Torture with love 2😍Part-73

#Torture_with_love_season_2😍😍
#লেখিকা ( অনু )
#Part_73

পরদিন সকালে ভার্সিটি_____________________

আনিকা এসেই হলরুমে ঢুকে বসলো…….নীলা এখনও নীলের সাথে কথা বলছে……আর বাকিরা কেউ আসেনি এখনও……..আনিকা এদিক ওদিক তাকাতেই দেখলো…….রাহুলের গিটার টা রাখা……আনিকা অনেক বার ভাবলো…..গিটার টা ধরবে নাকি ধরবে না…..আনিকা গিটার টা হাতে নিয়েই নিলো……আলতো করে ঠোঁট ছঁয়ে গিটারে একটা চুমু খেলো……..নিজেই হাসতে লাগলো……তারপর গিটার টা বাজানোর চেষ্টা করলো……….ওদিকে রাহুল হলরুমে ঢুকতেই দেখে…..আনিকা গিটার বাজানোর চেষ্টা করছে…..কিন্তু পারছে না………………….

রাহুল : এহেম এহেম,,,গিটার ওভাবে বাজাতে হয় না মেম।

রাহুলের গলা শুনে আনিকা উপরে তাকালো…..তাকিয়ে দেখে রাহুল……সাথে সাথে গিটার টা রেখে উঠে দাড়ালো আনিকা………

আনিকা : আ’ম সরি,,,না বলেই তোমার গিটার টা ধরলাম,,,আসলে আমার ছোটোবেলা থেকে অনেক ইচ্ছা গিটার বাজানো শিখবো। কিন্তু কখনও সময় হয়ে ওঠেনি শিখার।

রাহুল : কথার মাঝে তো একটু দম নিতে পারো নাকি ?

আনিকা : কেনো?আমি কি বেশি কথা বলি নাকি ( রেগে )

রাহুল : তাহলে কি কম কথা বলো তোমরা মেয়েরা। তোমাদের সাথে এক রাত থাকলে পাবনায় যেতে হবে আমার ।

আনিকা : এক রাত না,,,সারা জীবন থাকতে হবে আমার সাথে তোমাকে।

রাহুল : হুয়াট ???

আনিকা : না মানে,,,তোমার বউ এর সাথে তো সারা জীবন থাকতে হবে তাই না।

রাহুল : তো আর সবাই কোথায় ?

আনিকা : আমি নিয়ে আসছি ওদের।

বলেই আনিকা যাবে….রাহুল আনিকার হাত চেপে ধরলো…..আনিকা যেতে গিয়েও থেমে গেলো…..পিছে ঘুরে রাহুলের দিকে তাকালো……….রাহুল বুঝতে পেরে…..আনিকার হাতটা ছেড়ে দিলো….আনিকা সাথে সাথে হাতটা বুকের মাঝে নিলো……………….

রাহুল : একটা কথা ছিলো ?

আনিকা : হু,,,হুমম বলো,,,

রাহুল : গতকাল তুমি ছাদ থেকে ওভাবে চলে এলে কেনো ?

আনিকা : কো…কোথায় ?

রাহুল : মানিকের বাসায় ?

আনিকা : এমনি,,,

রাহুল : এমনি এমনি কেউ,,,আড়ালে চোখের পানি ফেলে,,,সেটা আমার জানা ছিলো না।

আনিকা : আমি কান্না করেছি,,,তুমি দেখলে কি করে।

রাহুল : আমার চোখটা অনেক খারাপ বুঝলে,,,

আনিকা : এমনি চোখে বাতাসে কিছু একটা পরেছিলো,,,তাই পানি পরছিলো চোখ থেকে।

রাহুল : তুমি খুব ভালো মিথ্যে বলতে পারো,,,

আনিকা : আমি কোনো মিথ্যে বলিনি,,,মিস্টার রাহুল স্যার। আমি গিয়ে সবাই কে ডেকে আনি কেমন ?

রাহুল : যাও।
________________________________________

তারপর সবাই মিলে প্রেকটিস এ বসলো……রাহুল সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছে….আর আনিকা রাহুলের দিকে তাকিয়ে আছে……রাহুলও বারবার তাকিয়ে দেখে…..আনিকা তারদিকে তাকিয়ে আছে……………….

