নিভৃতে_যতনে পর্ব ৪৩

0
2705

#নিভৃতে_যতনে
#Part_43
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat

সময়ের গতি নির্বিঘ্ন ভাবে এগিয়ে যায়। না কেউ পারে সময়কে ধরে বেঁধে স্থির করাতে, না সে নিজে স্থির হয়। সে যেমন নির্বিঘ্নে চলছিল ঠিক তেমনেই অনন্তকাল চলতে থাকে। কারো অপেক্ষায় বসে থাকে না সে। আর এই জাগতিক চির সত্যির কাছে সবাই বাধা।
সময়ের এই আবর্তনে রোয়েন আর আমার জীবন থেকে চলে যায় ছয়টি মাস। এই ছয়টি মাস যে খুব সাধারণভাবে কেটে গিয়েছে তা কিন্তু নয়। জীবনের সব চাইতে বাজে আর বিব্রত ছিল এই সময়টা। সহ্য করতে হয়েছে অনেক ধাক্কা,কান্না আর বিপর্যয়। মুখোমুখি হতে হয়েছে মানব জীবনের চরম বাস্তবতা ও চিরন্তন সত্যের সাথে। আকস্মিক এক ঘটনার স্রোতে ভেসে যাই সকলেই। বলতে আমাদের জীবনের গতানুগতিক ধারা বদলে দিয়েছে এই ছয় মাস।

ঠিক চার মাস আগে আমার শ্বশুরবাবা মারা যান। হার্ট এট্যাক করেছিলেন তিনি। ভোরবেলায় ফরজের নামাজ আদায় করতে উঠেছিলেন, প্রথম রাকাতের সিজদাহ্ দেওয়ার সময় নাকি জায়নামাজে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তৎক্ষনাৎ সেখানেই ইন্তেকাল করেন। বাবার মৃত্যু সংবাদটা আমার আর রোয়েনের জন্য ছিল বেশ বড়সড় এক ধাক্কা। রোয়েন ধাক্কাটা নিতে পেরেছিলেন কি-না জানি না। কেন না তিনি প্রতিবারের মতই ছিলেন শান্ত আর নীরব। তাঁর বাহির দেখে তাঁর অন্তর বুঝা দায়স্বরুপ। কিন্তু আমি ধাক্কাটা সহ্য করতে পারিনি। বাবার আসল আদর যার থেকে পেয়েছিলাম সেই ব্যক্তিটিই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন জানার পর ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছিলাম। পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। তখন রোয়েনই শান্ত থেকে আমায় সামলিয়েছিলেন, নিয়ে এসেছিল তাদের গ্রামে। গ্রামের বাড়িতে আসামাত্র চোখে পড়ে অজস্র মানুষের ভীড় এবং কর্ণধারে এসে বারি খায় মর্মান্তিক এক ধ্বনি। সিক্ত কান্নার ধ্বনি ছিল সেটা। একটু সামনে এগিয়ে যেতেই দেখা মিলে মায়ের। বাবার মাথার কাছে বসে পাগলের মত কেঁদে চলেছিলেন তিনি। বার বার বাবার নিকট আকুতি করছিলেন উঠে বসার,কথা বলার। মাঝে মধ্যে বিরবির করে কি যেন বিলাপ বকছিলেন। মায়ের এমন করুণ দশা দেখে ছুটে গিয়েছিলাম আমি মায়ের কাছে। জড়িয়ে ধরেছিলাম তাকে নিবিড়ে, কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলাম নীরবে। মৃত্যু শুধু একজনের সাথে জড়িয়ে থাকলেও এর প্রভাব পড়ে অনেকের মাঝে।
যেই সময় আমি নিজের বুক ভাসাতে মত্তো সেই সময় রোয়েন ব্যস্ত বাবার শেষ বিদায় দিতে। শক্তপোক্ত হাতে একাই সব সামাল দিতে থাকেন তিনি। এমনকি নীরবে সামলিয়েছেন আমাদেরও। আমি তখন রোয়েনকে দেখে আনমনে একটাই প্রশ্ন করেছিলাম, “কতটা কঠোর হলে মানুষ আপন বাবার মৃত্যুতে দু ফোটা পানি বিসর্জন দেয় না?” অবশ্য মুখ ফুটে প্রশ্নটা না করলেও অপ্রকাশিত ভাবে উত্তরটা ঠিকই পেয়েছিলাম আমি।

