প্রেম_হয়ে_এলি_তুই #লেখিকা : #ohona_akther #পর্ব : ২১

0
64

#প্রেম_হয়ে_এলি_তুই
#লেখিকা : #ohona_akther
#পর্ব : ২১

🚫 কপি করা সম্পুর্ণ নিষেধ

সবাই ড্রয়িং রুমে বসে অপেক্ষার প্রহর গুনছে কখন অবনি আসবে। অবশেষে অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবনি সদর দরজায় পা রাখতেই প্রিয়া খান উঠে গিয়ে ঠাসস করে অবনির গালে চড় বসিয়ে দিলো। অবনি কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলল-
” মা! ”

প্রিয়া খান কড়া কন্ঠে বলল-
” খবরদার! মা বলে ডাকবেনা আমায়। তোমার ওই নোংরা মুখে মা ডাক শোনার বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও আমার নেই। আমার ছেলেটাকে তো শেষ করেই দিয়েছো। আর এখন এ বাড়ির সম্মান শেষ করতে বসে আছো। আমাদের তো এখন মনে হচ্ছে তুমি ইচ্ছে করেই আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছো এ বাড়ির সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। ”

কথাগুলো অবনির বুকে বাঁধলো। অবনি ধীর পায়ে জাহানারা খানের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলল –
” দাদু! তুমিও কি বিশ্বাস করো আমি তোমার দাদুভাই কে মেরে ফেলেছি? কি হলো বলো? তুমিও বিশ্বাস করো আমি খু’নি? ”

জাহানারা খান দু কদম পিছিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো অবনির থেকে। এতে অবনির মুখে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটলো।

” আমার মতো একজন খু’নিকে জেলে কেনো পাঠিয়ে দিচ্ছোনা। ”

প্রয়া খান এগিয়ে এসে বলল –
” যদি উপযুক্ত প্রমান হাতে থাকতো তাহলে এতোদিন তোমাকে সহ্য করতাম না। কি ভেবেছিলে আমার বাবুনকে মেরে এখন এ বাড়ির সম্পত্তি হাতিয়ে নিবে? বেরিয়ে যাও এ বাড়ি থেকে এখনিই বেরিয়ে যাও। ”

অবনি চোখের পানি ছেড়ে বলল-
” কোথায় যাবো মা? আমার যে এ পৃথিবীতে আর কেউ নেই। তাছাড়া এটা আমার স্বামীর বাড়ি। একটা মেয়ে বিয়ের পর তার স্বামীর বাড়িই তো তার একমাত্র ঠিকানা। ”

” লজ্জা করেনা তোমার? আবার স্বামীর বাড়ি দাবি করছো? বিয়ে হতে না হতেই তো আমার ছেলেটাকে শেষ করে দিলে। পারবে আমার ছেলেটাকে ফিরিয়ে দিতে আমার কাছে? ”

” আমি তো কোনো অপরাধ করিনি মা। আমি নিজেও জানিনা কারা কেনো উনাকে মারবে। উনি নেই এটা আমি বিশ্বাসও করিনা। ”

” একদম নাটক করবেনা। অনেক নাটক সহ্য করেছি তোমার এসব নাটক । মরে যাওয়া মানুষ কি করে ফিরে আসে। জেগে জেগে খোয়াব দেখছো?তোমার কি আমাদের বোকা মনে হয়? যেভাবে বুঝাবে সেভাবেই বুঝবো? কেউ এসে আমার বাবুনকে মেরে ফেলেছে আর তুমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছিলে? শোনো মেয়ে তোমাকে ভালোই ভালোই বলছি এ বাড়ি ছেড়ে চলে যাও। ”

চৈতীর মন তো খুশিতে ফুরফুরে হয়ে আছে অবনির এই পরিনতি দেখে। চৈতী মনে মনে বলছে-
” এটাই কপাল। সো সেড অবনি। খুব শখ ছিলো তোমার আমার পেছনে লাগার। সবার সামনে অপমান করে আমাকে বাড়ি ছাড়া করেছিলে। আর আজ তোমারই এ বাড়িতে ঠাই হচ্ছেনা। আদরের নাতিকে হারিয়ে বুড়িও তোমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো। আজ আমি তোমায় করুনা দেখাবো৷ তুমি হবে এ বাড়ির আশ্রিতা৷ আর সব কিছুর রাজত্ব করবো আমি। টাকা পয়সা সম্পত্তি সব আমার। ”

