Ragging To Loving 2পর্ব-৪৪

0
2437

#Ragging_To_Loving__2
#পর্বঃ- ৪৪
#রিধিরা_নূর

আফরান হতচকিত হয়ে আছে। বাচ্চাটা ঠোঁট উল্টিয়ে নূরের খোপার ফুল ধরতে চাইছে। নূর আলিফাকে কাছে ডেকে তার খোপা থেকে ফুল ছিড়ে বাচ্চাটার হাতে দিল। ফুল পেয়ে সে আনন্দিত হয়ে হেসে দিল। প্রথমে আলিফার রাগ হলেও পরে বুঝতে পেরে কিছু বলল না।

নূর — হি ইজ সো কিউট।

বাচ্চাটার সঙ্গে নূরের এমন বাচ্চাসুলভ আচরণ দেখে আফরান মৃদু হাসলো।

আফরান — আসলেই ভীষণ কিউট।

হাত বাড়িয়ে বাচ্চাটার গাল ছুঁতে চাইলে নূর তার হাতে থাপ্পড় দেয়। কপাল কুচকে তাকিয়ে পিছিয়ে নিল।

নূর — আপনি ধরবেন না ওকে। একটু আগেই না ওকে ব্রয়লার মুরগি বলেছিলেন।

আফরান থতমত খেয়ে গলা খককানি দিল। আড়চোখে নূরের পাশে তাকিয়ে দেখে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা তার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আফরান বুঝতে পারলো মহিলাটি নিশ্চয় বাচ্চাটার মা। আফরান হাসার চেষ্টা করল কিন্তু হাসি আসছেই না।

আফরান — আমি ওকে বলিনি। আমি তো… আমি তো…

আমতাআমতা করছে। বেচারা ফাইস্যা গেল মাইনকার চিপায়। এখন বললে ইজ্জতের ফালুদা হবে না বললেও হবে। তার চেয়ে বরং চুপচাপ সব মাথা পেতে নিই। মহিলাটি নিজের বাচ্চাকে ছিনিয়ে নেওয়ার মতো করে নূরের কাছ থেকে নিয়ে নিল। আফরানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে চলে গেল। থমথমে পরিবেশের সৃষ্টি হলো।

নূর — আপ…

নূর রেগে আফরানকে ঝাড়তে যাবে তারই মাঝে কথা কেটে রিহান বলল,

রিহান — আয় চল না ভেতরে ভীষণ ক্ষিধে পেয়েছে। খাবার অর্ডার দিয়েছি তা এতক্ষণে এসে গিয়েছে বোধহয়। চল।

রিহান সবাইকে ঠেলেঠুলে ভেতরে নিয়ে যেতে লাগলো। আফরান গভীর এক নিঃশ্বাস ফেলল। রিহানের দিকে তাকাতেই সে চোখ টিপি দিল। আফরান হেসে দিল। মৃদুস্বরে গাইলো,

আফরান — তেরে যেইসা ইয়ার কাহা, কাহা এইসা ইয়ারানা।

খাওয়া-দাওয়া শেষে ঘোরার উদ্দেশ্যে বের হলো। বিভিন্ন দোকানপাট স্থাপিত হলো। একেকজন একেক দিকে ছুটল। কেউ জুয়েলারি দেখছে, কেউ জামা। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। দোকানপাটের আলো জ্বলছে। সন্ধ্যার অন্ধকারে সবকিছু যেন আরও আকর্ষণীয় লাগছে। কৃত্রিম আলোর ঝলকানিতে চারপাশটা চমৎকার রূপ ধারণ করেছে। একেবারে কোণে অবস্থিত ঘর সাজানো সরঞ্জামের দোকান। সবাইকে ফেলে নূর একা সেই দোকানে গেল। এসবের প্রতি তার আকর্ষণ বেশি। যে কেউ নূরের কক্ষে প্রবেশ করলে তা কক্ষ নয় জাদুঘর মনে হবে। হস্তশিল্পের তার অনেক শখ।

পুরো দোকান পর্যবেক্ষণ করে অবশেষে নজর পড়ল একটি হারিকেনের উপর। এক রাশ হাসি দিয়ে সেটি নিল। দোকানদারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তা দেখতে লাগলো। কৃত্রিম আলোর তৈরি হারিকেনটি।

