আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️ #লেখিকা-মালিহা_খান❤️ #পর্ব-১৭

0
77

#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা-মালিহা_খান❤️
#পর্ব-১৭

ডাইনিং টেবিলে ব্রেক-ফাস্ট করার সময় হঠাৎই গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে যায় মায়া।
তন্ময়-ইতি দুজনেই হতভম্ব হয়ে চেয়ে থাকে।আরিয়ান দাড়াতেই পেছন থেকে কুকুরের ডাকে সেদিকে তাকায় সবাই।আরিয়ানকে দেখে কুকুর গুলো দৌড়ে তার পায়ের কাছে এসে মুখ ঘঁষছে থাকে।
মায়া ভয়ে সিটিয়ে যায়।কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,

—“ওদেরকে সরান প্লিজ,কামড়ে দিবে।”

আরিয়ান তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।কুকুরগুলো যেন খুশিতে লাফাতে থাকে।
—“Don’t be scared.ওরা কামড়াবে না।”

একটা কুকুর মায়ার দিকে আসতেই ছিঁটকে দু’কদম পিছিয়ে যায় মায়া।পা কাঁপছে তার।এমনেই সে কুকুড় প্রচন্ড ভয় পায়।তার উপর এদের আকৃতি এত বড়।গা ভর্তি লম্বা লম্বা সাদা পশম।দেখতে খুব সুন্দর।তবুও ভয় লাগছে মায়ার।
আরিয়ান প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে মায়ার দিকে তাকায়।সে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে।ইতির দিকে তাকাতেই সে বলে,

—“ম্যাম কুকুর ভয় পান।শুনেছিলাম ছোটবেলায় একবার কুকুর ধাঁওয়া করেছিলো তাকে।কামড়ায়নি তবে খুব ভয় পেয়েছিলেন তখন।

আরিয়ান কাছে গিয়ে মায়ার বাহু জড়িয়ে ধরে।হাতের ইশারায় কুকুরগুলোরও বসতে বললেই তারা সুন্দরমতো পাশাপাশি বসে লেজ নাড়াতে থাকে।আরিয়ান নরম কন্ঠে বলে,

—“মায়া,,ভয় পায়না।চোখ খুলো।ওরা কিছু করবেনা।ট্রাস্ট মি!।

—“না প্লিজ,,,ওদেরকে নিয়ে যান।ভয় লাগছে।!

আরিয়ান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে তন্ময়কে ইশারা করে।তন্ময় মাথা নাড়িয়ে কুকুর দুটোকে গার্ডেনে নিয়ে যায়।মায়া ধীরে ধীরে চোখ মেলে।আরিয়ান তাকে ছেড়ে দাড়ায়।নিজের চেয়ারে বসতে বসতে বলে,

—“খাবার শেষ করো।ওরা এখন আসবেনা।”

মায়া চুপচাপ খেতে বসে।তার কেন যেন মনে হচ্ছে আরিয়ান তার উপর রেগে আছে।গতকাল গার্ড বলেছিলো কুকুর গুলো আরিয়ানের খুব প্রিয়।তবে কি সে ভয় পাওয়ায় আরিয়ান রেগে গিয়েছে?কিন্তু সে কি করবে?তারতো সত্যিই খুব ভয় করছিলো।

খাওয়া শেষে হাত ধুয়ে রুমে যেতে নিলেই আরিয়ান তার হাত টেনে ধরে।মায়া জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে বলে,

—“আসো আমার সাথে।”

মায়া আর কিছু বলেনা।আরিয়ানের পিছে পিছে গার্ডেনে এসে দাড়ায়।আরিয়ান তার হাত ধরেই সেই ছোট্ট ঘরটার সামনে নিয়ে যায়।।গার্ডরা দরজা খুলে দেয়।আরিয়ান ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলে,

—“ভয় পাবেনা ঠিকাছে?”

মায়া ফট করে বলে দেয়,
—“আপনি আমার সাথে রাগ করেছেন?”

