THE BOOK পর্ব-৪

0
748

#THE_BOOK

#পর্ব_৪

#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)

“বাংলাদেশের পাহাড়ি এলাকার মধ্যে ময়মনসিংহ একটি। উঁচু নিচু পাহাড়গুলো এই জেলার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছে।

ময়মনসিংহ জেলা মুক্তা-গাছার মন্ডা এবং জাকির মিয়ার ‘টক মিষ্টি জিলাটি’ এর জন্য বিখ্যাত।

ময়মনসিংহ জেলার ১০টি বিখ্যাত বা দর্শনীয় স্থান হলো আলেকজান্ডার ক্যাসেল, শশী লজ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিপিন পার্ক, ময়মনসিংহ জাদুঘর, তেপান্তর ফ্লিম সিটি, চীনা মাটির টিলা, গারো পাহাড়, কেল্লা তাজপুর, ব্রক্ষপুত্র নদ

ময়মনসিংহ জেলাটি বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের একটি অঞ্চল, এটি ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্গত একটি জেলা। এ জেলার মোট আয়তন প্রায় ৪৩৬৩.৪৮ বর্গ কিমি। ময়মনসিংহ জেলাটির পশ্চিমে রয়েছে শেরপুর, জপমালপুর ও টাঙ্গাইল জেলা, পূর্বে অবস্থিত নেত্রকোন জেলা ও কিশোরগঞ্জ জেলা, দক্ষিনে রয়েছে গাজীপুর জেলা এবং এর উত্তরে রয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্য।

এরকমই সুন্দর জেলাটিতে ২৪শে জুন ১৯৯৪ সালে জন্ম ছেলেটির। অসম্ভব সুন্দর ছেলেটির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেকেই তার প্রেমে মাতোয়ারা হয়ে যায়। ঘন কালো চুল, কালো কুচকুচে চোখের মণি দুটো অসম্ভব সুন্দর।
ভালোবাসা মানুষকে নতুন জিবন দেয়।জিবনে চলার পথে নতুন পথের সৃষ্টি করে। একসাথে কতোই না প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে দুজনে। কিন্তু যদি কখনো জানতে পারো যে সেই ভালোবাসা তোমার মৃত্যুর কারণ হবে তাহলে??

মারমেইড,মৎস্যকন্যা!!! পৃথিবীর মানুষ এখনো এই মৎসকন্যাকে সঠিকভাবে বিশ্বাস করতে পারেনি। তবে হাতেগোনা কয়েকজন মৎসকন্যার মুখোমুখি হয়েছেন। প্রাচীন সভ্যতার মানুষ বিশ্বাস করতেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর নারীরা নাকি কখনোই মানুষ হয়না তারা হয় মৎসকন্য অনেকে একে জলপরী বলে আখ্যায়িত করে। জলপরীর দেহের গঠন অর্ধেক মানুষ আর অর্ধেক মাছের ন্যায় থাকে। তাই একে মৎস্যকন্যা বলা হয়। ইংরেজিতে বলা হয় মারমেইড।

কিন্তু যখন কোন মানুষ এই জলপরীর প্রেমে পরে তখন তার কি হবে?? মানুষ তো পানির নিচে থাকতে পারবে না আর মৎস্যকন্যা ও ডাঙায় থাকতে পারবে না। তাহলে কি করে হবে সেই অপরূপ সুন্দর ছেলেটি আর জলপরীর প্রেম কাহিনী??আদৌ কি জলপরী ছেলেটিকে ভালোবাসে নাকি এটা তার কোন ছলনা?? একবার যদি সে ছেলেটিকে পানির নিচে নিজদেশে নিয়ে যেতে পারে তাহলে তার সাথে কি ঘটবে??
শেষমেশ কি হবে মানুষ আর মাছের প্রেম খেলায়???”

