#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
22.
“লুঙ্গি খুইলতো নো জরিনা বানু, তুই টেনশন লিস না।
” না চাচা আমি আন্নেরে বিশ্বাস করতে পাইত্তেছিনা। আন্নে যান লুঙ্গি খুলি আইয়েন। না হইলে আইজকাও বিয়া বাড়িতে লুঙ্গি খুলি বিরাট কেলেংকারী হই যাইবো।
” তুই বিশ্বাস কর, নাহয় মর। কিন্তু আমার কানের কাছে এসে ঘ্যান ঘ্যান করিস না।
” এখন আর কিছু কইতান নো। যা কইয়ুম সব লুঙ্গি খোলার পরে। হু।
জরিনা মুখ ভেঙিয়ে হাটা ধরে।
সবাই সদর দরজা দিয়ে বাড়ির বাইরে বের হয়ে আসে। উদ্দেশ্য বিয়ে বাড়ি।
!¡!
সবাই বিয়ে বাড়িতে আসতেই আয়ান সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ জানায়। আয়ান এসে ইমরানকে জড়িয়ে ধরে।
” এতো দেরি করলি কেনো, আসতে?
” আর বলিস না। মেয়েরা যে এতো সাজে, কখন যে বেলা শেষ হয়ে যায় তারা টেরও পায় না।
” তারমানে সব দোষ তুই এখন সিনহার উপর চাপাচ্ছিস।(হেসে)
” চাপাচ্ছি না তো। যা সত্যি তাই বললাম।
” ভাইয়া একদম উনার কথা বিশ্বাস করবেন না। আমি মোটেও সাজতে দেরি করিনা।
আর এই যে বর, আমাকে পঁচানো, তাই না? তোমাকে আমি পরে দেখে নিচ্ছি।
সিনহা রাগ করার ভান করে হনহন করে হেটে ভিতরে চলে যায়। ইমরান, আয়ান দুজনে হেসে দেয়।
” তোর খবর আছে আজকে,হাহাহা।
ইমরান তার বন্ধুকে সময় দিচ্ছে। বন্ধুকে সময় দিচ্ছে ঠিকি, কিন্তু তার চক্ষু জোড়া সবসময় সিনহাকে স্ক্যান করছে। সিনহা কী করছে? কার সাথে কথা বলছে? সবকিছু পরখ করছে। সিনহা চোখের আড়াল হলে ফোন করে সামনে নিয়ে আসছে।
” সিনহা কোথায় তুমি? তোমাকে আমি দেখছি না কেনো?
” আমি ভাবীর সাথে উপরে আছি।
” ভাবীর সাথে উপরে থাকতে হবে না। এক্ষুনি নিচে নেমে আসো।
” কিন্তু কেনো?
” কেনো টেনো বলতে পারবো না। তবে শুনো রাখো আমার চোখের সীমার মধ্যে তুমি থাকবে। যা সুন্দরী লাগছে না আমার বউকে, অন্য কারো নজরে যেনো না পড়ে যায় আমার। তাই আমার নজরে থাকার অনুরোধ করছি তাকে।
সিনহা বিরক্তি প্রকাশ করতে চাইলে, শেষ কথাগুলো শুনে আর পারে না। হেসে দেয় সে। পাগল একটা।
” আসছি আমি।(হেসে)
!¡!
সিনহা একপাশে দাঁড়িয়ে কিছু মেয়ের সাথে কথা বলছে। দুইটা ছেলে এসে তাদের সাথে যোগ দেয়। ছেলে দুইটার সাথে সিনহা মুখে হাসি নিয়েই কথা বলছিল। এক পর্যায়ে মেয়েগুলো ও একটা ছেলে সরে যায়। সিনহার কাছে একটা ছেলে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
” আপনার নাম্বার টা দিন তো।
” কেনো? নাম্বার দিয়ে কী করবেন?
” নাম্বার দিয়ে সবাই যা করে,আমরাও তা করবো।
” সরি আমি ইন্টারেস্টেড না।
” কেনো, কেউ আছে নাকি?
” হুম জামাই আছে।
” হাহাহা, হাসালেন.।
” হাসার কী বললাম?
” আপনাকে দেখে মনে হয় না জামাই থাকতে পারে। আর সুন্দরী মেয়েরা এরকম বলেই থাকে, খুব কমন হয়ে গেছে কথাটা।
” আরে ভাই কমন হলেও আমার ক্ষেত্রে সত্যি। আমাকে দেখে কেনো মনে হয় না আমার জামাই আছে, হ্যাঁ? কয়দিন পর বাচ্চার মা হয়ে যাচ্ছি। আর সে বলে আমাকে দেখে মনে হয় না জামাই আছে।
” আপনি দারুন মজা করতে পারেন।
” আরে ভাই সরেন তো। বিরক্ত লাগছে এখন।
” এতো দেমাগ দেখাচ্ছেন কেন?
