#গোধূলীর_রঙিন_ছোঁয়া
#লেখায়_ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৩৮
.
.
🦋
প্রিয়া সাজিত সাদমান জুনাইদ কবির স্মরণ প্রাণোর এমন নরমাল ব্যবহার দেখে ভিষণ অবাক হয় ৷ কিন্তু আমলে নেয় না এটা ভেবে হয়তো সবার কথা ভেবে নিজেকে স্ট্রং রেখে সবার দেখভাল করছে৷
প্রিয়া হুট করে প্রাণোর হাত ধরে টেনে কিচেনে নিয়ে গিয়ে বলে, ” আপু কণা আপুকে খুজে পেয়েছিস?”
” পেয়েছি তার সাথে সেই জঘন্য লোকলোকটাকেও পেয়েছি যে কণাকে কিডন্যাপ করিয়েছে৷”
” আপু লোকটাকে কোন মতে ছাড়বি না ৷ সেই লোকটাকে কঠিন মৃত্যু দিবি ৷”
” না প্রিয়ু তাকে আমি এতো সহজে আমি মৃত্যু দিবো না ৷ ওকে আমি বাচিঁয়ে রাখবো তবে এই বেঁচে থাকার থেকে সে মৃত্যু কামনা করবে কিন্তু সেটাও তার কপালে জুটবে না ইভেন আমি জুটতে দিবো না৷”
কথা গুলো বলার সময় প্রাণোর চোখ মুখ দিয়ে যেন আগুন ঝড়তে লাগলো৷ প্রিয়া বুঝতে পারছে প্রাণো এই মুহূর্তে প্রচন্ড রেগে আছে ৷ প্রিয়া কথা ঘুড়ানোর জন্য বলে উঠলো , ” আপু শশুর গতকাল রাত থেকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না ৷ লোকটা কোথায় গেল বল তো?” চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল প্রিয়া৷
প্রিয়ার কথা শুনে প্রাণো দাঁতে দাঁত চেপে কটমট করে তাকিয়ে প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো , ” জাহান্নামে , জাহান্নামে আছে তোর শশুর ”
” আহা! আপু রেগে যাচ্ছিস কেন? আর এভাবে কেন বলছিস উনি তো তোর আমার দুজনের শশুর ৷”
” যাস্ট স্যাটয়াপ প্রিয়া ৷ একটা কথা কান খুলে শুনে নে ওই লোকটা তোর আমার কেন কারো বাবা স্বামী বন্ধু হওয়ার কোন যোগ্যতা নেই বুঝেছিস? ” খানিকটা জোড়ে চেঁচিয়ে বললো প্রাণো ৷ প্রাণোর এমন কঠিন ধমকে কথা শুনে প্রিয়া ভয় পেয়ে যায়৷ এই প্রথম প্রাণোকে এতোটা রাগতে দেখলো৷ তার উপর প্রাণো তার উপর এভাবে কখনো রেগে উচ্চস্বরে কথা বলেনি কিন্তু আজ বলেছে৷ তারমানে এমন কিছু ঘটেছে যেটা তাদের শশুর জীবন মাহমুদ এর সাথে সংযোগ আছে৷
প্রিয়া আর প্রশ্ন করার কোন সাহস পেল না প্রাণোকে; প্রাণো প্রিয়াকে কিচেনে রেখে নিজের রুমে চলে গেল৷ রুমে ঢুকে দেখে স্মরণ বেডের উপর শুয়ে আছে৷ প্রাণো কোন কথা না বলে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে লাগলো৷ প্রাণো ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে স্মরণে উদ্দেশ্য কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগে স্মরণ বলে উঠলো ,” প্রাণ নিচে তখন ড্যাড এর নামে ওই কথা গুলো কেন বললে?”
স্মরণের মুখে ড্যাড নামটা শুনে ধপ করে রাগ টা পূনরায় প্রাণোর মাথা চরা দিয়ে উঠলো৷ এমন একটা জঘন্য নিকৃষ্ট বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ যে স্মরণের বাবা হতে পারে এটা প্রাণো কল্পনাও করতে পারে না কিন্তু দূর্ভাগ্যবসত এই জঘন্য নিকৃষ্ট বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষটাই স্মরণ এর জন্মদাতা ভাবতেই প্রাণোর পুরো শরীর গিন গিন করে উঠলো৷
স্মরণ প্রাণোর কোন রেসপন্স না দেখে আবার বলে উঠলো ,” প্রাণ তোমাকে আমি কিছু জ্বিজ্ঞাসা করেছি?”