পড়া শেষ করে রা’দ বইয়ের পাতা উল্টালো কিন্তু অদ্ভুত আর কিছু লেখা নেই। বাকি সবগুলো পৃষ্ঠা সাদা। রা’দ দ্রুত সবগুলো পেইজ উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখলো কিন্তু কোন লাভ হলো না। সবাই অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকালো। লাবন্য বলল,”এসব কি অদ্ভুত লেখা রা’দ??কিসব মানুষ জলপরী!!প্রেম ভালোবাসা এসব কি??আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”
পূর্ণাশা বলল,”সবচেয়ে বড় কথা হলো এই বইতে বাংলা লেখা হচ্ছে কেন??আর কোন ছেলে আর জলপরীর প্রেমের গল্প বলতে চাচ্ছে এই বই??”
রা’দ নিজেও অবাক। এসব লেখার মানে ও নিজেও জানে না। তাই বলল,”আমি জানি না কিন্তু ছোটবেলায় দাদির কাছে রূপকথার গল্প শুনতাম। দাদি মারমেইডের গল্প বলতো। ওরা নাকি মানুষকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে পানির গভীরে নিয়ে যায়। আর মানুষ তখন শ্বাস আটকে মরে যায় ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক কাহিনী। কিন্তু এরকম একটা কাহিনী এই বইতে লেখার মানে কি সেটা বুঝতে পারছি না।”

অভিনব এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এইবার মুখ খুলল,”আমি একটা কথা বলবো??”

“বল।”
অভিনব মাথা চুলকে বলল,” এই বইতে যে বার্থডে ডেট আছে না ওটা আমার বার্থডে ডেট।”
সবাই ভুত দেখার মতো চমকে উঠলো।পূর্ণাশা বলল,”এটা কিভাবে সম্ভব অভিনব??তোর জন্মতারিখ আর এই বইতে লেখা ছেলেটার জন্মতারিখ এক!!!”
লাবন্য বলল,”ওয়ান মিনিট,অভিনবের বাড়ি ও তো ময়মনসিংহ। কোনভাবে অভিনবের কথা এই বইতে লেখা হয়ছে??”

লাবন্যর কথা শুনে অভিনব শব্দ করে হেসে উঠলো। হাসতে হাসতে বলল,”আর ইউ ক্রেইজি?? আমার কথা লেখা এই বইতে।যতসব ফালতু কথা। আমি একটা জলপরীর প্রেমে পরবো?? ইমপসিবল, যেখানে জলপরীর উপস্থিতি আমি বিশ্বাস করি না আর সেখানে প্রেম?? এই ফালতু বইটাকে ফেলে দে তো আমার অসহ্য লাগছে।”

রা’দ কিছু ভেবে বলল,”কোথাও যেন একটা খটকা লাগছে। এটা ব্ল্যাক ম্যাজিকারের তৈরিকৃত বই কিন্তু এই বইতে ব্ল্যাক ম্যাজিক করার পদ্ধতি থাকার বদলে এসব অদ্ভুত গল্প লেখা হচ্ছে কেন??”

সবার মনে প্রশ্নের জটলা পাকিয়ে গেছে। কিন্তু এই প্রশ্নের উত্তর সবার অজানা। লাবন্য আর পূর্ণাশা আবার ভয় পাচ্ছে। এই বইটা আসলেই অন্যরকম। কিন্তু কি এমন আছে এই বইতে??যার কারণে পাঁচজন মানুষ মারা গেলো। তারাই বা কি এমন পড়েছিলো এই বইটি থেকে?? নাকি সবটাই গুজব। অভিনব বিরক্ত হয়ে বলল,”সব চিন্তা বাদ দে তো। রা’দ কালকে এই বইয়ের বিষয়ে একটা আর্টিকেল তৈরি করে আমাদের চ্যানেলে আপলোড করে দিস। সবাইকে জানাবি যে এই বইটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যতসব ফালতু,হুদাই এইটার পেছনে এতগুলো টাকা খরচ করলাম।”

রা’দ বলল,”একটু চুপ থাক আমাকে ভাবতে দে??”
“তোর ভাবাভাবি বাদ দে তো আমার খিদে পেয়েছে আর ঘুমও পেয়েছে তোরা কি খাবি??না খেলে বিদায় হ।”

বলতে বলতে অভিনব উঠে দাঁড়িয়ে সব লাইট জ্বালিয়ে দিলো। কি আর করার লাবন্য পূর্ণাশা আর রা’দ উঠে দাঁড়ায়। রা’দ বইটাকে নিজের সাথে করে নিয়ে যায়। লাবন্য আর পূর্ণাশার মনে আবার অজানা ভয় দেখা দেয়। ওরা কেউ বুঝতে পারছে না যে এরপর ওদের সাথে কি হতে চলেছে???