নীলা : তারপর সবার খবর কি ?

মিহু : তোর খবর কি ?

অনু : সবার খবর ভালো,,,আমার খুদা লেগেছে। যে যে কেনটিন এ যাবা,,,আমার সাথে চলে এসো আমি গেলাম।

বলেই অনু উঠে চলে যাচ্ছিলো……নাদিয়া বললো……………..

নাদিয়া : রাহুল স্যারকে না বলেই চলে যাচ্ছিস তুই ?

অনু : কাকে বলে যাবো ? রাহুল কে ?? রাহুল তুমি কি আমার স্যার ??? মানে আমাদের সবার স্যার ????

রাহুল : একদম ই না। আমি তো তোমাদের গুরু।

লিসা : কিইইইই ?

রাহুল : জিইইইইইই।

নদী : টাটকা ঠাডা পরুক রাহুলের উপর,,,সবাই বলো আমিন।

আনিকা : কি ঢং টাই না করে। মন চায়,,,বস্তায় ভরে,, পঁচা পানিতে ফেলে দেই।

রাহুল : মিস আনিকা কি বিড়বিড় করা হচ্ছে ( চোখ টিপ দিয়ে )

আনিকা : ( আস্তাগফিরুল্লাহ্ কি বদ ছেলে রে বাবা,,,চোখ মারে )

নীলা : তোমার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতেছে আনিকা।

আনিকা : নীলালালালালা ( রেগে )

সবাই এমন মজা করতে করতেই সময় শেষ হলো……….মানিক,মেঘ,নীল,সাগর,আবির,নিলয়…….সবাই মিলে আড্ডা দিতে বসলো এবার…….তখনই হলরুমে…… কেউ এলো……………….

অজানা ছেলে : প্রিনসিপাল মেম সবাইকে ডেকেছে।

মানিক : তুমি যাও,,,আমরা আসছি।

নীল : আন্টি ডাকলো কেনো ?

মেঘ : হয়তো কোনো কারন আছে,,,গেলেই বোঝা যাবে।

সাগর : চল,,,

সবাই মিলে গেলো…..প্রিনসিপাল এর রুমে……মানিকের মা বললো……………..

প্রিনসিপাল : একটা অনুষ্ঠান করা হবে,,,তবে কলেজে নয়,,,আমাদের বাসার নিচে। এবার ভার্সিটির রেজাল্ট অনেক ভালো হয়েছে,,,সেই উপলক্ষে একটা অনুষ্ঠান করা হবে। এখন তোমাদের পুরো গ্রুপ এর কাজ হলো,,, পুরো ভার্সিটির সবাইকে জানানো ইনভাইট করা। অনুষ্ঠান টা আমার তরফ থেকে সকল স্টুডেন্ট এর গফ্ট। তাই আমার বাসায় হবে।

আবির : মেম আর কিছু ?

প্রিনসিপাল : নাহ্,,,আপাযত এই কাজটাই করো তোমরা।

নিলয় : মেম এরেঞ্জমেন্ট কি হবে ?

প্রিনসিপাল : রং,,,খাওয়া দাওয়ার বেপার টা তোমরা বুঝে নিও। তারপর আমাকে বলো।

রাহুল : ওকে মেম,,,

প্রিনসিপাল : মানিক তুমি চুপ কেনো ?

মানিক : আম্মু আমি পরে দেখে নিবো। ( বলেই রুম থেকে বের হয়ে গেলো )

প্রিনসিপাল : এই ছেলেটা কোনো কথাই শুনে না।

নীল : মেম সমস্যা নেই। আমরা সবটা সামলে নিবো।

প্রিনসিপাল : হুমমম। আর হ্যাঁ কাজের মাঝে কিন্তু আমাকে বলো সবকিছু।

মেঘ : সিওর মেম,,,আমরা বলবো।

সবাই রুম থেকে বেরিয়ে চলে এলো…….সবাই সবার কাজে লেগে পরলো…… আনিকার একটা কাজ ছিলো….তাই আনিকা বাসায় চলে গেলো……….অনু বললো…………….

অনু : নীলা একটা কথা ছিলো ?

নীলা : বল ?

অনু : আনিকা নেই,,,তাই বলছি।

নীলা : বল ?