নূর — ভাইয়া এটি দেখব কি করে জ্বলছে কিনা? সব দিকে আলো হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে না।

দোকানদার — এই দিকটায় দাঁড়িয়ে দেখুন। এই পাশে অন্ধকার আছে।

নূর মুচকি হেসে সম্মতি জানালো। অন্ধকার দিকটায় এসে জ্বালানোর প্রচেষ্টা করছে। আশেপাশে তাকাতে হঠাৎ আফরানের নজর পড়ল নূরের উপর। আবছা অন্ধকারে তাকে বোঝা যাচ্ছে না। কিন্তু শাড়ির পরনের ছায়া দেখে আফরান তাকে চিনতে পেল।

আফরান — নূর একা কি করছে ওখানে? এতো ভীড়ের মাঝে যদি হারিয়ে যায় কীভাবে খুঁজবে? এই মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা যায় না।

বিরক্ত প্রকাশ করে নূরকে চোখে চোখে রাখছে যাতে হারিয়ে না যায়। একবার বাকিদের দেখছে, একবার নূরকে। নূর আলো জ্বালিয়ে দেখতে লাগলো। চোখে মুখে মুগ্ধতার উজ্জ্বলতা। সেই ছোটবেলায় এমনই হারিকেনের আলোতে পড়াশোনা করতো। এখনকার দিনে সব এলইডি প্রযুক্তির ব্যবহার হয়। কতই না মধুর ছিল দিনগুলো। সুবর্ণ দিনের স্মৃতিচারণ করতেই ঠোঁটের কোণে ঝলমলে হাসি ফুটে উঠল। নূরের দিকে চোখ ফেরাতেই আফরানের বুকের ভেতর ধক করে উঠল। সবকিছু যেন সেই মূহুর্তে থমকে গেল। মূহুর্তে আফরান চোখ ফিরিয়ে নিল।
কিন্তু অবাধ্য মন বেকুল হয়ে পড়েছে এই অপরূপ দৃশ্য দেখার জন্য। আফরান কিছুতেই চাইছে না এই মোহে আটকা পড়তে। মন-মস্তিষ্কের দোটানায় অবাধ্য মনটায় বিজয়ী হলো। কাতর নয়ন দুটো কড়া নাড়ছে। পা থেকে মাথা অবধি পর্যবেক্ষণ করছে। গভীর নিঃশ্বাস বুকে পুশে নিল। কিন্তু নিঃশ্বাস ফেলতেই যেন ভুলে গিয়েছে।

বাসন্তী রঙের শাড়ী অন্ধকারে তামাটে বর্ণ ধারণ করেছে, কৃত্রিম আভায় শাড়ীটি ঝলমল করছে, হারিকেনের আলোর প্রতিফলন শ্যামলী চেহারায় সোনালী আভা ছড়াচ্ছে, মায়াবী চোখ দুটো ঝিলমিল করছে, ঠোঁটের কোণে মুগ্ধকর সেই হাসি। এই যেন গ্রামীণ বাংলার শ্যামলী রূপসী কন্যা।

নিঃশ্বাস আটকে থাকায় বুকের ভেতর হালকা চিনচিন ব্যাথা অনুভব করল। বুকের বাপাশে হাত রেখে ফুস করে নিঃশ্বাস ত্যাগ করল। আনমনে মুখ দিয়ে একটি শব্দ বের হলো, “হায়!”। আলতো করে চোখ বুজে নিল। এই দৃশ্যটি যাতে চোখের কোটরে বন্দী করতে পারতে। আচমকা ঝাকুনিতে আফরানের ধ্যান ভাঙল। খানিকটা চমকে উঠে খুঁজতে লাগলো নূরকে।

ওয়াসিম — কি রে মামা! এমন উন্মত্তের মতো কাকে খুঁজছিস? এই কোন মেয়ের প্রেমে পড়লি নাকি? (উত্তেজিত হয়ে)

আফরান বিস্মিত নয়নে তাকাল ওয়াসিমের দিকে। ওয়াসিমের প্রশ্নের কি উত্তর দিবে ভেবে পাচ্ছে না। কথা এড়িয়ে বাকিদের খুঁজতে লাগলো।

আফরান — বাকিরা কোথায়? বাসায় ফিরবে না? এই সময়ে রাস্তায় যানযট হবে। পরে বেরুনো মুশকিল হয়ে যাবে।

ওয়াসিম — এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবি?

আফরান — এতো তাড়াতাড়ি! সেই সকালে বেরিয়েছি। রেকর্ডিং-এর কাজ, এরপর বাবার সঙ্গে অনুষ্ঠানে ছিলাম, তারপর এখানে। শরীর আর মানছে না। ভীষণ ক্লান্ত লাগছে।

ক্লান্তিমাখা মুখটা নিয়ে নিঃশ্বাস ফেলল।

পূর্বের ন্যায় টিকিট কেটে বাসে উঠল। এক সারিতে ছেলেরা বসলো, অপর সারিতে মেয়েরা বসলো। সবাই বেশ ক্লান্ত। নিশ্চুপ নীরবে পথ ফুরাতে লাগলো। ক্লান্ত শরীরে আফরানের চোখ নিভুনিভু হয়ে আসছে। পার্শ্ববর্তী সিটে নূর বসা। পাশ ফিরতে খেয়াল করল আফরানের মাথা ঢুলছে। নিদ্রাচ্ছন্ন চোখ দুটো পিটপিট করছে। বেশ মায়া হলো তার উপর। নিষ্পলক তাকিয়ে আছে আফরানের মায়াবী চেহারার দিকে। কবে যে রাস্তা ফুরিয়ে এলো বুঝতে পারলো না। গাড়ি থামতেই আফরান নড়েচড়ে উঠল। সিট থেকে উঠতে গিয়ে নূরের উপর দৃষ্টি পড়ল। এভাবে ধরা খাওয়া নূর থতমত খেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিল। চোখ মুখ কুচকে জিবে কামড় খেল।
.
.
আফরান বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে গাঁ এলিয়ে দিল বিছানায়। নিদ্রাচ্ছন্ন চোখ দুটো এখন নিদ্রাহীন চঞ্চলতার খেলা করছে। বারেবারে চোখের সামনে অপরূপ সেই দৃশ্য ভেসে উঠছে। হুড়মুড়িয়ে লাফিয়ে উঠে বসল। হৃদস্পন্দনের গতি প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। বুকের বাপাশে টি-শার্ট আঁকড়ে ধরে চঞ্চল হৃদয়টাকে শান্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। হৃদয়টাও যেন আজ চঞ্চলতার খেলায় মত্ত। অবাধ্য হয়ে ধুকপুক ধুকপুক প্রতিধ্বনি করেই চলেছে। হঠাৎ কি যেন ভেবে আফরান রহস্যময় হাসি দিল।
.
.
নূর সোফায় বসে বাবার সঙ্গে আলাপ করছে। হঠাৎ মনে পড়ল শরীফ আহমেদের কথা।

নূর — আব্বু?

জুনায়েদ হায়দার — হুম?

নূর — বাবা তুমি কি শরীফ আহমেদকে চেনো?

জুনায়েদ হায়দার — হ্যাঁ! ব্যবসায় মার্কেটে একজন নামকরা ব্যবসায়ী। বলতে গেলে আমাদের প্রতিযোগী। আমাদের বিপক্ষ দল অর্থাৎ আমাদের শত্রু। (হাসলেন) কিন্তু তার ব্যাপারে তুমি জিজ্ঞেস করছ কেন?

নূর ঢোক গিলল। মনে মনে বলল, শত্রু? পরক্ষণে জোর পূর্বক হাসি দিল।

নূর — না-না তেমন কিছু না। আজ শান্তি নিকেতনে প্রোগ্রাম ছিল সেখানে উনি অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। তাই।

জুনায়েদ হায়দার — ওহ্!

নূর — (শত্রু? তাহলে রিহান,পুষ্পর কি হবে? বাবাকে আমি চিনি। রিহানের খুশির কথা ভেবে রাজি হবেন। কিন্তু পুষ্পর বাবা? আফরানের দিকে কেমন যেন ক্রুদ্ধ চাহনিতে তাকিয়ে ছিলেন। দেখতেই বোঝা যায় তিনি ভীষণ গম্ভীর প্রকৃতির মানুষ এবং রাগী বটে। তিনি কি মানবেন?)