…………………

ঘন গাছগাছালি ঘেরা জঙ্গল। যতদূর চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। কোন মানুষের চিহ্ন মাত্র নেই। জঙ্গলে তো সাধারণ পশু পাখিদের বসবাস কিন্তু কোন জীবজন্তু ও নেই। রা’দ এতে খুব অবাক হয়। সামনের দিকে এগিয়ে যায় রা’দ কিন্তু এখান থেকে বের হওয়ার কোন পথ খুঁজে পায় না। হঠাৎ ওর চোখ পড়লো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কোন রমনির দিকে। চোখ ধাঁধানো সাদা আলো ছড়িয়ে পড়ছে রমনির শরীর থেকে। গায়ে সাদা রঙের অদ্ভুত পোশাক মাটি পর্যন্ত নুইয়ে পড়েছে।মেয়েটা দুহাতে নিজের পরনের পোশাক গুটিয়ে রেখেছ। চুলগুলো এতোই লম্বা যে কোমড় ছাড়িয়ে পা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে। অসম্ভব সুন্দরী রমনীর চোখের মণি দুটো গাঢ় বাদামী রঙের। গাঢ় কাজলে আবৃত চোখজোড়া জ্বলজ্বল করছে। গোলাপের পাপড়ির মত কোমল ঠোঁট জোড়ায় মধু মাখানো হাসি যা কোন পুরুষকে মুহূর্তেই ঘায়েল করতে সক্ষম। মেয়েটা একহাতে নিজের পোশাক সামলিয়ে অন্যহাতটা রা’দের দিকে বাড়িয়ে দিল।
মুহূর্তেই রা’দের ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো। এইরকম সুন্দর রমনীর হাত ধরতে কে না চায়??রা’দ হাত বাড়িয়ে মেয়েটার হাত ধরতে গেল কিন্তু পারলো না। ততক্ষণে মেয়েটা কিছুটা পিছনে চলে গিয়েছে। রা’দ আরেকটু এগোলো কিন্তু এবার ও ধরতে পারলো না। এভাবে রা’দ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই মেয়েটাকে ধরতে পারছে না। কিন্তু রা’দ হাল ছাড়ার পাত্র নয় মেয়েটার পিছু নিলো। মেয়েটা দুহাত দিয়ে নিজের পোশাক গুটিয়ে সামনে দৌড়ে যাচ্ছে আর পেছনে পেছনে রা’দ দৌড়ে আসছে। কিছুক্ষণ দৌড়াতেই হঠাৎ করে মেয়েটা গায়েব হয়ে গেল। রা’দ পাগলের মতো মেয়েটাকে খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না। মাথাটা ভনভন করে ঘুরতে লাগলো। নেশাক্ত মানুষ যখন তার নেশার পানিয় না পায় তখন সে পাগল হয়ে যায়।রা’দের অবস্থা হয়েছে সেইরকম। রা’দ সারা জঙ্গল দৌড়াচ্ছে আর মেয়েটাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কিন্তু পাচ্ছে না। হঠাৎ কিছুতে হোঁচট খেয়ে রা’দ পড়ে গেল,
তখনই রা’দের ঘুমটা ভেঙে গেল। ঘামে ভিজে গেছে রা’দের পুরো শরীর। মনে হচ্ছে এই মাত্র জঙ্গলে দৌড়াচ্ছিলো। জগ থেকে পানি ঢেলে ঢকঢক করে সব পানি খেয়ে নিলো। গতকাল দেখা স্বপ্ন টা আবার দেখেছে। কিন্তু একই স্বপ্ন বারবার দেখার কারণ কি??আর এই অপরূপ মাধুর্যের এই রমনী কে?? কেন ওর স্বপ্নে আসছে আর ওকে ধরা দিচ্ছে না কেন??রা’দ দুহাতে নিজের চুল টেনে ধরলো।

নিজের ডেস্কে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে লাবন্য। পূর্ণাশা তা খেয়াল করে বলল,”লাবন্য কি হয়েছে তোর??কালকের ব্যপারটা নিয়ে আপসেট??”
লাবন্য ডেস্কে আলতো করে হাত রেখে বলল, “আরে ইয়ার জানি না কি করবো আমি?? এমনিতেই ওই বইটা পড়ার পর থেকে কেমন যেন লাগছে তার উপর আবার সেই দুঃস্বপ্ন। কিছু বুঝতে পারছি না আমি।”
পূর্ণাশা নিজের চেয়ার ঘুরিয়ে লাবন্যর দিকে ফিরে বসে বললো,”তুই আজকেও স্বপ্ন দেখেছিস?? আমিও দেখেছি কিন্তু এক স্বপ্ন বারবার দেখার কারণ কি হতে পারে??”