স্মরণের কথায় প্রাণো তার ভাবনা থেকে বেড়িয়ে আসে ৷
” তখন কথাটা মাথায় এসেছিলো তাই বলেছি স্মরণ ৷”
” হঠাৎ এই ভাবনাই কেন তোমার মাথা এলো প্রাণ?”
” জানি না৷ এখন এতো কথা না বলে কিছুক্ষণ রেস্ট নেও৷ ভোরের আলো আর একটু ফুটলে তুমি তোমার ড্যাড কে খুজতে যাবে৷ ”
” যাবো কিন্তু তুমি আমার ড্যাড না বাবা না বলে তোমার ড্যাড বললে যে?”
” তোমার জন্য কড়া করে চা বানিয়ে নিয়ে আসছি স্মরণ ততোক্ষণে ফ্রেস হয়ে নেও৷”
স্মরণের প্রশ্ন ইগনোর করে নিজের কথা গুলো বলে প্রাণো রুম থেকে বেড়িয়ে যায়৷ স্মরণ প্রাণোর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে ৷ প্রাণোর হঠাৎ এমন অদ্ভুত ব্যবহার স্মরণ কেন যেন মেনে নিতে পারছে না৷ কোথায় না কোথায় যেন প্রাণো নাম টার পেছনে একটা বিস্ময়সূচক চিহ্ন ঝুলছে৷ মেয়েটা দিনকে দিন রহস্যময় হয়ে উঠছে৷ স্মরণ ধিরে সু্স্থে বেড থেকে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল৷
সকালে কেউ ঠিকঠাক নাস্তা না করে বেড়িয়ে যায় জীবন মাহমুদ কে খুজতে৷ প্রাণো আর প্রিয়া দুজনে যোগ্য বউয়ের মতো পুরো বাড়ি সামলে নেয়৷
প্রাণো দুপুরের খাবার রান্না করে প্রিয়াকে বলে ” প্রিয়ু আমি একটু পর বের হবো ৷ কেউ আমার কথা জানতে চাইলে সামলে নিতে পারবি তো?”
” তা পারবো কিন্তু তুই কি ভাবে বের হবি? তার থেকে ভালো হয় তুই সবাইকে বল তুই ও বাবাকে খুজতে বের হবি৷”
কথা টা বলতে বলতে থেমে যায় প্রিয়া প্রাণোর অগ্নি দৃষ্টি দেখে৷
” আমার চোখের সামনে থেকে চলে যা প্রিয়া৷”
” আ’ম স্যরি আপু ভুল করে মুখ থেকে বেড়িয়ে গেছে৷” বলেই দৌর দিয়ে কিচেন থেকে বেড়িয়ে যায় প্রিয়া৷ প্রিয়া চলে যেতে প্রাণো বলে ওঠে , ” ওই কুকুরের বাচ্চার আসল চেহারাটা যদি তুই জানতে পেতি প্রিয়ু তাহলে হয়তো এই ভুলটা তুই দ্বিতীয় বার করতি না৷ ”
প্রাণো রেডি হয়ে সাহারা বেগম কে বলে বেড়িয়ে যায়৷ সাহারা বেগম বাড়ির গাড়ি নিতে বললেও প্রাণো গাড়ি না নিয়ে সিএনজিতে করে চলে যায়৷ কিছু দুর যেতে প্রাণো সিএনজি থামিয়ে নেমে পড়ে ৷
অন্য দিকে স্মরণ পুলিশের সাথে জীবন মাহমুদ কে খুজতে থাকে কিন্তু তাকে না পেয়ে স্মরণ সির্ধান্ত নেয় সে একা একাই জীবন মাহমুদ কে খুজবে ৷ স্মরণ কাউকে সাথে না নিয়ে গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে বেড়িয়ে যায়৷
রাস্তায় দাড়িয়ে পাচঁ মিনিট অপেক্ষা করার পর টিমের একজন গাড়ি নিয়ে হাজির হয় প্রাণোর সামনে৷ প্রাণো দ্রুত গাড়িতে উঠে বসতে টিমের ছেলেটি প্রাণোর দিকে মাক্স এগিয়ে দিয়ে বলে উঠলো ,” ম্যাম ম্যাক্সটা পড়ে নিন৷ ”
প্রাণো কোন কথা না বলে মাক্সটা পড়ে নেয়৷ ছেলেটি দ্রুত গাড়ি ড্রাইভ করে পৌছে যায় নির্দিষ্ট জায়গায়৷
প্রাণো গাড়ি থেকে নেমে অফিসে ঢুকে নিজের কেভিনে গিয়ে দ্রুত চেন্জ করে নেয়৷ কারণ প্রাণো এতো তাড়াতাড়ি নিজের দ্বিতীয় চরিত্রটা সবার কাছে উম্মুক্ত করবে না৷ প্রাণো তার কেভিন থেকে বের হতে নিলে সিমি এসে হাজির হয়৷
” সিমি আপু তুমি এখন এখানে? হসপিটাল যাওনি?”
