Torture with love 2😍Part-63

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_63

মানিক গিয়ে দেখলো…..অনু শাওয়ার নিয়ে বের হলো…..টাওয়াল দিয়ে চুল মুছছে……আর চুলগুলো থেকে টুপ টুপ করে পানির ফোটা পরছে…….মানিক জানেই না কখন অনুর অনেকটা কাছে চলে গেছে……অনুর মনে হলো……অনুর পিছে কেউ আছে……অনু পিছনে ফিরতেই…..অনুর ভিজা চুলগুলো পুরো মানিকের মুখে বারি লাগলো…..মানিকের পুরো মুখে অনুর চুলের পানি দিয়ে ভরে গেলো…..মানিক চোখ বন্ধ করে তা অনুভব করলো……অনু তো থ মেরে দাড়িয়ে আছে……মানিক চোখ খুলে মুখের পানিগুলো মুছতে লাগলো……….

অনু: তুমি ? এই বাসায় ??

মানিক: তার আগে বলো,,,তুমি এটা কি করলে ?

অনু: তো আমি কি জেনে বসে আছি নাকি,,,যে তুমি আমার রুমে।

মানিক: এখন তোমাকে কি শাস্তি দেওয়া উচিত এটার জন্য ?

অনু: আমার বাসা,,,আমার বেড রুম। তোমাকে ঢুকতে কে বললো ? এখন আমাকে কথা শুনাচ্ছো।

মানিক: আচ্ছা তাই ? ( শয়তানি হাসি দিয়ে )

অনু: কি করতে এসেছো তুমি ?

মানিক: তোমাকে দেখতে এলাম।

অনু : মানে ?

মানিক অনুর সামনে গিয়ে…..অনুর দু গালে হাত রেখে…..অনুর কঁপালের সাথে কঁপাল লাগালো……তারপর চোখ বন্ধ করে বললো….

মানিক: অনু আ’ম সরি,,,আমাকে মাফ করো। ( করুন ভাবে )

অনু: ( আমার এতো হাসি পাচ্ছিলো ) আমি তোমাকে বলেছিলাম,,,আমার কাছে তোমাকে মাফ চাওয়া লাগবে,,,কিন্তু সেই দিন টা যে আমার জীবনে এত তাড়াতাড়ি আসবে সেটা আমি ভাবিনি।

মানিক: অনু আমি,,,

মানিক আর কিছু বলার আগেই……অনু মানিকের থেকে দুরে সরে গেলো……মানিক জানতো এমন কিছুই হবে………………..

অনু: এখন ক্ষমা চেয়ে,,,এগুলো করে কোনো লাভ হবে না,,,চলে যাও আমার বাসা থেকে তুমি। ( চোখ মুছতে মুছতে )

মানিক: অনু আমি পারবো না,,,তোমাকে ছাড়া থাকতে। এই কতগুলো দিন আমি কি ভাবে ছিলাম,,,সেটা আমি জানি। প্লিজ আমাকে মাফ করো।

বলতে বলতে কান্না করে……নিচে দু হাটু গেরে বসে পড়লো মানিক…….অনুর চোখ দিয়ে পানি পরছে…..কিন্তু অনু অন্যদিকে ফিরে দাড়িয়ে রইলো……….

অনু: মানিক প্লিজ চলে যাও,,,আমার ভালো লাগছে না। তুমি আমাকে আর কখনও ই পাবে না,,,শুধু শুধু এসব করে কোনো লাভ নেই। ( অনেকটা করুন ভাবে )

মানিক: ( অনুর কথা শুনে উঠে দাড়ালাম ) ভুল কিন্তু তোমারও কম কিছু ছিলো না অনু। ( অনেকটা রেগে )

অনু: কি ভুল ছিলো আমার,,,আমি তোমাকে বলিনি বার বার করে,,,যে মানিক আমি কিছু করিনি,,,আমার কথাটা একবার শুনো তুমি,,,আমি কিছু করিনি। এগুলো আমি বলিনি তোমাকে ? তুমি কি করেছিলে ? আমার কোনো কথাই শুনো নি। এখন কেনো এসেছো আমার কাছে তুমি ? আমি কি খেলনা পুতুল নাকি ? যখন ইচ্ছা হবে নিয়ে খেলবে,,,আর যখন ইচ্ছা হবে ছুড়ে ফেলে দিবে ? কোনটা বলো আমাকে ( রেগে + চিল্লিয়ে )

মানিক: অনু জাস্ট সাট আপ,,, কি বলে যাচ্ছ এগুলো তুমি ?

