দর্পহরন #পর্ব-৩২

0
260

#দর্পহরন
#পর্ব-৩২

রাতে মাতাল হয়ে বাসায় ফিরলো সোহেল। রুমে ঢুকে বিছানায় গড়িয়ে পড়ে তুলতুলকে নরম কন্ঠে কাছে ডেকেছে-“ও তুলতুলি, কাছে আসো।”
মদের গন্ধে তুলতুলের গা গুলায়। কিন্তু টকটকে লাল চোখের সোহেলের ডাক অগ্রাহ্য করতে পারে না। এগিয়ে যেতেই সোহেল তাকে হাত ধরে টেনে কাছে বসায়-“তুমি কি আমাকে ঘেন্না করো? এমন দূরে দূরে থাকো কেন সবসময়?”
তুলতুল কিছু বললো না। মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো। সোহেল তুলতুলের মুখ ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে নেয়-“রাগ হইছো আমার উপর? আমি খুব খারাপ মানুষ তাই না? তোমাকে অত্যাচার করি, আটকাইয়া রাখছি কোথাও যাইতে দেই না। বুঝি সবই। আচ্ছা, তুমি কি চাও আমার কাছে? একটা ইচ্ছার কথা বলো পূরণ করুম।”
তুলতুল এবার মুখ ফুটে বলে-“চাইলেই বুঝি দিবেন? বলে লাভ কি?”
সোহেল ক্ষন কাল চুপ করে থাকলো। তারপর তুলতুলকে টেনে শুইয়ে দিলো বালিশে। ঝুঁকে এলো তুলতুলের মুখের উপর। গালে হাত দিয়ে আরও মোলায়েম কন্ঠে বললো-“কইলাম তো পূরণ করুম কইয়া ফালাও।”
তুলতুলের কি মনে হলো বলে ফেললো মুখ ফুটে-“আমাকে একবার মায়ের কাছে যাইতে দেন। খুব ইচ্ছা করে মাকে দেখতে। তার শরীর ভালো না তাই একটা বার দেখতাম।”
সোহেল অাদুরে দৃষ্টি নিয়ে তুলতুলের অসহায় মুখ দেখলো। গালে চুমো দিলো, নাক নাক ঘষে বললো-“আচ্ছা, দিব যাইতে। এইবার তুমি নিজের ইচ্ছায় আমাকে একটু আদর দাও তাইলে। প্রতিদিন জোর করতে ভালো লাগে না।”
তুলতুল সিঁটিয়ে গেলো নিজের মধ্যে। যাকে ঘেন্না করে তাকে নিজ থেকে আদর দেওয়া যায় না এই কথা মোটা মাথার সোহেলকে বলা বৃথা। ওর মধ্যে একটা পশু ওত পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই যে থাবা বসায়। সোহেল অনুনয় করে-“আরেহ কইলাম তো যাইতে দিমু। এইবার একটু আদর করো না।”
সোহেল মুখ এগিয়ে দিলো। উৎকট গন্ধে পেটের নাড়িভুড়ি উল্টে আসে তুকতুলের। জড়ভরত হয়ে শুয়ে রইলো সে। মনটা হাসফাস করে ওঠে তার। আর কতদিন এই অত্যাচার সইতে হবে সে জানে না। খুব খারাপ লাগে তার। এই বন্দী জীবন আর মেনে নিতে পারছে না। এবারও তুলতুলের কাছ থেকে সারা না পেরে রেগে গেলো সোহেল। তুলতুলের দু’হাত বিছানায় আঁটকে তুলতুলের উপর চরে বসলো সে-“কি হইলো। কথা কানে যায় না? কতবার কইরা কইলাম তবুও পাষানীর মন গলে না। তুই শোধরাবি না। ভালো ব্যবহার করলেই কি না করলেই কি। তোরে খালি ভোগ করাই ঠিক আছে।”
তুলতুল বাঁধা দেয় না। বাঁধা দিয়ে লাভটাই বা কি? শুধু শুধু নিজের শরীরকে কষ্ট দেওয়া ছাড়া। তবে একদিন সে অবশ্যই বাঁধা দেবে। সেইদিন হয়তো এই পৃথিবীতে সোহেলের শেষ দিন হবে। ততদিন পর্যন্ত তুলতুল সহ্য করবে নিজের মা আর ভাইয়ের জন্য।