“আমি জানি না কিন্তু একটা কথা আমি ভালোভাবে বুঝতে পারছি যে ওই বইটা আমাদের বিপদ ডেকে আনবে।”

“কিন্তু এই কথা তো অভিনব আর রা’দ মানতেই চাইছে না।”

তখনই রাহুল এসে বলল সামির সবাইকে ডাকতেছে। অগত্যা লাবন্য আর পূর্ণাশা সামিরের কেবিনে উপস্থিত হলো। অভিনব ও রা’দ আগে থেকেই ওখানে ছিলো। সামির সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,”শোন সবাই চট্টগ্রাম থেকে এক দম্পতি ফোন করেছিল। ওনাদের বাড়িতে নাকি অদ্ভূত ঘটনা ঘটছে। অনেকটা ভুতুড়ে ঘটনা। তাই আমাদের ডাক পরেছে। তোমাদের যেতে হবে। আজকে রওনা দিলেই ভালো হয়।”
অভিনব আগ বাড়িয়ে বলল,”আচ্ছা তাহলে আজকে সন্ধ্যার ট্রেনে চলে যাই।”
সামির খুশি হয়েই বললো,”তাহলে তো ভালই হয়।”
রা’দ পূর্ণাশা আর লাবন্য কটমট করে অভিনবের দিকে তাকাতেই অভিনব রাহুলকে টেনে বাইরে নিয়ে আসে।

“রাহুল এবার তুই আমাদের সাথে যাবি।”
রাহুল অনুনয় করে বলল,”না ভাই আমাকে ছেড়ে দিন ওসব আমার কাজ না।”

অভিনব কিছু বলার আগেই রা’দ এসে অভিনবের পিঠে দুম করে কিল বসিয়ে দিল।অভিনব পিঠে হাত বুলিয়ে বলল,”মারছিস কেন??”
“আগ বাড়িয়ে কেন পাকনামো করলি।”
লাবন্য বলল,”শয়তান এক নম্বর। দুদিন পর গেলে কি হতো??”
অভিনব বলল,”রিল্যাক্স, দুদিন পর হোক বা আগে হোক যেতে তো আমাদের হবেই।”

লাবন্য আর পূর্ণাশা রেগে অভিনবকে মারতে লাগলো।অভিনব দৌড় দিতে ওরাও অভিনবের পিছু পিছু দৌড়াতে লাগলো।
রাহুল তা দেখে হেসে বলল,”তোমাদের ফ্রেন্ডশিপ সত্যি অসাধারণ। কিন্তু রা’দ আমাকে একটা কথা বলো তো?? তোমরা বন্ধু হলে কিভাবে??”
রা’দ কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,”মানে??”

“মানে হলো তোমরা চারজন বন্ধু চার ধর্মের এটা কিভাবে সম্ভব?? তোমরা তো ভার্সিটি কালের বন্ধু তাই না?? কিভাবে চলে তোমাদের??”
রা’দ হেসে বলল,”ঈদের দিন চারজন একসাথে ঘুরি আনন্দ করি,পুজোয় সবাই লাবন্যর বাড়িতে গিয়ে আড্ডা দেই,ইস্টার সানডে তে অভিনবের সাথে সময় কাটাই আর বৌদ্ধ পূর্ণিমার রাতে সবাই একসাথে ফানুস ওড়াই। আরো সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে একসাথে সময় কাটাই। এভাবেই আমাদের দিন চলে যায় বুঝেছিস। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো, বন্ধুত্বের সম্পর্ক কখনোই ধর্মের উপর নির্ভর করে না। একজন মানুষের উপর নির্ভর করে। প্রেম ভালোবাসা বিয়ে এসব ধর্মের উপর নির্ভর করে বুঝেছিস??”