চৈতী প্রিয়া খানকে নেকা কন্ঠে বলল-
” খালামনি আমার একজন হেল্পিং হ্যান্ড দরকার। তাছাড়া বাড়িতেও তো কম কাজ নেই। মেয়েটা কোথায় যাবে বলো। তার চেয়ে বরং এখানেই থাক। আমাদের কাজের লোক হয়ে৷ কাজের লোক হয়ে থাকলে তো আর সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে পারবেনা তাইনা। ”

” যা খুশি কর। তবে আমাদের খাবারের দায়িত্ব ভুলেও এই মেয়েকে দিবিনা। কখন আবার আমাদের খাবারে বিষ মিশিয়ে দিবে কে জানে? ”

কথাটা বলে প্রিয়া খান গটগট করে চলে গেলো। সেই সাথে বাড়ির সকলে। ড্রয়িং রুমে রয়েছে চৈতী আর অবনি। চৈতী অবনির কাঁধে হাত রেখে ফিসফিস করে বলল-
” খুব কষ্ট হচ্ছে তাইনা! আই ফিল ইউর পেইন। আমারও তোমার জন্য খুব মায়া হয়৷ জানি বিশ্বাস করবে না। তবে তোমার জায়গায় আমি হলে কতো আগেই সুইসাইড করতাম। এতো অপমানের পর এ বাড়িতে আশ্রিতা হয়ে থাকতাম না। সিরিয়াসলি সত্যি বলছি।”

অবনি এক ঝটকায় চৈতীর হাত সরিয়ে বলল –
” একটা কথা কি জানো? পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। উই পোকা দেখেছো কখনো? পুরপুর করে উড়ে আর হঠাৎ ডানা ভেঙ্গে যায়। কে বলতে পারে হাওয়াটা কখন আবার উল্টো দিকে ঘুরে যায়। ”

” হাউ ডেয়ার ইউ? এতো কিছুর পরও এতো বড় বড় কথা বলার সাহস কই থেকে পাও তুমি? ওওও আচ্ছা আচ্ছা! মীর মুগ্ধকে দেখে কি ভেবেছো তোমার আরশ ফিরে এসেছে! যদি তাই ভেবে থাকো তাহলে সেই আশায় জল ঢেলে দাও। ও তোমার আরশ নয়। ওর সম্পর্কে সবকিছুই আমি জেনে নিয়েছি। ওই যে রুপকথা ওর সাথে মুগ্ধর বিয়ে এক বছর আগে থেকেই ঠিক করা। তোমার আরশ নিশ্চয়ই অন্য একটা মেয়ের জন্য তোমার গায়ে হাত তুলবে না। আর অন্য একটা মেয়ে বিয়ে করার জন্য ঢেং ঢেং করে হ্যাঁ বলে দিবে না। ”

অবনি সন্দিহান কন্ঠ বলল-
” তোমার মনে হচ্ছে না তুমি উনাকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবছো? তোমার ভাবনা অনুযায়ী তো মনে হচ্ছে সবকিছু তোমারই প্ল্যানমাপিক হয়েছে। ”

অবনির কথায় চৈতীর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। চৈতী শক্ত কন্ঠে বলল-
” কিসব আজে বাজে বকছো। তুমি কিন্তু বেশি বারাবারি করছো। হানিমুনে তুমি আর আরশ গিয়েছিলে। ভাগ্যিস আমি তোমাদের সাথে যাইনি। নাহলে তো নিরদ্বিধায় তুমি আমাকে ফাঁসিয়ে দিতে। অবনি আমি তোমাকে ওয়ার্ন করছি ভুলেও আমার দিকে আঙ্গুল তুলবেনা৷ আমাকে আমার মতো থাকতে দাও৷ ভুলে যেওনা তুমি এবাড়িতে থাকার ঠাই পেয়েছো আমার জন্য। মানুষ যে কতোটা অকৃতজ্ঞ হতে পারে তোমায় না দেখলে জানতাম না। ”

” রিলাক্স ননদিনী। এতো হাইপার হচ্ছো কেনো? এতো হাইপার হচ্ছো কেনো? যদি তুমি দোষ না করবে তবে এতো হাইপার হবে কেনো? কই মা তো আমার দিকেও আঙ্গুল তুলেছিলো আমি তো হাইপার হইনি৷ কারন আমি জানি আমি নির্দোষ। ”