” গিয়েছিলাম , RV আর কণার জন্য খাবার নিয়ে গিয়েছিলাম ৷ আমি ওখান থেকে এখানে আসছি৷ ”
প্রাণো চুপ হয়ে গেল৷ কণাকে ঠিক সময়ে বাঁচাতে পারেনি বিধায় আজ কণা হসপিটালে ৷ প্রাণো শুধু নিজেকে দোষারোপ করছে৷ এতো বছর কাজ করে কখনো কোন টিম মেম্বারের ক্ষতি হতে দেয় নি৷ কিন্তু এবার সে হেরে গেল ৷
প্রাণো দীর্ঘশ্বাস ফেলে কেভিন থেকে বেড়িয়ে সিগ্রেট দরজা দিয়ে টর্চার সেলে ঢুকে যায় ৷ সিমিও প্রাণোর পিছু পিছু টর্চার সেলে ঢুকতে প্রাণো সিমিকে বলে ওঠে ,” সিমি আপু মুখে মাক্স পড়ে নেও৷”
” ওকে প্রাণো৷”
জীবন মাহমুদ কে যে সেলে রাখা হয়েছে সে সেলে প্রাণো ঢুকতেই সব লাইট জ্বলে উঠলো ৷ গতকাল রাত থেকে অন্ধকার সেলে পরে ছিলো জীবন মাহমুদ ৷ তার হাত কাটা তার দিয়ে বাধা ছিলো বিধায় একচুল নরতে পর্যন্ত পারেনি৷ লাইটের আলো চোখে পড়তে জীবন মাহমুদ চোখ মুখ কুচকে ফেলে তখনি প্রাণো বলে ওঠে ,” ওয়েলকাম টু হেল মিস্টার JM অরফে জীবন মাহমুদ ৷”
প্রাণোর কথা শুনে চমকে ওঠে জীবন মাহমুদ ৷ জীবন মাহমুদ এর দুনাম্বারি ব্যাবসা যারা করে এক মাত্র তারাই জানে JM কে , তার বাইরে কারোর জানা পসিবেল না৷
” ক,,কে তুই? আমাকে এখানে বন্দি করে রেখেছিস কেন? ”
প্রাণো জীবন মাহমুদ এর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সিমিকে চোখের ইশারা করতে সিমি সেল থেকে বেড়িয়ে গিয়ে ফোন নিয়ে এসে ভিডিও ক্যামেরা চালু করে৷
প্রাণো হাতে দুবার তালি বাজাতে চার জন ছেলে এসে জীবন মাহমুদ কে একটা লোহার বেডে শুইয়ে হাত পা আবার বেধে দেয়৷ প্রাণো জীবন মাহমুদ এর পাশে দাড়াতে একজন একটা ট্রেতে করে নানা রকম ছুড়ি নিয়ে আসে৷
” তোর প্রথম প্রশ্ন কি ছিলো ? আমি কে? তাই তো? ”
জীবন মাহমুদ ভীত চোখে তাকিয়ে আছে প্রাণোর দিকে, প্রাণোর নীল দুচোখ ছাড়া জীবন মাহমুদ আর কিছুই দেখতে পায় না৷
” আমি কে জানতে চাস তুই কুত্তার বাচ্চা তাহলে শোন আমি হলাম সে যে তোর সম্রাজ্ঞ্য ধ্বংসের কারণ৷ আমি হলাম সে যে তোর পার্টনার তোর সাথি সঙ্গিদের পথে বসিয়েছি ৷ আমি হলাম সে যে তোর মৃত্যুদূত হয়ে তোর সামনে এসে দাড়িয়েছি৷ খুব শখ না মেয়েদের অসন্মান করার হাহ্! এই হাত দিয়ে তুই আমার বন্ধু আমার বোন কে স্পর্শ করেছিস তাই না? ” কথাটা বলেই প্রাণো ধাড়ালো ছুড়ি হাতে নিয়ে জীবন মাহমুদ এর হাতের আঙ্গুল গুলো কাটতে লাগলো৷ সিমি একটু দুরে দাড়িয়ে উপভোগ করছে জীবন মাহমুদ এর আত্মচিৎকার আর্তনাদ ৷
