#আমি_শুধুই_তোমার🌺
#পর্বঃ০৮
#Arshi_Ayat
হঠাৎ ইনশিরা পড়ে যেতে নিলেই কেউ একজন এসে ওর হাতটা ধরে ফেলে।তারপর হাত ধরে উঠিয়ে বলে
“এই যে মিস একটু দেখে শুনে খেলবেন তো।এখনি না ধরলে তো কোমরের দুই টুকরা হয়ে যেতো।”
ইনানও এসেছিলো ইনশিরাকে ধরতে কিন্তু ছেলেটির জন্য পারে নি।ইনান রাগে হাত মুট করে ফেলে।পিছন থেকে আয়াশ ইনানের কাধে হাত রেখে কানে কানে বলল
“কুল ইয়ার।ও আমার আমার খালাতো ভাই মানে যার বিয়ে তার ফুপাতো ভাই।শালা এক নাম্বারের লুচ্চা।”
ইনান রাগে বলল
“ও যদি আমার ইনশুর দিকে চোখ দেয় তাইলে ওর খবর আছে।”
“দেখি কি করে।আয় ওদের কাছে যাই শুনি কি বলে।”
তারপর ওরা ওদের দিকে আসতে লাগলো।এদিকে ছেলেটা ইনশিরার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
“হাই আমি নীলাস হাসান।আকাশের ফুপাতো ভাই।”
ইনশিরা সৌজন্যমূলক হেসে হাত মিলিয়ে বলল
“জ্বি,আমি ইনশিরা।কিন্তু আকাশ কে?”
নিলাস একটু হেসে বলল
“যার বিয়েতে এসেছেন সে।”
“ওহ।”
ওরা কথা বলতে বলতে আদ্রি আর ইনান,আয়াশ ও চলে এসেছে সেখানে।আয়াশ এসেই নীলের সাথে হাত মিলিয়ে বলল
“কেমন আছো?”
“এইতো ভালো, তুমি?”
“আমিও ভালো।আর ওরা তিনজন আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।”
“ওহ।”
নীল প্রথমে আদ্রির দিকে হাত বাড়িয়ে বলল
“হাই।কেমম আছেন?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি?”
“ভালো আছি।”
তারপর ইনানের সাথে হ্যান্ডসেক করে ভিতরে চলে গেলো।ইনান আয়াশের কানে কানে বলল
“দোস্ত শালা মনে হয় আমাদের দুজনের টার দিকেই চোখ দিছে।”
“দেওয়াইতাছি চোখ দাড়া।এমন প্লেন করমু বাপের জন্মেও চোখ দেওয়ার সাহস পাইবো না।”
“কি করবি রে?”
“আগে দেখমু ও কি করে।তারপর প্লেন।”
“ওকে দেখি কি প্লেন কিন্তু তুই যদি কিছু করতে না পারিস তাইলে ওরে আমার হাত থেকে কেউ বাচাতে পারবো না।”
আয়াশ ইনানের মাথায় টোকা দিয়ে বলল
“এটাতো মুভির ডায়লগ ।”
“আরে একটু আগে মুভি দেখছি না এইজন্য এই ডায়লগ মাথায় আসছে।”
আয়াশ ওর কথায় জোরে জোরে হেসে দিলো।তারপর ঘরে গিয়ে দেখে ইনশিরা আর আদ্রি হেসে হেসে নীলের সাথে কথা বলছিলো।এটা দেখে ইনান আয়াশ দুজনের শরীরেই আগুন ধরে গেছে যাইহোক কোনমতে দুজনেই সেই আগুনে পানি ঢেলে ওদের সাথে গল্প করতে বসলো।
সন্ধ্যার সময় ইনশিরা একা ছাঁদে দাড়িয়ে আছে কারণ আয়াশ আর ইনান বাজারে গেছে লেবু আনতে আয়াশের নানি পাঠিয়েছে আর আদ্রি ঘরে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে কিন্তু ইনশিরার ঘুম আসছে না তাই সে এখানে দাড়িয়ে আছে।হঠাৎ কে যেনো পিছন থেকে বলে উঠলো
“মন খারাপ নাকি?”
ইনশিরা পিছনে তাকিয়ে নীলকে দেখতে পেলো তাই ও সৌজন্যমূলক হেসে বলল
“না তেমন কিছু না।আসলে ওরা কেউ নেই তো তাই এখানে দাড়িয়ে আছি।”
“ওহ!!কিছু মনে না করলে আমি আপনার সাথে কথা বলতে পারি।”
“আরে মনে করার কি আছে।বলতে পারেন।”
ওরা দুজনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কথা বলছে।এদিকে আয়াশ আর ইনান নিচ থেকেই দেখছে দুজনে কথা বলছে।ইনানের প্রচুর রাগ উঠছে আয়াশ ওকে থামিয়ে দিয়ে বলল
“দোস্ত এভাবে না দাড়া ওর শায়েস্তা করছি।চল ছাদে চল।”
দুজনই ছাদে উঠলো তারপর ওদের সাথে কিছু কথা বলল।তারপর সবাই নিচে নেমে গেলো।সন্ধ্যা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত নীলকে ইনান আর আয়াশ চোখে চোখে রেখেছে।নীল কখনো আদ্রির সাথে তো কখনো ইনশিরার সাথে লাইন মারার চেষ্টায় আছে।এগুলো দেখে আয়াশ আর ইনান দুজনেরই রক্ত মাথায় উঠে গেছে।
এখন রাত ১১.০০ টা..