*****

সালিম সাহেব আজ গোপনে নিজের অফিসে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ডেকেছে। উদ্দেশ্য আসন্ন নির্বাচনে এলাকায় তার সমর্থন পাকাপোক্ত করা। ব্যবসায়ীরা প্রতিমাসে নিয়মিত হারে চাঁদা দেয় দলের প্রয়োজনে। তবে রাজনীতিতে সরাসরি ইনভলভ হয় না। সালিম সাহেবের বিশ্বাস এনারা সকলে ওনাকে সমর্থন দেবে যেহেতু তিনি সবসময় এনাদের সাথে সুসম্পর্ক রেখেছেন। ওনাদের কাজে নিজ থেকে যতটা সম্ভব সাহায্য করেছেন। কিন্তু মিটিং শুরু হতে হতে তার মেজাজ খারাপ হতে শুরু করলো।
“ভাই, সামনে নেত্রী আসবে এলাকায়। শো ডাউন করতে হবে। এলাকায় দলীয় প্রধান নির্বাচন হবে এটা তো জানেন। আপনারা আমাকে সাপোর্ট দিবেন তো?”
মিল্টন নিট ওয়ারের মালিক মিল্টন খন্দকার বাকীদের দিকে তাকিয়ে হাসলো। সালিম সাহেব বললো-“কি মিল্টন ভাই, আপনারা আমাকেই চান তো দলীয় প্রধান হিসেবে। সামনে মেয়র নির্বাচনে প্রাথী হতে চাই ভাই। আপনারা যদি সাপোর্ট না দেন তাহলে বিপদে পড়বো।”
“ভাই, সবই ঠিক আছে। তবে কে এলাকায় রাজত্ব করবে তা কি আমরা ঠিক করি কখনো? যে আমাদের সু্যোগ সুবিধা দেবে, আমরা তাকেই চাইবো। তারপরও কথা থাকে কিন্তু। নেত্রী কাকে চান এটাও একটা বড় ব্যাপার। যতটুকু দেখলাম নতুন মন্ত্রী সাহেব কমবয়সী হলেও গত তিনমাসে ভালো কাজ দেখাইছে। সে আপনারই মেয়ের জামাই। যদি সেও দলীয় প্রধান হয় তাতেও আপনার কোন সমস্যা থাকার কথা না। আফটারঅল আপনারই মেয়ের জামাই। আপনার তো লাভলস নাই এখানে। সবদিক দিয়ে আপনিই জিতছেন।”
সালিম সাহেবের মুখ বন্ধ। দাঁতে দাঁত চেপে রণর প্রশংসা বাক্য গেলা ছাড়া তার করনীয় নেই কিছু। তবুও বয়সের অভিজ্ঞতার বলে বুঝলেন এখন কোনমতেই মেজাজ গরম করা যাবে না। তিনি স্মিত কন্ঠে বললো-“সবই ঠিক আছে ভাই। কিন্তু কোন পজিশনে না থাকাটাই বা কেমন দেখায়৷ রণর জন্য