the unlimited love part-2

#the_unlimited_love❤️
#part_2
#writer_nusrat

আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকালাম আমি৷ একি আমি আবার ঘুমিয়ে পরেছিলাম৷ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সকাল ১০টা ২০ বেজে গেছে৷ এতো বেলা হয়ে গেছে আর আমি নাকি মরার মতো ঘুমাচ্ছি৷ কাল যে আমার বিয়ে হয়েছে সেটাইতো ভুলে গিয়েছিলাম আমি৷ সবাই কি ভাববে আমাকে৷ যে প্রথমদিন থেকেই রানীর মতো পরে পরে ঘুমাচ্ছি৷ নিজেকে একপ্রকার গালি দিতে দিতে বাথরুমে ঢুকে পরলাম৷বাথরুমে ঢুকে আরও নানান কথা ভাবতে থাকলাম,,,,আচ্ছা আমিতো কাল রাত্রেও শাওয়ার নিয়েছি৷ চুলটাও শুকিয়ে গেছে৷ যদি শাওয়ার না নিয়ে নিচে যাই কেউ কিচ্ছু বলবে নাতো৷ শুনে ছিলাম বিয়ের পরের দিন সকালে নাকি শাওয়ার নিতে হয়৷ যাইহোক আমি শাওয়ার নিয়ে নেই৷ তারপর শাওয়ার শেষ করে স্ট্যান্ড এর দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলাম৷ একি আমিতো কাপরই আনিনি এখন কি পরে যাবো আমি৷ একটা তোয়ালে আছে সম্ভবত এটা উনার হবে৷ আর কিছু না ভেবে কোনোমতে তোয়ালেটা পেছিয়ে আস্তে আস্তে দরজা খুলে দেখলাম কেউ আছে কি না৷ নাহ কেউ নেই৷ আমি বড় বড় পায়ে রুমে চলে আসলাম৷ কোনোমতে শাড়িটা নিয়ে পেছন ফিরতেই একটা বড়সড় ধাক্কা খেলাম৷ পরে যেতে নিতেই উনি এক হাত দিয়ে আমি ধরে ফেললেন৷ উনার কি হলো উনি এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন,আমিও উনার দিকে তাকিয়ে আছি৷ কেনো তাকিয়ে আছি তার কারণ আমি নিজেও জানিনা৷ উনার হুশ আসতেই উনি আমায় ছেড়ে দিলেন আর আমি ঠাসসস করে নিচে পরে গেলাম৷ উনি এবার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,,, দেখো তুমি যদি মনে করো যে এসব দেখিয়ে আমায় ইমপ্রেস করবে তাহলে আমি বলবো ইউ আর রং৷ এসবের প্রতি আমার কোনো সময়ই ইন্টারেস্ট ছিলো না তাই এসব বন্ধ করো৷ আর চেঞ্জ করার সময় দরজাটা বন্ধ করলে কি হয়৷ একনাগাড়ে কথাগুলো বলে চলে গেলেন উনি৷ আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিলেননা৷

নিচে পরার কারণে কোমরে৷ খুব ব্যাথা করছে৷ কষ্ট করে কোনো রকমে উঠে দাড়ালাম৷ তারপর শাড়িটা হাতে নিয়ে রুমেই পরতে লাগলাম৷ অন্য সব ক্ষেত্রে ট্যালেন্ট কম থাকলেও শাড়ি পরার ক্ষেত্রে ট্যালেন্ট একটু বেশিই তাই খুব সহজেই খুব সুন্দর করে শাড়িটা পরে ফেললাম৷ মাথায় গুমটা টেনে দিলাম৷ নিজেকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে তাকলাম৷ কি নেই আমার মধ্যে যে উনি আমায় মেনে নিতে পারছেননা৷ চোখে হাল্কা কাজল আর ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক লাগিয়ে নিচে চলে গেলাম৷

নিচে যেতেই আমার শাশুড়ী মা আমায় কাছে ডাকলেন আমিও গেলাম৷ তারপর উনি উনার পাশে সোফায় বসিয়ে বললেন,,, কিরে রাত্রে ঘুম কেমন হয়েছে৷ কোনো অসুবিধা হয়নিতো৷ আর যদি কোনো অসুবিধা হয় তাহলে আমায় জানাস৷ তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন আদিল কি কালকে তোকে কিছু বলেছে৷ আমি জানিরে মা ও তোকে মেনে নেয়নি৷

