Torture with love 2😍Part-43

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_43

অনু মানিকের সামনে গিয়ে…….মানিকের দু গালে হাত রাখলো…….

অনু: মানিক প্লিজ,,,বিশ্বাস করো আমি এগুলো কিছু করিনি। আর ব্রেকআপ মানে ?

মানিক: আমি জাস্ট তোমাকে সহ্য করতে পারছি না,,,আর মানিক যা বলে সেটাই। ব্রেকআপ।

অনু: মানিক ইউ প্রমিস মি। তুমি আমাকে ছেড়ে কখনও যাবে না ( চোখের পানি ফেলে )

মানিক: ( অনুর হাত শক্ত করে চেপে ধরলাম ) তোমার মত মেয়ের সাথে সারা জীবন থাকা ইমপসিবল,,,আমি তোমাকে ঘৃণা করি। চলে যাও আমার সামনে থেকে তুমি। ( রেগে + চিল্লিয়ে )

অনু: মানিক একটা কথা কি জানো ? সত্য কখনও চাপা থাকে না। সত্যটা একদিন সবার সামনে আসবে। ( চোখের পানি মুছে,,,মানিকের থেকে দুরে সরে )

মানিক: তুমি আমার সামনে থেকে যাও প্লিজ,,,আমি তোমার চেহারাও দেখতে চাইনা। ( রেগে + চিল্লিয়ে )

অনু: আর আমি জানি,,,সত্যটা জানার পর,,,তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য হলেও আসবে। ( বলেই আমি দোড়ে ওর বাসা থেকে চলে এলাম )

মানিক: এতো রাতে একা চলে গেলো,,,হোয়াটএবার।
________________________________________

অনু রাস্তায় একা একা হাটতে লাগলো……রাস্তায় একটা কুকুর অব্দিও নেই…..অনু আনমনে হেটে যাচ্ছে…..এদিকে মেঘ ডাকছে আকাশে….অনু বিদ্যুৎ চমকালে অনেক ভয় পায়…..কিন্তু আজ সে এমন একটা ধেয়ানে আছে….যে মেঘ ডাকছে কিন্তু অনুর সেদিকে খেয়াল নেই….নিজের মত হেটে যাচ্ছে…..ভাবছে মানিক কি করে ওর সাথে ব্রেকআপ করতে পারলো….কি করে সবটা শেষ করতে পারলো…..এর মধ্যেই অঝর ধায়ায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো…..বৃষ্টির পানি অনুর গায়ে পড়তেই অনুর ঘোর কাটলো….উপরে তাকিয়ে দেখে বৃষ্টি হষ্টে…..অনু পুরো ভিজে গেছে…..আনমনে হেটেই যাচ্ছে….আজ অনুর চোখের পানি….বৃষ্টির পানির সাথে মিলিয়ে যাচ্ছে….অনুর চোখের পানির প্রতিটা ফোটা বৃষ্টির পানির সাথে ভেসে চলে যাচ্ছে….অনু বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে শুয়ে….আবার কান্না করতে লাগলো…..

সকালে অনুর বাসায়_______________________

মিহু: মামি অনু কোথায় ?

মামি: আছে হয়তো নিজের রুমে। গতকাল অনেক রাত করে ফিরেছে বাসায়। জানিনা কখন বাসায় ফিরেছে।

মিহু: ( মামির কথাগুলো তো ভালো লাগছে না। উপরে গিয়েই দেখি ) আচ্ছা মামি আমি দেখছি।

মিহু উপরে গিয়ে…..অনুর রুমে ঢুকলো….অনুর চোখ মুখ এর দিকে তাকিয়ে দেখে….চোখ মুখ সব ফুলে আছে…..মিহু অনেক বার ডাকলো অনুকে…..কিন্তু অনু উঠলো না…..এবার মিহুর ভয় লেগে উঠলো….অনুর মাথায় হাত দিয়েই মিহু অবাক…জ্বরে শরীর পুরে যাচ্ছে……মিহু ভেবেই নিলো অতিরিক্ত জ্বরের কারনেই হয়তো ঘুমের মধ্যে সেন্সলেস হয়ে গেছে….মিহু পানির মগ থেকে পানি নিয়ে….অনুর চোখে মুখে দিলো কয়েকবার…..অনু আস্তে আস্তে চোখ খুললো কিছুক্ষন পর……মিহু অনুকে আধশোয়া করে বসালো বেড এ……….