বাবাকে অন্তিম বিদায় জানিয়ে দিতেই লোকজনের আনাগোনা কমে যায়। বাড়িতে রয়ে যায় গুটিকয়েক মানুষ। নিকষ কালো আঁধারের মায়া প্রগাঢ় হতেই নেতিয়ে পরে সকলে। দুই একজন ব্যতীত মায়ের কক্ষ ছেড়ে যে যার মত অন্যকক্ষে বিরাজমান করে। অবশেষে মাকে কিছুটা খাবার আর ঘুমের ঔষধ খায়িয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেই। অতঃপর সব গুছিয়ে আমি যখন নিশিরারের প্রহরে রোয়েনের কাছে গেলাম তখন তিনি নতজানু হয়ে শান্ত ভঙ্গিতে বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসে আছেন। মুখে নেই কোন রা। আমি আস্তে করে তাঁর কাছে গিয়ে আলতো হাতে চুলগুলো বুলিয়ে দিতে থাকি। হঠাৎ তিনি আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে কেঁদে উঠেন। যেন এতক্ষণ একটা ভরসার স্থান খুঁজছিলেন, নিজের নিভৃত কষ্টগুলো প্রকাশ করার জন্য। আর সেটা পাওয়া মাত্র নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললেন তিনি। নিজের কঠোরতা, তিক্ততা বিসর্জন দিয়ে ফেলেন আমার তীরে। ঠিক তখনই বুঝেছিলাম, মানুষটা বাহির দিয়ে শক্ত হলেও ভিতর দিয়ে তাঁর অবস্থা বিভৎস। চিরন্তন সত্য এইটাই, দিনের আলোয় যে মানুষটা অতি কঠোরতার চাঁদরে মুড়িয়ে থাকে,দিনশেষ রাতের আঁধারে একগুচ্ছ দূর্বলতার চাদর তাকে ঘিরে ধরে।

সেদিনের পর থেকেই সবাইকে দেখে রাখার দায়িত্বটা যেন নিবিড়ভাবে জড়িয়ে গেল আমার সাথে। সিক্ত হয়ে আসা চোখগুলো হয়ে উঠলো শক্ত। একা হাতে সামলে উঠলাম সংসারটা। আনুষ্ঠানিক সকল নিয়ম-কানুন পালন করে মাকে সাথে করে নিয়ে আসি আমরা ঢাকায়। রোয়েনের জব নেই তখনও। বাবার মৃত্যু আনুষ্ঠানিক খরচে চলে গিয়েছিল আমাদের জমানো প্রায় বেশির ভাগ টাকা। হাত হয়ে যায় প্রায় খালি। যার দরুন টানাপোড়েনের মাঝে পড়তে হয়েছিল বেশ। কথায় আছে না, বিপদ যখন আসে, চারদিক দিয়ে আসে।

প্রথমে রোয়েনের জব নেই কথাটা মা না জানলেও পরে জেনেছিলেন। সেই সাথে কষ্ট পেয়েছিলেন প্রচুর। অতঃপর বাবার ফিক্সড ডিপোজিট থেকে টাকা তুলতে বলেছিলেন। কিন্তু রোয়েন তুলে নেই। বরং রেখে দেন। ফ্রিল্যান্সিং-এর মাধ্যমে যা আয় করছিলেন তাই দিয়ে ভরনপোষণ করছিলেন। সেই সাথে আমি তো সহযোগিতা করছিলামই। অতঃপর আল্লাহ হয়তো মুখ তুলে চায় আমাদের দিকে। রোয়েন ভালো একটা জব হয়। সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরে আসে। আমার আর কোচিং-এ পড়ানোটা আবশ্যক ছিল না বিধায় সেখানের চাকরিটা ছেড়ে দেই। কিন্তু টিউশনি দুইটা ছাড়িনি। একবারে খালি বসে থাকার চেয়ে কিছু করাও শ্রেয়। পলি আন্টিকেও পুনরায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে পনেরো দিন হলো। বলতে এখন আমরা প্রায় আগের অবস্থানই ফিরে এসেছি। কিন্তু তাও কোথাও একটা শূন্যতা রয়েই যায়।