অনু: কেনো চুপ করবো আমি ? ভালোবাসা তাকেই বলে,,,যে ভালোবাসায় বিশ্বাস আর ভরসা থাকে একে অপরের প্রতি। কিন্তু তুমি ? আমাকে বিশ্বাস ই করতে পারলে না,,, একটা বছরের মধ্যে। উল্টে আমাকে এক বছরের রিলেশন এর গিফ্ট কি দিলে ? ব্রেকআপ,,,

মানিক: অনু আমি হাত জোর করছি,,,একটা বার আমাকে মাফ করো। আমি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে,,,প্লিজ আমাকে মাফ করো অনু,,,

অনু: কখনও না,,,আমি তোমাকে কখনও ই মাফ করতে পারবো না। চলে যাও তুমি,,, ( চোখ বন্ধ করে )

মানিক: মন থেকে বলছো তো তুমি ?

অনু : ( তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে ) আমার এখন তোমার প্রতি কোনো মন নেই,,,কোনো ভালোবাসা নেই। যে আমি মন থেকে বলবো না। আমি কথাটা তোমাকে মন থেকেই বললাম।

অনুর মুখে এসব কথা শুনেই……মানিকের রাগ উঠে গেলো……মানিক অনুকে টেনে…….নিজের সাথে মিশিয়ে দিলো…….অনুর রাগে ঘৃণায় মন চাচ্ছে নিজেকে মেরে ফেলতে…..অনু জেনো মানিক কে মেনে নিতেই পারছে না……………

মানিক: ওহ্ রিয়েলি অনু,,,এখন আমার প্রতি তোমার মন নেই,,,ভালোবাসা নেই ? তো কার প্রতি আছে ?? অপছ,,,আমি তো ভুলেই গেলাম। তোমার পুরোনো ভালোবাসা রাহুল ফিরে এসেছে। এখন তুমি তার কাছে ফিরে যাবে তাইতো ?

অনু: তুমি একটা নোংরা লোক,,,তাই তোমার মাথায় এসব নোংরা চিনতা ভাবনা আসে।

মানিক: আমি নোংরা আর তুমি ? রাহুল তোমাকে জরিয়ে ধরেনি,,,রাহুল তোমার কোমড়ে হাত রাখেনি,,,রাহুল তোমাকে কঁপালে চুমু দেয়নি। অনু তুমি ভুলে যাচ্ছ আমি তোমাদের পুরো কাহিনী জানি।

অনু: রাহুল যা করেছিলো আমাকে ভালোবেসে করেছিলো,,,কিন্তু আমি কখনও সেগুলো খারাপ চোখে দেখিনি। আর রাহুল যখন আমার জীবনে ছিলো,,,তখন আমার জীবনে তোমার অস্তিস্ত ছিলো না। তাই রাহুলের সাথে আমার যাই হয়ে থাকুক না কেনো। সেটা নিয়ে তুমি আমাকে এভাবে বলতে পারোনা।

মানিক: ওহ্ রাহুল যা করেছিলো তোমাকে ভালোবেসে,,, আর আমি তোমাকে ব্যবহার করেছি,,,ভালোবাসি নি ?

অনু মানিক কে ধাক্কা দিয়ে……. দুরে সরে গেলো………………

অনু: না,,,তুমি আমাকে কোনোদিন ই ভালোবাসো নি। ভালোবাসলে তুমি আমার চোখের পানি দেখতে পারতে না,,, ভালোবাসলে এভাবে আমাকে কষ্ট দিতে না,,,ভালোবাসলে আমাকে অবিশ্বাস করতে না। রাহুল আমাকে আগেও ভালোবাসতো আর এখনও ভালোবাসে।

মানিক: বাহ্,,,খুব সুন্দর করে কথাগুলো বললে তুমি। আমার আর কিছুই বলার নেই।

অনু: চলে যাও তুমি।

মানিক ভাবতে পারেনি অনু এ কথাগুলো বলতে পারবে……বা রাহুলের সাথে তার ভালোবাসা অনু তুলনা করবে…….অনুর মুখে শেষের প্রতিটা কথা মানিকের বুকের মধ্যে গিয়ে লেগেছে…….মানিক ওখান থেকে চলে এলো……এসে গাড়ি স্টাট দিলো……. অনুকে সে ভালোবাসে না….এটা মনে পরতেই মানিকের চোখ থেকে আজ পানি পরেই গেলো…….মানিক ঠিক করেই নিলো……অনুকে সে মানিয়েই ছাড়বে……অনুকে আগের মত করবেই মানিক…….কিন্তু মানিকের ভয় করছে……অনু যদি রাহুলের কাছে চলে যায়…..মানিকের ভাবতেই দম আটকে যাচ্ছে………………ওদিকে অনু কান্না করতে করতে মাটিতে বসে পড়লো…….কি বলে ফেললো রাগের মাথায় মানিক কে সে…….অনেক কষ্ট পেলো মানিক……..কিন্তু অনুর কেনো জানিনা মনে হচ্ছে……অনু ঠিক করেছে……কিন্তু মানিকের কাছে ফিরবেই না অনু………………
________________________________________

মিহু: অনু,,,

অনু: মিহু আমি কি ভুল কিছু করেছি ?

