অজানা_অনুভূতি #পর্বঃ ৩১ #লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ৩১
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি

সাজ্জাদ কম্পিউটার রুমে বসে আছে বাকিরা ও আছে। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে রিজভী ওই রুমে সেই গ্যাস টাইপ জিনিসটা ফেলেছিলো। এখন সবাই সিউর কাজটা যে ওরা করেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই সাজ্জাদের চোয়াল শুক্ত হয়ে আসলো।

আমার আগে থেকেই মনে হয়েছিলো নওশিন যুক্ত আছে। (আলো)

একটা মেয়ে হয়ে কিভাবে একটা মেয়ের এতো বড় ক্ষতি করতে পারে? ছিহহ ( তানহা)

নওশিন কাজটা ঠিক করে নি খুব খারাপ করেছে শাস্তি পেতেই হবে। ( আবির)

অবশ্যই শাস্তি পাবে। যা করেছে ক্ষমার অযোগ্য। ( আরিয়ান)

আদ্রিতা নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

এই আদ্রিতা কিছু বল। (আলো)

আদ্রিতা কিছু বলছে না দেখে সাজ্জাদ আলোকে ইশারায় বললো আদ্রিতাকে এখন যেনো কেউ কিছু জিজ্ঞেস না করে।

সবাই প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে চলো নওশিনের আজকেই শাস্তি দেওয়া হবে। ( আরিয়ান)

আরিয়ানের কথায় সবাই সহমত প্রকাশ করলো। সবাই প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে গেলো।

নওশিন যেই কাজটি করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। ওকে ও এখনি আমার রুমে আসতে বলো। ( প্রিন্সিপাল স্যার)

তানহা যেয়ে নওশিন রাইসা আর রিজভী ওদের উদ্দেশ্য বললো প্রিন্সিপাল স্যার তোমাদের অফিস রুমে যেতে বলেছে কথাটি বলে তানহা আবার অফিস রুমে চলে গেলো।

এদিকে ~

ফেঁসে গেছি মনে হয়।( রাইসা)

যেভাবেই হোক তাদের বুঝতে দেওয়া যাবে না। ( নওশিন)

আমার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। ( রিজভী)

একদম নরমাল ভাবে থাকতে হবে। যেনো আমরা এই সম্পর্কে কিছুই জানি না। ( নওশিন)

তারপর নওশিনরা অফিস রুমে গেলো। সাজ্জাদের পাশে আদ্রিতাকে দাঁড়াতে নওশিন রাগ বেড়ে যাচ্ছে।

রিজভী আমি কি তোমার কাছে গিফটের প্যাকেটটি চেয়েছিলাম? ( আরিয়ান)

না স্যার মানে আর কি….. ( রিজভী)

একদম চুপ সত্যি করে বলো আদ্রিতাকে কেনো ওই রুমে পাঠিয়েছো? ( আরিয়ান)

স্যার গিফট এর জন্য… ( রিজভী)

একদম মিথ্যে বলবে না। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তুমি ওই রুমে গ্যাসের মতো কিছু একটা ফেলেছো। আর একটা মিথ্যে কথা বললে গায়ে হাত পড়বে। বলো কেনো করেছো? ( আরিয়ান)

সিসিটিভির কথা৷ নওশিন রাইসা ভুলেই গিয়েছিলো।

স্যাস্যার নওশিনের কথায় করেছি। ( রিজভী)

না স্যার আমি বলি নি। আমি কিছু জানি না। ( নওশিন)

আর একটা ও কথা না দোষ শিকার করবে নাকি তোমার বাবাকে ডাকবো? ( আরিয়ান)

বাবাকে বড্ড ভয় পায় নওশিন তাই নিজের দোষ শিকার করে নিলো।

আমার ভাবতে ও খারাপ লাগছে এতো জগণ্য একটি কাজ তুমি করতে পারো। ( প্রিন্সিপাল স্যার)

আদ্রিতা তুমি এখন যা বলবে সেই শাস্তি দেওয়া হবে। (আরিয়ান)

আলো নওশিনের উদ্দেশ্য বললো তুই নিজে একটি মেয়ে হয়ে অন্য একটি মেয়ের সাথে এরকম করিছ কি করে?

