#Romantic_Devil🌼
#Imtihan_Imran
04.
” কথা শোনানোর দরকার কী? পা ভাঙলে, ভাঙুক। পা একবার ভাঙবে, আবার জোড়া লাগবে। আবার ভাঙবে,আবার জোড়া লাগবে। এই আর এমন কী?
এমন সময় জরিনা বানু মুখ খুলল,
” হ পা তো ঠিকি জোড়া লাগবো,কিন্তু আমনের লুঙ্গির গিট্টুর জোড়া কোনোদিন লাগবে না। ওই লুঙ্গি খুলতেই থাকবো।😐
” মীর জাফর(কাজের ছেলে) তুই ওরে থামতে কও। নাইলে কিন্তু ওর চাকরি নট হয়ে যাবে বলে দিলাম।
” চাচা আমার নাম জাফর,মীর জাফর না। শুধু জাফর।
” ওই তোমরা চুপ থাকো।
চাচা তুমি কি সত্যি ভাইয়ার আপন চাচা তো? নিজের ভাতিজার পা ভাঙুক, এটা তো কোনো চাচাই চাইবে না।
সিনহার কথা শুনে চাচা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে সোফা ছেড়ে উঠে নিজের রুমের দিকে চলে যায়।
ইমরান এবার মুখ খুলল,
” আম্মাজান পা ব্যাথা করছে তো, কী করবো?
” যা ফুটবল খেলে আয়। পা ঠিক হয়ে যাবে।
ওই চলো তো, আমরা রুমে যাই।
জাহানারা চৌধুরী, নিজের স্বামীকে নিয়ে উপরে চলে গেলেন। জরিনা বানু, জাফর মিয়া(কাজের ছেলে) ওরাও নিজেদের কাজে চলে যায়। সিনহাও সোফা ছেড়ে উঠতে গেলে ইমরান বলে উঠে,
” আরে আমি পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে বাসায় আসছি, অথচ কারো দেখি কোনো মাথা ব্যাথা নেই। যে যার যার কাজে চলে যাচ্ছে।
সিনহা কথাটা শুনে সোফায় বসে পড়ে।
” বেচারা, তোরে কেউ ভালোবাসে না। ভাইয়া আমার মনে হয় তোরে রাস্তা থেকে কুড়াইয়া আনছে।
” চুপ থাক তুই। বেশি কথা না বলে,আমারে ধরে রুমে দিয়ে আয়।
” এ্যাঁ এতোক্ষণ তো নিজে নিজেই বাসায় আসলি। এখন যেতে পারিস না,ঢঙ।
” আয়ান বাসা পর্যন্ত দিয়ে গেলো।
” আয়ানকে বল তোরে রুমে দিয়ে আসতে,আমি পারবো না। তখন তো আমার কথা শুনলে না। শুনলে আজকে এইরকম দশা হতো না।
” যা লাগবে না। কাউরে আমার লাগবে না। আমি একাই যেতে পারবো।
এই কথা বলে ইমরান সোফা ছেড়ে উঠে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটা ধরে। দুই পা বাড়াতেই সিনহা ইমরানের পাশে এসে ইমরানের এক হাত নিজের কাঁধে রাখে।
” কী, সমস্যা কী?এখন এসেছিস কেনো?
” তুই তো আমার সমস্যা। আমি না আসলে কে আসবে শুনি? সিনহা কি আরেকটা আছে নাকি?
” না সিনহা আরেকটা নাই। কিন্তু তখন ঢঙ করলি কেনো?
” করব না তো কী করবো? তোকে মানা করছি না খেলতে না যেতে, এখন তো ঠিকি পা ভেঙে এসেছিস?
” পা ভাঙে নাই। মচকে গেছে, আর কাটা গেছে।
” ওই হলো একি কথা। কোনো কথা শুনিস না তুই আমার।
” তোর মতো পিচ্চি একটা মেয়ের কথা এই ইমরান শুনবে কেনো,হু?