জীবন মাহমুদ চিৎকার করতে করতে বলতে লাগলো,” আ,, আমাকে ক্ষমা করো আ,, আমি আর কখণো এমন পাপ কাজ করবো না৷”
জীবন মাহমুদ এর কথা শুনে সিমি রেগে উত্তিজিত হয়ে বলে উঠলো , জানোয়ারের বাচ্চা তোর মতো কুত্তা কোন দিন ভালো হয় না৷ ছাব্বিশ বছর আগে কথা মনে পড়ে তোর? একটা দুধের শিশুর থেকে তার মা’কে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছিস তুই তারপর তারপর তুই আমার মাকে খুন করেছিস ভুলে গেছিস সে সব কর্মকান্ড?”
সিমির কথা শুনে জীবন মাহমুদ অবাক চোখে তাকিয়ে বলে, ” তুমি কি করে এই সব কথা জানলে?”
” আমি কি করে জানলাম? আমি জানলাম কারণ সেদিনের সেই দুধের শিশু আমি ছিলাম ৷ তুই আমার মাকে আমার থেকে জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছিস ৷ আমাকে আমার মায়ের আদর স্নেহ ভালোবাসা থেকে বঞ্চিচ করেছিস৷ আমার ড্যাডকে সারা জীবন একা করে দিয়েছিস তুই আর তোকে আমি ভুলে যাবো? এতোই সোজা?”
প্রাণোর হাত থেকে ছুড়ি টা নিয়ে সিমি জীবন মাহমুদ এর পায়ের আঙ্গুল গুলো কাটতে লাগলো৷ জীবন মাহমুদ চিৎকার করছে অথচ কেউ কারোর কানে পৌছাচ্ছে না৷
” সিমি আপু তুমি এই লোকটার জিব্বাহ কেটে ফেলো৷ তারপর ওকে জীবিত রেখে ওর শরীরের একটা একটা অংশ আমি কেটে ফেলবো৷ কিন্তু প্রানে মারবো না ওকে৷”
সিমি যেন প্রাণোর এমন নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিলো৷ সিমি সময় নষ্ট না করে জীবন মাহমুদ এর গলা চেপে ধরতে জিব্বাহ বের হয়ে আসে তখনি সিমি জীবন মাহমুদ এর জিব্বাহ কেটে ফেলে৷
প্রাণো আর সিমির ঠোঁটের কোনে তৃপ্তির হাসি৷
” সিমি আপু তোমার কাজ এখানে শেষ বাকিটা আমি করবো ৷”
প্রাণো দ্বিতীয়বার হাতে তালি দিতে একজন ট্রেতে একটা ইনজেকশন আ নিয়ে হাজির হয়৷
” ম্যাম আপনার কথা মতো এ্যাবরোড থেকে এই লিকুইট মেডেসিন আনিয়েছি আর এই যে বোতল এটাতে এসিড আছে৷ এই এসিড এখনো মার্কেটে আসেনি ৷ গবেষকরা এটা নতুন আবিষ্কার করেছে৷ এই এসিড কোন মানুষের শরীরে পড়লে সেখানে পুরোটা গলিয়ে ফেলে ৷ ”
” গ্রেট এমন একটা জিনিস আবিষ্কার হয়েছে বেপার টা সত্যি দারুন ৷ আর আজ এগুলো আমরা JM অরফে জীবন মাহমুদ এর উপর এ্যাপলাই করবো৷”