উপযুক্ত শাস্তি তুমি পাবে। ( প্রিন্সপাল স্যার)

আর রিজভী আর রাইসা ও যেহেতু সাথে ছিলো তারা ও শাস্তি পাবে। ( আরিয়ান)

প্রিন্সিপাল স্যার আরিয়ানের উদ্দেশ্য বললো ওদের বাবাকে এখনি খবর দেও আর আসতে বলো।

আদ্রিতা এতোক্ষণ নিরব দর্শকের৷ মতো সব শনে যাচ্ছিল। আদ্রিতার পাশেই সাজ্জাদ দাঁড়ানো ছিলো। আদ্রিতা নওশিনের সামনে এসে দাঁড়ালো।

ঠাঁ*স করে নওশিনকে একটি চড় মারলো। সাজ্জাদ আদ্রিতার এমন কাজে অবাক হওয়ার পাশাপাশি অনেক খুশি হলো। আলো, তানহা, আবির ওরা ও খুশি হলো। নওশিন যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই আদ্রিতার কাজে প্রিন্সিপাল স্যার কিংবা আরিয়ান কেউ কিছু বললো না।

একটি মেয়ের কাছে সব থেকে সব সম্পদ হচ্ছে তার সম্মান। একটি ছেলে একটি মেয়ের সম্মান নষ্ট করতে পারে। কিন্তু তুমি একটি মেয়ে হয়ে কিভাবে পারলে আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করতে? কিসের এতো রাগ ছিলো আমার উপর যে তুমি এমন করলে? কেনো করলে? আর রাইসা তোমার বান্ধবীর সাহায্য করতে যেয়ে তুমি যা করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। তোমরা নিজেরা ও মেয়ে একটা মেয়ে আরেকটি মেয়ে সর্বনাশ করতে চেয়েছিলে। মেয়ে হওয়ার যোগ্যতা কি তোমাদের আছে? আর রিজভী শুনেছি তোমার নাকি একটি ছোট বোন আছে। আজ তোমার বোনের সাথে কেউ এইকাজ করতে আসলে কেমন লাগতো তোমার? ( আদ্রিতা)

আদ্রিতা কথাগুলো বলে থামলো গলা ধরে আসছে।

বাদ দে অমানুষদের এইসব কথা বলে লাভ নেই। ( আলো)

উপযুক্ত শাস্তি তোমরা পাবে। ( তানহা)

****** বেশ কিছুক্ষণ পর *******

নওশিনের বাবা এসেছে সব কথা শুনে নওশিনেকে সবার সামনেই চড় মারে। অনেক বকা দিয়ে প্রিন্সিপাল স্যারকে বলে দেয় যেই শাস্তি ওদের দেওয়া হবে তা মেনে নিবে। ওদের যেনো উপযুক্ত শাস্তি যেওয়া হয়। রাইসা আর রিজভীর বাবা ও একই কথা বলেছে। প্রিন্সিপাল স্যার বলেছে কালকে ওদের শাস্তি দেওয়া হবে। আরিয়ান,আবির,সাজ্জাদ আলো, তানহা,আদ্রিতা সবাই অফিস রুম থেকে বের হয়ে আসে।

তোমরা এখন ক্লাসে যাও সবাই। ( আরিয়ান)

আদ্রিতা আজকে ক্লাস করবে না। ১,২ দিন পর থেকে ক্লাসে আসবে। ( সাজ্জাদ)

ওকে ( আরিয়ান)

বাকিরা ক্লাসে চলে যায়। আর সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

