#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
23.
” এই লোকটা এখানে কীভাবে?
” তোকে যেহেতু পাবো না। তোকে সুস্থ থাকতেও দিবো না।
কাশেম একটা ছুরি বের করে সিনহার দিকে এগিয়ে যায়। দেরি না করে সিনহার পেটে ছুরিটা ঢুকিয়ে দেয়। সিনহা হাত দিয়ে ছুরিটা ধরে ফেলায়, পেটে অতো ঝখম হয়নি। হাতও কাটা যায়। সিনহা কাশেমকে এক লাথি দিয়ে, রিক্সা থেকে লাফ দিয়ে দৌড়া শুরু করে ভার্সিটির দিকে।
সিনহা দৌড়াতে দৌড়াতে ভার্সিটির ভিতরে ঢুকে যায়। কাশেম ভিতরে ঢোকার সাহস পায় না। সে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। সিনহা ভিতরে ঢুকেই মাটিতে বসে পড়ে পেটে হাত দিয়ে। হাত ও পেট থেকে রক্ত পড়ছে সিনহার।
কয়েকজন সিনহার হাতে রক্ত দেখে দৌড়ে এগিয়ে আসে।
” আরে আরে তোমার কী হয়েছে.?
আরেকজন বলল,
” ও মাই গড অনেক রক্ত পড়ছে।
” ওই বেশি কথা না বলে, ওকে ক্লাসরুমে নিয়ে চল। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রক্ত বন্ধ করতে হবে।ব্যান্ডেজ করে নিতে হবে।
সিনহাকে ক্লাসরুমে নিয়ে গিয়ে ছেলেগুলোকে বের করে দেয়। একটা মেয়ে লাইব্রেরী থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম গুলো নিয়ে আসে। সিনহার পেটে হাতে মেডিসিন দিয়ে রক্ত আপাতত বন্ধ করে। দেয়।
সিনহা নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। সিনহার ফোনে রিংটোন বেজে উঠে। সিনহা কোনোরকম মোবাইল টা বের করে কানে নেয়। তার ডেভিল ফোন করেছে।
” হ্যালো সিনহা…কোথায় তুমি?
” আ..মি…ভার্সিটি…
সিনহার মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না দেখে একটা মেয়ে সিনহার হাত থেকে ফোন নিয়ে কথা বলে।
” হ্যালো ভাইয়া,ওর একটা সমস্যা হয়েছে। আপনি ভার্সিটিতে তাড়াতাড়ি আসেন।
” হোয়াট… আমি এক্ষুনি আসছি।
ইমরান তড়িগড়ি করে অফিস থেকে বের হয়। বাইক চালিয়ে খুব দ্রুতই সে সিনহার ভার্সিটিতে চলে আসে।
এসেই সিনহার নাম্বারে ফোন দেয়। ফোন দিলে মেয়েটা এসে ইমরানকে ক্লাসরুমে নিয়ে যায়। ইমরান, সিনহার কাছে এসেই বলতে শুরু করে,
” সিনহা, কী হয়েছে তোমার? তুমি অসুস্থ হলে কীভাবে?
ইমরান তখনোও খেয়াল করেনি। সিনহার হাতে ঝখম হয়ে আছে।
” ভাইয়া ওকে হয়তো, কেউ ছুরি মেরেছে।
” হোয়াট…কী বলছো কী? কে ছুরি মারবে ওকে?
” সেটা ওওই বলতে পারবে। হাতে দেখেন ঝখম হয়ে আছে। পেটেও আছে ঝখম। আপনি এখন কিছু না জিজ্ঞেস করে ওকে হসপিটালে নিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে কিছু মেডিসিন নিয়ে নিন।
ইমরান এখন আর কথা না বাড়িয়ে সিনহাকে ধরে বাইরে নিয়ে আসে। একটা রিক্সা করে সিনহাকে নিয়ে হসপিটালে আসে। ডাক্তার দেখিয়ে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ নিয়ে সিনহাকে নিয়ে বাসায় চলে আসে।
বাসায় আসতেই সিনহাকে সবাই প্রশ্ন জুড়ে দেয়। কীভাবে হয়েছে? কীভাবে এমন হয়েছে?
ইমরান সবাইকে সামলে নেয়। সে বলে কীভাবে এমন হয়েছে, পরে জানা যাবে৷ আগে ওকে একটু সুস্থ হতে দেও।
” আচ্ছা আচ্ছা, যা ওকে উপরে নিয়ে যা।
” তোমরা কিছু মনে করো না। আমি ওকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছি।
ইমরান, সিনহাকে কোলে করেই উপরে রুমে নিয়ে যায়। সিনহাকে আস্তে আস্তে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
সিনহার মাথায় হাত বুলিয়ে সিনহাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করে। কিছুক্ষণের মধ্যে সিনহা ঘুমিয়েও পড়ে।
ইমরান ফ্রেশ হয়ে জামাকাপড় চেঞ্জ করে নেয়। চেয়ারে বসে সে সিনহার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আর মনে মনে ভাবছে, কে সিনহাকে মারতে চেয়েছে? কেনো মারতে চাইছে?
ইমরান,সিনহার পাশে গিয়ে বসে। সিনহার গালে হাত দেয়।
” আমি মনে হয় সিনহাকে হারাতে বসেছিলাম। আল্লাহ আমার সিনহাকে এই যাত্রায় বাচিঁয়ে দিয়েছে। আল্লাহর কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া।
!¡!