নীল বাইরে গেছে।আয়াশ আর ইনানও ওকে খুজতে বাইরে গেছে কারণ নীলকে বলে দিবে ইনশিরা আর আদ্রির সাথে কথা বলতে না।কিন্তু ইনান আর আয়াশ বাড়ির সামনে জাম গাছটার সামনে এসে একটা কথা শুনে থমকে গেছে।নীল কাউকে যেনো ফোনে বলছিলো
“দোস্ত মাল দুইটা হেব্বি।”
“……..”
“একটার নাম ইনশিরা আরেকটার নাম আদ্রি।”
“…….”
“না মামা আমার দুইটাই লাগবো।”
“…..”
“ওকে,মামা বাই।”
নীলের কথা শেষ হতেই ইনান গিয়ে নীলকে মারতে চাইলো কিন্তু আয়াশ আটকালো।ইনান রেগে বলল
“কি রে আটকালি কেনো?”
“দোস্ত প্লিজ শান্ত হ।”
“কেমনে?দেখলি ও আমার ইনশুরে মাল কইছে।ওরে তো আমি….”
“কুল ইয়ার আদ্রিরে ও তো কইছে।শোন ওরে যদি আমরা মারি তাইলে এখন একটা হাঙ্গামা শুরু হইবো।আর সব দোষ পড়বো আমাদের ঘাড়ে।আর আমরা মারলে ওর লজ্জা হইবো না তার চেয়ে ভালো আমার কাছে একটা প্লেন আছে।”
“কি প্লেন?”
আয়াশ ইনানকে নিয়ে বাড়িতে চলে এলো এবং ছাদে উঠে গেলো।তারপর ওর ফোন বের করে রেকর্ডার অন করলো।ইনান শুনে বলল
“দোস্ত তুই নীলের কথাগুলো রেকর্ড করছিস কখন?”
“আমি যখন ওর প্রথম লাইনটা শুনেছিলাম তখনই রেকর্ডার অন করছিলাম।”
“ওয়াও দোস্ত। এখন কি করবি?”
“এখন এই রেকর্ডারে ওর কথার পাশাপাশি যে কথা বলছে তার কথাতো আমরা শুনি নাই সো ওই কথা গুলো আমরা কাউরে দিয়ে সেট করমু।তারপর ইনশু আর আদ্রিরে শুনামু।তারপর যা করার ওরাই করবে।আর আমরা লাইভ শো দেখমু।আমার আদ্রিরে তো চিনিস ই ধরতে পারলে তক্তা বানায় ফেলবে।আর ইনশিরাতো মাশাল্লাহ যেই থাপ্পড় গিলি মারে এই পাশের দাত ওই পাশে আর ওই পাশের দাত এই পাশে চলে আসে।
এটা বলেই আয়াশ হাসতে লাগলো সাথে ইনান ও।তারপর ইনান বলল
” এভাবে আর কয়দিন ওদের না বলে থাকবো।বলে দেওয়া উচিত নাহলে নীলের মতো আরো অনেকে আসবে।”
“হুম ঠিক বলছিস।কিন্তু এখন না ঢাকা ফিরি তারপর দুজনই বলে দিবো।”
“হুম সেটাই ভালো হবে।”
সকালে উঠে ইনশিরা আর আদ্রি ব্রাশ করতে করতে ছাদে গেলো।এইফাকে নীলও এলো ওদের সাথে গল্প করতে নীচ থেকে আয়াশ বলল
” হুম বলো বলো আরো বলো আজকে যখন ওদের হাতে জুতার বাড়ি খাবা তখন বুঝবা।”
ইনান আয়াশের কথা শুনে হাসতে হাসতে বলল
“রেকর্ডিং পারফেক্ট তো?”
“হুম এখনই শুনাবো।একটু পর নানি আর মামিরাসহ সবাই ফেনুয়া যাবে তখন প্লেন অনুযায়ী ইনশু ওরে ফোন দিয়ে বাড়িতে থাকতে বলবে আর আমি শিওর ও থাকবে।তারপর ইনশু আর আদ্রি মিলে যা করার করবে।”
“আর আমরা লাইভ শো ইনজয় করবো।ইয়াহু”
চলবে…..🍂
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আর আগামি পর্বে লাইভ শো দেখতে আইসেন কিন্তু😁😜)