আরিয়ান ভ্রু কুচকায়।হেসে দিয়ে বলে,
—“রাগ করবো কেন?”

—“আমি ওদের ভয় পেলাম তাই।ওরা তো আপনার খুব প্রিয়।”

আরিয়ান মৃদু হেসে বলে,
—“তুমিও আমার খুব প্রিয় মায়াবতী।প্রিয় মানুষের সাথে রাগ করা যায়না।আর তোমার সাথেতো একদমই না”।

মায়ার জানতে ইচ্ছে করে।”কেন তার সাথে রাগ করা যাবেনা?”কিন্তু জিজ্ঞেস করতে পারেনা।কেন?ওইয়ে লজ্জা।তার যে খুব লজ্জা লাগছে।

ভেতরে ঢুকেতেই কুকুরগুলো দাড়িয়ে লেজ নাড়াতে থাকে।মায়া একটু পিছিয়ে যায়।আরিয়ান তাকে বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।বলে,

—“আমি আছিতো।ওরা কামড়ালে কি আমি তোমাকে এখানে আনতাম বলো?”

মায়া উওর দেয়না।ভীত নয়নে কুকুর গুলোর দিকে চেয়ে থাকে।আরিয়ান হাত দিয়ে ইশারা করে বলে,

—“ওর নাম জ্যাক আর ওর নাম জেনি।ওদের কে আমি নিয়ে এসেছিলাম প্রায় ৩ বছর আগে।তখন ওরা একদম বাচ্চা ছিলো।এখানেই বড় হয়েছে।খুব আদরের।বুঝলে?

মায়া মৃদু স্বরে বলে,
—“হু”।

একজন এসে মায়ার পায়ে মাথা ঘঁষতেই মায়া আরিয়ানের বাহু খামছে ধরে বুকে মুখ লুকায় মায়া।আরিয়ান তার চুলের ভাঁজে হাত গলিয়ে আশ্বস্ত করে বলে,

—“জ্যাক আদর নিতে এসেছে।মাথায় হাত বুলিয়ে দাও।দেখো তোমার ভয় কেটে যাবে।”

মায়া ঘাড় বাকিয়ে তাকায়।কুকুরটা ক্রমাগত তার পায়ে মাথা ঘঁষছে।সে কাঁপা কাঁপা হাতে মাথায় আদর করতেই তার হাতে জিহ্বা দিয়ে চেটে দেয় জ্যাক।মায়া আৎকে ওঠে হাত সরিয়ে নেয়।আরিয়ান হেসে দিয়ে বলে,
—“জ্যাকও আদর করছে।পছন্দ হয়েছে তোমাকে”।

মায়ার ঠোঁটের কোঁণে মৃদু হাসি ফুটে উঠে।জেনি এগিয়ে আসলে তার মাথায়ও আদর করে দেয় সে।ভয়টা কেটে গেছে।আরিয়ান হাতের ঘড়ির দিকে তাকায়।অফিসের জন্য লেট হয়ে যাচ্ছে তার।

—“ভয় কমেছে?”

—“হুম”।

—“শিওর?আর ভয় পাবেনাতো ওদের?”

মায়া দু’দিকে মাথা নাড়ায়।আড়িয়ান হেসে তার কপালে গভীরভাবে চুমু খায়।সে চাচ্ছিলোনা মায়া কোনোরকম ভয়ে থাকুক।
তাও আবার তার কোন বিষয়ের জন্য।
________________
আরিয়ানের অফিসে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে।হাত নাড়িয়ে তাকে বিদায় জানায় মায়া।মনে মনে ভাবে,
“লোকটা এত ভালো কেন?”

~চলবে~

অনেক লেট হয়ে গেল সেজন্য সরি।আগামী সপ্তাহে আমার প্র্যাকটিকাল সাবমিট করার ডেট।সেসব নিয়েই খুব ব্যস্ত।কাল গল্প দিতে পারবোনা।পরশু থেকে আবার নিয়মিত দিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here