অনু : আনিকা রাহুলকে ভালোবাসে তাই না ?

মিহু : কিইইইই ?

নীলা : হুমমম,,,প্রথম দিন থেকেই ভালোবাসে। আমি আনিকা কে তোর আর রাহুলের সব ঘটনা বলি। আনিকা অনেকটা কষ্ট পায়। কিন্তু তারপর আর এই বিষয় নিয়ে কথা হয়নি।

নাদিয়া : রাহুল + আনিকা,,,বেশ মানাবে বল ?

লিসা : কথা সেখানে না। কথা হলো রাহুল মানবে কিনা ?

নদী : সেটা তো ভেবে দেখিনি।

নীলা : সেটাই আমিও ভাবছিলাম। রাহুল শুনলে কি রিয়েষ্ট করবে। আদও কি আনিকা কে মেনে নিবে।

অনু : চেষ্টা করলে সব হয়।

মিহু : এমনও তো হতে পারে,,,রাহুল মেনে নিলো।

নীলা : জানিনা কি হবে।

এদিকে রাহুল যে…..হলরুম এর বাইরে দাড়িয়ে আছে…..সেটা কেউ জানেনা…..আসলে রাহুল এসেছিলো একটা কথা বলতে সবাইকে…..আর এসেই এসব কথা শুনে আর ভেতরে ঢুকলো না…..রাহুল এবার খুব ভালো করেই বুঝে ফেললো…..কেনো আনিকা কান্না করছিলো গতকাল রাতে……কেনো আনিকা কিছু না বলে চলে গিয়েছিলো……মিহুর চোখ গেলো হলরুমের গেটের দিকে…….রাহুলকে দেখে মিহু ডাকলো…….

মিহু : রাহুল তুমি ?

মিহুর কথা শুনে….সবাই গেটের দিকে তাকালো…..রাহুল ভেতরে এলো………..

রাহুল : তোমাদের এত বড় কথাটা আমার থেকে লুকানো উচিত ছিলো না।

নীলা : রাহুল আসলে তুমি যেটা ভাবছো সেটা নয়।

রাহুল : তাহলে ?

অনু : আনিকা ই নীলাকে বারন করেছিলো এসব বিষয় নিয়ে না আগাতে।

রাহুল : ওহ্,,, আমি কিছুটা অবাক ছিলাম আনিকার ব্যবহারে। কিন্তু এখন সবটা পরিষ্কার।

মিহু : রাহুল দেখো,,,ভালোবাসা কখনও এক সাইড থেকে হয় না। আমরা তোমাকে জোর করবো না।

নাদিয়া : তুমি চাইলে বেপার টা এড়িয়ে যেতে পারো।

অনু : কেনো এড়িয়ে যাবে ? রাহুল আমি তোমাকে উদাহরন দিচ্ছি,,,যে আনিকা ঠিক কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তুমি আমাকে ভালোবেসে যতটা কষ্ট পেয়েছো ? আনিকাও তোমাকে ভালোবেসে ঠিক ততটাই কষ্ট পেয়েছে। তুমি নিশ্চই চাও না,,,একটা মেয়ে এতটা কষ্ট পাক ?

রাহুল : আমি আনিকা কে ঠকাতে পারবো না। কারন আমি আনিকা কে ভালোবাসি না।

রাহুল এটা বলেই হলরুম থেকে বের হয়ে গেলো………………

নীলা : বাদ দে তো।

অনু : আনিকা কে কিছু জিঞ্জাসা করলে রাহুল ?

মিহু : আনিকা তো,,,জানেই না।‌আমরা রাহুলকে সব বলেছি।

নীলা : ধ্যাত কি বলতে কি বলে ফেললাম।

নাদিয়া : যা হবে,,,ভালোর জন্য হবে,,

লিসা : সেটাই,,,

নদী : এখন আর এগুলো নিয়ে ভাবিস না।

সবাই আড্ডা দিয়ে…..যে যার মত চলে গেলো……এদিকে প্রিনসিপাল মেম যে কাজ দিয়েছিলো…….সেটাও করা শেষ…….কাল সকালেই মানিকদের বাসায় সবাই যাবে……..সবাই খুব খুশি…..কারন সবাই খুব মজা করবে………….

চলবে………………

বি.দ্র : কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু😊