#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ০৭
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
এর মধ্যে ২ জন লোক আমাদের দিকে আগাতে নিয়েছে ঠিক এমন সময় ঘরের মেইন দরজা কিভাবে যেনো খুলে সাজ্জাদ আর সাথে কিছু পুলিশ বাসায় ঢুকলো।
সাজ্জাদকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কারনে এখন প্রায় রাতের ১২ টা বাজে এই সময় সাজ্জাদ কিভাবে আসলো? আর সাথে পুলিশ নিয়ে কেনো? কিভাবে জানলো আমাদের বাসায় সমস্যা হয়েছে?
হঠাৎ একটি লোক দির হাত ধরে টান দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে নিলো আর দির গলায় ছুরি ধরলো।
আমি দি বলে চিৎকার দিয়ে উঠলাম। পুলিশরা আগাতে নিলে। তারা বলে উঠলো আর এক পা সামনে আসলো এখনোই লা*শ পড়বে।
এর মধ্যে একজন আমাকে টান দিয়ে তাদের ৩ জনের কাছে নিয়ে নিলো। আমার হাত, পা দড়ি দিয়ে বাঁধা শুরু করলো যেনো আমি নড়তে না পারি।
S.R এর অর্ডার অনুযায়ী আদ্রিতার যেনো কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য আদ্রিতার গলায় ছুরি ধরে না। কারন আদ্রিতার কিছু হলে S.R ওদের কি করবে ওদের ধারনার বাইরে।
হঠাৎ পিছনের বারান্দা থেকে স্বাধীন এসে যেই লোকটি সামিরার গলায় ছুরি ধরে রেখেছিলো পিছন থেকে টান দিয়ে তার হাত থেকে ছুরি নিয়ে নেয়। সামিরা ও তাড়াতাড়ি করে দূরে সরে পরে। পুলিশরা এসে সবাইকে ধরার আগেই একজন পালিয়ে যায়। বাকি ৩ জনকে ধরতে তারা সক্ষম হয়।
স্বাধীন জিজ্ঞেস করে, মিস সামিরা আপনি কি ঠিক আছেন?
জ্বি, আমি ঠিক আছি কিন্তু আদুরি…
এদিকে আমার হাত পা এখনো বাঁধা।
সাজ্জাদ তাড়াতাড়ি এসে আদ্রিতার হাত পা সব খুলে দিলো।
আজকে এতো গুলে ধাক্কার পর কেমন যেন নির্জীব হয়ে শুধু তাকিয়ে আছি।
সাজ্জাদ, আদ্রিতাকে বললো, আদ্রিতা ঠিক আছো তুমি?
আদ্রিতা কিছু বলেছে না দেখে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে ধরে চেয়ারে বসিয়ে দিলো।
পুলিশ বললো আপনারা তাহলে বাসায় থাকুন, আমারা ওদের নিয়ে যাচ্ছি। তারপর সাজ্জাদ এর সাথে কিছু কথা বলে পুলিশরা চলে গেলো।
সামিরা সাজ্জাদকে জিজ্ঞেস করলো, ওগুলো কারা কেনো এসেছিলো? আর এতো রাতে আপনারা এইখানে কেনো? পুলিশ নিয়ে আসলেন কিভাবে? আপনারা কি আগে থেকে জানতেন?
স্বাধীন একটা চেয়ারে বসে বললো, আরে মিস সামিরা আপনি এতো প্রশ্ন কেনো করেন। এতো কষ্ট করে আপনাকে আমি বাঁচালাম এক কাপ চা দিতে ত পারেন।
সাজ্জাদ রেগে বললো, স্বাধীন তোর কি এখন মজা করতে ইচ্ছে হচ্ছে?
স্বাধীন বললো, আচ্ছা আচ্ছা সরি
সাজ্জাদ সামিরাকে বললো, আমরা অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলাম। ভাবলাম একটু রাতের সময়টা উপভোগ করি তাই রাস্তায় হেঁটে যাচ্ছিলাম। এমন সময় ঔই লোকদের কথা শুনি যে এই বাসায় ২টি মেয়ে রয়েছে তারা ডাকাতি করবে। খেয়াল করে দেখলাম এইটা আপনাদের বাসা তাই তাড়াতাড়ি পুলিশকে ইনফরমেশন করে দিলাম।
( সাজ্জাদ একটি মিথ্যা গল্প বানিয়ে সামিরাকে বলে দিলো। আর সামিরা ও বিশ্বাস করে নিলো)
স্বাধীন বললো, আদ্রিতা এতো চুপচাপ কেনো কিছু বলছো না যে?