রিহান এবং পুষ্পর কথা ভেবে হতাশা তাকে ঘিরে ধরল। পরক্ষণে সব চিন্তা ভাবনা ঝেড়ে ফেলল।

নূর — (ধুর! এখন এসব ভেবে কি লাভ। যখন যা হওয়ার হবে। এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। আমি যায় এক লম্বা ঘুম দিই।)

আড়মোড়া ভেঙে উঠে চলে গেল।

_______________________________

নূরের ও বাকিদের ফাইনাল সেমিস্টার সমাপ্তি হলো। পুষ্প এলএলবি কোর্স করছে। মেহের একটি অফিশিয়াল অফিসে চাকরি করে। আরিফ তার কথা রাখল। উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে, দুই পরিবারের সম্মতিতে খুব শীঘ্রই আলিফার সঙ্গে বিয়ে হবে। আহিল তার বাবার অফিসে জয়েন করেছে, আমরিনের সঙ্গে দাম্পত্যজীবনে বেশ সুখে আছে।
আর সিমা সংগ্রাম করছে যাতে তার মাদার বাংলাদেশ ওয়াসিমকে জামাই রূপে গ্রহণ করে নেয়৷ হাবাগোবা ওয়াসিম সিমার মায়ের সামনে গেলেই থরথর কাঁপতে থাকে। কোথায় গিয়ে সিমার মাকে রাজি করাবে তা না সামনে পড়লেই চিৎপটাং অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বিয়ের আসরের পরিবর্তে হসপিটালের বিছানায় পড়ে থাকে।
ইয়াশ একজন প্রোফেশনাল ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করে। মেহের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে ভালবাসার রূপ নিতে শুরু করল।
সংগীত শিল্পী হিসেবে আফরান অনেক খ্যাতি অর্জন করে। মধুর কন্ঠধ্বনিতে সকলের মন জয় করে নিল।
.

মাস পেরিয়ে গেল।
দুপুরে নূর হাঁপাতে হাঁপাতে ঘরে প্রবেশ করল। ভীষণ ক্লান্ত লাগছে। পা দুটোও প্রচন্ড ব্যাথা করছে। পা বাড়াতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। কোন ভাবে সিড়ি বেয়ে রুমে গেল। ফ্রেশ হয়ে এসে কানে ইয়ারফোন গুজে দিল। অপরপ্রান্তে গানের গুনগুন আওয়াজ আসছে।

তখনই হুট করে নূরের মা রুমে প্রবেশ করল। ঝড়ের মতো এসে ফটফট করে কিছু বলে আবারও ঝড়ের গতিতে চলে গেল। কিন্তু কানে ইয়ারফোন থাকায় নূর শুনতে পেল না।

নূর — আম্মু কি বলে গেল? কে জানে? হয়তো দেরি করে আসার কারণে বকা দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। আমি তো গান শুনছি। আ…. (বলতে বলতে থেমে গেল।)

সন্ধ্যা হয়ে গেল অথচ কারো কোন দেখা নেয়। কিন্তু দুপুরে আসার পর থেকে দেখছি আম্মু তোড়জোড় করে রান্নার আয়োজন করছে। তন্বী মাকে সাহায্য করছে। নূর পা টিপে টিপে উপরে চলে গেল। কারণ জানে এখন তাকে কোন না কোন কাজ ধরিয়ে দিবে। তাই দুপুরে যে এলো আর রুম থেকে বের হয়নি। কিন্তু এখন ভালো লাগছে না। পা দুটো ভীষণ ব্যাথা করছে। কানে ইয়ারফোন গুজে ফোন টিপতে টিপতে নিচে নামছে। এক মূহুর্তের জন্য চোখ তোলার সময় দেখল সোফায় বিপরীতমুখি হয়ে কেউ একজন বসা। বোঝা যাচ্ছে কোন ছেলে হবে। সাথে সাথে ফোনের দিকে ধ্যান দিল।

নূর — রিহাইন্না! যায় ওরে দিয়ে পা টিপাই।

আশেপাশে না তাকিয়ে সোফায় শুয়ে পড়ল। পা দুটো তুলে দিল তার কোলে। ফোন টিপতে টিপতে বলল,

নূর — পা দুটো টিপে। ভীষণ ব্যাথা করছে।

অনেক্ষণ যাবত অপেক্ষা করেও কোন ভাবান্তর পেল না। আবারও গলা ঝাড়ি দিয়ে বলল,

নূর — টিপবি? নাকি তোমার ইটিসপিটিসের কথা আম্মু, আব্বুকে বলে দিব?