মিহু: জ্বরে তো শরীর পুরে যাচ্ছে। গতকাল রাতে তুই বৃষ্টিতে ভিজেছিস তাইনা ?

অনু: হুমমম,,,

মিহু: অনু আমার দিকে তাকা। কিছু হয়েছে তোর ?

অনু: অনেক কিছু,,,

মিহু: মানে,,,?

অনু: ( মিহুকে গতকাল রাতে প্রথম থেকে সব কিছু বললাম,,,মানিক যা যা করেছে ) সব শেষ মিহু,,,

মিহু: মানিকের তো আজ,,,আমি খবর করবো। কি ভাবে নিজেকে ও। এই ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস ওর। অনু গ্রুপের সবাই তোকে ভুল বুঝছে,,,কেউ তোকে যদি কিছু বলে না,,,তো সবার সাথে আমি ফ্রেন্ডশিপ শেষ করে দিবো,,,এমনকি মেঘ হলেও মেঘের সাথে ব্রেকআপ করে দিবো আমি।

অনু: আরে কি বলে যাচ্ছিস তুই। মাথা গেলো নাকি তোর। আমি রেডি হয়ে আসি বস তুই।

মিহু: কোথাও যাবি না তুই। বিছানা থেকে উঠতে পারছে না,,,উনি যাবে কলেজে। চুপচাপ শুয়ে থাক।

অনু: তুই কি চাস বাসায় থেকে আমি মরেই যাই। এমনি জ্বর,,,তার উপর আমি এভাবে বাসায় থাকলে,,,একদম দম আটকে মরে যাবো।

মিহু: অনু তোর অনেক জ্বর,,,তুই মাথা তুলে দাড়াতেও পারছিস না,,,যাবি কি করে তুই ?

অনু: তুই আছিস না ?

মিহু: ওকে দেন,,,আগে আমি তোকে ব্রেকফ্রাস্ট করাবো,,,তারপর মেডিসিন খেয়ে কলেজে যাবি,,,দেখবি ভালো লাগবে তোর।

অনু: মিহু,,,আমার গলা দিয়ে খাবার যাচ্ছে না। প্লিজ জোর করে খাওয়াস না আমাকে।

মিহু: বেশি খেতে হবে না,,,অল্প খাবি কেমন। যা ফ্রেস হয়ে আয় তুই।

অনু ফ্রেস হতে গেলো…..মিহু অনুর জন্য ব্রেকফ্রাস্ট আনলো….অনুকে মিহু ব্রেকফ্রাস্ট করিয়ে মেডিসিন খাওয়ালো….তারপর দুজনে যাবে….কিন্তু মামি অনুকে জ্বর নিয়ে বের হতেই দিবে না….মামি তো অনু আর মিহুকে মেয়ের মতই দেখে…..আর কোনো মা ই তার মেয়েকে এতো জ্বর নিয়ে বের হতে দিবে না…..অনু তো ঘারতেড়া….না শুনে বের হয়েই গেলো…..মামি টেনশন করতে লাগলো যে কখন বাসায় ফিরবে মেয়েটা………অনু আর মিহু কলেজে পৌছালো…..সবাই হলরুমে ছিলো….অনু ঢুকতেই চাইলো না হলরুমে….কারন শুধু সাগর ছাড়া সবাই অনুকে ভুল বুঝছে…..মিহু টেনে ঢোকালো……………

সাগর: আয় অনু ভেতরে।

অনু: হুমমমম,,,

মিহু: তো কি খবর সবার ?

নীলা: সবাই ভালো,,,

সাগর: তোদের নতুন গানের টিচার কিন্তু এসে গেছে,,,কিছুক্ষন এর মধ্যেই সবাই কে ডাকবে।

অনু: কে,,,জানিস কিছু ?

সাগর: নাহ্,,,

অনু: মিহু আমার কেমন একটা লাগছে ?

মিহু: খারাপ লাগছে নাকি ?

সাগর: কি হয়েছে অনুর ?

মিহু: আর বলিস না,,,গতকাল রাতে বৃষ্টিতে ভিজেছে অনেকক্ষন,,,সকালে গিয়ে দেখি ঘুমের মধ্যেই সেন্সলেস হয়ে গেছে,,,কঁপালে হাত দিয়ে দেখি জ্বর এ শরীর পুরে যাচ্ছে,,,পরে পানি ছিটা দিলাম,,,জ্ঞান ফিরলো।

আবির: কেমন আছিস তুই ? কলেজে কে আসতে বললো এতো জ্বর নিয়ে তোকে ?