“তবুও তোমাদের চারজনের বন্ধুত্ব দেখে সবাই অবাক হবে।”
রা’দ কিছু বলল না। রাহুল তো সত্যি বলেছে।ভার্সিটি থাকতেও ওদের বন্ধুত্ব নিয়ে ট্রল হতো। এতে ওদের কোন মাথা ব্যথা নেই। ওরা ওদের মতোই বন্ধুত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রা’দ এটা ভেবে পায় না যে ওরা কিভাবে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হলো??হয়তো এটাই বিধিলিপি ছিলো।

সন্ধ্যার আগেই সবাই রেল স্টেশনে পৌঁছে যায়। রা’দ আজও বাড়িতে ঝামেলা করে এসেছে। এখন এসব নিয়ে না ভেবে ও নিজের কাজে মন দিলো। সবাই একসাথে কেবিনে গিয়ে বসলো। লাবন্য কখন থেকে প্রিতমকে ফোন করেই যাচ্ছে কিন্তু প্রিতম ফোন ধরছে না। এতে লাবন্যর মন খারাপ হয়ে গেল।পূর্ণাশা বলল,”কি রে প্রিতম ফোন ধরছে না?”

অভিনব কানে ইয়ারফোন গুঁজে বলল,”দেখ পাখি অন্য খাঁচায় বন্দী হয়ে গেছে।”
লাবন্য ধমক দিয়ে বলল,”বাজে কথা বলবি না। প্রিতম রাগ করেছে কালকে ওকে ফোন দিতে পারিনি তাই।”
অভিনব ভেংচি কেটে গান শোনায় মন দিলো।
লাবন্য মুড অফ করে বসে রইল।
চট্টগ্রাম পৌঁছে আরো কিছুক্ষণ বাসে আর সিএনজি তে জার্নি করে ওরা গন্তব্যে পৌছায়। একটা হোটেলে চারজন মিলে ওঠে।রাত পেরিয়ে দিন হতেই ইনভেস্টিকেশনের জন্য বেরিয়ে যায় সবাই। এই মুহূর্তে সবার মন থেকে বইয়ে পড়া ঘটনাটা বেরিয়ে গেছে।
ইনভেস্টিকেশন শেষে অভিনব আর পূর্ণাশা বায়না ধরলো কক্সবাজার যাবে। ওখানে থেকে কক্সবাজার বেশি দূরে নয় তাই যাওয়াই যায়। কিন্তু লাবন্য যেতে চাইলো না। ওর মতে এর আগেও ওরা কক্সবাজার এসেছে। তাই শুরু হয়ে গেল তর্কাতর্কি। শেষমেষ সিদ্ধান্ত হলো সেন্টমার্টিন যাওয়ার। তাই ওরা সেন্টমার্টিন গেলো।

অসম্ভব সুন্দর সেন্টমার্টিন দ্বীপ। চারদিকে সাগরের নীল রঙের পানি দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো এখানের রিসোর্ট গুলো খুব সুন্দর। জানালা দিয়ে সমুদ্র দেখা যায়। লাবন্য আর পূর্ণাশা খুবই ক্লান্ত। তাই তাড়াতাড়ি রিসোর্ট বুক করে ওরা রুমে চলে যায়। কালকে ঘোরাঘুরি করে তারপর ওরা ফিরে যাবে। তাই আপাতত ঘুমানোই শ্রেয়।
ক্লান্ত থাকায় রা’দ ঘুমিয়ে পড়েছে। অভিনব জানালার পর্দা সরিয়ে সেখানে বসে হাওয়া খাচ্ছে আর ল্যাপটপে কাজ করছে। হঠাৎ ওর চোখ গেল বাইরে সমুদ্রের দিকে। কেউ একজন সমুদ্রের পানিতে লাফালাফি করতেছে বোধহয়। পানির আওয়াজ আসছে।অভিনব দেখার জন্য জানালা দিয়ে উঁকি দিলো। দেখলো কিছু বাচ্চারা কোমর পর্যন্ত পানিতে নেমে গোসল করতেছে।অভিনব খুব অবাক হয়। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে বারোটা দশ বাজে। এত রাতে কারা সমুদ্রের নেমেছে।অভিনব অবাক হয়ে উঠে দাঁড়ায়। দরজা খুলে বাইরে চলে যায়। সমুদ্রের পাড়ে আসতেই,,,,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here