আসি ক্লাস করবো না এইটা কেনো বললেন? ওদের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আসতাম। ( আদ্রিতা)

আমার সাথে সময় কাটাও। ( সাজ্জাদ)

আপনার সাথে আমি কি করবো। আপনি থাকুন আমি কলেজে গেলাম। ( আদ্রিতা)

আদ্রিতা যেতে নিলে সাজ্জাদ আদ্রতার হাত ধরে ফেলে হাত ধরে চমকে উঠে, তোমার ত জ্বর অনেক বেড়ে গেছে। বাসায় চলো। ( সাজ্জাদ)

আদ্রিতা ও আর কথা বাড়ালো না। কারন শরীর খারাপ লাগছে। সাজ্জাদ আর আদ্রিতা গাড়িতে উঠতে নিবে এমন সময় নওশিন ওরা বের হয়ে আসলো।

সাজ্জাদ যেয়ে নওশিনের সামনে দাঁড়ালো আদ্রিতা ও সাথে আছে।

সাজ্জাদ নওশিনের উদ্দেশ্য বললো, নেক্সট কথনো যদি আমার আদ্রতার আশে পাশে দেখেছি ছেড়ে কথা বলবো না। কথাটি মনে থাকবে?

হুম মনে থাকবে। ( নওশিন)

কথাটি বলে নওশিন ওরা চলে গেলো।

চলুন বাসায় যায়।( আদ্রিতা)

চলো গাড়িতে উঠো। ( সাজ্জাদ)

সাজ্জাদ আর আদ্রিতা গাড়িতে বসে পড়লো। সাজ্জাদ কতক্ষণ পর খেয়াল করলো। আদ্রিতা জ্বরের ঘোরে ঘুমিয়ে পড়েছে। সাজ্জাদ এক হাত দিয়ে আদ্রিতাকে আঁকড়ে ধরলো।

*****

আদ্রিতার বাসার সামনে এসে গাড়িটি থামলো। সাজ্জাদ নেমে আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো। আদ্রিতার ঘরের ভিতরে ঢুকলো। সামিরা দেখে বললো ভাইয়া আবার কি হয়েছে?

জ্বর বেড়ে গেছে। আমি ওকে ওর রুমে শুয়ে দিয়ে আছছি। কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে নিয়ে উপরে উঠে গেলো।

সাজ্জাদ আদ্রিতাকে খাটে শুইয়ে দিলো। কম্বল টেনে আদ্রিতার উপর দিয়ে দিলো। আদ্রিতার কপালে ভালোবাসার পরশঁ একে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।

সামিরার সাথে কিছু কথা বলে চলে গেলো সাজ্জাদ।

********** ১০ দিন পর *********

সময় প্রবাহমান। সেদিনের পর কেটে গেছে ১০ দিন। নওশিন ওদের কলেজ থেকে টি.সি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আদ্রিতা সম্পূর্ণ সুস্থ। কিন্তু এই কয়েকদিনে সাজ্জাদের সাথে খুব কম দেখা বা কথা হয়েছে। আদ্রিতা মাএ কলেজ থেকে এসেছে।

সামিরার বিয়ের মাএ ৭দিন বাকি। এখন থেকেই সব প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। ( আদ্রিতার মা)

কথাটি শুনে আদ্রিতা থমকে গেলো। তাহলে কি ১ সপ্তাহ পর সামিরার সাথে সাজ্জাদের বিয়ে হয়ে যাবে?

#চলবে

[ অনেকে প্রশ্ন করেছিলেন তাদের উদ্দেশ্য বলছি, বাস্তবে সাজ্জাদের বিয়ে হয় নি। শুধু আমার সাথে বিচ্ছেদ হয়েছে।

নওশিনের চ্যাপ্টার এখন থেকে বন্ধ ❌ এক সপ্তাহ পর কি সাজ্জাদের সাথে সামিরার বিয়ে দিয়ে দিবো? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here