বিকালবেলা সিনহা চোখ মেলে তাকায়। চোখ খুলে সে আশেপাশে তাকায়। রুমে ইমরান নেই। সিনহা আস্তে আস্তে উঠে বসে। ইমরান বাইরে থেকে রুমে এসে সিনহাকে উঠতে দেখে তড়িগড়ি করে সিনহার কাছে যায়।
” আরে উঠতে যাচ্ছো কেনো? কী লাগবে?আমাকে বলো।
” শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে না। একটু বসবো আমি।
” আচ্ছা বসো।
ইমরান, সিনহার দুই হাত নিজের দুই হাতের ভিতর তালুবন্দি করে নেয়।
” এখন কেমন লাগছে?
” আগের থেকেও ভালো লাগছে।
” তোমাকে কে আক্রমণ করেছে,সিনহা.?
” কাশেম.।
” হোয়াট..? কাশেম..? ও এখানে তোমার খোঁজ পেলো কীভাবে.?
” জানি না আমি।
” ওর এতো বড় সাহস? ও আমার কলিজায় বারবার হাত দিচ্ছে? ওর জান কেড়ে নিবো আমি। ওও এখনো ছিনেনা আমকে? মেরে ফেলবো ওকে আমি।(রেগে)
সিনহা, ইমরানের হাত শক্ত করে চেপে ধরে বলে,
” মেরে ফেলতে হবে না। শুধু হুশিয়ার করে দিবেন, যেনো ও আপনার সিনহার আশেপাশে যেনো না থাকে।
” না সিনহা। ওকে এর আগে কয়েকবার হুশিয়ার করা হয়েছে। এখন আর হুশিয়ারে কাজ হবে না।
” ওর ক্ষতি করতে গিয়ে, আপনার না কোনো ক্ষতি হয়ে যায়। তাহলে আমি ঠিক থাকতে পারবো না।
ইমরান, সিনহাকে নিজের বুকে জড়িয়ে নেয়। কপালে চুমু দিয়ে বলে,
” কিছু হবে না আমার।
!¡!
” আয়ান, তোর একটা সাহায্য লাগবে।
” কী হয়েছে?
” ওই কাশেম সিনহাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। ওকে ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে আহত করেছে।
” কীইই..? ওই কাশেমের এতো বড় সাহস হয়ে গেছে?
” ওকে খুঁজে বের করতে খুব তাড়াতাড়ি। নাহলে ও আবার সিনহার ক্ষতি করতে চাইবে।
” ওকে আমি খুঁজে বের করছি।
!¡!
সেদিন রাতেই ইমরান বাসা থেকে বের হয়।কাশেমকে পাওয়া গিয়েছে। কাশেম ঢাকা ছেড়ে পালাতে চাইলে আয়ান ধরে ফেলে।
একটা চেয়ারে বাঁধা রাখা হয়েছে কাশেমকে। ইমরান এসে কোনো কথা বলা ছাড়াই কিছুক্ষণ এলোপাতাড়ি থাপ্পড় মারতে থাকে।
” এই শালাকে কেউ কিচ্ছু খেতে দিবি না। একে না খাইয়ে খাইয়ে এই বন্দী ঘরের ভিতরেই আমি মেরে ফেলবো।
!¡!
কিছুদিনের মধ্যে সিনহা সুস্থ হয়ে যায়। ইমরান ঠিক করলো সিনহাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে। সিনহা শুনে অনেক খুশি হয়। সে ইমরানকে জড়িয়ে ধরে।
” শুধু জড়িয়ে ধরবে? চুমু টুমু দিবে না.?
সিনহা হেসে ইমরানের দুই গালে চুমু খায়।
সবাইর থেকে বিদায় নিয়ে সিনহা-ইমরান বের হয়। বাসার বাইরে আসতেই চাচা ডাক দেয়।
” ওই ভাতিজা খাড়া।
” কী চাচা?
” ধর,এইটা আমার পক্ষ থেকে তোর জন্য গিফট।
” চাচা কী এখানে?
” খুইলে দেখ।
ইমরান প্যাকেট খুলে তব্দা খায়। লুঙ্গি…? চাচা তাকে লুঙ্গি গিফট করেছে.?
” চাচা… আমি এই লুঙ্গি দিয়া কী করবো.?😑
” লুঙ্গি কি মাথায় দেয়? লুঙ্গি পড়ার লাইগা দিছি।
নতুন জায়গা, নতুন অভিজ্ঞতা লুঙ্গি তোর ভালাই কাজেই লাগবো।
” নাউজুবিল্লাহ! নাউজুবিল্লাহ! চাচা আমনে এইডা কি কামডা করতাছেন.? আমনে তো নিজে সবসময় লুঙ্গি খুইলা অঘটন ঘটান। এখন ভাইজান রেও হেই পথে নিতাছেন.? আমি তো আমনের হাতে প্যাকেট দেইখা আগেই এমন কিছু সন্দেহ করেছিলাম। চাচা আমনে কিন্তু এইডা ঠিক করতাছেন না.।😐
জরিনা বানু দৌড়ে এসে কথাটা বলল। জরিনা বানুর কথা শুনে চাচা রেগে যায়।
” এরে জরিনা বানু তুই বেশি কথা কইয়া আমার মাথা, চান্দি গরম করিস না। নাইলে ফু দিয়া তোরে উড়াই দিয়াম কই দিলাম।
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান।
আগামী পর্বে গল্প শেষ।