সেচ্ছায় সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দিছি। এখন মেয়র তো হতে হবে। তাছাড়া এলাকায় দলীয় রাজনীতিতে আমিই সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ। দল করাটা আমার ধ্যান জ্ঞান। বাবার কাছ থেকে এটাই মন দিয়ে শিখেছি। এখন যদি রাজনীতি না করতে পারি তাহলে বেঁচে থাকা বৃথা মনে হবে আমার। আপনাদের জন্য সবসময় যথাসাধ্য করে গেছি। এখন আমার বিপদে কি আপনাদের পাশে পাবো না? আমাকে ম*রে যেতে বলছেন?”
আবেগী কথায় কাজ হলো মনেহয়। তৎখনাত তরফদার শিপিং এর মালিক বললো-“কেন পাবেন না ভাই? অবশ্যই আমরা আপনার পাশে আছি। আমাদের কি করতে হবে বলেন। সাধ্যমতো সাহায্য করবো আপনাকে।”
সালিম সাহেবের চেহারা উজ্জ্বল হলো-“তাহলে ভাই, দলের প্রধান হিসেবে আপনারা আমার নাম রেকমেন্ড কইরেন। আপা নিশ্চয়ই কাল আপনাদের সাথে মিটিং করবে তখন আপনারা আমার জন্য তদবির করবেন। বাকী ভবিষ্যতে আপনাদের প্রয়োজন আমি দেখবো। মিল্টন ভাই, আপনার কোম্পানির ব্যাংক লোনটা মওকুফ করে দিলে চলবে? জোবেদ ভাই, থানার পাশের জমি দরকার আপনার? ম্যানেজ করে দিবনে।”
হুট করে এমন একটা প্রস্তাব পেয়ে মিল্টন হচকে গেলো। সালিম সাহেব হাসলো-“আমি জানি আপনার কোম্পানি এখন কাজ কম পাচ্ছে। আপনি নতুন প্রতিষ্ঠান দিতে যাচ্ছেন। টাকার সমস্যা থাকলে আমাকে বলবেন না। এমনে পর বানায়া দিছেন আমাকে?”
শেষ পর্যন্ত পজেটিভ ইঙ্গিত দিয়ে সকলে বিদায় নিলো। সালিম সাহেবকে সন্তুষ্ট দেখালো। যে টোপ দিয়েছে তাতে মনেহয় না চিন্তার কোন কারণ আছে। পাঁচজনের মধ্যে তিনজন অন্তত তার হয়ে কথা বলবে। যেহেতু এনারা সবাই নিউট্রাল মতামত দেয়। এনাদের কাউকে সাপোর্ট দেওয়া মানে অনেকগুলো মানুষকে উৎসাহিত করা। আশাকরা যায় নেত্রী আসার পর ভালো কিছু হবে। নেত্রী আবার তার উপর ভরসা করবে। এখন শুধু একটু বুঝেশুঝে কাজ করতে হবে।