” সিমি আপু ইনজেকশন টা রেডি করো৷ ”
” ওকে”
প্রাণো ওদের কাজ বুঝিয়ে দিয়ে ছুড়ি নিয়ে জীবন মাহমুদ এর হাত এবং পায়ের রগ কেটে ফেলে জীবন মাহমুদ দু হাতে ছুড়ি দিয়ে লিখে দেয় ” আমি ধর্ষক”
জীবন মাহমুদ এর আগের দিন হাতে গুলি লাগে আর আজ প্রাণোর এমন নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলে৷
“ম্যাম লোকটাতো অজ্ঞান হয়ে গেছে৷”
” পানি মারো ওর মুখে, আর একটা কথা এর সাগরেত রানা কে ট্রিম বক্সে ঢুকিয়ে দেবে ৷ আমি এটার কাজ শেষ করে আসছি ৷ ”
” ওকে ম্যাম”
ছেলেটি সেল থেকে বের হওয়ার পর পর সিমি জীবন মাহমুদ এর মুখে পানি ছুড়ে মারে ৷ কিছুক্ষণ পর জীবন মাহমুদ এর জ্ঞান ফিরে আসতেই প্রাণো জীবন মাহমুদ এর কানে কানে বলে ওঠে, ” শশুর মশাই এখন কেমন লাগছে?”
শশুর মশাই শব্দ গুলো শুনে জীবন মাহমুদ চমকে ওঠে৷ তা দেখে প্রাণো আবার বলতে লাগলো, ” কি হলো চমকে উঠলেন শশুর মশাই ডাকতে! তাহলে এখন যা দেখবেন তা দেখার পর আপনার অবস্থা কি হবে ? ইসস বুঝতে পারছেন না তাই না? তাহলে আমি নিজেই বুঝিয়ে দিচ্ছি বাট ইউ প্রমিস মি হার্ট এট্যাক করবেন না তাহলে কিন্তু আমি আর আপনাকে কষ্ট দিয়ে মারতে পারবো না৷ তাই নো হার্ট এট্যাক ওকে?”
বলতে বলতে পেছন দিক ফিরে মুখ থেকে মাক্স আর শরীর থেকে কালো লং জ্যাকেট টা খুলে সিমির হাতে দিয়ে জীবন মাহমুদ এর দিকে ফিরতে জীবন মাহমুদ শক্টড৷ এতোটাই শক্টড হয়েছে যে চোখের পলক ফেলতেই ভুলে গেছে৷
তা দেখে প্রাণো তার শশুরের কাছে গিয়ে দাড়াতে জীবন মাহমুদ সরে যেতে নিলে পারে না৷ কারন তার শরীরে আর কোন শক্তি বেঁচে নেই ৷ হাত পা নাড়াতে বা নিজে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারবে না৷ সে ক্ষমতা জীবন মাহমুদ হাড়িয়ে ফেলেছে৷
জীবন মাহমুদ কিছু বলতে চাইছে কিন্তু মুখ থেকে রক্ত বিধায় আর কোন শব্দ বের হচ্ছে না৷
” ওহ্! শশুর মশাই আমাকে দেখে এই অবস্থা আপনার! কি আর করার আন্ডার ওয়ার্ল্ডের না দেখা ব্লাক রোজ কে দেখতে চেয়েছেন বলে আমার টিমের মেয়ে তুলে নিয়ে ….. তো! কেমন দেখলেন এই আমিকে? আন্ডারওয়ার্ল্ডের বড় বড় মাফিয়ারা পর্যন্ত ব্লাক রোজ নাম শুনলে কেঁপে ওঠে অথচ তোর মতো দু নম্বরী ব্যবসায়ী আমার টিম মেম্বারের ক্ষতি করিস? কি ভেবেছিস তুই আমি তোকে ছেড়ে দিবো? কখনো না সিমি আপু!”