দুপুরে টিউশন থেকে ফিরে আসতেই পলি আন্টি দরজা খুলে দেয়। আমি তার দিকে সৌজন্যমূলক হাসি দিয়ে বাসার ভিতর ঢুকে পড়ি। ফ্রেশ হয়ে এসে মায়ের রুমের দিকে উঁকি দিতেই দেখতে পাই মা এক হাতে শাড়ির আঁচল মুখে চেপে ফুপিয়ে কাঁদছেন আর অন্য হাতে একটা পুরনো ছবির এলবামে হাত বুলাচ্ছেন। আমি তাঁর সামনে যেতেই নজর যায় এলবামে থাকা বাবার হাস্যজ্জ্বল মুখখানির দিকে। ক্ষণেই নয়ন দুইটি সিক্ত হয়ে আসে আমার। ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টি। আমি কোন মতে নিজেকে সামলে মায়ের অগোচরে চোখের কোনে থাকা অশ্রুটুকু মুছে মাকে উদ্দেশ্য করে রাগি গলায় বলে উঠি,

— মা আপনি আবার কান্না করছেন। আপনাকে না আমি কান্না করতে মানা করেছি?

মা আমার দিকে একপলক তাকিয়ে কোনমতে চোখের জলটুকু মুছে নেন। সিক্ত কন্ঠে বলেন,

— কি করবো রে মা? মনকে তো আর বুঝানো যায় না। মনে পড়ে তো তাকে খুব।

আমি মায়ের পাশে বসে তার গলা জড়িয়ে ধরে বলি,

— জানি মা! কিন্তু আপনাকে কান্না করতে দেখলে বুঝি আমাদের ভালো লাগে? কেঁদে-কেটে নিজের শরীরের কি হাল করেছেন দেখেছেন একবার? এই বয়সেই শরীর একদম ছেড়ে দিয়েছে আপনার। প্রেশারের কথা নাই-বা বললাম।

মা অশ্রুভেজা চোখে আমার পানে তাকিয়ে বলেন,

— তোরা আছিস বলেই আমি এখনো বেঁচে আছি রে মা। নাইলে কবেই অপারে চলে যেতাম তার কাছে।

আমি ক্রোধিত কন্ঠে বলি,

— বাজে বকবেন না তো। ভাল্লাগেনা এইসব শুনতে।

মা আর কিছু না বলে স্মিত হাসে। আমিও আর কিছু না বলে চুপচাপ জড়িয়ে ধরে রইলাম তাকে। তারপর কথা ঘুরানোর জন্য বলি,

— আপনি নাকি এখনো খাননি? চলুন এখনই খাবেন আমার সাথে।

কথাটা বলেই আমি তাকে জোড় করে ডায়নিং-এ নিয়ে আসি এবং বসিয়ে দেই খাওয়ার জন্য। সেই সাথে আমিও বসে পড়ে তার সাথে৷ খাওয়ার এক পর্যায়ে মা বলে উঠেন,

— অহ আমি তো তোকে বলতেই ভুলে গিয়েছি।

আমি মায়ের দিকে তাকিয়ে বলি,

— কি?

— তোর বড় আপার ছেলের আরহানের কথা মনে আছে যে কয়েকদিন আগে দেশে আসলো?

আমি মাথা তুলে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলি,

— তানিয়া ফুপুর ছেলের কথা বলছো?

— হু।

— হ্যাঁ মনে আছে কিন্তু কি হয়েছে?