*****

আজকেও দরজা খুললো শুভ্রা। যথারীতি তার পরনে একটা হালকা বেগুনি রঙের শাড়ী লম্বা চুলগুলো মাথার পেছনে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আঁটকানে। সাদা ব্লাউজে সুন্দর মানিয়ে গেছে মেয়েটাকে। রণ মৃদু হেসে ঘরে ঢুকে গেলো। শুভ্রার কিছুটা মন খারাপ হলো আজ। পরপর তিনদিন শাড়ী পড়লো একটা দিনও রণ ওকে কোন কমপ্লিমেন্ট দেয়নি৷ তাকে কি দেখতে ভালো দেখায় না? রান্নাঘরে খাবার গরম করে নিয়ে প্লেটে বেড়ে নিজেকে আরেকপ্রস্ত দেখে নিলো। শাড়ী টেনে ঠিক করলো, চুলগুলো খুলে পিঠময় ছড়িয়ে দিলো। হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে আঁচল টেনে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। রণ মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে কাপড় পরেছে। তার গা দিয়ে সুগন্ধ ভেসে আসছে। শুভ্রার খানিকটা মাতাল মাতাল লাগে রণকে দেখে। মানুষটা আসলেও খুব হ্যান্ডসাম। একহারা শরীরের কোথাও বাড়তি মেদের চিন্হ নেই। ফর্সা চেহারায় কাঠিন্যতা আর সরলতার মিশেল। গম্ভীর মুখটা দেখে ভয় লাগে আবার হাসলে সরলতার প্রতীক মনেহয়। রণ মনোযোগ দিয়ে মোবাইলে কিছু করছে। শুভ্রা তার দিকে চেয়ে থেকে ঢোক গিললো বারকয়েক। হঠাৎ রণর নজর পড়লো তার দিকে-“আরে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন? খেতে দেবেন না আজ?”
“হ্যহহ, এই তো দিচ্ছি।”
শুভ্রা অতি দ্রুত খাবারটা দিতে যেয়ে প্লেট হাত থেকে নড়বড়িয়ে যায়। শেষ মুহূর্তে রণ ধরে ফেলে প্লেটটা। উদ্বিগ্ন হয়ে শুভ্রার দিকে তাকালো-“আপনার শরীর খারাপ নাকি? এরকম করছেন কেন?”
শুভ্রা পাশের সোফায় বসলো-“না সেরকম কিছু না। আমি ঠিক আছি।”
রণ মোলায়েম কন্ঠে বললো-“রাত জাগছেন কেন? ঘুমিয়ে পড়লেই পারেন।”
বলতে বলতে ভাত মাখিয়ে শুভ্রার সামনে ধরে-“নিন হা করুন।”
শুভ্রা লাজুক হেসে মাথা নাড়ে-“আরে আমি খেয়েছি তো। আপনি খান। সারাদিন পর খেতে বসেন তাতেও আমি ভাগ বসালে হবে?”
রণ তবুও লোকমাটা মুখের সামনে ধরে থাকলো-“প্লেটে যত কম খাবারই থাক না কেন বউয়ের জন্য কখনো কম পড়বে না। আমি জানি আপনি কিছু খাননি রাতে। নিন তাড়াতাড়ি হা করুন। আমাকে কষ্ট দেবেন না আর। লোকমা ধরে রাখতে রাখতে হাত ব্যাথা হয়ে গেলো।”
শুভ্রা বাধ্য হয়ে হা করে। ওকে একবার দেয় নিজে একবার খায়। এটা যেন রণর জন্য নিয়ম হয়ে গেছে। শুভ্রা মুগ্ধ হয়ে দেখছে সামনের মানুষটাকে।
শুভ্রাকে লক্ষ করে রণ মুচকি হাসলো-“আমার হাত থেকে খাওয়াটা নেশা হয়ে যাচ্ছে নাকি আপনার?”
“হুমম। খুব ভালো লাগছে।” রণকে দেখতে দেখতে শুভ্রা আনমনা হয়ে জবাব দিলো। পরক্ষনেই হুশ ফিরে পেয়ে ভীষণ লজ্জা পেলো-“আমি আপনার চা নিয়ে আসছি।”
বলেই উঠে ছুটে পালালো। কিছুক্ষণ পর যখন দুইকাপ চা হাতে নিয়ে ঘরে ঢুকলো তখন রণর খাওয়া শেষ। সে আবারও মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে গেছে। শুভ্রা ডাকলো-“আপনার চা।”
“থ্যাংক ইউ। বসুন, একসাথে চা খাই।”