সাজ্জাদ বুঝতে পারছে, সামিরার গলায় ছুরি ধরার ফলে আদ্রিতা আবার অতীতের কথা গুলোতে ফিরে যাচ্ছে।
সামিরা বললো আদুরি মনে হয় একটু ভয় পেয়েছে তাই আর কি আপনারা বসুন আমি চা নিয়ে আসছি।
দি যদি ওইদিন সন্ধ্যার কথা গুলো জানতো তাহলে হয়তো আমার অবস্থা বুঝতে পারতো। ওইদিন ত আমার সাথে সাজ্জাদ ছিলো সাজ্জাদের দিকে তাকালাম সাজ্জাদ চোখের ইশারায় ভরসা দিলো। কিছুটা শান্ত হলাম।
দি চা বানিয়ে নিয়ে আসলো।
স্বাধীন চা খেয়ে বললো বাহ চা ত ভালোই হয়েছে। সাজ্জাদের সাথে আপনার বিয়ের পর প্রায় কিন্তু আসবো আপনার চা খেতে।
কথাটা শুনে বুকটা কেপে উঠলো ঠিকই ত মানুষটা ত আমার না। কখনো আমার হবে ও না।
দি আমি রুমে যাচ্ছি। একথা বলে রুমে চলে আসলাম। সাজ্জাদকে পাওয়ার ভাগ্য আমার নেই। কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সাজ্জাদ, সামিরাকে বললো আন্টি, আঙ্কেলকে আজকের ব্যাপারে কিছু বলার দরকার নেই। টেনশন করবে। সামিরা সাজ্জাদের কথায় সম্মতি প্রকাশ করলো। আর ও কিছুক্ষণ সামিরার সাথে কথা বলে সাজ্জাদ আর স্বাধীন চলে গেলো।
অন্যদিকে ~
অন্ধকার রুমে ৩ জন পরে আছে। অতিরিক্ত মারার ফলে সবার হাত পা থেকেই রক্ত পড়ছে। এমন সময় সেই রুমে একজন লোক প্রবেশ করলো। রুমে মাএ প্রবেশ করা লোকটি এসে একজনের হাত মারতে মারতে ভেঙে দিলো। আর বললো সাহস কি করে হয় তোর, তোর এই হাত দিয়ে আমার পাখির হাত ধরলি কোন সাহসে কথাগুলো বলে আর কিছুক্ষণ ওই ৩ জন লোককে মেরে, লোকটি রুম থেকে বেরিয়ে আসলো।
*****১ সপ্তাহ পর *****
সেই ঘটনার পর ১ সপ্তাহ কেটে গেছে। এর মধ্যে আদ্রিতা আর সামিরা কারোর সাথেই সাজ্জাদের কোনো রকম যোগাযোগ হয় নি। এর মধ্যে আদ্রিতার কলেজের অনুষ্ঠানে ঘনিয়ে এসেছে। এই ১ সপ্তাহ আদ্রিতা কলেজে ও যায় নি। আজকে কলেজে যাবে। সাজ্জাদ কোনোভাবে আদ্রিতার নাম্বার যোগাড় করেছিলো। ফোন দিয়েছিলো আদ্রিতা সাজ্জাদের কন্ঠস্বর শুনে ফোন কেটে দিয়েছে।
সকাল সকাল তৈরি হয়ে বের হতে নেবো। এমন সময় মা বললো, আদ্রিতা আজকে তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসতে হবে। সাজ্জাদের বাসায় সবাইকে আজকে দুপুরে দাওয়াত দিয়েছি। আর সাথে সাজ্জাদের বন্ধুকে ও আসতে বলেছি।
জিজ্ঞেস করলাম আজকে এতো আয়োজন কেনো?
মা বললো, সামিরার বিয়ের দিন ঠিক করা হবে আজকে।
কথা শুনে বললাম আচ্ছা আমি তাড়াতাড়ি কলেজ থেকে ফিরে আসবো।
দির দিকে তাকালাম, দেখলাম আমাকে দেখে চোখের জল মুছে নিলো। মুচকি হেসে বেরিয়ে পড়লাম বাসা থেকে।
#চলবে
[ ফাইনাল পরীক্ষার জন্য পর্ব গুলো একটু ছোট হচ্ছে। ৩ তারিখ থেকে গল্প গুলো বড় হবে।
সামিরার বিয়ের তারিখ ঠিক করা হবে সবার দাওয়াত রইলো। গল্পের শেষটা কি হবে? Happy or sad? ]