Torture with love 2😍Part-52

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_52

রাহুল_অনু আর মিহু আড্ডা দিতে দিতে……প্রায় রাত হয়ে এলো…..মিহু বলে উঠলো……………..

মিহু: অনেক রাত হয়ে গেলো।

রাহুল: আমি তোমাকে যাওয়ার সময় পৌছে দিয়ে যাবো কেমন।

মিহু: ওকে,,,তাহলে আমি নিচে যাচ্ছি। তুমি নিচে আসো।

রাহুল: হুমম,,,

মিহু নিচে চলে গেলো…..অনু বেড থেকে উঠে আবার জানালার কাছে গিয়ে দাড়ালো……রাহুলকে অনু কি বলবে…..সেটাই বুঝতে পারছে না…..হঠাৎ করেই রাহুল অনুর হাতের বাহু ধরে…..রাহুলের দিকে ফিরিয়ে……রাহুল অনুকে জরিয়ে ধরে……অনু একদম সোজা হয়ে দাড়িয়ে আছে…..অনু কিছু বলার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছে…………….

রাহুল: ( অনুকে জরিয়ে ধরে ) এতটুকু অধিকার তো আমার আছে,,,একজন ভালো বন্ধু হিসেবে জরিয়ে ধরার। এনিওয়ে রাতে মেডিসিন নিও,,,নওতো জ্বর বেড়ে যাবে। আমি আসি কেমন,,,কাল কলেজে দেখা হচ্ছে।

অনু: ( কথাগুলো বলেই রাহুল আমাকে ছেড়ে দিলো ) হুমমম,,,

রাহুল যেতে গিয়েও……থেমে গেলো……পিছে ফিরে অনুকে ডাকলো……অনুও রাহুলের দিকে ফিরে তাকালো…..রাহুল বললো……………..

রাহুল: তোমার আর মানিকের লাভ স্টোরি টা আমার কিন্তু শোনা বাকি আছে। কালকে কিন্তু শুনবো আমি।

অনু: রাহুল ?

রাহুল: বলো,,,

অনু: সানিম কেমন আছে,,,ও আসলো না যে ?

রাহুল: সারপ্রাইজ আছে ( টেডি ইসমাইল দিয়ে )

অনু: ( আমিও হাসার চেষ্টা করলাম। রাহুল চলে গেলো )

রাহুল মিহুকে……মেঘের বাসার সামনে নামিয়ে দিলো…..তারপর রাহুল চলে গেলো…………..

________________________________________
মিহু ভেতরে ঢুকেই দেখলো…..মেঘ সোফায় বসে লেপটপ এ কাজ করছে……মিহু কিছু না বলে উপরে……নিজের রুমে চলে গেলো‌….ফ্রেস হয়ে নিলো……কিছুক্ষন পর মেঘও মিহুর রুমে গেলো…….মিহু দেখলো মেঘ এসেছে…..কিন্তু মিহু কিছুই‌ বললো না…..

মেঘ: মিহু আ’ম সরি,,,( ঠান্ডা গলায় )

মিহু: নিশ্চুপ………….

মেঘ: মিহু সকালে,,,সবার সামনে তোমার সাথে ঝগড়া করাটা ঠিক হয়নি,,,আ’ম সরি।

মিহু: নিশ্চুপ………….

মেঘ: মিহু আমি তোমার সাথে কথা বলছি কিন্তু ( হালকা রেগে )

মিহু: কিন্তু আমি তো,,,তোমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না,,,সেটা কি তুমি বুঝতে পারছো না মেঘ ? ( কিছুটা চিল্লিয়ে )

মেঘ: কারন,,,?

মিহু: নিজের বিবেক কে জিঞ্জাসা করো,,,কারন কি হতে পারে। ( রেগে )

মেঘ: এভাবে কেনো কথা বলছো তুমি ? ( কঁপাল কুঁচকে )

মিহু: এমনি আমার ভালো লাগছে না,,,আমি ঘুম আসবো যাও নিজের রুমে প্লিজ। ( অন্যপাশ ফিরে )

মেঘ: বাই এনি চ্যান্স,,,তুমি কি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছ ?

মিহু: যদি তোমার সেটা মনে হয়,,,তাহলে সেটাই।

মেঘ: মিহু এবার একটু বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে না ( কিছুটা ধমকের সুরে )

মিহু: ওহ্ আচ্ছা তাই নাকি,,,তুমি জান্নাত এর সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে,,,ফেসবুক এ চেটিং করতে পারবা,,,জান্নাত এর সাথে ফোনে কথা বলতে পারবা,,,আর আমি যদি সেটা তোমাকে বলি তাহলেই আমি একটু বাড়াবাড়ি করছি তাইতো ???

মেঘ: তোমাকে কে বললো এসব কথা ( ঠান্ডা গলায় )

মিহু: মেঘ একটা কথা মাথায় রেখো,,,আমাকে কেউ বলবে সেই আসায় আমি থাকবো না,,, আল্লাহ্ আমাকে দুটো কান দিয়েছে শোনার জন্য,,,আর দুটো চোখ দিয়েছে দেখার জন্য। আর আমি শুনতেও পাই + দেখতেও পাই। ( করুন ভাবে )

মেঘ: ( দেখলাম মিহু কাঁদছে ) মিহু আমার কথা শুনো,,,

মিহু: নাহ্,,,তুমি আমার কাছে আসবে না। প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও।

মেঘ: মিহু তুমি জানো তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা। সো,,,কান্না বন্ধ করো আগে তুমি।