শুভ্রা মাথা দুলিয়ে রণর সামনে বসলো। রণ চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে শুভ্রার দিকে তাকালো। ওকে এই মুহূর্তে শান্ত দীঘির মতো লাগছে। টলটলে মুখ নিয়ে মাঝে মাঝে নিঃশব্দে চায়ে চুমুক দিচ্ছে। রণ হুট করে শুভ্রার সামনে ঝুলে থাকা চুলগুলো কানের পাশে গুঁজে দিয়ে নরম গলায় বললো-“কাল আমি এলাকায় যাব। আপনি চাইলে আমার সাথে যেতে পারেন আপনার বাবার বাসায়। যাবেন?”
রণর সামান্য স্পর্শ পেয়ে যেন মোমের মতো গলে গেলো শুভ্রা। ইচ্ছে হলে রণকে বলে আরও একবার অমন করতে। অনিচ্ছায় মাথা নাড়ে। কিন্তু পরক্ষণেই মনটা সচেতন হয়ে উঠলো-“কাল হঠাৎ যাচ্ছেন যে? বিশেষ কোন দরকার?”
রণ মাথা দুলায়-“হ্যা, ফুপু যাবে পরশু। দলের সম্মেলন হবে। আমি কাল যেয়ে সব গোছাব বলেই আজ ছুটির দিনেও অফিস করলাম।”
“হঠাৎ? কি এমন কাজ?”
রণ হাসলো-“হঠাৎ করে কিছু হয় নাকি? পরশু খুব বড় একটা প্রজেক্টের কাজের ঘোষণা দেবেন ফুপু। দলের কিছু জরুরি কাজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।”
“কি সিদ্ধান্ত?”
শুভ্রা আলগোছে জানতে চাইলো। রণ কিছুক্ষণ চুপ থেকে শুভ্রাকে দেখলো-“সেসব আপনার না শুনলেও চলবে। যেটা শুনতে হবে সেটা বলি?”
শুভ্রা কৌতূহলে তাকায়-“কি?”
রণ মুচকি হেসে বললো-“আপনাকে সুন্দর লাগছে শুভ্রা।”
হুট করে শুভ্রার চারপাশটা রঙিন হয়ে গেলো। ওর বুকের মাঝে যেন কলকল করে ঝর্ণাধারা বয়ে যায়। এতটুকু কথায় মনটা স্নিগ্ধ কোমলতায় ভরে ওঠে। তারপরই অভিমানে মনটা কুটকুট করে-“তিনদিনে আজ প্রথম নজরে এলো?”
রণ মুচকি হাসলো-“নাহ, প্রতিদিন নজরে এসেছে। কিন্তু বললে তো আবার আপনার মাটিতে পা পড়বে না।”
শুভ্রা বড় বড় চোখে তাকায়-“তাই ভাবেন আপনি?”
রণ দুষ্ট হেসে মাথা দুলায়-“ভাবি তো। সুন্দরী মেয়েদের এমনিতেই অহংকারে মাটিতে পা পড়ে না। তাই তাদের প্রসংশা ভেবেচিন্তে করতে হয়।”
শুভ্রা হুট করে উঠে দাঁড়ায়-“আপনি খুব খারাপ মানুষ তো? প্রতিদিন আপনার জন্য সেজেগুজে বসে থাকছি আর আপনি কিনা আমাকে ইচ্ছে করে ইগনোর করছেন? কথা নেই আপনার সাথে।”
শুভ্রা ঘুরতেই রণ ওর হাত ধরে ফেলে। টেনে নিজের পাশে বসিয়ে দেয়। হাতটা শক্ত করে মুঠোয় পুরে নিয়ে আচমকা ঠোঁট ছুয়ে দিয়ে বললো-“আপনি অভিমান করতেও জানেন দেখছি?”
শুভ্রা লজ্জা পেয়ে গেলো। মানুষটা হুটহাট এমন সব কাজ করে যে লাজুক হওয়ারও সুযোগ দেয় না। শুভ্রা হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইলে রণ হাতটা আরও টেনে নিয়ে বুকের সাথে আঁটকে রেখে বললো-“এই বলছেন আমার জন্য সাজগোছ করেছেন আবার এপ্রিশিয়েট করলে রাগ করছেন। কি করি বলুন তো?”
রণর এমন কথায় শুভ্রা মাথা নিচু করে হাসলো। ওর ফর্সা গালে রক্ত জমেছে। তা দেখে রণ আরেকটু দুষ্টুমি করবে মনস্থির করলো। রণ শুভ্রার কানে ফিসফিস করলো-“একটা পঁচা কাজের ইচ্ছে জেগেছে মনে। করবো?”
শুভ্রা ভরকে গিয়ে রণর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে জানতে চাইলো-“কি পঁচা কাজ?”
রণ সুযোগ মতো শুভ্রার অধরে খুব আলতো করে অধর স্পর্শ করে বললো-“খুব ইচ্ছে করছিল মিষ্টি খেতে। খেয়ে নিলাম।”
শুভ্রা হতবিহ্বল। মনেহচ্ছে হুশ হারাবে যে কোন মুহূর্তে। নিজের অজান্তেই কি সে রণর খুব কাছে চলে যাচ্ছে দিনদিন? সে কি খুব ভুল কিছু করছে?

চলবে—
©Farhana_Yesmin

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here