” ননদিনী! কে ননদিনী? শোনো এখন আর তুমি আমার ভাবি নও। অবশ্য আগেও তোমায় ভাবি ডাকার কোনো ইচ্ছেই ছিলোনা আমার। বাধ্য হয়েই ডাকতে হয়েছে৷ তাই বলে এখনও যে তুমি আমার ভাবি এটা ভুলে যাও। এ বাড়িতে এখন তোমার মাঝে আর একটা সার্ভেন্টস এর মাঝে কোনো পার্থক্য নেই। সো নিজের লিমিট দেখে কথা বলবে। ”

” লিমিট আমার নয় তোমার দেখা উচিত। আইন অনুযায়ী আমি এখনও বাড়ির বউ। নিজের বাড়ির কাজ করলে তাকে কাজের লোক বলা হয় না। আর কি বললে তুমি? আশ্রিতা! আশ্রিতা তো তুমি। দিনের পর দিন বিনা পারিশ্রমিকে এ বাড়ির অন্য ধ্বংস করছো। ”

চৈতী অবনির কথায় তেলে বেগুনে জ্বলে অবনির গায়ে হাত তুলবে তখনই অবনি চৈতীর হাত মুচড়ে ধরে পেছন ঘুরিয়ে বলল-
” ভুলেও সেই দুঃসাহস দেখিও না। তুমি আমার সরলতা দেখেছো। কঠোরতা দেখোনি৷ আমায় কঠোর হতে বাধ্য করোনা। ”

চৈতী ব্যাথায় চোখ খিঁচে শক্ত কন্ঠে বলল-
” হাত ছাড়ো অবনি নাহলে আমি কালই তোমায় এ বাড়ি ছাড়ার ব্যবস্থা করবো।”
অবনি চৈতীর ছেড়ে উপরে উঠতে নিলে চৈতী অবনির হাত ধরে বলল-

” উপরে কোথায় যাচ্ছো। খালামনি আরশের রুমে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আজ থেকে তুমি সিঁড়ির পাশের ছোট রুমটাতে থাকবে। ”
কথাটা বলে চৈতী সিঁড়ি দিয়ে উপরে চলে গেলো। এদিকে অবনির চোখ বেয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো। অবনি সিঁড়ির রেলিং এর সাথে মাথা ঠেকিয়ে বলল-
” কি করে তুমি এতোটা পাল্টে গেলে দাদু! সবাই নাহয় বদলে গেছে কিন্তু তুমি! তুমি সত্যিই আজ বুঝিয়ে দিলে পর পরই থাকে পর কখনোও আপন হয়না। যেই তুমি আমাকে একদিন আমাকে সম্পূর্ণ সাপোর্ট করেছিলে সেই তুমি আজ! তোমার এই পরিবর্তন আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছে দাদু। তোমরা কেউই আমাকে কখনো ভালোবাসোনি।”

___________________

” আসল কালপ্রিটকে দ্রুত শনাক্ত করো। আর তোমাকে সে একটা কাজ দিয়েছিলাম তা কি সম্পন্ন হয়েছে? ”

ওপাশ থেকে………….

” গুড। বিকেলের মধ্যেই ওটা আমার চাই। যাতে কালপ্রিটদের মুখোশের আড়ালে লুকায়িত চেহারাটা বেরিয়ে আসে। ঠিক আছে এখন রাখছি। ”

পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে মুগ্ধ পাশ ফিরে বলল-
” ওহ! তুমি। ”

” জ্বি স্যার। বলুন কেনো এতো জরুরি তলব৷ ”

” রুপকথা তোমাকে কতোবার বলেছি আমাকে স্যার বলবে না। ”

” আচ্ছা ঠিক আছে। তো কেনো এতো জরুরি তলব বলো! ”

” আমি এবার সামনে আসতে চাই। এতো লুকোচুরি খেলা আমার আর ভালো লাগছে না। ”

মুগ্ধর কথা শুনে রুপকথা উত্তেজিত কন্ঠে বলল-
” হোয়াট? আর ইউ ক্রেজি? তুমি এখনো আসল কালপ্রিটকে ধরতেই পারোনি৷ এখনই সামনে আসতে চাইছো? ”

” এছাড়া আর কিছু করার নেই রুপকথা। আমি এভাবে অবনিকে কষ্ট পেতে দেখতে পারবোনা। এটা আমাকে মৃত্যুর চেয়েও বেশি কষ্ট দিচ্ছে। ”

রুপকথা মুগ্ধকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলল-
” পাগলামি করো না মুগ্ধ। এতোটা রিস্ক আমি তোমাকে কিছুতেই নিতে দিবো না।”