শাশুড়ী মায়ের কথা শুনে বুঝতে পারলাম যে খাম্বাটার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তার নাম আদিল৷ বাহ খুব সুন্দর নাম তো আমার নামের সাথে মিল আছে আমার নাম আরুহি আর উনার নাম আদিল৷ মনেমনে কথাটা ভেবে একটা হাসি দিলাম৷ শাশুড়ী মায়ের কথা শুনে হুশ আসলো আমার তারপর নিজেকে ঠিক করে বললাম,,না মা কাল উনি আমাকে কিচ্ছু বলেননি৷ আর আমাকেও মেনে নিয়েছেন৷ শেষের মিথ্যা কথাটা বলতে খুব কষ্ট হয়েছে আমার৷ শাশুড়ী মা হয়তো আমার কথাটা বিশ্বাস করেননি তাই কিছুক্ষন চুপ থেকে বললেন,,, এখন থেকে তুই আমার বাড়ির মেয়ে আর বউ দুটোই৷ তাই আদিলের সম্পর্কে জানার অধিকার তর আছে৷ শুন মা আদিল একটা মেয়েকে ভালোবাসে৷ মেয়েটিকে আমি একদম পছন্দ করিনা৷ ওয়েস্টার্ন জামা কাপড় পরে৷ তাছাড়া ব্যবহারও ভালোনা৷ আমি যে আদিলের মা হই তারপরও আমার সাথেই কেমন ভাবে কথা বলে৷ আর এই অভদ্র মেয়েকেই নাকি সে ভালোবাসে বিয়ে করবে৷ তারপর হঠাৎই তোকে একদিন দেখতে পাই একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলি৷ সেদিনই তোকে দেখে আমার পছন্দ হয় আর বাকিটা তো জানিসই৷ শুনরে মা আমার ছেলেটা বিজনেসম্যান হলে কি হবে সে খুব রাগী টাইপের৷ কিন্তু মনটা খুবই নরম৷ আমার ছেলের হাতটা ছাড়িস না৷ সব সময় আগলে রাখিস৷ হয়তো তোর সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করবে কিন্তু তুই সব সহ্য করে নিস৷ দেখবি একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে৷ এটা আমার তোর কাছে অনুরোধ মনে করতে পারিস৷ রাখবি তো এই অভাগীর অনুরোধ৷

আমি নিজেকে যথাসম্ভব সামলে নিয়ে বললাম,, হ্যা মা পারবো৷ উনিতো আমারই স্বামী৷ আর পারতেতো আমাকে হবেই৷আপনি চিন্তা করেবননা একদম৷

আমার শাশুড়ী মা খুব খুশি হয়েছেন আমার কথা শুনে৷ তারপর মুখে একটা রাগী ভাব ফুটিয়ে বললেন,,, সবতো ঠিক আছে বাট এখন থেকে তুই আমাকে তুমি করে বলবি যেরকম নিজের মাকে বলিস৷ তুই শুধু আমার বউই না আমার মেয়েও৷ তাই এখন থেকে এই পরিবারকে নিজের পরিবার মনে করবি৷ শাশুড়ী মা আমার সাথে কথা বলে খুশি মনে চলে গেলেন কিচেনে৷ হঠাৎ চোখ পরলো একটা মেয়ের উপর৷যে আমার পাশের সোফায় বসে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে৷ ওর এমন তাকানো দেখে নিজেকে এলিয়েন মনে হচ্ছে৷ মেয়েটা আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে বললো,,হয়তো আমাকে তুমি চিনতে পারছোনা৷ চিনতে না পারারই কথা৷ আমি হলাম তোমার বর আদিল খানের একমাত্র বোন রুবায়েত খান৷ সবাই রুবা বলেই ডাকে৷ তাই তুমিও আজ থেকে রুবা বলেই ডাকবে৷

কথাটা বলে রুবা এসে আমার পাশে বসলো৷ মেয়েটা দেখতে খুব মিষ্টি তার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললাম,,,,,কালতো তোমায় দেখলাম না৷ রুবা একটু হেসে বললো আসলে ভাবি আমি বাড়িতে থাকিনা৷ হোস্টেলে থাকি আর সেখান থেকেই লেখাপড়া করি৷ কোনোরকমে ছুটি নিয়ে আসলাম৷ কিছুদিন পর থেকে পরিক্ষা৷ তাই উনারা ছুটি দিতে চাননি কিন্তু নিজের একমাত্র ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা৷ যাইহোক ভাবি তুমি কিন্তু খুব সুন্দর ৷ এরকমি একটা ভাবি চাইছিলাম আমি৷

ব্রেকফাস্ট করছি আর একটা কথা ভেবে চলেছি তারপর না পেরে মাকে জিজ্ঞেসই করে ফেললাম,,, আচ্ছা মা,বাবা কোথায় উনাকে তো দেখছিনা৷ মা আমার প্লেটে নাস্তা দিয়ে বললেন,, তোর বাবা খুব সকালেই বেড়িয়ে গেছে বিজনেসম্যান মানুষ বুঝতেই পারছিস৷ নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে বিয়ে হয়েছে অথচ এখন পর্যন্ত উনার পায়ে হাত দিয়ে সালামই করতে পারিনি৷ আমার উনিও কিন্তু ব্রেকফাস্ট করতে বসেননি এসব নিয়ে আমি মাথাও ঘামাইনি৷ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি উনি আমা সাথে বসে এক টেবিলে খাবার খাবেননা৷ নাস্তাটা সেরে ছাদে যাচ্ছি৷ আমার মন খারাপ হলেই ছাদে যাই৷ সেখানে গেলে মনটা ভালো হয়ে যায়৷ ছাদের রেলিঙ ধরে দাঁড়িয়ে আছি হঠাৎ কি মনে হতেই সাইডে তাকিয়ে দেখলাম আমার স্বামী মিস্টার আদিল খান পেছন দিয়ে ঘুরে কানে ইয়ার ফোন গুজে গান শুনছেন৷আমাকে এখনও দেখেননি মনে হচ্ছে না হলে তখুনি চলে যেতেন৷

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here