— তেমনে কিছু হয়নি। আরহানের নাকি নিজের জন্য মেয়ে পছন্দ করেছে, তো সবাই পরশু সেই মেয়ের পরিবারের সাথে দেখা করতে যাবে। আমাদের বলেছে যেতে তাদের সাথে, তা আমি তো যেতে পারবো তাই আমি চাই তোরা দুইজন যা।

— অহ আচ্ছা।

— তুই মা একটু রোয়েনকে বলিস। ও হয়তো যেতে চাইবে না, কিন্তু তুই একটু জোড় করিস ওকে। বড় আপা অনেক জোর দিয়ে বলেছেন যাতে আমরা যাই৷ এখন না গেলে তিনি কষ্ট পাবেন।

আমি মাকে আস্বস্ত করে বলি,

— আমি তাঁকে বলবো নে মা। আপনি চিন্তা করবেন না।

_______________________

অর্ধবৃত্ত চাঁদ উঠেছে আকাশের কোলজুড়ে। দূর অজানায় নাম না জানা পাখি ডেকে চলেছে তারস্বরে। হিম শীতল হাওয়ার দাপটে দুলছে জানালার পর্দাগুলো। এক চিলতে বাতাস ঘরে প্রবেশ করে আমার এসাইনমেন্টের কাগজগুলো মূহুর্তে এলোমেলো করে দিয়ে যায়। আমি কোনমতে জানালাটা লাগিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি উড়ে যাওয়া কাগজগুলো একত্রিত করতে। সব কাগজগুলো এক বান্ডিলে আবদ্ধ করেই ক্ষান্ত হই আমি। চেয়ারে গা এলিয়ে দিতেই টনক নাড়ে কালকেই এসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট। কথাটা মাথা চাড়া দিতেই উঠে পড়ে আমি। মনোযোগী হই এসাইনমেন্টগুলো করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। এইভাবেও সামনে সেমিস্টার। আগের সেমিস্টারে সিজিপিএ কম এসেছিল তাই এইবার ভালো মত পড়তে হবে। বলা বাহুল্য, আগের সেমিস্টার মিস যায়নি আমার। সেমিস্টারের ফি দেওয়ার ডেট পড়তেই রোয়েন কিভাবে যেন টাকার ব্যবস্থা করে ফেলেন এবং সেমিস্টার ফি-টা দিয়ে দেন। অতঃপর বাধ্য হয়ে আমায় সেমিস্টারটা দিতে হয়। তখন হেলায় পড়াশোনা করছিলাম বলে সিজিপিএ নেমে আসে আমার। অবশ্য সেমিস্টারের পর পর-ই তো বাবা মারা যান। যার দরুন সিজিপিএ নিয়ে মাথাব্যথাটা তখন উঠেনি। কিন্তু এখন উঠেছে। তাও মাথাব্যথাটা উঠিয়েছে রোয়েন নিজেই। জামাইও পেয়েছি একটা গুণে গুণে। যে নাকি বউয়ের চেয়ে বউয়ের পড়ালেখা নিয়ে বেশি সিরিয়াস। হুহ!

এসাইনমেন্টগুলো যখন প্রায় শেষ তখন রোয়েনের আগমন হয়। মুখশ্রী দেখেই বুঝা যাচ্ছিল তিনি বেশ ক্লান্ত। তিনি ফ্রেশ হতে যেতেই আমি তাঁর জন্য কড়া করে এককাপ কফি বানিয়ে নেই। তিনি মুখে না বললেও আমি জানি ফ্রেশ হওয়ার পর আমার হাতের কফি তাঁর অভ্যাস। তিনি ফ্রেশ হয়ে আসতেই আমি কফিটা এগিয়ে দেই তাঁর দিকে। তিনি একগাল হেসে কাপটা হাতে নিয়ে নেন। অতঃপর আমিও চলে যাই আমার এসাইনমেন্টগুলো শেষ করতে। এসাইনমেন্টগুলো শেষ করতে করতে আমার প্রায় দশটা বেজে যায়৷ সব গুছিয়ে আমি রুমে একবার নজর বুলিয়ে রোয়েনকে দেখে নেই। রুমের কোথাও তাঁর দেখা না মিললে নজর যায় আমার বারান্দার দিকে৷ অর্ধবৃত্ত চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয় কারো নিকষ কালো ছায়া আঁকিবুঁকি করছে মেঝের বুকে। কারো অবয়ব দৃশ্যমান হচ্ছে নয়ন দুটির মনিতে। ব্যক্তিটা কে তা বুঝতে পেরে আমি তাঁর দিকে এগিয়ে যাই নিঃশব্দে। তাঁর পাশে এসে দাঁড়াতেই তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকান৷ অতঃপর স্নিগ্ধ কন্ঠে জিজ্ঞেস করেন,