” ঢঙ, এখন তো সেই পিচ্চিকে লাগছে তোর।
ইমরান, সিনহার কাঁধে ভর দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে হেটে উপরে উঠে আসে। চাচা সিঁড়ির উপরেই দাঁড়িয়ে ছিল।
” এভাবে আরেকজনের কাঁধে ঝুলতে না চাইলে, ফুটবল খেলা বাদ দিয়া পড়ালেখায় মনোযোগ দে।
” তুমিও বিয়া করতে চাইলে, লুঙ্গি পড়া বাদ দিয়ে প্যান্ট পড়ায় মনোযোগ দেও।
কথাটা বলেই ইমরান নিজের রুমের দিকে হাটা ধরে। আর চাচা দাঁড়িয়ে নিজে নিজে বিরবির করে বলে,
” এই ভাতিজা, ভাতিজি, জরিনা বানু সবাই সবসময় আমার লুঙ্গির পিছনেই পইড়া থাকে। মন চায় সবগুলোরে লুঙ্গির দ্বারা গিট্টু দিয়া মাইরালাই।
না এদের অত্যাচার সহ্য করা যাচ্ছে না,একদিন ঠিকি গাছে এদেরকে লুঙি দিয়া লটকাই রাখুম🙁।
——
সিনহা, ইমরানকে রুমে নিয়ে এসে বিছানায় বসায়।
” কিছু লাগবে তোর.?
” নাস্তা নিয়ে আয়,খুদা লাগছে।
” আচ্ছা নিয়ে আসছি।
” ওই শোন।
” হুম।
” আবার জরিনা বানুকে দিয়ে নাস্তা পাঠাইস না। নাহলে তোর মুখে নাস্তার বাটি ছুৃড়ে মারবো।
” যেনো কোনোদিন পাঠাইছি? সবসময় আমি নিজেই আনি।আমি তো তোর কাজের বান্ধী।
” তোরে আমার বাসায় থাকতে দিছি,আমার কাজ করার জন্যই তো। নাহলে তো বাসা থেকে বের করে দিতাম।
” এরই আমি আমার ফুফির বাসায় থাকি,তোর বাসায় না ওকে। আর আমি কিন্তু এখন অপমানিতবোধ করছি। আমারে অপমান করতেছিস তুই? এই ল্যাংড়া পা নিয়াও তোর মুখ দিয়া খুব ফটর ফটর চলে। এক লাথি দিয়া তোর ব্যান্ডেজ করা পা দিয়ে রক্তের বন্যা বসাইয়া দিমু,বলে দিলাম।
” তা করতে পারবি তুই?
” না পারব না 😒।
” আচ্ছা যা, আর কিছু বললাম না।
!!!
সিনহা নাস্তা নিয়ে এসে ইমরানের টেবিলের উপর রাখে।
” খেয়ে নে।
” একটু আরাম করে বসেছি,নড়তে চাই না। তোর হাতে খাইয়ে দে।
” ঢঙ করিস না।তোর পায়ে সমস্যা, হাতে না।
” মায়া,ভালোবাসা থাকলে খাইয়ে দে। নাহলে খাবার নিয়া যা।
” কতো রঙ ডঙ দেখাইবা তুমি।। তোমাকে নিয়ে হইছে মোর জ্বালা।
সিনহার এমন কথা শুনে ইমরান না হেসে পারে না। শব্দ করে হেসে উঠে।
” নে হা কর।
সিনহা, নিজ হাতে ইমরানকে নাস্তা খাইয়ে দেয়। নাস্তা খাওয়া শেষ হলে,সিনহা চলে যেতে নিলে,
” সিনহা..
” আবার কী.?
” মাথায় একটু বিলি কেটে দে তো।
” হ তোর মাথায় পানিও ঢেলে দিবো আমি,এটাও বা বাকি থাকবে কেনো?
” পানি ঢালতে হবে না,বিলি কেটে দিলেই হবে।
ইমরান কোনো কিছু করতে বলেছে, অথচ সিনহা করবে না, এমনটা এই জীবনেও হবে না। সিনহা ইমরানের পাশে বসে বিলি কেটে দিচ্ছে। আর মনে মনে ইমরানের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করছে।
” শালা বউ বানাতে বললে পারবে না। পাত্তা দেয় না,রিজেক্ট করে দেয়। আর কাজ করতে গেলে সেই সিনহাকেই লাগবে। সিনহার হাতে খাবে, সিনহাকে নিয়ে নিজের চুলের বিলি কেটে নিবে।কাজের বেডি পাইছে আমারে। মন চায় লাথি মেরে উষ্টা দিয়ে ফালাই দিই।
চলবে…
~ ইমতিহান ইমরান।