মিহু: একদম না,,,তুই ঠিক করেছিস। মানিক তোকে কতটা কষ্ট দিয়েছে। এটাই ওর পাওনা ছিলো।

অনু: রাগের মাথায় যা তা বলে দিয়েছি মানিক কে আমি।

মিহু: তুই মানিক কে যাই বলিস না কেনো,,,মানিক তোকে বুঝবে আমি জানি।

অনু: বুঝলে তো সেদিন ই বুঝতো। আর আজ মানিক কে এই দিনটা দেখতে হতো না।

মিহু: কাল কলেজে মানিক কিছু একটা করবে।

অনু: কি করবে ?

মিহু: জানিনা,,,আমাকে বললো না মানিক।

অনু: ( দেখলাম মিহুর হাতে চকলেট ) ছুঁচি মেয়ে,,,আমাকে চকলেট না দিয়ে একা খাচ্ছিস তুই ?

মিহু: হুহ তোর টাও আছে,,,( অনুর দিকে প্যাকেট টা এগিয়ে দিয়ে ) নে ধর ?

অনু: কি এই প্যাকেটে ?

মিহু: তোর চকলেট,,,

অনু: এত বড় প্যাকেট,,,এত চকলেট কে দিলো তোকে।

মিহু: সানিম,,,এখন খা চুপচাপ কান্না বন্ধ করে। ( আল্লাহ্ প্লিজ আমাকে মাফ করে দিও,,,এই মিথ্যের জন্য )

অনু: সানিম এর সাথে তো দেখাই হলো না,,,

মিহু: কাল কলেজে দেখা করে নিস।

অনু : হুমম,,,

অনু মিহু গল্প করলো…..আর চকলেট গুলো শেষ করলো…..দু’জন একসাথে ই ঘুমিয়ে পড়লো…….সকালে উঠে অনু আর মিহু কলেজে গেলো…….হলরুমে সবাই আড্ডা দিচ্ছিলো…..রাহুলও কথা বলছিলো…..সানিম ও ছিলো……..এর মধ্যেই পুলিশ অফিসার চলে এলো…………..

মানিক: আসুন অফিসার,,,

পুলিশ অফিসার: কি করতে হবে স্যার আমাকে ?

নীল: কিরে উনারা এখানে ?

মেঘ: মানিক তুই উনাদের ডেকেছিস ?

সাগর: বুঝলাম না কিছু ?

মানিক : সব বুঝে যাবি,,,দেখতে থাক। নিন অফিসার সায়েমা কে ফোন করে বলুন যে,,,সেদিন যাদের নিয়ে থানায় আপনার কাছে এসেছিলো,,,তাদের নিয়ে মিউজিক কলেজে আসতে।

পুলিশ অফিসার: ওকে স্যার,,,

পুলিশ অফিসার সায়েমাকে ফোন করে বললো……মানিক যা যা বলতে বললো একটু আগে……প্রথমে সায়েমা আসতে রাজি না হলেও……পরে সায়েমা আসতে রাজি হয়……..

আবির: সায়েমা কে কেনো ডাকছিস তুই ?

নিলয়: বলবি কিছু ?

মানিক: একটু অপেক্ষা কর,,,সবটা পানির মত পরিষ্কার হয়ে যাবে।

সবাই মানিকের কথা মত চুপ হয়ে রইলো…….কিছুক্ষন এর মধ্যে……সায়েমা,,,জান্নাত,,,মীম,,,রাদিকা…….ওরা চারজন ঢুকলো হলরুমে…….সায়েমা সবাইকে একসাথে দেখে একটু অবাক হলো……একটু ভয় ও পেলো……কিন্তু আবির কে দেখে শান্তি পেলো…..কারন আবির তাকে আর যাই হোক বোন হিসেবে ফেলতে পারবে না……..মানিক শুধু রাগি চোখে তাকিয়ে ছিলো সায়েমার দিকে……….

চলবে………………

বি.দ্র: কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