— কাজ শেষ?

আমি ছোট করে বলি,

— হু!

— আচ্ছা।

আমি ইতস্তত স্বরে বলি,

— আপনাকে একটা কথা বলার ছিল।

তিনি নির্বিকার কন্ঠে বলেন,

— হুম বলো।

— পরশু নাকি আরহান ভাইয়ার জন্য মেয়ে দেখতে যাবে সবাই। বড় ফুপু মাকে বলেছে আমরাও যেন যাই। মা তো যেতে পারবে না তাই তিনি বলছেন আমরা যেন যাই।

তিনি একরাশ বিরক্তি নিয়ে বলেন,

— তুমি ভালো করেই জানো আমি এইসবের মধ্যে নেই। তাও কেন বলছো?

— মা অনেক করে চাইছেন আমরা যাতে যাই। তার উপর বড় ফুপুও অনেক জোড় দিয়ে বলেছেন যাওয়ার জন্য, এখন না গেলে তিনি আর মা দুইজনেই কষ্ট পাবেন।

— যাওয়ার ইচ্ছে নেই আমার।

— প্লিজ চলুন না। কিছু ঘন্টার এই তো ব্যাপার। প্লিজ!

রোয়েন কিছুটা সময় নীরব থেকে তপ্ত এক নিঃশ্বাস ছেড়ে বলেন,

— আচ্ছা।

আমি উৎফুল্ল সুরে বলি,

— থেংকিউ!

কথার বিপরীতে তিনি আর কিছু বললেন না। তাই আমিও আর বললাম না। শীতের মৌসুম চলে আসায় হিম বাতাসের আনাগোনা বেশ। গায়ে হিম হাওয়া লাগতেই শরীর কাটা দিয়ে উঠে আমার। আমি দুই হাত একসাথে নিয়ে হাতে হাত ঘষতেই রোয়েন নীরবে আমার পিছনে হাত গলিয়ে আমায় আগলে নেন। আমিও আপন মানুষটার উষ্ণতা পেয়ে লেপ্টে যাই তাঁর সাথে। মাথাটা এলিয়ে দেই তাঁর বুকের মাঝে। হঠাৎ রোয়েন মাথাটা একটু নুইয়ে তাঁর ঠোঁট দু’টি আমার কপালে ঠেকিয়ে দেন। মুহূর্তেই সারা শরীরে শিহরণ খেলে যায় আমার। প্রশান্তি ঢেউ বয়ে যায় মনের মাঝে। ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠে এক চিলতে হাসি। আবেশে চোখ দুটি বন্ধ হয়ে আসতেই কর্ণধারে গুঞ্জিত হয়ে রোয়েনের নরম সুরে বলা কথাগুলো,

— যে হাত সবসময় আগলে রাখার জন্য ধরেছিল,সে হাত হাজার ঝড় ঝাপটায় আঁকড়ে রাখার জন্য,তাকে ধন্যবাদ।

#চলবে
এসাইনমেন্টের প্যারা সেই সাথে হাত ব্যথা, সব মিলিয়ে পর্বটা গুছিয়ে লিখতে সময় লেগে গিয়েছে। সকলকে অপেক্ষা করানোর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here