে এবার বোঝো মিস্টার রণ। তাছাড়া এটা তো কেবল শুরু। সামনে আরও কত কিছু করা হবে তোমার সাথে তখন কি করবে বাছাধন?
চলবে—
©Farhana_Yesmin