” আমি একবার যা ডিসিশন নিই সেটাই করি৷ আর আমি যেটা ডিসিশন নিয়েছি সেটাই ফাইনাল। তুমি আমার জন্য যা করেছো তার জন্য আমি তোমার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। হয়তো তুমি আর আঙ্কেল আমাকে সেদিন না বাঁচালে চিরকালের মতো আরশ নামক নামটা হারিয়ে যেতো। তুমি সত্যিই আমার একজন প্রকৃত বন্ধু। ”

” আমি কিন্তু তোমাকে বন্ধু ভেবে হেল্প করিনি। ”

রুপকথার কথায় মুগ্ধ বিস্মিত হয়ে তাকালো।

” মানে! ”

” হুমম। আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম মুগ্ধ। তুমি আরশ হও আর যেই হও আমার কাছে তুমি মুগ্ধ হয়েই বেঁচে থাকবে। যেদিন প্রথম তোমাকে দেখেছিলাম সেদিনই তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। ভয় নেই আমি কখনোও তোমার ভালোবাসার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবো না। ”

” ভালোবাসা অপরাধ নয় রুপকথা। তবে ভুল মানুষকে ভালোবাসা অপরাধ। চিন্তা করোনা খুব শীঘ্রই তোমার জীবনে সঠিক মানুষটি আসবে। ”

” একটা রিকোয়েস্ট করবো? ”

” হুমম। ”

” আমি তোমাকে শেষ পারের মতো হাগ করতে চাই৷ ”
কথাটা বলে আরশকে জড়িয়ে ধরতে নিলে আরশ বাঁধা দিয়ে বলল-

” নাহ! এই বুকে একজনের নাম লিখা হয়ে গেছে। এই বুকে মাথা রাখার অনুমতি শুরু একজনেরই। পুরো আমিটাই তার হয়ে আছি। তাই অন্যকোনো নারী আমাকে স্পর্শ করুক আমি তা চাইনা। আ’ম সরি রুপকথা। আমরা দুজন বন্ধু। জাস্ট বন্ধু হয়েই থাকবো। আমি চাই আমাদের বন্ধুত্ব জাস্ট বন্ধু হয়েই থাকুক। ভালোবাসার পরই বন্ধুত্বের স্থান। যেকোনো বিপদে তুমি আমাকে তোমার পাশে পাবে। আমি আশা করবো তুমি আমার বন্ধুত্বের মর্যাদা রাখবে৷ ”

রুপকথা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝালো।

” আ’ম সরি।আমি বুঝতে পারিনি তুমি এভাবে রিয়্যাক্ট করবে। তবে এটা সত্যি অবনি খুব লাকি তোমার মতো একজন ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে। ”

” কে বললো লাকি! সবার সামনে ওকে আমি থাপ্পড় দিয়েছি, অপমান করেছি। ঠিকই বলেছো কয়টা মেয়ের এরকম ভাগ্য হয়। ক’জন মেয়ে বিয়ের পর পর এতোটা অবহেলার শিকার হয়! ”

” তুমি সবার চোখে ফাঁকি দিলেও আমার চোখকে ফাঁকি দিতে পারোনা। মুগ্ধ তুমি যা করেছো তা সবদিক বিবেচনা করেই করেছো। তুমি যে অবনিকে আঘাত করার অপরাধ বোধ থেকে নিজের হাতটা ইচ্ছে করেই কেটেছো তা আমি বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছি। কি ভেবেছো আমি বুঝতে পারবোনা? আত্মরক্ষার প্রয়োজনে অবনির গায়ে হাত না তুলে যদি আমি এমনি হাত তুলতাম নিঃসন্দেহে তুমি আমায় এমনি এমনি ছেড়ে দিতেনা৷ আর এখন এতো ভালো ভালো কথা বলতেনা। ”

রুপকথার কথায় মুগ্ধ চমকে তাকালো।
তারপর কথা এড়িয়ে বলল-
” ততুমি একটু বেশিই ভাবছো। হাতটা এক্সিডেন্টলি কেটে গেছে৷ চলো আমাদের যেতে হবে। ”

#চলবে…

( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি শুধুমাত্র মেয়ে পাঠিকাদের জন্য একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলেছি।কেউ এড হতে চাইলে আমার Ohona Akther আইডিতে নক দিও
❝ আপু গ্রুপে এড দাও ❞ লিখলেই বুঝবো আপনি আমার পাঠিকা 🥹🫶)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here