সিমি ইনজেকশন টা নিয়ে প্রাণোর হাতে দেয়৷
প্রাণো ইনজেকশন টা হাতে নিয়ে জীবন মাহমুদ কে বলে এটা কিসের ইনজেকশন জানিস ? আমি বলছি এটা যখন তোর শরীরে আমি ইনজেক্ট করে দিবো তার তিন ঘন্টা পর থেকে তোর শরীরে একটু একটু করে পচন ধরবে৷ তোর শরীরের হার গুলো গলতে শুরু করবে৷ দৃষ্টি শক্তি লোপ পাবে৷
ইনজেকশন জীবন মাহমুদ এর শরীরে ইনজেক্ট করে দিয়ে আবারো সেই রক্তাক্ত ছুড়িটা হাতে নিয়ে জীবন মাহমুদ এর বুকে স্পষ্ট লিখে দেয় ” আমি ধর্ষক ৷ আমি খুনি ৷”
জীবন মাহমুদ আবারো জ্ঞান হারায় তখন প্রাণো সিমি কে বলে, ” এই জন্তটাকে শহরের ডাসবিনে ফেলে দে ৷”
” কিন্তু প্রাণো আজ যা টর্চার করলে এই জানোয়ারটা মরে যাবে না তো? আর যদি বেঁচেও থাকে তাহলে হসপিটালে নিলে… ” বাকিটা বলার আগে প্রাণো বলে ওঠে ,” বিশ্বের কোন ডাক্তার কিছু করতে পারবে না৷ এই যে ইনজেকশন টা কুত্তার বাচ্চার শরীরের ইনজেক্ট করে দিয়েছি এটাই সব কাজ করে দিবে৷”
” জীবন মাহমুদ তো তোমাকে দেখে ফেলেছে ৷”
” তাতে কি ? এই জানোয়ারের কোন শক্তি নেই যে আমার বিরুদ্ধে কথা বলবে৷ ইভেন জ্ঞান ফেরার পর হয়তো আমাকে দেখেই ভয় পেতে শুরু করলো?”
” কিন্তু….” বাকিটা বলার আগে প্রাণোর ফোনটা বেজে ওঠে ৷ প্রাণো জেকেট থেকে ফোন বের করে দেখে RV কল৷
” হ্যালো প্রাণো ?”
” RV তোমার ফোনে আমি এখুনি একটা ভিডিও সেন্ড করছি ৷ তুমি এবং কণা দুজনে ভিডিও টা দেখে নিও রাখছি৷”
RV কে বলার সুযোগ না দিয়ে কল ডিসকানেক্ট করে দিলো প্রাণো৷
” সিমি আপু ভিডিওটা RV কে পাঠিয়ে দেও৷”
” ওকে বাট তুমি এখন কোথায় যাবে ? ওই রানাকে তো এখনো শাস্তি দেওয়া বাকি আছে৷”
” ওটাকে পড়ে দেখে নিবো কিন্তু এখন আমাকে বের হতে হবে৷ ”
প্রাণো টর্চার সেল থেকে বের হতে নিবে তখনি দেয়ালের উপর ছোট একটা জানালা যেটা দিয়ে বাইয়ে আলো ভেতরে প্রবেশ করতে পারে খানিকটা সেখান থেকে একটা ছায়া সরে গেল৷
টর্চার সেল অফিসের নিচে অর্থাৎ মাটির বেশ কিছুটা নিচে হওয়ায় জানালা টা শুধু ভেতরে বানানো হয়নি৷ উপরে দিয়েছে যাতে বাইরের আলো কিছুটা হলেও ভিতরে প্রবেশ করে৷
প্রাণোর ঘটকা লাগে বিষয়টা কিন্তু সিমিকে কিছু জানায় না৷ প্রাণো টর্চার সেল থেকে বের হয়ে চেন্জ করে নিয়ে অফিস থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠতে যাবে তখনি পেছন থেকে রুমাল দিয়ে প্রাণোর মুখ চেপে ধরতে প্রাণো সেন্সলেস হয়ে যায়৷
চোখে মুখে পানির ছিটে পড়তে প্রাণোর জ্ঞান ফিরে আসে ৷ চোখ মেলে পিট পিট করে তাকিয়ে প্রাণো তার সামনে দাড়িয়ে থাকা মানুষটাকে দেখে চমকে যায় অস্পষ্ট গলায় প্রাণো বলে ওঠে….” স্ম,, স্মরণ! ”
.
.
.
#চলবে…………..