মিহু: তুমি প্লিজ নিজের রুমে যাও।

মেঘ মিহুর কথা শুনলো না…..মিহুর কাছে গিয়ে…..মিহুর গাল এ হাত রেখে…..মিহুর চোখের পানি মুছে দিলো…..তারপর মিহুকে জরিয়ে ধরলো………………

মেঘ: না বুঝে,,,কথা বলো কেনো তুমি,,,আবার নিজেই কাঁদো। তুমি যেমন টা ভাবছো তেমন কিছুই না।

মিহু: ( মেঘের থেকে দুরে সরে ) প্লিজ একটু একা থাকতে দাও।

মেঘ আর কিছু না বলে চলে গেলো……মিহু কান্নায় ভেঙ্গে পরলো…..আজ তার বেস্টফ্রেন্ড সানিম এর কথাও তার ভিষন মনে পড়ছে….তার উপর মেঘের এসব কাহিনী…..মিহুর মনে চাচ্ছে মরে যেতে……এভাবেই সবার রাত কেটে যায়………………..
________________________________________

আজ তাদের সবার জীবন…..কোথায় এসে দাড়ালো……সবার মধ্যে…..রাগ,,,জেদ,,,অভিমান,,,ভালোবাসা,,,ঘৃণা,,,তারা নিজেদের ভেতরে সবটুকু পুষে রেখেছে…………….

মানিকের যত মনে পড়ছে,,,রাহুল_অনুর কথা,,,মানিকের মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে,,,মানিক অনুকে অন্যকারো সাথে যেনো মানতেই পারছে না,,,তার উপর মানিকের এখন চিন্তা,,,অনু যদি রাহুলের সাথে রিলেশন এ যায়,,,পরক্ষন এ যখন থানার কেস এর কথা ভাবছে,,,তখনি রাগে মানিক অনুকে ঘৃণা করতে শুরু করে,,,বেলকানি তে বসে মানিক রাগে জোরে জোরে গিটার এর টিউন বাজাতে লাগলো,,,মানিক চাঁদের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে,,,আবার টিউন বাজাতে লাগলো,,,মানিকের মনে অনুর জন্য শুধু “”” ঘৃণা “””,,,

অনু কান্না করতে করতে পাথর হয়ে গেছে,,,এখন আর চোখ দিয়ে পানিও পড়ছে না,,,রাতে জোসনার আলোয় জানালার সামনে বসে আছে অনু আনমনে,,,ঠান্ডা বাতাসে গাঁ ছুঁয়ে যাচ্ছে,,,চুলগুলো উড়ে বার বার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে,,,কিন্তু চাঁদের দিকে তাকিয়ে চোখটা বন্ধ করে অনু একটা জোরে নিশ্বাস নিলো,,, অনুর মনে মানিকের জন্য “”” ভালোবাসা “”” আর রাহুলের জন্য “”” অভিমান “””,,,

রাহুল ঠিক আগের মতই,,,ছাদে দাড়িয়ে দু পকেটে দু হাত রেখে,,,আকাশ পানে তাকিয়ে রইলো,,,তার মনে এখনও অনুর জন্য “”” ভালোবাসা “”” আছে,,,কিন্তু রাহুল চাইলেও কিছু করতে পারবে না,,,রাহুল চোখ বন্ধ করে,,,সবটা ভুলার চেষ্টা করছে,,,কারন কখনও হয়তো অনুকে পাবে না,,,তাও অনুকে সে ভুলতে পারছে না,,,রাহুল বললো মনে মনে,,,এটাই হয়তো “”” ভালোবাসা “””,,,

মিহু বেড এ মাথা রেখে,,,নিচে বসে চোখের পানি ফেলেই যাচ্ছে,,,মিহু ভেবেই পাচ্ছে না,,,মেঘ কেনো এখনও জান্নাত এর সাথে কথা বলে,,,কি চায় মেঘ,,,ওকে শেষ করে ফেলতে,,,সানিম ছিলো তার জীবন,,,সানিম তাকে রেখে চলে গেলো কষ্ট দিয়ে,,,আর এখন কি মেঘও তাকে কষ্ট দিতে চাচ্ছে,,,মিহুর মনে আজ সানিমের জন্য “”” অভিমান “”” ,,,আর মেঘের জন্য “”” জেদ “””,,,মিহু চাঁদের দিকে তাকিয়ে চোখ মুছতে লাগলো,,,

মেঘ রুমে এসেই,,,বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে,,,আজ মেঘের এমনি মিহুর উপর একটু রাগ,,,কারন মেঘ মিহুকে আর যাই হোক অন্যকারো সাথে একদমই সহ্য করতে পারেনা,,,সেখানে সানিম ওর বেস্টফ্রেন্ড বা যাই হোক,,,মেঘের রাগ মেঘ সামলাতে পারছে না,,,কিন্তু মিহু আজ তাকে ভুল বুঝলো,,,তার বিশ্বাসই হচ্ছে না,,,মেঘের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সব,,,আজ মেঘের মনে মিহুর জন্য শুধুই “”” রাগ “””,,,

সানিম ছাদে দাড়িয়ে আছে,,,কত বছর পর দেশে ফিরলো,,,কাল সে যাবে মিউজিক কলেজে,,,কত বছর পর মিহুর সাথে কাল ওর দেখা হবে,,,সানিম একটা নিশ্বাস নিলো,,,তার মনে মিহুর জন্য “”” অভিমানে ভরা “””,,,কেনই মিহু এমন করলো,,,আর কেনই সে গেলো বিদেশে,,,

আজ ৬ জনের মনে….বিভিন্ন রকম চিন্তা…..তাদের মনে বিভিন্ন রকম ভাবনা…..সবার সূএ একই…….💔ভালোবাসা & বন্ধুত্ব💔

চলবে………………

বি.দ্র: কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