” দেমাগ আছে, তাই দেখাচ্ছি।
” এতো দেমাগ ভালো না।
” কেনো বস? দেমাগ দেখালো কী করবে?
ইমরান এসে ছেলেটার কাঁধে হাত দিয়ে কথাটা বলল।
” আপনি কে?
” যে তোমার সাথে দেমাগ দেখাচ্ছে, তার একমাত্র বর। এবার বলো দেমাগ দেখালে কী করবে?
” সরি, ভুল হয়ে গেছে আমার।
” মেয়ে দেখলেই কাছে এসে কথা বলতে হয় না ব্রো। নিজের পার্সোলানিলিটি ধরে রাখার চেষ্টা করো।
ছেলেটা চলে যায়। ইমরান এবার সিনহার দিকে তাকিয়ে বলে,
” খুব তো ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলি.।
” আমি….কখন..? (সিনহা আকাশ থেকে পড়ার ভান করে)
” বাড়িতে গিয়ে দেখাবো কখন।☹️
ইমরান কথাটা বলে আয়ানের কাছে চলে যায়।
” 😐ওই ডেভিল দাড়াঁ। আরে কথা শুনে যা।
!¡!
” ওই দেখি উঠো।
” কেনো?
” বরের পাশে বসে কয়েকটা সেলফি নিবো।
” নিতে হবে না।
সিনহা, ইমরানের হাত ধরে টেনে উঠায়। তারপর নিজে আয়ানের পাশে গিয়ে বসে। সিনহা নিজের ফোন টা ইমরানের হাতে দেয়।
” এইবার আমাদের পিক তুলে দাও।
ইমরান কয়েকটি পিক তুলে দেয়। এমনসময় চাচা আসে স্টেজে।
” তোদের অনেক রঙ ঢঙ দেখছি। এবার তোরা সাইডে যা। আমি আর আমার বউ মিলে বরের সাথে পিক তুলবো। কই গো সোহাগী বেগম আসো।
আয়ান মাঝখানে। চাচা আর চাচী দুজনে দুইপাশে। ক্যামেরাম্যান ঝটপট কয়েকটা পিক তুলে নেয়।
” বুড়া বয়সে চাচার ভালুবাসা দেইখে মরি যাই মরি যাই।
জরিনা বানুর কথা শুনে জাফর মিয়া পাশ থেকে বলে।
” চাচার ভালুবাসা তো ঠিকি দেখলা। কিন্তু তোয়ার লাইগা আমার যে এতো ভালুবাসা, তা তো তুমি দেখলা না, জরিনা।
” তোয়ার ভালুবাসা আমার দেখা হই গেছে। চাচা তো ঠিকি কয়,তুমি একটা মীরজাফর।
জরিনা বানু চলে যায়।
” আহারব জরিনা বানু তুমি আমার ছিনলা না। এই জাফর রে ছিনলা না।
!¡!
বিয়ে সম্পুর্ণ হলে সবাই বাসায় ফিরে আসে। সিনহা-ইমরান নিজেদের রুমে এসে ড্রেস চেঞ্জ করে নেয়।
সিনহা, ইমরানের বুকে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে। ইমরান, সিনহার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে।
” সিনহা কালকে তোমাকে ভার্সিটিতে যেতে হবে ভর্তি হওয়ার জন্য।
” উফ বিয়ে করেও শান্তি নেই। সেই পড়াশোনা আবার করতে হবে।
” জি ম্যাম পড়তে হবে। পড়ার কোনো বিকল্প নাই।
” আচ্ছা কি আর করার।
” জি। (ইমরান, সিনহার কপালে চুমু দেয়)
সিনহা মাথা উঠায়। সেও ইমরানের কপালে চুমু খায়।
” এখন যদি ঠোঁটে দিতাম? তাহলে আমিও কি ঠোঁটে পেতাম?
” পেতেও পারতেন। মিস করে ফেললেন।
” তাহলে তো দিতেই হয়।
ইমরান, সিনহাকে বিছানায় ফেলে সিনহার ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়।।
!¡!
পরেরদিন সিনহা একা একায় ভার্সিটি থেকে বের হয় বাসার উদ্দেশ্যে। ইমরানের নাকি আসতে দেরি হবে।তাই সে অপেক্ষা না করে রিক্সায় উঠে। কিছুটা পথ যাওয়ার পর কাশেম এসে রিক্সার সামনে দাঁড়ায়। কাশেমকে এখানে দেখে সিনহা অবাক হওয়ার সাথে সাথে চরম ভয় পায়।
” এই লোকটা এখানে কীভাবে?
” তোকে যেহেতু পাবো না। তোকে সুস্থ থাকতেও দিবো না।
কাশেম একটা ছুরি বের করে সিনহার দিকে এগিয়ে যায়। দেরি না করে সিনহার পেটে ছুরিটা ঢুকিয়ে দেয়।
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান