#THE_BOOK
#পর্ব_১৭
#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)
সময়!!!যা কারো জন্য অপেক্ষা করে না। বরং নিজ গতিতে এগিয়ে চলে। মানুষ এই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে বাধ্য। সময়কে হার মানানো যায় না। কারণ একজন শক্তিশালী মানুষের থেকে সময় অধিক শক্তিশালী। সময়ের সাথে সাথে মানুষ বদলায় মানুষের মন,চিন্তাধারা,দরিদ্রতা, এমনকি ধনসম্পদ ও। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেছে ছয়মাস। লাবন্যর শরীর বেড়েছে বিশেষ করে পেটটা একটু বড় হয়েছে। শরীরে পানি জমার কারণে হাত পা মুখ অনেকটাই ফুলে গেছে। ফর্সা গাল দুটো সবসময় লাল হয়ে থাকে। মুখ চোখের অবস্থা ভালো না। মন খারাপ থাকে সবসময়। বসে থাকতে ওর আর ভালো লাগে না। কিন্তু বাইরে যেতেও পারবে না। গর্ভকালীন সময়ে তো বারবার হাঁটাচলা করতে হয় যাতে শরীর ঠিক থাকে। লাবন্য বাইরে যেতে না পারলেও রুমের ভেতর হাঁটাহাঁটি করে। পূর্ণাশা সবসময় ওর খেয়াল রাখে। রা’দ আর অভিনব সপ্তাহে তিনবার ওকে দেখে যায়। ওদের প্ল্যান আগের মতোই এগোচ্ছে। বাচ্চাটার মস্তিষ্ক প্রায় ঘুরে গেছে তবে পুরোপুরি নয়। একটা বাচ্চার মন ঘোরাতে ওদের কতোই না পরিশ্রম করতে হচ্ছে অদ্ভুত। তবে শেষমেশ ওরা বাঁচতে পারবে তো??আরো সাড়ে তিনমাস বাকি বাচ্চা জন্মের।
লাবন্য খাটের উপর বসে আছে। বাড়ন্ত পেটের উপর হাত বুলাচ্ছে। মুহূর্তেই প্রিতমের কথা মনে পড়লো। এরকম একটা দিন ওদের আসলে কিই বা ক্ষতি হতো??এই দিনটার জন্য তো দুজন মানুষ অপেক্ষা করতো। কিন্তু সেটা হলো না। যেখানে প্রিতমের বাচ্চার মা হওয়ার কথা সেখানে একটা খারাপ কুৎসিত অশরীরীর বাচ্চার মা হচ্ছে। এর থেকে খারাপ লাগা আর কি হতে পারে??এসব ভাবতেই বুক ভেঙে কান্না আসছে লাবন্যর। কেন হলো ওর সাথে এমন??প্রিতমকে খুব বেশি মনে পড়ছে আজ। ডুকরে কেঁদে উঠলো লাবন্য।আস্তে আস্তে কান্নার শব্দ আরো বেড়ে গেল ওর। এই কান্নায় নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে লাবন্যর। এমনিতেই শরীর খারাপ কাঁদার ফলে আরো শরীর খারাপ করছে।
“মা তুমি কাঁদছো কেন?? বাবার জন্য খারাপ লাগছে তোমার??”
বাচ্চাটার এরকম কথায় লাবন্যর কান্নার বেগ আরো বেড়ে গেল। ওর চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে যে ওই খারাপ লোকটার জন্য ওর খারাপ লাগছে না। ও প্রিতমকে ভালোবাসে কিন্তু বলতে পারছে না এতে লাবন্যর কষ্টটা আরো বেড়ে যাচ্ছে। তবে একদিকে ভালো হয়েছে যে বাচ্চাটা শুধু ওর কথাই শুনতে পায়। মাইন্ড রিড আর সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনা কিছুই দেখতে পায় না। হয়তো ওদের বাঁচার জন্য সৃষ্টিকর্তা বাচ্চাটাকে এই ক্ষমতা দেয়নি। লাবন্যর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেছে কাঁদতে কাঁদতে। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে কিন্তু নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এমনিতেই শরীর দূর্বল তার উপর শ্বাস কষ্ট। লাবন্য বিছানায় শুয়ে পড়লো। অস্থির হয়ে পড়েছে সে।
পূর্ণাশা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো। কলিং বেল বাজায়নি কারণ দরজা খুলতে গিয়ে যদি লাবন্য পড়ে যায় এই ভয়ে।
দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে লাবন্যকে এই অবস্থায় দেখে পূর্ণাশা ভয় পেয়ে যায়। দ্রুত লাবন্যকে ধরে উঠে বসায়। জিজ্ঞেস করে, “তোর কোথায় কষ্ট হচ্ছে লাবন্য??বল আমাকে??”
বলতে বলতে পূর্ণাশার চোখের কার্ণিশ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। লাবন্য কথা বলতে পারছে না শুধু বড়বড় করে শ্বাস টানছে। পূর্ণাশা দ্রুত রা’দকে ফোন করে বলল। রা’দ আর অভিনব দ্রুত একজন মহিলা ডক্টরকে নিয়ে আসে। উনি এসে লাবন্যকে চেকআপ করলো। ইনজেকশন পুশ করে কিছু মেডিসিন লিখে দিলো। বাইরে এসে তিনি সবাইকে বললেন,”দেখুন পেশেন্টের অবস্থা ক্রিটিক্যাল। গর্ভাবস্থায় বারবার চেকআপ করাতে হয় কিন্তু ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে উনি চেকআপ করেইনি। ওনার শরীরে পানি জমেছে যার কারণে শরীর ফুলে গেছে।এটা পেশেন্টে জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত কাঁদার কারণে শ্বাসকষ্ট হয়েছে পরে আবারো হতে পারে। তখন তো অক্সিজেন দিতে হবে।তাছাড়া আরো অনেক প্রবলেম আছে যা বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে জানা যাবে। ওনাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে এডমিট করুন না হলে ওনাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।”
রা’দ চিন্তিত হয়ে বলল,”ওকে আমরা সিন্ধান্ত নিয়ে আপনাকে জানাবো।”
“তাড়াতাড়ি সিন্ধান্ত জানাবেন কারণ সময় খুব কম। ডেলিভারির সময় খুব কাছেই।”
ডক্টর চলে যেতেই ওরা তিনজনই চিন্তায় পড়ে যায়।
“কি হবে এখন??লাবন্যকে বাইরে নিলেই তো সব শেষ হয়ে যাবে। এতদিনে ওই বাচ্চাটাকে হাত করতে পেরেছি। যদি বাচ্চাটা হাতছাড়া হয়ে যায়??”
পূর্ণাশার কথায় রা’দ বলল,”কিছু হবে না। লাবন্যকে তো আমরা বাচাবোই।”
অভিনব রা’দের কথায় সম্মতি দিয়ে বলল,”দরকার পড়লে এই ফ্ল্যাট আমরা হসপিটালে পরিণত করবো তবুও লাবন্য এখানেই থাকবে ব্যস।”
“হুম এখন চল লাবন্যর কাছে যাই।”
ওরা তিনজনই লাবন্যর কাছে গেলো। লাবন্য শুয়ে আছে। ওদের দেখে আস্তে আস্তে উঠে বসলো। পূর্ণাশা লাবন্যর বাহুতে হাত রেখে বলল,”কেদেছিলি কেন?? জানিসই তো এখন কাঁদলে তোর শরীরের ক্ষতি হবে। নিজেকে শক্ত রাখ। আমরা আছি তোর সাথে সবসময়।”
লাবন্য পূর্ণাশার হাত ধরে বলল,”কি করবো বল প্রিত,,,,”
মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল লাবন্যর বলল, “ওর কথা খুব মনে পড়ছে। ওকে ছাড়া আমি থাকতে পারছি না। এইদিনটার জন্য কত আশা স্বপ্ন ছিলো সব শেষ হয়ে গেল। আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করছে না।”
পূর্ণাশা লাবন্যকে জড়িয়ে ধরলো। লাবন্য আবার ডুকরে কেঁদে উঠলো। তখনই বাচ্চাটার গলার আওয়াজ আসলো,”মা তুমি বাবার জন্য কষ্ট পেয়ো না এই দ্যাখো আমি আর বাবার জন্য কষ্ট পাচ্ছি না। তুমি ঠিকই বলেছ বাবা সত্যি খারাপ নাহলে আমাদের থেকে এতদিন দূরে থাকতে পারতো না। তুমি কষ্ট পেয়ো না বাবা তার কাজের জন্য নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে।”
রা’দ বলল,”তবুও আমরা তোমার বাবাকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছি আসার জন্য কিছু সে আসেনি। এখন আমরা কি করবো?? কাউকে তো জোর করে আনা যায় না।”
অভিনবও সায় দিয়ে বলল,”হুম কিন্তু এখন আমরা সবাই লাবন্যর খেয়াল রাখবো। লাবন্য খুব অসুস্থ। চল রা’দ অনেক ব্যবস্থা করতে হবে আমাদের।”
একসপ্তাহের মধ্যে লাবন্যর ফ্ল্যাট হসপিটালের একটা কেবিনের মতো তৈরি হয়ে গেল। যা যা লাগে সবকিছু নিয়ে আসা হলো। শুধু এক্সপেরিমেন্ট করার যন্ত্রগুলো বাদে। সাথে দুজন নার্সকে রাখা হলো লাবন্যর দেখাশোনা করার জন্য। এছাড়া নার্সদের সেফটির ব্যবস্থা ও করলো হুজুরের সাহায্য নিয়ে। সবকিছু ঠিকঠাক। প্ল্যানমাফিক এগোচ্ছে সবাই। এখন শুধু লাবন্যর ডেলিভারির অপেক্ষা। কিন্তু ওরা লাবন্যকে নিয়ে চিন্তিত। যদি ওর কিছু হয়ে যায় তাহলে কি হবে??মনের জোরের সাহায্যে ওরা এগিয়ে যাচ্ছে।
লাবন্য এখন আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ। এতো কেয়ার করছে সবাই সুস্থ না হয়ে পারে। লাবন্য নিজেকে গর্বিত মনে করে রা’দ অভিনব আর পূর্ণাশার মতো বন্ধু পেয়ে। গত জন্মে মনে হয় কোন পূণ্য করেছিলো যার কারণে এতো ভালো বন্ধু পেয়েছে সে। তাই লাবন্য ওর বন্ধুদের প্রশংসা বেশি করে ওর বাচ্চার কাছে। আজকাল বাচ্চাটার মন ভুলানো কথাগুলো ওকে মুগ্ধ করে। খুব ভালো লাগে কথা বলতে। মা হওয়ার অনুভূতি সত্যিই আনন্দের। সন্তানের মুখে মা ডাক শোনা যে কতখানি সুখের সেটা বলা বাহুল্য।
নার্সরা মাঝে মাঝে লাবন্যকে একা একা কথা বলতে দেখে ঘাবড়ে যায়। কারণ বাচ্চাটার কথা শুধু ওরা চারজন ব্যতিত আর কেউ শুনতে পায় না। তবে নার্সরা ভাবে হয়তো আনমনেই লাবন্য তার বাচ্চার সাথে কথা বলতেছে। গর্ভাবস্থায় তো অনেকেই এরকম ভাবে কথা বলে।
সময় যতো এগোচ্ছে লাবন্যর ভয় তত বাড়ছে।কি হবে এই বাচ্চাটা যখন পৃথিবীর বুকে আসবে?? খারাপ কিছু হবে নাকি ভালো কিছু হবে?? তবে রা’দ পূর্ণাশা অভিনব ওকে বারবার শান্তনা দিচ্ছে। মনকে শক্ত রাখার চেষ্টা করছে।
দেখতে দেখতে সময় কেটে গেছে। লাবন্যর ডেলিভারির সময় ঘনিয়ে এসেছে। আজ না হয় কাল বাচ্চা এই ধারার বুকে পা রাখবে। ছোট ছোট হাত পা নাড়িয়ে খেলা করবে। ছোট চোখ দিয়ে তাকিয়ে দেখবে ওর মা’কে।
রাত্রি আটটা বাজে। লাবন্যর কেমন যেন অস্থির অস্থির লাগছে। পাশেই পূর্ণাশা বসে আছে ওর মনেও অস্থিরতা কাজ করছে। আজকে নার্স দুজন ও আসেনি। আসার তো কথা ছিল তবুও আসেনি কেন??এবিষয়ে পূর্ণাশা রা’দকে সব বলেছে। রা’দ বলেছে যে ও একটা ব্যবস্থা করতেছে। কিছুক্ষণ পরেই কলিং বেল বাজলো। পূর্ণাশা দরজা খুলে দেখলো রা’দ দাঁড়িয়ে আছে। পূর্ণাশা জিজ্ঞাসা করল,”অভিনব আসেনি??”
রা’দ ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল,”না আসেনি।”
তখনই লাবন্য বলল,”পূর্ণাশা আমার ভিশন পেটে ব্যথা করছে। আমার সহ্য হচ্ছে না।”
রা’দ দ্রুত লাবন্যর কাছে গিয়ে বলল,”লেবার পেইন উঠেছে বোধহয় চল তোকে হসপিটালে নিয়ে যাই।”
পুর্ণাশা অবাক হয়ে বলল,”এসব কি বলছিস তুই??যার জন্য এই ফ্ল্যাটটা হসপিটালে পরিণত করলি আর এখন লাবন্যকে হসপিটালে নিয়ে যাবি??তুই ডক্টরকে কল করে এখানে আসতে বল??”
রা’দ রক্তচক্ষু নিয়ে পূর্ণাশার দিকে তাকিয়ে বলল,”তুই বেশি বুঝবি না আমি যা বলবো তাই হবে।”
রা’দের এরকম ব্যবহারের কারণ বুঝতে পারলো না পূর্ণাশা। হঠাৎ করে রা’দের হলো কি??লাবন্যকে কোলে তুলতে নিলে পূর্ণাশা রা’দের হাত ধরে বলল,”ওকে নিবি না তুই??”
এতে রা’দ আরো রেগে গিয়ে বলে,”তুই বেশি কথা বলবি না ছাড় আমাকে??”
“কে তুমি??”
পূর্ণাশার এরকম প্রশ্নে রা’দ ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলে,”আমি রা’দ।”
“তাহলে আমি কে??”
বলতে বলতে রা’দ আর অভিনব আসলো।পূর্ণাশা অবাক হলো দুটো রা’দকে দেখে। রা’দ একবার লাবন্যর দিকে তাকিয়ে বলল,”পূর্ণাশা লাবন্যকে নিয়ে বাইরে যা বাকিটা আমরা দেখছি।”
পূর্ণাশা বলল,”তাহলে এইটা কে??”
“নার্স দুজনকে এবং সেই হুজুরকে ছলনা করে মেরে এই ফ্ল্যাটে ঢুকেছে আমার রূপ ধারণ করে। এবার বুঝেছিস কে??”
অভিনব বলল,”পূর্ণাশা তুই লাবন্যক নিয়ে বাইরে যা সেখানে ডক্টর আছে তোদের হসপিটালে নিয়ে যাবে।”
পূর্ণাশা লাবন্যক হুইলচেয়ারে বসিয়ে বাইরে নিয়ে যেতে লাগলো। সাথে সাথে রা’দের বেশে অশরীরী বলে উঠলো,”ওকে নিয়ে কোথাও যাবি না তাহলে ভালো হবে না বলে দিলাম।”
পূর্ণাশা কোন কথা না শুনে বেড়িয়ে গেল। লিফটে উঠে নিচে চলে এলো। অভিনব কুৎসিত লোকটার দিকে তাকিয়ে বলল,”সেই তো আয়নার ভেতর থেকে বের হতেই হলো। এবার তুমি বাঁচবে কিভাবে??”
লোকটা হো হো করে বিকট শব্দে হেসে উঠলো। সাথে সাথে ওদের দুজনের উপর ঝাপিয়ে পড়ল।
পূর্ণাশা হসপিটালে চলে এসেছে। লাবন্যকে ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভেতর থেকে লাবন্যর আর্তনাদ ভেসে আসছে। পূর্ণাশা সৃষ্টিকর্তা কে বারবার স্মরণ করছে। যাতে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক পর বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। পূর্ণাশা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো। একজন নার্স তোয়ালে তে মুড়ে ফুটফুটে শিশু নিয়ে বের হলো। পূর্ণাশার দিকে শিশুটি এগিয়ে দিয়ে বলল,”কংগ্রাস মেয়ে হয়েছে। তবে এত সুন্দর মেয়ে আমি জীবনে কখনো দেখিনি। এই প্রথম দেখলাম। বাচ্চার বাবা বুঝি খুব সুন্দর??”
পূর্ণাশা চুপ করে গেল। কোলে নিয়ে একধ্যানে তাকিয়ে রইল নবজাতক শিশুর দিকে। নূরের আলো যেন পড়েছে শিশুর সারা গায়ে। চোখ ঝলসে যাচ্ছে এই সৌন্দর্যে। চোখে ঘন পাপড়ি, মাথাভর্তি কালো চুল ছোট ছোট হাত পা। অসম্ভব সুন্দর এই শিশু। চোখ ফেরানো যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোন পরীর মেয়ে। কিন্তু এতো সুন্দর হলো কিভাবে বাচ্চাটা??লাবন্য তো এতো সুন্দর নয়??আর ওর বাবা তো কুৎসিত লোক তাহলে??নার্সের কথার জবাব দিতে পারলো না পূর্ণাশা। বাচ্চাটাকে নিয়ে সোজা লাবন্যর কাছে গেল। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে লাবন্যর। জ্ঞান ও ফিরেছে, বাচ্চাটাকে লাবন্যর পাশে শুইয়ে দিলো পূর্ণাশা বলল,”তোর মেয়েটা খুব সুন্দর দেখতে হয়েছে লাবন্য।”
বিনিময়ে লাবন্য মুচকি হেসে মেয়ের দিকে তাকালো। কিছু বলার আগেই কেবিনের দরজা হাট করে খুলে গেল। পূর্ণাশা সটান হয়ে দাঁড়িয়ে গেল সামনে থাকা লোকটিকে দেখে। ওই কুৎসিত লোকটা এখানে এল কিভাবে?? তবে কি রা’দ অভিনব ওকে আটকাতে পারলো না??লোকটা লাবন্যর দিকে এগিয়ে আসছে হাতে ভারি একটাই কিছু। মনে হচ্ছে লাবন্যকে আঘাত করবে। পূর্ণাশা নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে লোকটাকে আটকাতে গেল। সাথে সাথে লোকটা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় পূর্ণাশাকে। দেওয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে পড়ে যায় পূর্ণাশা। মাথা ফেটে যাওয়ার কারণে জ্ঞান হারায়।
লাবন্য ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে। উঠতেও পারছে না শরীরে এতটুকু শক্তি নেই লড়াইয়ে করার। এই মুহূর্তে লাবন্য হার মেনে গেছে। অপেক্ষা করছে নিজের মৃত্যুর জন্য।
চলবে,,,,,,,