ফোন টিপতে টিপতে আচমকা পায়ে কাঁপা হাতের উষ্ণ ছোঁয়া অনুভব করল। এভাবে কাঁপতে দেখে নূর বিরক্ত হলো।

নূর — আব্বে কি কররররর……

চোখ দুটো কোটর থেকে বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। সামনে তাকিয়ে দেখে আফরান। গাল ভরতি খোঁচা খোঁচা দাড়ি। সেই পুরাতন যুবক আফরান আর নেই। এখন দেখলে মনে হয় পরিপূর্ণ প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ। কিন্তু আফরান? এখানে? কি করছে? এমন নানান প্রশ্ন নূরের মাথায় চক্রের ন্যায় ঘুরছে৷ তড়িঘড়ি পা নামিয়ে উঠে দাঁড়াল। কানের ইয়ারফোন খুলে চারপাশে তাকিয়ে দেখে আব্বু, রিহান, পুষ্প, আফরানের বাবা-মা বসে আছে। পিছন ফিরতে দেখে তার মা ট্রে হাতে নিয়ে এগিয়ে আসছে৷ তার পিছে পিছে তন্বী। হঠাৎ কি হলো কেউ বুঝতে পারছে না। শুধু সবাই বিস্ময়কর দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকিয়ে আছে। নূর কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। আস্তে আস্তে জুতো পরে নিল। সবার দিকে এক নজর তাকিয়ে ভৌ-দৌড় দিল। সবাই টাস্কিত।

রুমে এসে নূর দরজা আটকে দিল। নিজের চুল মুটি ধরে টানতে লাগলো। লজ্জায় তার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। কি মুখ নিয়ে এখন রুম থেকে বের হবে ভেবে পাচ্ছে না। বেশ কিছুক্ষণ পর নূরের মা এলো নূরকে নিচে নিয়ে যেতে। কিন্তু তার অটল সিদ্ধান্ত সে ঘর থেকে বেরুবে না। অনেক জোর করল কিন্তু নূর তার কথার হেরফের হলো না। তাই অবশেষে তার মা হার মেনে চলে গেলেন।

পার্লি ভিডিও কল দিল। পার্লি আর আরফির বিয়ে হয়েছে। তাদের ছোট্ট একটি রাজকন্যা রয়েছে “লিরা”। ঢাকায় আরফির পরিবার সহিত সেখানেই তাদের সংসার।

পার্লি — হাই জানাম। কি চলছে ওখানে? বিয়ের সম্বন্ধ পাকা হয়েছে?

নূর — বিয়ে? কার বিয়ে?

পার্লি — কেন আজ আফরানের পরিবার তোমাদের বাসায় যায়নি বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে?

নূর — পার্লি আমি তোমাকে পরে ফোন দিচ্ছি।

নূর অবাক হয়ে উঠে দাঁড়াল। হাটতে হাটতে পুরো রুমে পায়চারি করছে।

নূর — তার মানে আফরানের বাবা মা এখানে এসেছে বিয়ে সম্বন্ধ পাকা করতে৷ তার মানে রিহান আর পুষ্পর বিয়ে! ইয়ায়াহহহুহুহুউউউউ।

কিছুক্ষণ লুঙ্গি ডান্স দিল৷ দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলল বাইরে যাবে বলে। কিন্তু পরক্ষণে মনে পড়ল একটু আগের ঘটনা। ইজ্জতের ফালুদা যে সবাইকে সার্ভ করে এসেছে তার প্রতিক্রিয়া কেমন আছেন কে জানে? এই ভেবে আবারও দরজা লাগিয়ে দিল।

.
.
.

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here