নীল: ‌আজকে কলেজে না আসলেও পারতি তুই ?

অনু: আমি ঠিক আছি ( শান্ত গলায় )

মানিক: ( অনুর দিকে তাকিয়ে দেখি,,,চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। তার মানে গতকাল অনু রাস্তা দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে গেছে বাসায় )

রিমন স্যার: গাইজ তোমরা এসো,,,নতুন গানের টিচার চলে এসেছে।

সবাই গেলো বড় হলরুমে…..পুরো Varsity র সবাই এলো হলরুমে…..সবাই নতুন টিচার এর সাথে কথা বলে চলে গেলো…..অনুরা সবাই গিয়ে দাড়ালো টিচার এর সামনে…..অনু আর মিহু মাথা তুলে সালাম দিবে…..আর “থ” হয়ে‌ ঐ খানেই দাড়িয়ে রইলো……..অনু কি বলবে ভেবেই পাচ্ছে না….মিহু অনুর দিকে তাকালো……টিচারও ওদের দিকে তাকিয়ে পুরো শকড…..কি বলবে ভেবেই পাচ্ছে না……অনুর মাথা ঘুরে উঠলো…….অনু মাথার দু পাশে হাত রেখে…..চেচিয়ে কেঁদে কেঁদে বলে উঠলো…….

অনু: আমি আর এগুলো নিতে পারছি না,,,প্রথমে গতকাল রাতে মানিক,,,তারপর গ্রুপের সবার বিহেভ,,,এখন “ রাহুল ” আমি জাস্ট এগুলো আর নিতে পারবো না। আ’ম ফেড আপ ইয়ার,,,

হ্যাঁ….নতুন #গানের_টিচার আর কেউ নয় “ রাহুল ”………অনু আর মিহু আগে রাহুল এর কাছেই গান শিখতো…..এই কলেজে আসার আগে……বাকিটা নাহয় পরে জেনে নিয়েন………………

রাহুল: অনু,,, তুমি ?

অনু: আমি,,,আমি পারবো না আর এগুলো নিতে।

রাহুল: অনু আমার কথাটা শুনো,,,অনু শান্ত হও।

অনু আর কিছু বলার আগেই…. মাথা ঘুরে পরে যেতে নিলো….আর রাহুল গিয়ে অনুকে ধরে ফেললো…..রাহুল অনুকে ধরেই অবাক….গাঁয়ে এতো জ্বর…..রাহুল অনুকে কোলে তুলে নিলো…..আর মানিক তো হাতে মুঠি বেধে দাড়িয়ে দেখছিলো……মানিক তো রাগে পারছে না সবকিছু তছনছ করে দিতে….রাগে মানিকের চোখগুলো লাল হয়ে গেছে…..এদিকে নীল_নীলা,,,সাগর_নাদিয়া,,,আবির_লিসা,,, নিলয়_নদী,,,মেঘ…..সবাই অবাক হয়ে……নতুন গানের টিচার রাহুল এর দিকে তাকালো…….মিহু একদম ই অবাক হলো না…..কারন তার সবটাই জানা……রাহুল রেগে মিহুর দিকে তাকালো…..

রাহুল: মিহু,,,তুমি জানতে না অনুর এতো জ্বর ?( চিল্লিয়ে )

মিহু: আমি অনেক বার অনুকে বারন করেছি,,,আজ তোর কলেজে যেতে হবে না,,,কিন্তু অনু শুনলো না। আর তুমি তো অনুর রাগ সমন্ধে জানোই,,,নতুন করে কি বলবো বলো তোমাকে।

রাহুল: জ্বরে তো মনে হচ্ছে,,,অবস্তা খারাপ। আমি অনুকে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।

মিহু: তুমি যাও,,,আমি আসছি।

রাহুল: সরি স্টুডেন’স,,,আমি কাল তোমাদের টাইম দিচ্ছি।

বলেই রাহুল অনুকে কোলে করে নিয়ে চলে গেলো……আর মানিক তো রাগে….গিটার টা আছাড় দিলো…..সবাই মিহুর সাথে নতুন গানের টিচার এর এমন ইজিলি কথা বলতে দেখে……মিহুর দিকে তাকালো…………….

চলবে………………

বি.দ্র: আমার গল্প জিবনের,,,প্রথম যেদিন গল্প পড়া শুরু করেছিলাম,,,সেই গল্পের নায়ক আমার ফ্রাস্ট ক্রাশ #রাহুল😍। আর কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